খুলনা বিভাগে ৬০ শতাংশ ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ



মানজারুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
খুলনা বিভাগে ৬০ শতাংশ ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। ছবি: প্রতীকী

খুলনা বিভাগে ৬০ শতাংশ ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। ছবি: প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

খুলনা বিভাগের ৩৬টি সংসদীয় আসনের চার হাজার ৫২৫ কেন্দ্রের মধ্যে দুই হাজার ৭৪২টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। এ অঞ্চলের ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্র প্রায় ৬০ শতাংশ।

সম্প্রতি খুলনা রেঞ্জ কার্যালয় থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ভোটকেন্দ্র ও ভোটার সম্পর্কে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে পাঠানো প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। যদিও এ তথ্য সংযোজন-বিয়োজন হতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ এসব কেন্দ্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কী পরিমাণ সদস্য মোতায়েন থাকবে তা এখনো জানায়নি নির্বাচন কমিশন।

সর্বশেষ গত ১৫ মে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েনের পরও কেন্দ্র দখল ও জাল ভোটের অভিযোগ উঠে। তার আগে, উপজেলা পরিষদ ও ইউপি পরিষদ নির্বাচনেও ব্যাপক অভিযোগ ছিল। দশ বছর পর অংশগ্রহণমূলক এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়েই ভাবছে সবাই।

সূত্রমতে, কেসিসি নির্বাচনে ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ২২৬টিকে ঝুঁকিপূর্ণ এবং ৬৩টিকে সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে তাদের প্রতিবেদনটি পাওয়া যায়নি। প্রসঙ্গত, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রসমূহকে গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিমুক্ত কেন্দ্রকে সাধারণ ভোট কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের সূত্রমতে, খুলনা জেলার চারটি আসনে গড়ে প্রায় ৭০ শতাংশ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। এ চারটি আসনের মোট কেন্দ্রের ২৮৩টি ঝুঁকিপূর্ণ ও ১৯৩ কেন্দ্র সাধারণ। তার মধ্যে খুলনা-১ আসনের বটিয়াঘাটায় ৩৬ ও দাকোপে ২৯, খুলনা-৪ আসনের রূপসায় ৩৪, তেরখাদায় ২৪ ও দিঘলিয়ায় ২৪, খুলনা-৫ আসনের ফুলতলায় ৯ ও ডুমুরিয়ায় ৩৬টি, খুলনা-৬ আসনের পাইকগাছায় ৩৪ ও কয়রায় মাত্র পাঁচটি বাদে ৫৭টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।

এছাড়া, বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসনের ৪৬৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৫৮টিই ঝুঁকিপূর্ণ। তারমধ্যে বাগেরহাট-১ আসনের চিতলমারীতে ১৭, মোল্লাহাটে ২৪ ও ফকিরহাটে ৩৯টি, বাগেরহাট-২ আসনের সদরে ৭৩ ও কচুয়ায় ১৪টি, বাগেরহাট-৩ আসনের রামপালে ৪১ ও মংলায় ৩০টি, বাগেরহাট-৪ আসনের মোড়েলগঞ্জে ৯২ ও শরণখোলায় ২৮টি ঝুঁকিপূর্ণ ভোট কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে।

সাতক্ষীরার চারটি আসনে ৫৯৭টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৯০টিই ঝুঁকিপূর্ণ। তারমধ্যে সাতক্ষীরা-১ আসনের তালায় ৪৭ ও কলারোয়ায় ৬৩টি, সাতক্ষীরা-২ আসনের সদরে ১০৭টি, সাতক্ষীরা-৩ আসনের আশাশুনিতে ৭৩, দেবহাটায় ৩০ এবং সাতক্ষীরা-৪ আসনের শ্যামনগরে ৭৬ ও কালীগঞ্জে ৬৩টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ।

যশোরের ছয়টি সংসদীয় আসনে ৭৯৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৬৩টিই ঝুঁকিপূর্ণ। তারমধ্যে যশোর-১ আসনের শার্শা উপজেলায় ৩২, যশোর-২ আসনের চৌগাছায় ৩৫ ও ঝিকরগাছায় ৪৬, যশোর-৩ আসনের সদরে ৯৩, যশোর-৪ আসনের বাঘারপাড়ায় ২৫ ও অভয়নগরে ৪৩, যশোর-৫ আসনের মনিরামপুর উপজেলায় ৩৫ এবং যশোর-৬ আসনে কেশবপুর উপজেলায় ৪০টি ভোটকেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ।

নড়াইলের দু’টি সংসদীয় আসনের ২৪২টি কেন্দ্রের ১৬৫টিই ঝুঁকিপূর্ণ। তার মধ্যে নড়াইল-১ আসনের সদরে ৬৮ ও কালিয়ায় ১৬ এবং নড়াইল-২ আসনের লোহাগড়ায় ৬৩ ও নড়াগাতিতে ১৮টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ।

তাছাড়া ঝিনাইদহের ৫৭৮টির মধ্যে ২৫০টি, মাগুরার ২৭৭টির মধ্যে ১৮৭টি, কুষ্টিয়ার ৫৬৫টির মধ্যে ৩২৩, চুয়াডাঙ্গার ৩৩৪টির মধ্যে ১৭২টি, মেহেরপুরে ১৮৯টির মধ্যে ১৫১টি ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ।

এমন বাস্তবতায় ২০ দলের খুলনা মহানগর সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম মঞ্জু বার্তা২৪.কমকে জানান, পূর্বের অভিজ্ঞতা বলে, এ অঞ্চলে নির্বাচনে সন্ত্রাসীরা প্রভাব বিস্তার করে। নির্বাচনের আগে যদি চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার না করা হয় তাহলে ২০ দল তথা ঐক্যজোটের প্রার্থীদের প্রচারণা ও নিরাপত্তার সংকট সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে ও নিরাপদে ভোট দিতে পারবে না। তাই সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রসীদের গ্রেফতার করতে হবে বলে দাবি করেন তিনি।

অপরদিকে অস্ত্র ও সন্ত্রাসীদের ধরার আহবান জানিয়ে খুলনা মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক মিজানুর রহমান মিজান বলেন, নির্বাচনে এখন লেভেল প্লেইং ফিল্ড বিরাজ করছে। নির্বাচনী পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে বিএনপি-জামায়াত জোট আবারো আগুন সন্ত্রাস ও ভোটারদের জন্য ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করতে ষড়যন্ত্র করছে। তাই যাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার জন্য মামলা রয়েছে তাদের গ্রেফতারে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

কেএমপি’র মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সোনালী সেন জানান, নির্বাচন পূর্ববর্তী, নির্বাচনকালীন ও নির্বাচন পরবর্তী আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সচেষ্ট খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ। ইতোমধ্যেই নগরী ও নগরীর সীমান্তবর্তী এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে। নিয়মিত চেক পোস্টের সংখ্যা দ্বিগুণ করা হয়েছে। বর্তমানে মহানগরী এলাকায় ৩৪টি চেকপোস্ট পরিচালিত হচ্ছে। পাশাপাশি মহানগরী এলাকায় ৭৯ শতাংশ ভোটকেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে এর আশপাশে সাদা পোশাকে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

খুলনার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন জানান, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন প্রতিরোধে নগরীতে ১৭ জন ম্যাজিস্ট্রেটের অধীন মোবাইল কোর্ট গঠন করে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি খুলনা-২ আসনের যে ১৫৭টি কেন্দ্রে ইভিএমএর মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে সেসব কেন্দ্রে ৩ জন করে সেনা সদস্য মোতায়েনের বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। ফলে এ অঞ্চলে নির্বাচনকালীন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

   

আমরা কোনো বেকায়দায় নেই: সিইসি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, ফাইল ছবি

ছবি: সংগৃহীত, ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

মন্ত্রী,এমপিদের প্রভাব, আত্মীয়-স্বজনের প্রার্থিতা ও আচরণবিধি মানাতে গিয়ে নানা ধরনের অভিযোগের মধ্যে কোনোভাবে বেকায়দায় নেই বলে দাবি করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আওয়াল।

মঙ্গলবার (৭ মে) সকালে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।

মন্ত্রী এমপিদের প্রভাব, আত্মীয়-স্বজনের প্রার্থিতা ও আচরণবিধি মানাতে গিয়ে আপনারা কোনো বেকাদায় আছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, বেকায়দায় থাকার তো প্রশ্নই ওঠে না! আমরা কোনো বেকায়দায় নেই। এটা একটা ভালো দিক। রাজনৈতিক সদিচ্ছা যখন বিকশিত হয়েছে, স্পষ্ট হয়েছে, সেটা নির্বাচনকে অবাধ নিরপেক্ষ করার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।

তারপরেও যদি বলেন, কোনো সংসদ সদস্য প্রভাব বিস্তার করছে কি না, যদি করে থাকেন অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করি। ভোটের দিন আমরা সতর্ক থাকবো। কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং করবো।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী অনেককে নিবৃত্ত করতে পেরেছি। হয়ত-বা অনেকে এলাকায় আছেন। সরকারের তরফ থেকে যতদূর দেখেছি, দলীয়ভাবে হোক বা সরকারের পক্ষ থেকে হোক, যাতে নির্বাচনটা অবাধ, নিরপেক্ষ হয়, কেউ যেন প্রভাব বিস্তার না করেন, সে বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্তটা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রার্থীদের সম্পর্কে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের সুযোগ থাকলেও দলীয় মনোনয়ন না থাকায় স্বতন্ত্র হয়ে লড়ছেন প্রার্থীরা। এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। দেখা যাক, কতটুকু হয়!

প্রভাব বিস্তার প্রসঙ্গে সিইসি কাজী হাবিবুল আওয়াল বলেন, প্রভাব বিস্তারের কারণে কিছু কিছু অ্যাকশন নিয়েছি। বিভিন্ন ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করার জন্য একজনকে ডাকিয়ে এনে বক্তব্য নিয়েছি, প্রার্থিতা বাতিল করেছি।

সিইসি জানান, মাঠ পযায়ের পরিস্থিতি প্রতিদিনই সবসময় খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। এটা নিশ্চিত করতে হবে, নির্বাচনটা যেন অবাধ, নিরপেক্ষ হয়। বিশেষ করে নির্বাচনের দিন কেউ যেন ভোটকেন্দ্রে অনুপ্রবেশ করতে না পারেন এবং সেখানে যেন অনিয়ম না হয়, সে বার্তাটি রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৮ মে) দেশের ৪টি ৯৫ উপজেলার মধ্যে প্রথম ধাপে ১শ ৪০টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ২২টি উপজেলায় ইভিএমে হবে।

সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পযন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।

এই নির্বাচনে সাধারণ প্রতিটি কেন্দ্রে ১৭ জন করে এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ জন আর পার্বত্য এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে অন্তত ২১ জন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্য নিয়োজিত থাকবেন।

দেশের ৪টি ৯৫টি উপজেলার মধ্যে চার ধাপে ৪টি ৭৬টি উপজেলায় নির্বাচনের আয়োজন করেছে নির্বাচন কমিশন। ১৯টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচনের সময় হয়নি। পরবর্তীতে সে সব পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

;

দুর্গম কেন্দ্রগুলোতে হেলিকপ্টারযোগে পাঠানো হচ্ছে নির্বাচনী সরঞ্জাম



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,রাঙামাটি
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যদিয়ে রাঙামাটির চার উপজেলায় নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো হচ্ছে। মঙ্গলবার (৭ মে) সকাল হতে জেলা নির্বাচন অফিস থেকে নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে দুর্গম ভোটকেন্দ্রগুলোতে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পাঠানোর কর্মকাণ্ড চলছে।

জুরাছড়ি উপজেলা সদরের কয়েকটি ভোটকেন্দ্র ও বরকলের দুইটি ভোটকেন্দ্রে মঙ্গলবার সকাল থেকে ভোটগ্রহণ সরঞ্জাম ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্স, স্ট্যাম্প প্যাড এবং আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম পাঠানো শুরু হয়।

এরআগে সোমবার সকালে জেলার জুরাছড়ির দুর্গম ভোটকেন্দ্রগুলোতে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো হয়। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারযোগে যক্ষ্মা বাজার আর্মি ক্যাম্প থেকে উপজেলার সাতটি দুর্গম ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম ও কর্মকর্তাদের পাঠানো শুরু হয়। মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ সব কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম ও ভোটকর্মীদের পাঠানো হয়ে যাবে বলে নির্বাচন অফিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

জুরাছড়ি ও বরকল উপজেলায় হেলিসর্টি ভোটকেন্দ্র নয়টি। এরমধ্যে জুরাছড়ির সাতটি ও বরকলে দুইটি ভোটকেন্দ্র। হেলিসর্টি ভোটকেন্দ্রে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে নির্বাচনী সরঞ্জাম ও ভোট কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়।

এসব এলাকায় সড়ক ও নৌ-পথে যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় হেলিকপ্টার ব্যবহার করে ইসি। ৮ মে ভোটগ্রহণ ও ফলাফল গণনা শেষে পুনরায় নির্বাচনী কর্মকর্তারা ফিরে আসবেন বলে জানিয়েছে জেলা নির্বাচন অফিস।

নির্বাচনের রির্টানিং কর্মকর্তা ও রাঙামাটির সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মনির হোসেন জানান, প্রথম ধাপে ৮ মে ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে চারটি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দুর্গম এলাকার কথা বিবেচনা করে আগেই নির্বাচন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ব্যালেট পেপার এবং অন্যান্য সরঞ্জাম পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে রাঙামাটি সদর, বরকল, কাউখালী ও জুরাছড়িতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামীকাল ৮ মে। রাঙামাটির চার উপজেলায় মোট প্রার্থী হয়েছেন ৩১ জন।

এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১২ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কেবল কাউখালীতে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট হচ্ছে না।

;

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নিজের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লালমনিরহাট
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

আগামী ৮ মে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় অনুষ্ঠিত হবে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার শেষদিন মঙ্গলবার (৭ মে)।

এদিকে, নিজের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পছন্দের প্রার্থীর প্রতীকে প্রকাশ্যে ভোট চাইলেন নবনির্বাচিত লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক শ্যামল। এ ঘটনায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন তার বিরুদ্ধে।

সোমবার (৬ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নব নির্বাচিত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের শপথ বাক্য পাঠ করান। ঢাকা থেকে ফিরে এর পরের দিনই মঙ্গলবার (৭ মে) সরাসরি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন আবু বকর সিদ্দিক শ্যামল। সেখানেই তার পছন্দের প্রার্থী মশিউর রহমান মামুনের ‘ঘোড়া’ মার্কায় ভোট চান তিনি।

এ ঘটনার পর প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহানা ফেরদৌসী সীমা ও প্রতিপক্ষ প্রার্থী লিয়াকত হোসেন বাচ্চু নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন।

এদিকে, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বড়খাতা, ফকিরপাড়া, সানিয়াজান ও গড্ডিমারী ইউনিয়নের সবকটি কেন্দ্রসহ উপজেলার অধিকাংশ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ দাবি করেন তারা।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, যারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জাল ভোট দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চান, তাদের হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে রাজপথে থেকে কাজ করে যাবেন। আজ থেকে একটি কেন্দ্রেও জাল ভোট দেওয়ার ক্ষমতা তাদের থাকবে না। আর যারা জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করবেন, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

মশিউর রহমান মামুনের পক্ষে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, পাঁচটি বছর তিনি ক্ষমতায় ছিলেন। উপকার কারো না করতে পারলেও কখনো ক্ষতি করেননি তিনি। আর যারা প্রার্থী হয়েছেন, তারা উপকারের থেকে ক্ষতি করবেন বেশি। বিশেষ করে মামলা হামলায় নিষ্পেষিত করবেন তারা। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনজন প্রার্থী আওয়ামী লীগের। এর মধ্যে মশিউর রহমান মামুনের বাবা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ২৩ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই, মশিউর রহমান মামুনের শান্তির প্রতীক ‘ঘোড়া’ মার্কায় বিপুল ভোট দেবেন।

তিনি বলেন, আমি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। আমার প্রার্থী বিজয়ী হলে হাতীবান্ধায় প্রতিটি ইউনিয়নে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগবে।

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের এ বক্তব্যের প্রতিবাদে হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ‘কাপ-পিরিচ’ মার্কার প্রার্থী লিয়াকত হোসেন বাচ্চু বার্তা২৪.কমকে বলেন, জনপ্রতিনিধি হয়ে কখনোই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শপথ গ্রহণ করেই ভোট চাইতে পারেন না। অবশ্যই এ বিষয়ে আমি রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দাখিল করবো।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস মার্কার প্রার্থী শাহানা ফেরদৌসী সীমা বলেন, নবনির্বাচিত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল সংবর্ধনার নামে সেখানে উপজেলা পরিষদের প্রার্থী মশিউর রহমান মামুনের পক্ষে ভোট চেয়েছেন। অবশ্যই এটি ভোটকে প্রভাবিত করবে। তাই, বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে তদন্ত করে দেখার অনুরোধ করছি।

এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ‘কাপ-পিরিচ’ মার্কার প্রার্থী লিয়াকত হোসেন বাচ্চুকে নিয়ে আমি সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেছি, বেশ কয়েকটি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ রয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা লুৎফর কবির বার্তা২৪.কমকে বলেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভোট চাইতে পারবেন কি না এমন আচরণবিধির কোথাও লেখা পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগ দিলে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

;

ভোট কেন্দ্রে অনুপ্রবেশকারীদের প্রতি সিইসির কঠোর হুঁশিয়ারি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

উপজেলা নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে অনুপ্রবেশকারীরা যাতে ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারে রির্টানিং অফিসারকে কঠোর হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসি কাজী হাবিবুল আওয়াল।

মঙ্গলবার (৭ মে) সকালে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন। 

সিইসি বলেন, প্রথম ধাপের ৫টি উপজেলার প্রতিটি পদে বিনা প্রতিন্দ্বদ্বিতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়ে গেছে। এছাড়া ১৪০টি উপজেলার মধ্যে ২টি উপজেলায় ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হবে।

স্থানীয় ভোটে প্রভাব বিস্তার প্রতিরোধে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, মন্ত্রী-এমপিদের নিবৃত করা হয়েছে, প্রভাব বিস্তারের কারণে কিছু কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচনের দিন কেউ যেনো ভোটকেন্দ্রে অনুপ্রবেশ করতে না পারে এবং সেখানে যেন অনিয়ম না সে বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল জানান, যাতে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হয় সে লক্ষ্যে বিভাগ, জেলা পর্যায়ে কমিশন মত বিনিময়ও করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ও টহলের সুবিধার্থে এ ধাপে ধাপে ভোটের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলার তফসিল ঘোষণার পর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা, স্থগিত ও ধাপ পরিবর্তনের কারণে কিছু বাদ দেওয়ার পর বুধবার ১৪০টি উপজেলায় ভোট হবে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, সাধারণ প্রতিটি কেন্দ্রে ১৭ জন করে এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ জন আর পার্বত্য এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে অন্তত ২১ জন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্য নিয়োজিত থাকবে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচনে আমরা সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করি। সংশ্লিষ্টরা নিয়ম কানুন প্রতিপালন করলে নির্বাচনটা সহজ হবে; তারা যদি বিশৃঙ্খল তৈরি করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা দুরূহ হবে। এবার কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং প্রার্থীসহ সবার সঙ্গে মত বিনিময় করা হয়েছে। নির্বাচনটাকে স্বচ্ছ করার চেষ্টা করছি।

ইতিমধ্যে মাঠ পর্যায়ের নানা ধরনের অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান সিইসি। কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত করে কারও কারও প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। নির্বাচন যাতে প্রভাবিত না হয় সেজন্যে ইসির তরফ থেকে সব ধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছি।

এক প্রশ্নের জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী অনেকে নিবৃত করতে পেরেছি। হয়ত বা অনেকে এলাকায় আছেন। সরকারের তরফ থেকে যতদুর দেখেছি, দলীয়ভাবে হোক বা সরকারের পক্ষ থেকে হোক-যাতে নির্বাচনটা অবাধ, নিরপেক্ষ হয় কেউ যেন প্রভাব বিস্তার না করেন সে বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্তটা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, এটা নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচনটা যেন অবাধ, নিরপেক্ষ হয়। বিশেষ করে নির্বাচনের দিন কেউ যেনো ভোটকেন্দ্রে অনুপ্রবেশ করতে না পারে এবং সেখানে যেন অনিয়ম না হয়-সে বার্তাটি রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের দেওয়া হয়েছে।

;