যশোরে ৩৭ প্রার্থীর ৩১ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত



তবিবর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, যশোর, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

একাদশ সংসদ নির্বাচনে যশোরের ৬টি সংসদীয় আসনে অংশগ্রহণকারী ৩৭ প্রার্থীর মধ্যে বিজয়ী ৬ প্রার্থী ছাড়া অন্য ৩১ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৭২ অনুযায়ী কোনও প্রার্থী নির্বাচনে প্রদত্ত (কাস্টিং ভোট) ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগের কম, অর্থাৎ ১২ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট না পেলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। যশোরে শতকরা ৮৩ দশমিক ২০ ভাগ ভোট কাস্ট হলেও ৩১ প্রার্থী ১২ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পাননি। ফলে নির্বাচন কমিশনে জামানত দেওয়া ২০ হাজার টাকা তারা ফেরত পাবেন না।

নির্বাচন অফিস মতে, যশোরের ৬টি সংসদীয় আসনে মোট ভোটার ছিল ২০ লাখ ৯২ হাজার ৪৭২ জন। এরমধ্যে ভোট প্রদান করেন ১৭ লাখ ২৫ হাজার ৫৩৪ জন ভোটার। এ হিসেবে শতকরা ৮৩ দশমিক ২০ ভাগ ভোটার ভোটাধিকার প্রদান করেছেন।

যশোরের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আওয়াল স্বাক্ষরিত প্রাথমিক বেসরকারি ফলাফল 'বার্তা প্রেরণ শিট' বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সংসদীয় যশোর-১ (শার্শা) আসনে মোট ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৬৩ হাজার ৬০০ জন। এরমধ্যে ভোট প্রদান করেছেন ২ লাখ ২০ হাজার ৪৫ জন ভোটার। শতকরা হিসেবে ৮৩ দশমিক ৪৮ ভাগ। জামানত বাঁচাতে প্রতি প্রার্থীর ভোটের প্রয়োজন ছিল ২৭ হাজার ৫০৬ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন ৪জন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ আফিল উদ্দিন বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ২ লাখ ১১ হাজার ৪৪৩ ভোট। এ আসনে জামানত বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ভোট না পাওয়ায় বিএনপির প্রার্থী মফিকুল হাসান তৃপ্তি (প্রাপ্ত ভোট ৪৯৮১), ইসলামী আন্দোলনের মো. বক্তিয়ার রহমান (প্রাপ্ত ভোট ১৩৩০) ও জাকের পার্টির সাজেদুর রহমান ডব্লিউর (প্রাপ্ত ভোট ১১৭৭) জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে মোট ভোটার ছিলেন ৪ লাখ ৫ হাজার ৮৮২ জন। এরমধ্যে ভোট প্রদান করেছেন ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৬২২ জন ভোটার। শতকরা হিসেবে ৮৫ দশমিক ৭৩ ভাগ। জামানত বাঁচাতে প্রতি প্রার্থীর ভোটের প্রয়োজন ছিল ৪৩ হাজার ৪৯৫ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন ৭জন। এরমধ্যে আওয়ামী লীগের মেজর জেনারেল (অব.) মো. নাসির উদ্দিন তিনি নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৩ লাখ ২৫ হাজার ৭৯৩ ভোট। এ আসনে জামানত বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ভোট না পাওয়ায় ধানের শীষের প্রার্থী আবু সাঈদ মোহাম্মদ শাহাদাৎ হুসাইন ( প্রাপ্ত ভোট ১৩ হাজার ৯৪০), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির বিএম সেলিম রেজা (প্রাপ্ত ভোট ১ হাজার ২৫), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের মো. আলাউদ্দিন (প্রাপ্ত ভোট ৫৯১), ইসলামী আন্দোলনের মো. আসাদুজ্জামান (প্রাপ্ত ভোট ৩ হাজার ৩), গণফোরামের এম আছাদুজ্জামান (প্রাপ্ত ভোট ৭) ও জাতীয় পার্টির ফিরোজ শাহর (প্রাপ্ত ভোট ১হাজার ১৮২) জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

যশোর-৩ (সদর) আসনে মোট ভোটার ছিলেন ৫ লাখ ২৩ হাজার ৩৪৫ জন। এরমধ্যে ভোট প্রদান করেছেন ৪ লাখ ১ হাজার ১৩৬ জন ভোটার। শতকরা হিসেবে ৭৬ দশমিক ৬৫ ভাগ। জামানত বাঁচাতে প্রতি প্রার্থীর ভোটের প্রয়োজন ছিল ৫০ হাজার ১৪২ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন ৬ জন। এরমধ্যে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের কাজী নাবিল আহমেদ। তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩ লাখ ৬১ হাজার ৩৩৩ ভোট। এ আসনে জামানত বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ভোট না পাওয়ায় বিএনপির প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিত (প্রাপ্ত ভোট ৩১ হাজার ৭১০), জাতীয় পার্টির মো. জাহাঙ্গীর আলম (প্রাপ্ত ভোট ১০ হাজার ৬৯), জাকের পার্টির মনিরুজ্জামান মনির (প্রাপ্ত ভোট ১ হাজার ৬৬৭), বিকল্পধারার মারুফ হাসান কাজল (প্রাপ্ত ভোট ৯১৪) ও জেএসডির সৈয়দ বিপ্লব আজাদ’র (প্রাপ্ত ভোট ২৫ ভোট) জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

যশোর-৪ (অভয়নগর-বাঘারপাড়া) আসনে মোট ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৯৯১ জন। এরমধ্যে ভোট প্রদান করেছেন ৩ লাখ ১৬ হাজার ৩৩৮ জন ভোটার। শতকরা হিসেবে ৮১ দশমিক ৭৪ ভাগ। জামানত বাঁচাতে প্রতি প্রার্থীর ভোটের প্রয়োজন ছিল ৩৯ হাজার ৫৪৩ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন ৮জন। এরমধ্যে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের রণজিৎ কুমার রায়। তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২ লাখ ৭৩ হাজার ২৩৪ ভোট। এ আসনে জামানত বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ভোট না পাওয়ায় বিএনপির প্রার্থী টিএস আইয়ুব (প্রাপ্ত ভোট ৩০ হাজার ৮৭৪), জাতীয় পার্টির মো. জহুরুল হক (প্রাপ্ত ভোট ১হাজার ৯৬৬), ইসলামী আন্দোলন নাজমুল হুদা (প্রাপ্ত ভোট ৫ হাজার ৬৯৮), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির লে. ক. (অব.) এম শাব্বির আহমেদ (প্রাপ্ত ভোট ৭৪২), বিকল্পধারা বাংলাদেশের নাজিম উদ্দিন আল আজাদ (প্রাপ্ত ভোট ৯৯), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ (প্রাপ্ত ভোট ১৮০ ও জাকের পার্টির লিটন মোল্লার (প্রাপ্ত ভোট ৯২) জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনে মোট ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ১৯ হাজার ৮৪ জন। এরমধ্যে ভোট প্রদান করেছেন ২ লাখ ৭৫ হাজার ৭৪ জন ভোটার। শতকরা হিসেবে ৮৬ দশমিক ২১ ভাগ। জামানত বাঁচাতে প্রতি প্রার্থীর ভোটের প্রয়োজন ছিল ৩৪ হাজার ৩৮৫ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন ৭জন। এরমধ্যে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের আওয়ামী লীগের স্বপন ভট্টাচার্য। তিনি নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ২ লাখ ৪২ হাজার ৮৫৬ ভোট। এ আসনে জামানত বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ভোট না পাওয়ায় ধানের শীষের প্রার্থী মুহাম্মদ ওয়াক্কাস (প্রাপ্ত ভোট ২৪ হাজার ৬২১), জাতীয় পার্টির এমএ হালিম (প্রাপ্ত ভোট ৮৮৪), ইসলামী আন্দোলনের ইবাদুল হক খালাসি (প্রাপ্ত ভোট ২ হাজার ৭৭৪), স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ইসলাম বারী (প্রাপ্ত ভোট ৮৫৭), জাপার নিজাম উদ্দিন অমিত (প্রাপ্ত ভোট ১২৪) ও জাকের পার্টির রবিউল ইসলামের (প্রাপ্ত ভোট ৩৮৪) জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে মোট ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৯৩ হাজার ৫৭০ জন। এরমধ্যে ভোট প্রদান করেছেন ১ লাখ ৬৪ হাজার ৯৮৫ জন ভোটার। শতকরা হিসেবে ৮৫ দশমিক ২৩ ভাগ। জামানত বাঁচাতে প্রতি প্রার্থীর ভোটের প্রয়োজন ছিল ২০ হাজার ৬২৩ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন ৫জন। এরমধ্যে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের ইসমাত আরা সাদেক। তিনি নৌকা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ৫ হাজার ৫০৬। এ আসনে জামানত বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ভোট না পাওয়ায় বিএনপির প্রার্থী আবুল হোসেন আজাদ (প্রাপ্ত ভোট ৫ হাজার ৬৫৩), ইসলামী আন্দোলনের আবু ইউসুফ বিশ্বাস (প্রাপ্ত ভোট ১হাজার ১৩০), জাতীয় পার্টির মো. মাহবুব আলম (প্রাপ্ত ভোট ৩৪১) ও জাকের পার্টির মো. সাইদুজ্জামানের (প্রাপ্ত ভোট ৩৮০) জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

   

প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ার ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিকদের ওপর হামলা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, শরীয়তপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

শরীয়তপুর জাজিরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ার ভিডিও ধারণ করতে যাওয়ায় মোটরসাইকেল প্রতীকের সমর্থকদের হামলায় অন্তত ১০ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (২১ মে) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সেনেরচর ইউনিয়নের ফরাজী দারুস সুন্নাহ হাফিজিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে ৭ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন, বার্তা বাজারের প্রতিনিধি আশিকুর রহমান হৃদয়, যায়যায়দিনের জাজিরা প্রতিনিধি ইমরান হোসাইন, দৈনিক সংবাদের জাজিরা প্রতিনিধি পলাশ খান, দৈনিক জবাবদিহির জাজিরা প্রতিনিধি সুজন মাহমুদ, ঢাকা ক্যানভাসের প্রতিনিধি বরকত মোল্লা, বাংলাদেশ সমাচারের রুহুল আমিন, কালবেলার জাজিরা প্রতিনিধি আব্দুর রহিম।

এদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় জাজিরা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক সংবাদের জাজিরা প্রতিনিধি পলাশ খান, জাজিরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সুজন মাহমুদ, বার্তা বাজারের প্রতিনিধি আশিকুর রহমান হৃদয় ও ঢাকা ক্যানভাসের প্রতিনিধি বরকত মোল্লাকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপে শরীয়তপুর জাজিরা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোট ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইদ্রিস ফরাজী। বেলা ১১টার দিকে সেনেরচর ইউনিয়নের ফরাজী দারুস সুন্নাহ হাফিজিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে মোটরসাইকেল প্রতীকের সমর্থকরা প্রকাশ্যে ভোট দিতে ভোটারদের চাপ প্রয়োগ করে ভোট নিচ্ছিলেন। এমন অভিযোগ পেয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন এবং ভিডিও ধারণা করেন যায় বার্তা বাজারের প্রতিনিধি আশিকুর রহমান হৃদয়সহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। এসময় মোটরসাইকেল প্রতীকের ব্যাচ পরিহিত এক ব্যক্তি তাদের প্রথমে বাঁধা দেয় পরে তাদের কাছ থেকে মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে সাথে থাকা অন্য সাংবাদিকরা তাদের ছাড়াতে গেলে কমপক্ষে ৫০ জন মোটরসাইকেল প্রতীকের সমর্থক তাদের উপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। এতে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়। পরে আহতদের মধ্যে ৩ জনকে গুরুতর অবস্থায় জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

হামলায় আহত সাংবাদিক আশিকুর রহমান হৃদয় বলেন, আমরা ভোট কেন্দ্রের বাহিরে অবস্থান করছিলাম। হঠাৎ জানতে পারি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ভোটারদের প্রকাশ্যে ভোট দিতে বাধ্য করছেন মোটরসাইকেল প্রতীকের সমর্থকরা। পরে আমরা কয়েকজন সাংবাদিক ভিডিও ধারণ করতে গেলে সবুজ শার্ট ও মোটরসাইকেলের ব্যাচ পরা এক যুবক আমাদের বাঁধা দেয় এবং মোবাইল কেড়ে নেয়। পরে আমার সাথে থাকা অন্য সহকর্মীরা আমাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসলে মোটরসাইকেল প্রতীকের ভাই ইমন ফরাজীর নেতৃত্বে অনেক লোক এসে আমাদের উপর হামলা চালায়। আমরা পুলিশের থেকে সাহায্য চাইলে তারাও আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি।

আহত আরেক সাংবাদিক বরকত মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের উপর যখন হামলা চালানো হয়, আমরা প্রশাসনের কাছে হাতজোড় করে বাঁচাতে অনুরোধ করেছিলাম, তারা তখন সরে যায়। কেউ আমাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। সাংবাদিক পরিচয়পত্র দেখলেই হামলাকারীরা মারধর শুরু করেছে।

যায়যায়দিনের প্রতিনিধি ইমরান হোসেন বলেন, আমাদের উপর যখন হামলা চালানো হয় প্রশাসন শুধু চেয়ে চেয়ে দেখেছে। হামলাকারীরা যখন আমাদের অবরুদ্ধ করে সন্ত্রাসী কায়দায় মারছিল, প্রশাসন তখন মজা নিচ্ছিলো। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক বিচার চাই।

জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, এখানে বেশ কয়েকজনকে আহত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল। এদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা গুরুতর। এছাড়া একজনের নাক দিয়ে রক্ত পড়ছে, তার অবস্থার উন্নতি না হলে ঢাকায় পাঠানো হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি খোঁজ খবর নিচ্ছি। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে নির্বাচনের সহকারী রিটার্নি কর্মকর্তা ও জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম লুনা বলেন, আমরা খবর পেয়ে জেলা প্রশাসকসহ কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেছি। যারা আহত হয়েছেন তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

;

ভোটকেন্দ্রের সামনে আগুনে পুড়ল ১৩ দোকান, ৪৫ মিনিট ভোট গ্রহণ বন্ধ



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের গৌরীপুরের পাছার উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের সামনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৩টি দোকানের মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

মঙ্গলবার (২১ মে) বেলা ১১টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এসময় ভোটাররা আতঙ্কে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছুটাছুটি শুরু করলে ৪৫ মিনিট ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে ৮টা থেকে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ৯৫টি ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। ভোট গ্রহণ চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। বেলা ১১টায় উপজেলার সহনাটি ইউনিয়নের পাছার উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের সামনে পাছার বাজারের একটি দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুনের লেলিহান ছড়িয়ে পড়লে ১৩টি দোকান পুড়ে যায়। এসময় কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে তারা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছুটাছুটি শুরু করে। এতে ৪৫ মিনিট পাছার উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকে। খবর পেয়ে গৌরীপুর ফায়ার সার্ভিস দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার একেএম শফিকুল ইসলাম বলেন, বেলা ১১টার দিকে ভোটকেন্দ্রের সামনে আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিস টিমকে অবহিত করি। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনের ঘটনায় ৪৫ মিনিট ভোটগ্রহণ কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পাছার উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রের মোট ভোটার-২৮৯৬। ভোট কেন্দ্রের বুথ ৮টি।

গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুমন চন্দ্র রায় বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। ভোটগ্রহণ স্বাভাবিকভাবে চলছে।

পাছার বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাপ মিয়া বলেন, পাছার বাজারের ব্যবসায়ী আজিজুল ও আল-আমিনের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দুই কোটি টাকা।

;

রামগঞ্জে ভোটকেন্দ্র দখলের চেষ্টা, আটক ৫



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে পশ্চিম কাজিরকজীল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখলের চেষ্টার ঘটনায় ৫ জনকে আটক করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ মে) বেলা ১১টার দিকে চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে দখলের চেষ্টা করে। পরে পুলিশের ধাওয়ায় হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। দুপুর ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্র এলাকায় থমথমে অবস্থায় বিরাজ করে।

এদিকে পালিয়ে যাওয়ার পথে তারা একটি মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করে। এসময় অটোরিকশা চালক বৃদ্ধ মনু মিয়াকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ছিল।

খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রিয়াংকা দত্ত, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মেহের নিগার, রামগঞ্জ উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন ইসলাম ও পুলিশ-বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল থেকে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা ভোটারদেরকে কেন্দ্রে আসতে বাধা দিচ্ছে। পথে পথে ভোটারদেরকে বাধা দেওয়া হয়। এতে অনেক ভোটার ভোট না দিতে পেরে ফিরে গেছেন। ঘটনার সময় তারা দখলের জন্য কেন্দ্রে ঢুকে পড়ে। একপর্যায়ে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গিয়ে তাদেরকে ধাওয়া করে। এতে তারা পালিয়ে যায়। এদিকে হামলাকারীরা চাটখিল-রামগঞ্জ সড়কে একটি মোটরসাইকেল ও একটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে। এসময় অটোরিকশা চালক মনু মিয়াকে পিটিয়ে আহত করা হয়। আহত মনু মিয়াকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠায় প্রশাসন। আর ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৫ জনকে আটক করে পুলিশ। তবে কারো নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

তবে হামলা বা কেন্দ্র দখলের চেষ্টার ঘটনায় প্রশাসনের কেউ বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

আহত রিকশা চালক মনু মিয়া কান্নায় ভেঙে পড়েন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বাড়ি করপাড়া বদরপুর গ্রামে। আমি ভাড়া নিয়ে এসেছি। ৫ জন যাত্রী ছিল। হঠাৎ করে একদল লোক আমার গাড়ি ভাঙচুর করে। আমার ডান হাতে লাঠি দিয়ে আঘাত করেছে। আমার হাত ভেঙে গেছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, রামগঞ্জে ৪ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। টাটা হলেন ইমতিয়াজ আরাফাত (আনারস), দেলোয়ার হোসেন দেওয়ান বাচ্চু (মোটরসাইকেল), ফয়েজ বক্স বাবুল (দোয়াত কলম) ও মো. মোশাররফ মুশু (ঘোড়া)। এ উপজেলায় ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান ও ৪ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

প্রসঙ্গত, পশ্চিম কাজিরখীল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন দেওয়ান বাচ্চুর (মোটরসাইকেল) কেন্দ্র। গত পৌরসভা নির্বাচনেও দেওয়ান বাচ্চুর ভাই দেওয়ান ফয়সাল একজন কাউন্সিলরের সমর্থন নিয়ে কেন্দ্রটি দখলের চেষ্টা করে। ওইসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে।

;

দেবহাটায় পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের ভোটগ্রহণে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আল ফেরদাউস আলফার পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার (২১ মে) ভোটগ্রহণের দিন উপজেলার দেবীশহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগে জানা যায়, মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মুজিবর রহমানের কর্মী-সমর্থকেরা ভোটকেন্দ্রে ঘেরাও করে রাখেন। এসময় হেলিকপ্টার প্রতীকের প্রার্থী আলফার এজেন্টরা ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে চাইলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। আর এর নেতৃত্ব দেন স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুজ্জামান।

এব্যাপারে দেবীশহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ফরিদ হোসেন বলেন, ভোটকেন্দ্রের বাইরে কী ঘটেছে, সেটা সমন্ধে অবগত নন তিনি।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমার কাছে হেলিকপ্টার প্রার্থীর কোনো এজেন্ট ফর্ম জমা দেননি। এজন্য বুথগুলোতে ওই প্রতীকের প্রার্থীর এজেন্ট নেই। তবে বিষয়টি সমন্ধে প্রার্থী অভিযোগ দেওয়ার পর এজেন্টদের আসতে বলা হয়েছে’।

এ ব্যাপারে হেলিকপ্টার প্রতীকের প্রার্থী আল ফেরদাউশ আলফা বলেন, ভোটকেন্দ্রে প্রভাব সৃষ্টি করতে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকেরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। শুধু দেবীশহর নয়, আরো অনেক জায়গাতে ভোটকেন্দ্র দখলের পাঁয়তারা করছেন মোটর সাইকেল প্রতিকের প্রার্থীর কর্মীসমর্থকেরা।

;