পাকিস্তান: সংঘাতে বিপন্ন জনপদ

জন্ম থেকে সংঘাতের চারণভূমি



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
পাকিস্তানের একটি সংঘর্ষ, ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের একটি সংঘর্ষ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পাকিস্তান ১৯৪৭ সালে জন্মের পর থেকেই সামরিক শাসন ও জাতিগত শোষণ-সংঘাতের উত্তপ্ত চারণভূমি। দেশটি এখন ধর্মীয়-সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার রক্তাক্ত জনপদে রূপ নেওয়ায় বিক্ষত জনগণ, বিপন্ন পুরো দেশ।

আন্তঃমুসলিম সংঘাতের ধারায় শিয়া-সুন্নি সংঘর্ষ ও হামলা-পাল্টা-হামলা নিত্য চলছে সে দেশে। যে সংঘাতের রক্তাক্ত বহিঃপ্রকাশ পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ জীবনে দগদগে ক্ষতের মতো দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। যে ক্ষত দেশের নিরাপত্তা ও আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে তলানিতে নিয়ে এসেছে।

কাগজে ইসলামি প্রজাতন্ত্র হলেও বাস্তব পরিস্থিতি পাকিস্তানকে পরিণত করেছে শিয়া-সুন্নি মতাবলম্বী মুসলিম জনগোষ্ঠীর চলমান সংঘাতের বিপন্ন জনপদে। বর্তমানে পাকিস্তান হলো সংঘাত কবলিত অনিরাপদ দেশের মধ্যে বিশ্বতালিকার শীর্ষে।

পাকিস্তানের স্বাধীনতার মাত্র ছয় বছর পর ১৯৫৩ সালে প্রথমবারের মতো সামরিক শাসন জারি করা হয়েছিল রাজনৈতিক নয়, ধর্মীয় কারণে। তারপর সমাজে ধর্মীয় সংঘাতের পেছন পেছন রাষ্ট্রব্যবস্থায় প্রবল সামরিক শাসন ক্রমেই পাকিস্তানের রাজনীতির গণতান্ত্রিক সম্ভাবনাকে নস্যাৎ ও গ্রাস করে।

ফলে জন্ম থেকেই ধর্মীয় সংঘাত পাকিস্তানের গণতন্ত্র ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার সবচেয়ে বড় হুমকি বলে বিবেচিত হচ্ছে, যে হুমকি দেশটির গণতান্ত্রিক গতিকেও সামরিক আঘাতের মাধ্যমে রুদ্ধ করেছে এবং সামাজিক জীবনকে নিরাপত্তাহীন করে চরম অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিয়েছে।

Pakistan Clash

যদিও পাকিস্তানের ৯৫% ভাগ মানুষই মুসলমান (যাদের মোট সংখ্যা ২০৭৮ মিলিয়ন), তথাপি শান্তি ও সৌহার্দ্য দেশটিতে অনুপস্থিত। এই বৃহৎ জনগোষ্ঠী একে অন্যের সঙ্গে লড়ছে। মুসলমান জনগোষ্ঠীর সিংহভাগ সুন্নি মতাবলম্বী হলেও পাকিস্তানে শিয়া মতাবলম্বী মুসলমানদের শতকরা হিসাবটি কখনোই স্পষ্ট নয়।

সরকারি তথ্য ও অন্যান্য পরিসংখ্যানে পাকিস্তানে শিয়াদের শতকরা হার কখনো ১০%, আবার কখনো ২৫% ভাগ বলে উল্লেখ করা হয়। তবে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো এই যে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর শিয়া জনগোষ্ঠীর বসবাস পাকিস্তানে। বিশ্বের মানচিত্রে ইরানের পর পাকিস্তানেই সবচেয়ে বেশি শিয়ার বসবাস করে বলে পরিসংখ্যানের হিসাব থেকে জানা যাচ্ছে। পাকিস্তানি শিয়াদের বড় অংশটি ‘ইসনে আশারি’ বা ‘বারো ইমামপন্থী’। এছাড়াও পাকিস্তানে নেযারি ইসমাঈলি, হাজারা, দাউদি বোহরা, সোলেইমানি বোহরা, আলাভি প্রভৃতি উপ-সম্প্রদায়ের শিয়া মতাবলম্বী রয়েছে।

পাকিস্তানে বসবাসকারী সবগুলো জাতিগত, ভাষাগত, উপজাতিগত জনগোষ্ঠীতেই শিয়া সম্প্রদায়ের লোক দেখতে পাওয়া যায়। তার মানে হলো, বিষয়টি এমন নয় যে, বিশেষ বিশেষ জাতি বা ভাষা বা অঞ্চলগত গোষ্ঠীতে শিয়ারা সীমাবদ্ধ রয়েছে। বরং পাকিস্তানের সকল জাতি ও গোষ্ঠীতেই কম-বেশি হলেও শিয়া মতের বিশ্বাসী মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। শিয়ারা পাকিস্তানের জাতির পিতা বা ‘কায়েদে আজম’ নামে খ্যাত মোহাম্মদ আলী জিন্নাকে তাদের শিয়া সম্প্রদায়ের একজন বিশিষ্ট সদস্য হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব বোধ করে।

পাকিস্তানের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতিকে সংখ্যালঘিষ্ট হয়েও উল্লেখযোগ্য ও ক্ষমতাবান শিয়া সদস্যের কমতি নেই। মূলত সংখ্যালঘু হলেও পাকিস্তানের শিয়ারা মুসলমানদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নিদের সঙ্গে ক্ষমতা ও স্বার্থগত প্রতিদ্বন্দ্বিতার সক্ষমতা রাখে। কিছু কিছু সেক্টরে শিয়ারা বরং সুন্নিদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে।

শিয়ারা পাকিস্তানের সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও দেশটির চারটি প্রদেশের কোথাও তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। তবে পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত সায়ত্ত্বশাসিত অঞ্চল গিলগিট বেল্টিস্তানে শিয়ারা সংখ্যাগরিষ্ঠ। এলাকাটি বেলুচিস্তান প্রদেশ সংলগ্ন ও ইরানের সীমানা ঘেঁষা। ইরানের সংখ্যাগুরু শিয়া নাগরিকদের সামাজিক যোগাযোগের প্রভাব এ অঞ্চলে রয়েছে।

উল্লেখযোগ্য শিয়া বসতি রয়েছে খাইবার পাখতুন খাওয়া অঞ্চলের পেশোয়ার, কোহাট, হাঙ্গু, দারা ইসমাঈলি খান শহরে। আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এ অঞ্চলটির আগের নাম ছিল উত্তর-পূর্ব সীমান্ত প্রদেশ। ফেডারেল শাসিত উপজাতি এলাকা খুররম ও ওরাকজাঈ এজেন্সিতেও শিয়ারা উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যায় বসবাস করে।

Pakistan Clash

তাছাড়া বেলুচিস্তান প্রদেশের কোয়েটা ও মাকরান সমুদ্রতটে শিয়া বসতি রয়েছে। পাঞ্জাবের কেন্দ্র ও দক্ষিণাঞ্চল শিয়া অধ্যুষিত। সিন্ধু প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে শিয়াদের উপস্থিতি রয়েছে। বিশেষত সিন্ধুর হায়দ্রাবাদ শহরে ভারতের গুজরাত থেকে দেশভাগের সময় অভিবাসী মেমন ও দাউদি বোহরা সম্প্রদায়ের লোকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিয়া মতের মানুষ দেখতে পাওয়া যায়।

পাকিস্তানের অধিকাংশ বড় শহর, যেমন করাচি, লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি, ইসলামাবাদ, পেশোয়ার, মুলতান, জঙ্গ ও সারগোদায় পুরনো ও প্রতিষ্ঠিত শিয়া বসতি রয়েছে। শিয়ারা একটু আলাদা ও নিজস্ব কাঠামোর মধ্যে বসবাস করলেও সাধারণ সামাজিক জীবনে সুন্নিদের সঙ্গে দৃশ্যমান কোনও বৈপরীত্যের মুখোমুখি হতে চায় না। তারপরেও শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মুসলমানদের মধ্যে পৃথক মতাদর্শ ও সাংস্কৃতিক অস্তিত্ব আড়াল করা সম্ভব হয় না।

পোশাক, পরিচ্ছদ, ধর্মীয় আচার-আচরণ এবং বিশ্বাসগত দিক থেকে শিয়া-সুন্নি প্রভেদ লক্ষ্যণীয়। শিয়াদের প্রিয় রং কালো, যাতে কারবালার ময়দানে ঈমামের শোকের প্রতিফলন ঘটেছে। সুন্নিরা পছন্দ করে সবুজ রং। শিয়া ও সুন্নিদের আলাদা মসজিদ আছে, সেখানে তারা নিজ নিজ পদ্ধতিতে ধর্ম পালন করেন।

শিয়াদের সমজিদ সংলগ্ন ইমামবাড়া একটি আলাদা স্থান যেখানে শিয়ারা মিলিত ও আলাপ-আলোচনায় লিপ্ত হয়। সুন্নিদের প্রার্থনাস্থলে এমন কোনও স্থানের অস্তিত্ত্ব নেই। শিয়ারা কারবালার হত্যাকাণ্ডের শোকাবহ স্মৃতিতে পুরো মহররম মাসেই তাজিয়া, মার্সিয়া ইত্যাদি আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে শোক পালন করে, যা সুন্নিরা পালন করে না।

   

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;