বিশ্বের শীতলতম পাঁচ দেশ



হেলাল নিরব, কন্ট্রিবিউটর
অনেক দেশ আছে যেখানে বছরের প্রায় সময়ই তাপমাত্রা অসহ্য পর্যায়ের ঠান্ডা থাকে

অনেক দেশ আছে যেখানে বছরের প্রায় সময়ই তাপমাত্রা অসহ্য পর্যায়ের ঠান্ডা থাকে

  • Font increase
  • Font Decrease

শীতের শুরুতে বেশ কয়েক দিনের হাড়কাপানো ঠান্ডা আর সারাদিনের টুপটাপ বৃষ্টিতে আমাদের জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছিল। এখনো সারা দেশব্যাপী চলছে কম-বেশি শৈত্য প্রবাহ। শীতের প্রকোপ বেশি হওয়ায় নানা ধরনের শীতকালীন অসুখ-বিসুখেও পড়ছে অনেকে।
তবে পৃথিবীর এমনও অনেক দেশ আছে যেখানে বছরের প্রায় সময়ই তাপমাত্রা অসহ্য পর্যায়ের ঠান্ডা থাকে। সারাদিনে সূর্যের মুখ দেখাও একেবারেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ে বরফ। তেমনই পাঁচটি চরম পর্যায়ের শৈত্য আবহাওয়া পূর্ণ দেশের কথা থাকছে।

অ্যান্টার্টিকা

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/02/1546401237778.jpg

অ্যান্টার্টিকা পৃথিবীর দক্ষিণ মেরুতে অবস্থিত একটি দক্ষিণতম মহাদেশ। এটি সম্পূর্ণ দক্ষিণ মহাসাগর দ্বারা পরিবেষ্টিত। ১৪ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ এ মহাদেশে জনসংখ্যা মাত্র পাঁচ হাজার জনের মতো। ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে মাত্র  ০.০০০০৪ জন! এ অবস্থার প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয়, সেখানের শীতলতম ও শুষ্কতম পরিবেশ। এখানে তাপমাত্রার সর্বনিম্ন রেকর্ড -৮৯ ডিগ্রী (-১২৯ ফারেনহাইট)! বছরে স্বাভাবিক সময়েও তাপমাত্রা থাকে -৬৩ ডিগ্রি (-৮১ ফারেনহাইট)! এমন শীতল আবহাওয়ার কারণে এ মহাদেশকে শীতল মরুভূমিও বলা হয়। এখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২০০ মিলি মিটার! এ মহাদেশে পেঙ্গুইন, সিল, বিভিন্ন শৈবাল এবং তুন্দ্রা উদ্ভিদ এমন চরম তাপমাত্রায়ও ‘সারভাইব’ করে। মজার বিষয় হলো এ মহাদেশের কোনো নিজস্ব বাসিন্দা নেই। বিভিন্ন জায়গায় গবেষণা করার জন্য ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন দেশের জনগণ। আরো অবাক করা সত্য হলো, এটাই একমাত্র মহাদেশ, যেখানে কোনো দেশ বা দেশের কোনো রাজধানী নেই!

কাজাখস্তান

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/02/1546401270913.jpg

পৃথিবীর নবম বৃহত্তম ও স্থলবেষ্টিত সবচেয়ে বড় রাষ্ট্র কাজাখস্তান। রাশিয়া থেকে স্বাধীনতা লাভ করা কাজাখস্তানের আয়তন ২.৭ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার। তবে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে মাত্র ৫.৯৪! মাত্র ১ কৌটি ৮০ লাখ জনসংখ্যার এই আপেলের দেশে রাশিয়ার চেয়েও বেশি শীত পড়ে। ভৌগলিক অবস্থান, বৈরী আবহাওয়া ও অনবরত তুষারপাতের ফলে জনজীবন প্রায়ই স্থবির হয়ে পড়ে। ৭০ শতাংশ মুসলমানের এই দেশে শীতের প্রকোপে প্রায়ই মৃত্যু ঘটে অনেক বাসিন্দার।

রাশিয়া

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/02/1546401291959.jpg

রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম শীতল দেশ। এখানে বছরে  মাত্র  দুই মাসের জন্য সূর্যের মুখ দেখতে পাওয়া যায়। আর প্রায় সারাবছরই হিম শীতল ও শৈত্য আবহাওয়া থাকে। গরমকালেও এখানে তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং শীতকালে -১০ ডিগ্রিতে ওঠানামা করে। বৈচিত্র্যহীন এ অঞ্চলে আর্কটিক বরফাচ্ছন্ন, উচ্চভূমি এবং সারাদিন শৈত্য প্রবাহ চলার কারণে এখানে জীবনযাপন বেশ কষ্টকর। রাশিয়ার প্রায় অঞ্চলই বছরের ৮ মাস বরফাচ্ছন্ন এবং ১০ মাস শৈত্য প্রবাহ থাকে। এখানকার সাইবেরিয়ায় সারাদিনই শৈত্য প্রবাহ ও প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়তে থাকে। বিশাল এই রাশিয়া, পৃথিবীর স্থলভাগের আট ভাগের ১ ভাগ হলেও এমন ঠান্ডা আর প্রতিকূল পরিবেশের কারণে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে মাত্র ৮.৪ জন। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময়ে হিটলারের নাৎসী বাহিনীর কামান-গোলা এখানকার তীব্র ঠান্ডায় অকেজো হওয়ার ফলে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন /রাশিয়া সহজেই জার্মান সেনাদের পর্যদুস্ত করতে পেরেছিল। মজার বিষয় হলো, রাশিয়ায় গা গরম করতে গরম পোশাক পরার পাশাপাশি ভদকা (নেশা পানীয়) খাওয়া হয়।

গ্রিনল্যান্ড

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/02/1546401315640.jpg

পৃথিবীর বৃহৎ দ্বীপ রাষ্ট্রের মাঝে গ্রিনল্যান্ড অন্যতম। উত্তর আটলান্টিক ও আর্কটিক মহাসাগরের মাঝের এই দ্বীপ দেশটি ডেনমার্ক কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। গ্রিনল্যান্ড/ সবুজ ভূমি নাম হলেও সেখানকার শীতকাল/ শৈত্য প্রবাহের কারণে পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন, ধূসর সাদা! ভৌগলিক অবস্থানের কারণে এখানে সর্বোচ্চ তিন ঘণ্টার মতো সূর্যের দেখা পাওয়া যায়। প্রচণ্ড ঠান্ডা আর অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ, কালো চাদরের মতো জড়িয়ে রাখে এ দেশকে। এমন প্রতিকূল পরিবেশ হওয়ায় এখানকার বিশাল আয়তনে মাত্র ৫৭,১০০ লোকের বাস। অবাক করা বিষয় হলো, নীল জলরাশির এ বিশাল দ্বীপ দেশটির প্রায় ৯০ ভাগ জায়গাই পুরো বরফে ঢাকা!

কানাডা

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/02/1546401336445.jpg

উত্তর আমেরিকার উন্নত ও উদীয়মান অর্থনীতির এ দেশটি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। কানাডার কথা বললেই ভেসে ওঠে এক অসহ্য ঠান্ডা দেশের কথা। এখানের জলবায়ু হালকা ভ্যাপসা ঠান্ডা, ভিজে কুয়াশা এবং শীতকালে প্রচন্ড ঠান্ডা, বরফাচ্ছন্ন ও শুষ্ক তুষারপাত দ্বারা আবৃত থাকে। এ বিশাল দ্বীপ বহুল রাষ্ট্রে বছরের ৮ মাসই বরফাচ্ছন্ন থাকে। রাশিয়ার জলবায়ুর মতো শৈত্য প্রবাহ ও হিম শীতল আবহাওয়া হলেও মানুষের বসবাসের জন্য অতটা অনুকূল নয়। এমন বৈরী জলবায়ুর জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ দেশ হয়েও জনসংখ্যা মাত্র সাড়ে তিন কোটি। ঘনত্বের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গকিলোমিটারে মাত্র ৩.৯২ জন।

   

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;