সংসদে ফেরার লড়াইয়ে বিএনপি
সকল জল্পনা কল্পনা শেষে চূড়ান্ত ভোটের লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছেন দেশের ৩৯টি রাজনৈতিক দলের এক হাজার ৮৪৮ জন প্রার্থী। যাদের মধ্যে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অস্তিস্ত্ব টিকিয়ে রাখতে এবং বিএনপি সংসদে ফিরতে ব্যাকুল।
রোববার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে দেশের সব ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ১০ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ৪৮০ জন ভোটার। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ২৫ লাখ ৪৭ হাজার ৩২৯ জন এবং নারী ভোটার ৫ কোটি ১৬ লাখ ৪৩ হাজার ১৫১ জন।
এদিকে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তরুণ ভোটারদের প্রথম ভোট ধানের শীষে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সাথে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী জামায়াত ইসলামীর ২২ নেতাকে ধানের শীষের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে দলটি। এ বিষয়েটিকে তরুণরা কিভাবে নেবে সেটার প্রতিফলন দেখা যাবে নির্বাচনের ফলাফলে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। এরপর থেকে জাতীয় সংসদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বিএনপি ও তার শরিক দলগুলো। ফলে অনেকটা অস্তিত্ব সংকটে পরে দলটি। যার প্রভাব পড়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গণসংযোগেও।
দেশের সর্বত্র আওয়ামী লীগ ও তার শরীক দলগুলোর প্রার্থীরা যখন জনগণের সাথে গণসংযোগে ব্যস্ত ছিল তখন লোকচক্ষুর আড়ালেই ছিল বিএনপির প্রার্থীরা। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে এবার নির্বাচনী প্রচারণার মূল হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে বিএনপি।
সামাজিক যোগাগযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়েছেন বিএনপির প্রার্থীরা। তবে দলটির বিরুদ্ধে অনলাইনে গুজব ছড়ানোরও অভিযোগ আছে।
অন্যদিকে, নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় জামায়াত ইসলামীর ২২ নেতা ধানের শীষে নির্বাচন করছেন, যা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও চলছে সমালোচনা। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বিএনপি ও জামায়াতের গাঁটবন্ধনকে অনেকে নেতিবাচকভাবে নিয়েছে।
এদিকে বিএনপির হাইকমান্ড আগে সংসদে জায়গা করে নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন নেতাকর্মীদের। তবে টানা একযুগ পর বিএনপি ভোটের চূড়ান্ত যুদ্ধে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে কতটা সফল হবে সেটা জানতেই অপেক্ষা করতে হবে রোববার পর্যন্ত।
প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ২৪২টি এবং ৫৮টি আসনে জোট ও শরীক দলগুলো প্রার্থী দিয়েছে। যারা সবাই ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। ১৯৯১ ও ২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে সরকার গঠন করে দলটি।