নদী পারাপারে একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, গাইবান্ধা, বার্তা২৪.কম
বাঁশের সাঁকো / ছবি: বার্তা২৪

বাঁশের সাঁকো / ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

গাইবান্ধা জেলা সদরের দক্ষিণ গিদারীর কালির বাজার এলাকায় মানস নদীর ওপর দিয়ে সাধারণ জনগণের চলাচলে একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। স্থানটিতে এক যুগ ধরে ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন দুই পারের প্রায় ১০ হাজার মানুষ।

বিগত ১২ বছর আগে নিজেরাই প্রায় ৫০ ফুট দৈর্ঘের বিকল্প বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করে যাতায়াত শুরু করেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ। ফলে দুই পারের ছেলে-মেয়েরা এই বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করছে। তবে এমন ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে সন্তানদের চলাচলে অভিভাবকরা নানা উৎকণ্ঠা রয়েছেন।

বর্তমানে সে বাঁশের সাঁকোটিও ভেঙে গিয়ে মানুষ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে এলাকার লোকজন বাধ্য হয়ে সাঁকোর নিচ দিয়ে যাতায়াত করছেন। শুষ্ক মৌসুমে সাঁকোর নিচ দিয়ে যাতায়াত করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে তা অসম্ভব বলে দাবি করেন এলাকার ভুক্তভোগীরা।

এলাকাবাসী অভিযোগ, গত এক যুগ ধরে জন প্রতিনিধিরা সাঁকো মেরামতের আশ্বাস দিয়ে ভোট নিলেও এখন পর্যন্ত সাঁকোটি নির্মাণে কোনো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেননি। প্রতিবারই নিজেদের উদ্যোগেই বাঁশ ও সুপারি গাছ দিয়ে তৈরি সাঁকোটি মেরামত করতে হচ্ছে। কবে ব্রিজ হবে, তাও জানেন না কেউ।

স্থানীয় জোব্বার মিয়া বলেন, ‘এ এলাকার ১০ হাজার মানুষ ছাড়া বিভিন্ন এলাকার প্রায় আরও ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষ এবং কয়েক হাজার যানবাহন এ সাঁকোটি দিয়ে যাতায়াত করে। এরপরও ওই স্থানটিতে কোনো ব্রিজ নির্মাণ করা হয়নি। ফলে মানুষের দুর্ভোগ রয়েই গেছে।’

হালিমা বেগম নামের একজন বৃদ্ধা অভিযোগ করে বলেন, ‘ওপারে স্কুল-বাজার, জনবসতি সবই আছে। এপারেও স্কুল ও মানুষের বসতি রয়েছে। কাজের প্রয়োজনে দুই পারে মানুষই পারাপার হয় কিন্তু এখানে কোনো ব্রিজ হয়নি। চেয়ারম্যান আসে, চেয়ারম্যান যায়, কেউ আর ব্রিজ করে দেয় না। খালি ভোটের সময় ভোট নেয়।’

স্কুল শিক্ষক সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘এক যুগ ধরে এ ইউনিয়নের ১০ হাজার মানুষ একটি ব্রিজের অভাবে দুর্ভোগে আছেন। এ নিয়ে এলাকার লোকজন বহুবার আন্দোলন ও মানববন্ধন পর্যন্ত করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেখানে কোনো ব্রিজ নির্মাণ হয়নি।’

   

বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস ২০২৪

পরিযায়ী পাখি সুরক্ষায় কীটনাশকের ব্যবহার পরীক্ষা জরুরি



সাদিকুর রহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
পরিযায়ী পাখি সুরক্ষায় অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার পরীক্ষা জরুরি

পরিযায়ী পাখি সুরক্ষায় অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার পরীক্ষা জরুরি

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশে পাওয়া পাখিদের আবাসিক এবং অনাবাসী হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। বেশিরভাগ পরিযায়ী পাখিদেরই অনাবাসী হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।

বাংলাদেশে প্রায় ৭১২ প্রজাতির পাখি রয়েছে। তাদের মধ্যে ৩২০ প্রজাতি পরিযায়ী। তাদের কিছু শীতকালে উড়ে আসে; আবার কিছু প্রজাতি সারা বছরই থাকে।

সরকারিভাবে মে মাসের দ্বিতীয় শনিবার বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস হিসেবে পালিত হয়। সে ধারাবাহিকতায় বৈশ্বিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকারীরা আজকের দিনটিকে বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস পালন করছে। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়, ‘পোকামাকড় রক্ষা করো, পাখি রক্ষা করো’।

তাই, পাখির স্থানান্তরের বর্তমান প্রবণতা, পোকামাকড়ের ওপর তাদের নির্ভরতা এবং ব্যাপকভাবে কীটনাশক ব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব, বিশেষ করে বাণিজ্যিক কৃষিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা সময়োপযোগী বলে ধারণা করা হয়।

এ-বছর ফেব্রুয়ারিতে, কনভেনশন অন দ্য কনজারভেশন অব মাইগ্রেটরি স্পিসিস অফ ইল্ড অ্যানিমেলস (সিএমএস) একটি যুগান্তকারী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে জাতিসংঘের জীববৈচিত্র্য চুক্তি নিয়ে একটি সতর্কতামূলক পর্বও ছিল।

প্রতিবেদনে পরিযায়ী পাখির মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে বলে নির্দেশ করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন, বন উজাড়, পাখি শিকারকে এর পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে পরিযায়ী পাখিদের জন্য একটি স্বাগতিক দেশ হওয়ার কারণে প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের জন্য একটি সতর্কতা বলে মনে হয়েছে।

গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা অববাহিকায় কৌশলগত অবস্থান এবং এর গ্রীষ্মমন্ডলীয় জলবায়ু পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ পরিযায়ী পাখিদের জন্য বেশ উপযুক্ত। বাংলাদেশ একটি আবাসযোগ্য স্থান হিসেবে বিবেচিত। বিশেষ করে জলপাখি এবং তীরে বসবাসকারী পাখিদের জন্য বাংলাদেশের প্রকৃতি ভীষণ অনুকূল পরিবেশ এবং আবাসযোগ্য স্থান হিসেবে বিবেচিত।

এই পাখিরা বিশ্রাম এবং প্রজননের জন্য শীতকালীন স্থানগুলোর মধ্যে নির্দিষ্ট রুট মেনে চলে, যা ফ্লাইওয়ে নামে পরিচিত। বাংলাদেশ দুটি প্রধান পরিযায়ী পাখির ফ্লাইওয়ের মধ্যে অবস্থিত; পূর্ব-এশীয় অস্ট্রেলিয়ান ফ্লাইওয়ে এবং মধ্য এশিয়ান ফ্লাইওয়ে।

গত বছর প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, টাঙ্গুয়ার হাওর পরিযায়ী পাখিদের আবাসনের জন্য অন্যতম প্রধান জলাভূমি। কিন্তু এখান থেকেও ধীরে ধীরে অনেক জলপাখি হারিয়ে যাচ্ছে।

শিকার এবং চোরাচালানকে বাংলাদেশের পরিযায়ী পাখিদের জন্য একটি বিরাট হুমকি বলে সমর্থন করে অসংখ্য সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি কীটনাশকের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে পরিযায়ী প্রজাতির পাখিদের খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। তাই এ কারণটিও আরেকটি বড় হুমকি হিসেবে স্বীকৃত হওয়া উচিত বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের একজন অনুষদ এবং ওয়াইল্ডটিম বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী প্রফেসর মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, পাখিদের খাদ্য শৃঙ্খলকে ভারসাম্যহীন করার জন্য বিষাক্ত কীটনাশক এবং কীটনাশকের চিন্তাহীন প্রয়োগ দায়ী।

পাখিরা বিভিন্ন ধরনের খাবার খায়। খাদ্যাভ্যাসের ওপর নির্ভর করে। পাখিদেরকে ফ্রুগিভোরাস, ফলিভোরাস, হারবিভোরাস, নেক্টারিভোরাস এবং কীটপতঙ্গ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। তাদের খাদ্যাভ্যাস যাই হোক না কেন, প্রতিটি পাখি অবশ্যই পোকামাকড়ের ওপর নির্ভরশীল। পোকামাকড় হল প্রোটিনের সর্বোত্তম উৎস। অন্তত বাচ্চাদের লালন-পালন করার জন্য একটি মা পাখির পোকামাকড় খাওয়ানোর প্রয়োজন হয়। মাছি, মৌমাছি, শামুক, মাকড়সা, সেন্টিপিডস, মিলিপিডস, কাঁকড়া এবং পতঙ্গের মতো অমেরুদণ্ডী বা অ্যার্থ্রোপোডা পর্বের বিভিন্ন প্রাণি পাখিদের পছন্দের খাবারের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু প্রতি বছর ০.৯২ শতাংশ এবং প্রতি ১০ বছরে ৮ দশমিক ৮১ শতাংশ হারে পোকামাকড় হ্রাস পাচ্ছে, যার ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে পরিযায়ী পাখি ও প্রকৃতি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সাজেদা বেগম উল্লেখ করেন, পোকার প্রাচুর্য কমে যাওয়ার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে কৃষিক্ষেত্রে কীটনাশক, কীটনাশক ও বিষাক্ত সারের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার।

একজন প্রাযুক্তিক পর্যালোচক হিসেবে তিনি বাংলাদেশে আইইউসিএন রেড লিস্ট অফ বার্ডস তৈরিতে অবদান রেখেছিলেন। তিনি উল্লেখ করেন, কীটনাশকের সংস্পর্শে থেকেও বেঁচে থাকা পোকামাকড় খাওয়ার ফলে পাখির প্রজনন চক্র ব্যাহত হতে পারে। পাখির ছানারাও তীব্র বিষাক্ততায় ভুগতে পারে।

শীতকালে বাংলাদেশে আগত পরিযায়ী পাখিদের কীটনাশক কীভাবে প্রভাবিত করে?
পরিযায়ী পাখিরা সাধারণত উত্তর মেরু, সাইবেরিয়া, ইউরোপ, এশিয়ার কিছু অংশ এবং হিমালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে উড়ে আসে। বাংলাদেশকে তাদের প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার না করা সত্ত্বেও কীটপতঙ্গের প্রাচুর্য তাদের সুস্বাস্থ্য ও প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

সাজেদা বেগম ব্যাখ্যা করে বলেন, পরিযায়ী পাখিরা প্রোটিন হিসেবে পোকামাকড় খায়। তাদের প্রকৃত বাসস্থান ফিরে পাওয়ার পর তারা প্রজননের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করে। সেসময় পোকামাকড় খেয়ে তারা শক্তি সঞ্চয় করে। অনেক পরিযায়ী পাখি বিশেষ করে জলজ প্রজাতি পোকামাকড়ের ওপর খুব বেশি নির্ভর করে। জলাভূমিতে আশ্রয় এবং উপকূলে চারণের পাশাপাশি পোকামাকড়ই তাদের শক্তি, গুরুত্বপূর্ণ উৎস।

সাজেদা বেগম আরও বলেন, জলাশয়ের বিষাক্ত দূষণ জলজ পোকামাকড়দের ধ্বংস করে যা দিনশেষে পরিযায়ী পাখিদেরও প্রভাবিত করে। কৃষিক্ষেত্র এবং শিল্প অঞ্চল থেকে বিষাক্ত উপাদান শেষ পর্যন্ত যেন জলাভূমিতে না মিশে, সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

এক সমীক্ষায় দেখা যায়, কীটনাশক ব্যবহারকারীদের মধ্যে সঠিক জ্ঞানের অভাব ব্যাপক এবং অত্যধিক কীটনাশক প্রয়োগের প্রবণতা রয়েছে। সমীক্ষাটির ১৭ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, কীটনাশক উপকারী পোকামাকড় এবং প্রাণিদের হত্যা করে। অন্যদিকে, ৬ শতাংশ উত্তরদাতা বিশ্বাস করেন কীটনাশক ব্যবহারের ফলে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) কীটনাশক সম্পর্কে বলে, কীটনাশকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে পানি দূষিত হয়; যার ফলে উপকারী পোকামাকড়ের ক্ষতি হতে পারে। কীটনাশক মাটিকে দূষিত করে জীববৈচিত্র্য এবং বাস্তুতন্ত্রকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে।

আশার সংবাদ হলো, সম্প্রতি খাদ্য ও কৃষি সংস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে কীটনাশক ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে সুপারিশমালা প্রদান করেছে। এই বছরের মার্চ মাসে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কাছে সে সুপারিশমালা হস্তান্তর করা হয়।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার স্বার্থে সুপারিশগুলো কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবেন বলে এখন আশা করা যায়।

;

ঠেলা-জাল দিয়ে ছোট যমুনায় মাছ ধরার শৈশব!



শহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রচণ্ড রোদে নদীর বুক চিরে আঁকাবাঁকা রেখা প্রমাণ করে এই নদীর বুকে লুকানো আছে এক গভীর কান্না! একসময় এ নদীতে বড় বড় নৌকা চলতো। সে এখন কেবল পানি শূন্যতায় ভুগছে! এ নদীটির নাম- ছোট যমুনা।

‘ছোট যমুনা’ নামটা যেমন মধুর, তেমনি একসময় জনপদের পর জনপদ গড়ে তুলেছে এই ছোট নদী যমুনাই। ভরা বর্ষায় যমুনা যেমনি যৌবন ফিরে পায়, তেমনি খরায় পানি শুকিয়ে করুণ অবস্থায় পরিণত হয়। এসময় ছোট মাছের দেখা মেলে না বললেই চলে।

সরেজমিন শনিবার (১১ মে) দুপুরে নওগাঁ সদর উপজেলার শিবপুর এলাকায় দেখা মেলে কয়েকটি শিশুর, যারা ঠেলা-জাল দিয়ে মাছ ধরতে এসেছে ছোট নদী যমুনাতে। কেউ কেউ হাড়ি এনেছে মাছ ধরে রাখার জন্য। আবার কেউ বালতি এনেছে। কেউ আবার নদীতে নেমে সাঁতারও কাটতে শুরু করেছে!

ছোট যমুনায় মাছ ধরার শৈশব এখন, ছবি- বার্তা২৪.কম

এদের মধ্যে সবার বড় শাহিন (১২)। এবার ৭ম শ্রেণিতে উঠেছে সে। এতদিন পানি ছিল না বলে নদীতে আসেনি সে।

ক্ষুদে শিক্ষার্থী শাহিন জানায়, আমার আব্বু আমাকে এই ঠেলা-জাল বানিয়ে দিয়েছে। এতদিন নদীতে পানি ছিল না। তাই, মাছ ধরতে আসিনি। নতুন পানিতে মাছগুলো কাছে চলে এসে কচুরিপানায় লুকিয়ে থাকে তখন এগুলোর নিচে ঠেলা-জাল দিলে ছোট ছোট মাছ পাওয়া যায়।

শাহিন বলে চলে, চিংড়ি, পুঁটি, গুচি, বেলেমাছ, চাঁন্দা মাছ, বাইন মাছসহ অনেক মাছ জালে ওঠে আর এগুলো বাড়ি নিয়ে গেলে আম্মু রান্না করে দেয়। আমি মজা করে খাই।

আরেক ক্ষুদে শিক্ষার্থী হানজালা (১১) বলে, শাহিন আমাদেরই বন্ধু। ওর বাড়ির পাশেই আমার বাড়ি। ও মাছ ধরতে এসেছে জেনে আমিও গোসল করতে আসলাম। আমিও ওকে মাছ ধরতে সাহায্য করছি। কচুরিপানার নিচে ও যখন ঠেলা-জাল দিচ্ছে, তখন কচুরিপানাগুলো সরিয়ে ফেলছি।

ক্ষুদে শিক্ষার্থী রাসেল, আদমসহ আরো অনেকেই জানালো, দুপুর বেলা রোজ এই নদীতেই গোসল করতে আসে সব বন্ধুরা মিলে। তাদেরও ঠেলা-জাল আছে কিন্তু আজকে নিয়ে আসেনি। শাহিন নিয়ে আসবে বলে তারা আনেনি। তাকেই সবাই মিলে মাছ ধরে দিচ্ছে।

কথা হয়, ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সঙ্গে। তারা বার্তা২৪.কমকে জানান, এদের এখন শৈশব চলছে। এখনই এদের দুরন্তপনার সময়। সে কারণে আটকে রাখা যায় না। নদীতে যেহেতু পানি সামান্য বেড়েছে, সে জন্য এদের সঙ্গে করে নিয়ে এসেছি। আমরা একদিকে বসে থাকি আর ওদের দিকে নজর রাখি, যাতে কোনো দুর্ঘটনাটা না ঘটে।

ছোট থাকতে আমরাও ঠিক এভাবেই মাছ ধরতাম! সে সব কথা মনে পড়লে অনেক মধুর স্মৃতি ভেসে ওঠে। মনে হয়, সেই শৈশবে যদি ফের ফিরে যেতে পারতাম!

;

কাবাবের দামে ভর্তুকি!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কাবাব বর্তমান সময়ে খুব জনপ্রিয় একটি খাবার। বিশেষ করে তরুণদের কাছে এর চাহিদা ব্যাপক। বার্গারের সাথে কাবাবের যে জম্পেস মেলবন্ধন, এর জন্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কাবাব ও বার্গার রেস্টুরেন্ট চালু রয়েছে। এসব রেস্টুরেন্টে প্রতি বছর কয়েক মিলিয়ন ডলার কাবাব বিক্রি হয়। ঠিক একইভাবে জার্মানিতেও কাবাবের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবে সম্প্রতি মূল্যস্ফীতির কারণে জার্মানিতে কাবাবের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। গত দুই বছরের মধ্যেই সেখানে কাবাবের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। তাই কাবাবের দামে স্থিরতা আনতে ভর্তুকির দাবি জানিয়েছে দেশটির একটি রাজনৈতিক দল। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ। 

জার্মানির রাজনৈতিক দল লেফট পার্টি সরকারের কাছে এ ভর্তুকির দাবি জানায়। এটি বর্তমানে জার্মান রাজনীতিতে একটি চলমান রসিকতা হয়ে উঠেছে, চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ বলেছেন,‘আমি যেখানে যাই, তরুণেরা আমাকে কাবাবের দাম কমবে কি না, সে বিষয়ে প্রশ্ন করেন।’

তবে দেশের সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনায় লেফট পার্টির এমন উদ্যোগকে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। মূল্যস্ফীতির কারণে দেশটিতে দ্রব্যমূল্যের ওপর যে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে তার প্রেক্ষিতে একটি রাজনৈতিক দলের এমন প্রস্তাব খুবই ইতিবাচক বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল।

এ বিষয়ে লেফট পার্টির ইয়ুথ পলিসি বিষয়ক মুখপাত্র কাথি জেবেল বলেন, দেশজুড়ে কাবাবের দাম কম করে হলেও ৭ দশমিক ৫৫ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। সরকারের পক্ষ থেকে এটি জন সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার নাগালের মধ্যে রাখার ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে দাবি জানান তিনি।

এর প্রেক্ষিতে দলটির পক্ষ থেকে সরকারের কাছে কাবাবের দাম ৫ ডলার ৩০ সেন্ট বেঁধে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। দেশের তরুণদের কথা মাথায় রেখে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানায় লেফট পার্টি।

এর জন্য, সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি দেওয়ার কথা বলা হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে এ নিয়ে জার্মান সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, মজুরি ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় ডোনার কাবাবের দাম বেড়েছে। কাবাব বিক্রির দোকানগুলোর বেশি ভাড়া, জ্বালানি খরচ ও কাবাবের উপাদানের জন্য খরচ বেশি হচ্ছে। এগুলোর খরচ কমানো গেলে কাবাবের দামও কমে যাবে বলে মনে করেন জেবেল।

জেবেল আরও বলেন, ‘সরকার যদি কোনো ব্যবস্থা না নেয়, তবে কাবাবের দাম বেশি থেকে যাবে। আর তাহলে এটি আমাদের জন্য একটি বিলাসবহুল খাবারে পরিণত হবে।’

 

 

;

পিৎজা খেতে ইতালি ভ্রমণ!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান সময়ে তরুণ প্রজন্মের কাছে এক মুখরোচক খাবার হলো পিৎজা। প্রায় সব দেশেই এ খাবারটি বেশ জনপ্রিয়। দিনে কিংবা রাতের পার্টির হোক সব সময়ই অনেকের কাছে পছন্দের তালিকায় এক নম্বরে থাকে বিভিন্ন ফ্লেভারের ও ব্র্যান্ডের পিৎজা। অনেক পিৎজা প্রেমী আছেন যারা পিৎজা খাওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেন। সম্প্রতি এরকমই দুই পিৎজা প্রেমী কেবল পিৎজা খাওয়ার জন্য বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। তাও মাত্র একদিনের জন্য। শুনে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। প্রতিবেদন- এনডিটিভি। 

যুক্তরাজ্যের লিভারপুল থেকে মোরহান বোল্ড (২৭) ও জেস উডার (২৬) নামে দুই বান্ধবি তাদের কর্মস্থল থেকে এক দিনের ছুটি নিয়ে উড়ে যান পিৎজার দেশ ইতালিতে। গত ২৪ এপ্রিল এমন ঘটনাই ঘটেছে। একদিনের এই ভ্রমণে তারা দিনভর সেখানে কেনাকাটা করেছেন, ঘুরে বেড়িয়েছেন, পিৎজা খেয়েছেন।

তারা ২৪ এপ্রিল সকাল ৬টার ফ্লাইট নেন, আবার সন্ধ্যা ৬টায় ফিরে আসেন। তাদের এই ভ্রমণে মোট খরচ হয়েছে ১৭০ পাউন্ড, বাংলাদেশি টাকায় যা ২৩ হাজার ৩১৮ টাকা। এর মধ্যে রয়েছে উড়োজাহাজের ভাড়া, এয়ারপোর্ট পার্কিং, খাবার ও বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ড।

নিজেদের এই অদ্ভুত ভ্রমণ পরিকল্পনা সম্পর্কে মোরহান বোল্ড বলেন, লিভারপুল থেকে লন্ডনে যাওয়ার চেয়ে আমাদের জন্য ইতালি যাওয়া সাশ্রয়ী ছিল। কেননা, লন্ডন ইউস্টনে যাওয়া ও সেখান থেকে আসা বাবদ খরচ হবে প্রায় ১০০ পাউন্ড। এটি কিন্তু খাবার ও পানীয় ছাড়াই। আর এক দিনের এই সফর খুবই সহজ। এর জন্য ব্যাগ গোছাতে হয় না। সোজা সিকিউরিটি হয়ে উড়োজাহাজে। আমি যদিও এক দিন ছুটি নিয়েছি, পরের দিন আবার যথাসময়ে কাজে যোগ দিয়েছি।’

দুই বান্ধবি পিসার হেলানো টাওয়ারের সামনে অনেকগুলো ছবি তুলেছেন। আর ভাল পিৎজা রেস্তোরাঁ খুঁজে পাওয়ার জন্য গুগোল ম্যাপের সাহায্য নিয়েছেন।
তারা পিসার হেলানো টাওয়ারের সামনে বসে পিৎজা খেতে খেতে ছবি তুলেছেন আর নিজেদের আত্মতৃপ্তির কথা শেয়ার করেছেন।

;