রংপুরে কারা পরবেন জয়ের মালা
রাত পোহালেই ভোট। একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণে প্রস্তুত রংপুর। বড় সাধের বড় এই ভোটযুদ্ধে রংপুর জেলার সংসদীয় ছয়টি আসনের ৪২ প্রার্থীও প্রস্তুত। এখন শুধু অপেক্ষা ৩০ ডিসেম্বরের মূল্যবান সম্পদ ভোটারদের, যাদের দেওয়া ভোটই নির্ধারণ করবে, কারা পরবেন জয়ের মালা।
এবার রংপুর জেলায় ছয়টি আসনে নৌকা-লাঙ্গল-ধানের শীষের প্রতীকের প্রার্থীসহ ৪২ জন রয়েছেন ভোটযুদ্ধে। তাদের মধ্যে রংপুর-১, রংপুর-৩ ও রংপুর-৬ এ তিনটি আসনে মহাজোটের একক প্রার্থী রয়েছে। বাকি তিনটিতে নৌকা-লাঙ্গলের উন্মুক্ত লড়াই।
এক দশকেরও বেশি সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ধানের শীষ প্রতীকে ছয় প্রার্থীকে মাঠে রেখেছেন। ধানের শীষ নিয়ে ভোটে নামা ছয় প্রার্থীর মধ্যে দুই প্রার্থীকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা অচেনা মুখ বলে দাবি করায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ ভোটারদের মাঝে। যদিও এ নিয়ে প্রার্থীদের মাথাব্যথ্যা নেই।
এদিকে লাঙ্গলের দুর্গখ্যাত রংপুরে নৌকার অধিপত্য দিন দিন বেড়ে চলেছে। এ কারণে এবারো ফুরফুরে মেজাজে আছে নৌকার প্রার্থীরা। তবে ভোটের মাঠের উত্তপ্ত হাওয়া বলেছে, রংপুরের ছয়টি আসনের তিনটিতে লড়াই হবে নৌকা-লাঙ্গল-ধানের শীষের। যদিও মাঠ জরিপে নৌকার প্রার্থীরাই এগিয়ে আছেন।
অন্যদিকে বাকি তিনটিতে সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন মহাজোট মনোনীত জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, জাপা চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ ও জাপা মহাসচিব এলজিইডি প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা।
রংপুরে ভোটযুদ্ধে মাঠে থাকা ৪২ প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের চার জন, জাতীয় পার্টির পাঁচ, বিএনপির ছয় জন প্রার্থী রয়েছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ছয়, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চার, খেলাফত মজলিসের এক, জাকের পার্টির চার, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির এক, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি এক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (ইনু) দুই, বিকল্পধারার এক, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল- বাসদের দুই, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির এক, বিএনএফ’র দুই ও স্বতন্ত্র রয়েছেন দুই জন প্রার্থী।
রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া ও আংশিক সিটি) আসন: মসিউর রহমান রাঙা (মহাজোট-লাঙল), শাহ্ মোঃ রহমতুল্লাহ (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট-ধানের শীষ), মোক্তার হোসেন (ইসলামী আন্দোলন-হাতপাখা), ইশা মোহাম্মদ সবুজ (এনপিপি-আম), সিএম সাদিক (স্বতন্ত্র- সিংহ)।
রংপুর-২ (বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ) আসন: আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক (আ.লীগ-নৌকা), আসাদুজ্জামান চৌধুরী সাবলু (জাপা-লাঙল), মোহাম্মদ আলী সরকার (বিএনপি-ধানের শীষ), আনিছু ইসলাম রহমান মন্ডল (স্বতন্ত্র-সিংহ), মোঃ আশরাফ আলী (ইসলামী আন্দোলন-হাতপাখা), কুমারেশ চন্দ্র রায় (জাসদ-মশাল), হারুন অর রশিদ (বিকল্পধারা-কুলা), আশরাফ-উজ-জামান (জাকের পার্টি-গোলাপ ফুল), জিল্লুর রহমান (বিএনএফ-টেলিভিশন), ওয়াসিম আহমেদ (এনপিপি-আম)।
রংপুর-৩ (সদর ও সিটি কর্পোরেশন) আসন: হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ (মহাজোট-লাঙল), রিটা রহমান (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট-ধানের শীষ), আমিরুজ্জামান পিয়াল (ইসলামী আন্দোলন-হাতপাখা), সাব্বির আহম্মেদ (পিডিপি-বাঘ), সাখাওয়াত রাঙ্গা (জাসদ-মশাল), আনোয়ার হোসেন বাবলু (ওয়াকার্স পার্টি-কোদাল), আলমগীর হোসেন আলম (জাকের পার্টি-গোলাপ ফুল), তৌহিদুর রহমান মন্ডল (খেলাফত মজলিস-দেওয়াল ঘড়ি) ও ছামসুল হক (এনপিপি-আম)।
রংপুর-৪ (পীরগাছা ও কাউনিয়া) আসন: টিপু মুনশি (আ.লীগ-নৌকা), এমদাদুল হক ভরসা (বিএনপি-ধানের শীষ), মোস্তফা সেলিম বেঙ্গল (জাপা-লাঙল), মাওলানা বদিউজ্জামান (ইসলামী আন্দোলন-হাতপাখা) ও আব্দুস সাদেক মিয়া (বাসদ-মই), লায়লা আঞ্জুমান আরা (জাকের পার্টি-গোলাপ ফুল)।
রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসন: এইচএন আশিকুর রহমান (আ.লীগ-নৌকা), শাহ সোলায়মান আলম ফকির (ঐক্যফ্রন্ট-ধানের শীষ), এসএম ফখর উজ জামান জাহাঙ্গীর (জাপা-লাঙল), শফিকুল ইসলাম ভোলা মন্ডল (ইসলামী আন্দোলন-হাতপাখা), শামীম মিয়া (জাকের পার্টি-গোলাপ ফুল) ও মমিনুল ইসলাম (বাসদ-মই)।
রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসন: ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী (মহাজোট-নৌকা), সাইফুল ইসলাম (বিএনপি-ধানের শীষ), বেলাল হোসেন (ইসলামী আন্দোলন-হাতপাখা), হুমায়ুন এজাজ (এনপিপি-আম), অধ্যাপক কামরুজ্জামান (কমিউনিস্ট পার্টি-কাস্তে), এবিএম মাসুদ সরকার মজনু (বিএনএফ-টেলিভিশন)।