ক্ষতি পোষাতে ঝুঁকি নিচ্ছেন লালপুরের পাটচাষিরা!
শ্রমিক সংকট, বর্ধিত মজুরি ব্যয় ও উৎপাদিত পাটের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় গত দুই বছর নাটোরের লালপুর উপজেলার পাটচাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সেই লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে চলতি বছর ক্ষতি পোষাতে লাভের মুখ দেখার আশায় আবারও পাট চাষের ঝুঁকি নিচ্ছেন তারা।
লালপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে লালপুর উপজেলায় মোট পাঁচ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। গত বছর এই উপজেলায় তিন হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছিল।
উপজেলার অনেক পাটচাষি গত দুই বছর লেকসানের কারণে এ বছর চড়া সুদে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে পাট চাষ করেছেন। তবে এবছরও পাটের ন্যায্য মূল্য পাবেন কি-না জানেন না তারা। ফলে এখানকার প্রতিটি পাটচাষির চোখেমুখে হাতাশার চিহ্ন।
রোববার (২৩ জুন) সকালে লালপুর উপজেলার বড়ময়না, নান্দো, ওয়ালিয়া, লালপুর সদর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চাষিদের নিবিড় পরিচর্যায় সবুজ পাট গাছে ভরে গেছে বিস্তীর্ণ মাঠ, ফসলি জমি। এখন পালা শুধু পাট কাটা, জাগ দেওয়া, পাট গাছ থেকে আঁশ ছাড়ানো ও শুকানো।
পাটচাষি রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘গত দুই বছর থেকে পাট চাষ করে দাম পাইনি। এ বছর কাঙ্ক্ষিত দাম পেলে বিগত দিনের ক্ষতি কিছুটা হলেও পূরণ হবে ভেবে এবারও ঝুঁকি নিয়েই পাটের চাষ করেছি।’
সাহারুল নামের এক চাষি বলেন, ‘ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে এ বছরও পাট চাষ করেছি এবছর পাটের দাম না পেলে মরণ ছাড়া কোনো গতি নেই।’
জাহাঙ্গীর আলম নামের বড় ময়না গ্রামের এক পাটচাষি বলেন, ‘পাট এখন আমাদের গলার কাটা, না পারছি ফেলতে না পারছি গিলতে।’
লালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘লালপুরে প্রতিবছরই পাট চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে, গত দুই বছর থেকে পাটের সঠিক দাম না পেয়ে অনেক চাষি হতাশ হয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় মাঠ পর্যায়ে কৃষকরা বেশি বেশি পাটের চাষ করছেন। পাটের সঠিক দাম পেলে আগামীতে এই উপজেলায় পাটের চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে।’