ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ভোটগ্রহণ শেষ, গণনার প্রস্তুতি/ছবি: সৈয়দ মেহেদী

ভোটগ্রহণ শেষ, গণনার প্রস্তুতি/ছবি: সৈয়দ মেহেদী

  • Font increase
  • Font Decrease

একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। রোববার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে ২৯৯ আসনে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। একটানা  বিকাল চারটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। এরেই মধ্যে ভোট গণনা শুরু হয়েছে।

নির্বোচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সঙ্গে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ভোটের লড়াইয়ে ভোটাররা যাদের পক্ষে রায় দেবেন তারাই আগামী পাঁচ বছরের জন্য সরকার গঠন করবেন।

সকাল থেকে রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘলাইন দেখা গেছে। এ সময় স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখা গেছে ভোটারদের। ভোটারদের নিরাপত্তা দিতে সতর্ক অবস্থানে ছিলো আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী। এবার নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সারাদেশে বিভিন্ন বাহিনীর প্রায় ছয় লাখ আট হাজার সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন। যানবাহন চলাচলের ওপর আরোপ করা হয়েছে বিধিনিষেধ।

তবে ভোট শুরু পর থেকে অনিয়ম, কারচুপি, এজেন্ট বের করে দেওয়ার অভিযোগ করছে বিএনপি। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পাল্টা হামলা অভিযোগ করেছে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেন, সামগ্রিক পরিস্থিতি বলে মন খারাপ করাতে চাই না। কিন্তু মিনিটে কল আসছে, যে ভাই আমাদের এখানে তো রাতেই (ভোট) হয়ে গেছে। সন্ধ্যার পরে থেকেই শুরু হয়ে গেলো। এগুলো দু:খজনক, লজ্জাজনক, আইনানুগভাবে এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

নির্বাচন কমিশনের দাবি, কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া ভোট গ্রহণ সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ হয়েছে।দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনারা কেএম নূরুল হুদার সাংবাদিকদের বলেন, সারাদেশে দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচনী পরিস্থিতি ভালো ছিলো। সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে। দুই-একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে।

সারাদেশে অনিয়মের অভিযোগ এনে ধানের শীষসহ বিভিন্ন দলের প্রায় অর্ধশতাধিক প্রার্থী ভোট বর্জন করেন। এছাড়া নির্বাচনী সহিংসতায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ প্রায় ১৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক। সহিংসতার কারণে কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।

এছাড়া এবার প্রথম সংসদ নির্বাচনে ছয় আসনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সারাদেশে স্বত:স্ফূর্তভাবে ইভিএমে ভোট প্রদান করতে দেখা যায় ভোটারদের। দৈবচয়নের ভিত্তিতে ছয়টি সংসদীয় আসন নির্ধারণ করে ইভিএমে ভোট গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ছয়টি আসনের মধ্যে ছিলো ঢাকা-৬, ঢাকা-১৩, চট্টগ্রাম-৯, রংপুর-৩, খুলনা- ২ আসন, সাতক্ষীরা-২ আসনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হয়।

জানা গেছে, নির্বাচনে ভোটার ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৫জন। আর মহিলা ভোটার ৫ কোটি ১৬  লাখ ৬৬ হাজার ৩১২ জন। ভোটে ৬৬ জন রিটার্নিং অফিসার ( দুইজন বিভাগীয় কমিশন ও ৬৪ জন জেলা প্রশাসক) দায়িত্ব পালন করেছেন। নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্র ৪০ হাজার ১৮৩। ভোকক্ষ ২ লাখ সাত হাজার ৩১২টি। ভোটে ৪০ হাজার ১৮৩জন প্রিসাইডিং অফিসার, দুই লাখ সাত হাজার ৩১২ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও ৪ লাখ ১৪ হাজার ৬২৪ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করেছেন।

ভোটে লড়েছেন প্রার্থী ১ হাজার ৮৬১

সব প্রক্রিয়া শেষে সংসদ নির্বাচনে ভোটের ব্যালটে ছিলো ১ হাজার ৮৬১ প্রার্থীর নাম; তাদের মধ্যে দলীয় প্রার্থী ১৭৩৩ জন; বাকি ১২৮ জন স্বতন্ত্র। আওয়ামী লীগ ও শরিকদের মিলিয়ে নৌকার ২৭২ জন প্রার্থী চূড়ান্ত লড়াইয়ে আছেন। তাদের বিপরীতে ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি ও শরিকদের প্রার্থী সংখ্যা ২৮২। স্বতন্ত্র প্রার্থী  ১২৮ জন।

দলগুলোর মধ্যে এলডিপির ৮ (ধানের শীষ ৪), জেপি ১১ (মহাজোট ২), সাম্যবাদী দল ২, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ৮ (ধানের শীষ ৪), সিপিবি ৭৪, আওয়ামী লীগ ২৬০ (নৌকা ২৭২), বিএনপি ২৫৭ (ধানের শীষ ২৮২), গণতন্ত্রী পার্টি ৬, ন্যাপ ৯, জাতীয় পার্টি ১৭৫ (মহাজোট ২৫), বিকল্পধারা ২৬ (নৌকা ৩), ওয়ার্কার্স পার্টি ৮ (নৌকা ৫), জাসদ ১১ (নৌকা ৩), জেএসডি ১৯ (ধানের শীষ ৪), জাকের পার্টি ৯০, বাসদ ৪৪, বিজেপি ৩ (ধানের শীষ ১), তরিকত ফেডারেশন ১৭ (নৌকা ১), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ২৪, বাংলাদেশ মুসলীম লীগ ৪৮, এনপিপি ৭৯, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম ৮ (ধানের শীষ ৩), গণফোরাম ২৮ (ধানের শীষ ৭), গণফ্রন্ট ১৩, পিডিপি ১৪, বাংলাদেশ ন্যাপ ৩, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ১১, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ১৮, কল্যাণ পার্টি ২ (ধানের শীষ ১), ইসলামী ঐক্যজোট ২৫, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ৫, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ২৯৮, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ২৫, জাগপা ৪, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ২৮, খেলাফত মজলিস ১২ (ধানের শীষ ২), বিএমএল ১, মুক্তিজোট ২, বিএনএফ ৫৭ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে রয়েছেন।

ভোটের মাঠে ৬ লাখ ৮ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য

ভোটে ভোটকেন্দ্র এবং নির্বাচনী এলাকায় প্রায় ৬ লাখ আট হাজার সেনাবাহিনী ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত ছিলো। এরমধ্যে পুলিশ প্রায় এক লাখ ২১ হাজার, আনসার প্রায় ৪ লাখ ৪৬ হাজার, গ্রাম পুলিশ প্রায় ৪১ হাজার। ভোটে ৩৮৯ উপজেলায় সেনাবাহিনীর ৪১৪ প্লাটুন (প্রতি প্লাটুনে ৩০ জন), ১৮ উপজেলায় নৌবাহিনীর ৪৮ প্লাটুন, ১২ উপজেলায় কোস্টগার্ডের ৪২ প্লাটুন (প্রতি প্লাটুনে ৩০ জন), বিজিবির ৯৮৩ প্লাটুন (প্রতি প্লাটুনে ৩০ জন), র্যা বের প্রায় ৬শ' প্লাটুন (প্রতি প্লাটুনে ৩০ জন), মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের প্রায় ২ হাজার প্লাটুন (প্রায় ৬৫ হাজার) দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও সারাদেশে জেলা ও মেট্রোপলিটন পুলিশের টহল দল নিয়োজিত।

ভোটের মাঠে ১ হাজার ৩২৮ জন অ্যাক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট:

ভোটের মাঠে ১৩শ' ২৮ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে আচরণবিধি প্রতিপালনের জন্য ৬৫২ জন অবশিষ্ট ৬৭৬ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোবাইল/ স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে নিয়োজিত ছিলেন।  এছাড়াও ৬৪০ জন জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনে ১২২টি ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটিতে ২৪৪জন দায়িত্ব পালন করেছেন।

নির্বাচনে ৮১টি প্রতিষ্ঠানের ২৫ হাজার ৯০০ জন দেশীয় পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণ করেছেন। এছাড়াও ফেমবোসা, এএইএ, ওআইসি ও কমনওয়েলথ হতে আমন্ত্রিত ও অন্যান্য বিদেশী পর্যবেক্ষক ৩৮ জন, কূটনৈতিক ও বিদেশী মিশনের ৬৪ জন কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশস্থ দূতাবাস, হাইকমিশন বিদেশী সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশী ৬১ জনসহ মোট ১৬৩ জন দায়িত্ব পালন করবেন।

ফলাফল ঘোষণা

ফলাফল কেন্দ্রেই গণনা করা হবে। প্রিজাইডিং অফিসার ফলাফল গণনার পর উপস্থিত পোলিং এজেন্টদের কাছে হস্তান্তর করবেন। এরপর তিনি ফলাফল ও মালামাল সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের কার্যালয়ে এসে লিখিতভাবে জমা দেবেন। সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার সেই ফলাফল রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠাবেন। পরে রিটার্নিং অফিসাররা আরএমএস -এর মাধ্যমে (ইসির ইন্টারন্যাল সাইট) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠাবেন। সচিবালয়ে ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। সেখান থেকে ৮টি বিভাগের জন্য ৮টি মনিটর থাকবে। সেগুলো আমরা মনিটরে দেখাবো। এই ৮টি বিভাগকে একত্র করে একটি মনিটরে দেখানো হবে। আরও একটি মনিটর থাকবে রাজনৈতিক দলভিত্তিক। এই ১০টি মনিটরের মাধ্যমে ফলাফল দেখানো হবে। ওখানে একটি মঞ্চ থাকবে, সেখান থেকে ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণাও করা হবে।

গাইবান্ধা- ৩ আসনে একজন প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে ভোট স্থগিত করে পুনঃতফসিল দেয়া হয়েছে। এই আসনে ২৭ জানুয়ারি ভোটের তারিখ নির্ধারণ করেছে ইসি।

   

উপজেলা নির্বাচন: ১৬০ উপজেলার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন মঙ্গলবার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
১৬০ উপজেলার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন মঙ্গলবার

১৬০ উপজেলার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন মঙ্গলবার

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপের ভোটে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল)। অফিস চলাকালীন সময়ে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই ধাপে ১৬০ উপজেলা ভোটে দুই হাজার ৫৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৭৩০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭৬৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৬২ জন। বাছাই-আপিল শেষ হওয়ায় বৈধ প্রার্থীদের কেউ নির্বাচন থেকে সরে যেতে চাইলে মঙ্গলবারই তার শেষ সময়।

এই ধাপের নির্বাচনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ভোটারের সংখ্যা ৫ লাখের বেশি, যেখানে সেখানে একাধিক সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োজিত রয়েছেন।

তফসিল অনুযায়ী, চূড়ান্ত প্রার্থীদের মাঝে রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ২ মে। আর ভোটগ্রহণ হবে ২১ মে।

নির্বাচন কমিশন এবার চার ধাপে উপজেলা নির্বাচন করছে। প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় ভোট হবে আগামী ৮মে। তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৬ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১ ও চতুর্থ ধাপে দু’টি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে।

;

‘নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করলে, গুজব ছড়ালে রেহাই নেই’



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন উপজেলা পরিষদের নির্বাচন কেউ প্রশ্নবিদ্ধ করলে বা কোনো ধরনের গুজব ছড়ালে রেহাই নেই বলে সতর্ক করেছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি)ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।

তিনি বলেন, আগামী ৮ মে চট্টগ্রামের সন্ধীপ, মিরসরাই ও সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো আসন্ন উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে উপহার দেওয়া হবে। নির্বাচনে প্রত্যেক প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে হবে, অন্যথায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন জেলা প্রশাসক।

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আচরণবিধি মেনেই নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। আচরণবিধি পর্যবেক্ষণে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবে। কেউ জাল ভোট দিতে আসলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর এজেন্টদের চ্যালেঞ্জ করতে হবে। তাদের নিরাপত্তা আমরা দেব। গত সংসদ নির্বাচনে জাল ভোট দেওয়ার অপরাধে জেলে পাঠানো হয়েছিল। জাল ভোট প্রদান, কেন্দ্র দখল বা অন্যান্য অজুহাতে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে কেউ কোনো ধরনের গুজব ছড়ালে ছাড় নেই। আমাদের দৃষ্টিতে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র বলতে কিছু নেই। প্রার্থীরা যদি মনে করেন আছে, তাহলে তালিকা দিলে যাচাই-বাছাই করে দেখব, আশঙ্কার জায়গা থাকবে না।’

নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সবসময় পাশে থাকবে বলে প্রার্থীদের আশ্বস্ত করেছেন জেলা প্রশাসক। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা আইনের স্বপক্ষে থেকে যে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে।

যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকার কারণে সন্দ্বীপে নির্বাচনের আগের দিন ব্যালট পেপার পাঠানো হবে বলে জানান আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। তবে অন্যান্য উপজেলার কেন্দ্রগুলোতে ভোটের দিন সকালে ভোট গ্রহণের আগে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের বিধিবিধান বা পরিপত্র মেনে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোট কেন্দ্রে বা বাইরে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা যাবে না। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে যা যা করা দরকার তাই করব। কোনো অপশক্তির কাছে আমরা মাথা নত করব না।’

জেলা প্রশাসনের উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) লুৎফুন নাহার বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি মানতে হবে।’

আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী বলেন, ‘নির্বাচনে কেউ জয়ী হবে, কেউ পরাজিত হবে-এই বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। সকলের সম্মিলিত উদ্যোগে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে চাই। নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে সবাই আপনাদের পাশে আছে। নির্বাচনী এলাকায় অনুমতি ব্যতীত কোনো যানবাহন চলবে না। ভোটারদের কেন্দ্রে আনা-নেওয়ার জন্য যানবাহন ভাড়া করাও অবৈধ। আগামী ৮ মে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা ৬ মে রাত ১২টায় বন্ধ হয়ে যাবে। কোনো পথসভা যাতে জনসভায় রূপ না নেয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’

উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ‘জাল ভোট, কেন্দ্র দখল বা অন্যান্য অজুহাতে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ নেই।’

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট একেএম গোলাম মোর্শেদ খান বলেন, ‘একজন প্রার্থীর পোস্টারের ওপর অন্য প্রার্থীর পোস্টার লাগানো যাবে না। নির্বাচনী আচরণবিধি মানতে হবে, অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও প্রার্থীরা বক্তব্য দেন।

;

আচরণবিধি ভঙ্গ হলেই প্রার্থিতা বাতিল: ইসি হাবিব



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিন খান (অব.) বলেছেন, ‘ভোটকেন্দ্রে যদি আচরণ বিধি ভঙ্গ হয়, বাধাপ্রাপ্ত হয়, তাহলে প্রয়োজনে প্রার্থিতা বাতিল করা হবে। এটা একদম পরিষ্কার কথা।’

সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে চুয়াডাঙ্গায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, কোনো প্রার্থীর যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে লিখিত আকারে রিটার্নিং তথ্য-প্রমাণ সহকারে অফিসারকে দেন। কেউ গন্ডগোল করছে ভিডিও করে ফেলেন, কেউ বাধা দিচ্ছে ভিডিও করে ফেলেন। যদি আচরণ বিধি ভঙ্গ হয়, বাধাপ্রাপ্ত হয়, তাহলে প্রয়োজনে তাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হবে। এটা একদম পরিষ্কার কথা।

আহসান হাবিব খান বলেন, প্রত্যেক প্রার্থী আমাদের কাছে সমান। সেই প্রার্থী যদি একটা উঁচু দরের ব্যক্তির ভাই হয়, বোন হয় অথবা সেই প্রার্থী যদি একজন জেনারেল সাহেব হন, অথবা ওই প্রার্থী যদি একজন ইন্ডাস্ট্রিয়াল হন, আমির-ফকির যেই হোক, আমাদের দৃষ্টিতে সকল প্রার্থীই সমান। আমরা ভালোকে ভালো বলব, খারাপকে খারাপ বলন। কোনো পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ আমাদের কারোর মাঝে পাবেন না।

তিনি বলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে প্রার্থীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংখ্যা বেশি চেয়েছেন। আমরা বলেছি নির্বাচন সুষ্ঠু করতে যত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাগে, সব দিয়ে দেব। আমরা যে পর্যায়ে নির্বাচনটাকে নিয়ে গিয়েছি, সেখান থেকে কিন্তু আর নিচে নামব না, নামতে পারব না। দিন দিন কিন্তু আরও উপরের দিকে যেতে হবে। এটা আমাদের দেশের ভাবমূর্তি, আপনার অঞ্চলের ভাবমূর্তি, জনগণের ভাবমূর্তি, বিদেশের কাছে দেশের ভাবমূর্তি।

ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দিলেই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও মন্তব্য করেছেন- ইসি আহসান হাবিব।

তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে সাংবাদিকদের কোনো অনুমতি লাগবে না। সাংবাদিকরা ভোটকক্ষে যেতে পারবেন, ভিডিও করতে পারবেন। তবে লাইভ করতে হলে কক্ষের বাইরে বারান্দায় এসে করেন, কোনো অসুবিধা নেই। কারণ এই সাংবাদিকরাই কিন্তু আমাদের তৃতীয় চোখ-কান হিসেবে কাজ করছে।

ব্যালট পেপারের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা সিদ্ধান্তই নিয়েছি এখন থেকে যত নির্বাচন হবে, সব নির্বাচনে ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট যাবে।

প্রেস ব্রিফিংয়ের আগে বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব)।

;

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা নির্বাচন স্থগিত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মারা যাওয়ার কারণে রোববার (২৮ এপ্রিল) নির্বাচন কমিশনের উপসচিব আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে এই উপজেলার সব পদের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

জানা যায়, গোপালপুর উপজেলা পরিষদের বর্তমান নারী ভাইস চেয়ারম্যান মরিয়ম আখতার মুক্তা এবারও একই পদের জন্য প্রার্থী হয়েছিলেন। সম্প্রতি তিনি ময়মনসিংহে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখানে গত শুক্রবার অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। দ্রুত তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মরিয়ম আক্তার মুক্ত মারা যান।

নির্বাচন স্থগিতের চিঠিতে বলা হয়েছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে ৮ মে গোপালপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে বৈধ প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় সব পদের নির্বাচন স্থগিত করা হলো। পুনঃতফসিল ঘোষণার মাধ্যমে চতুর্থ ধাপে ৫ জুন ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তাছাড়া, নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ইতঃপূর্বে যারা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন তাদের নতুন করে মনোনয়ন দাখিলের প্রয়োজন হবে না এবং পূর্বে মনোনয়নপত্র দাখিলকারীগণকে প্রত্যাহারের সুযোগ দেওয়া যাবে। গোপালপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে পূর্বের মনোনয়ন বহাল থাকবে। উক্ত পদে বিদ্যমান প্রার্থীদের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গোপালপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পাঁচ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুই জনের মনোনয়ন পত্র বৈধ ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং অফিসার। এর মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান পদে একমাত্র প্রার্থী মারুফ হাসান জামী।

গোপালপুর উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ২৮ হাজার ৭১ ভোট। এদের মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ১৪ হাজার ৬৬ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ১৪ হাজার ৪ জন।

;