'আমার ঘর থেকে অনেক দূরে আগুন লাগে। প্রথমে ভেবেছি আমার ঘর পর্যন্ত আসবে না। কিন্ত না, মুহুর্তেই আমার ঘরে আগুন ধরে যায়। দুই ছেলেকে বুকে ধরে, শখের টিভিটা নিয়ে বের হই। পিছনে ফিরতেই সব পুড়ে শেষ।'
এভাবেই বলছিলেন ঘন্টাখানেক আগে সবকিছু হারিয়ে ফেলা মুসলেমা খাতুন (৩০)।
মিরপুর ৭ নাম্বারের চলনতিকা মোড়ের পাশের একটি বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৩ ঘণ্টায় প্রায় ৩ হাজার ঘর পুড়ে শেষ হয়ে যায়। সেসব ঘরের মধ্যে ছোট্ট একটি কুটিরে ২ সন্তান নিয়ে বাস করতেন মুসলেমা।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মুসলেমা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'ছেলেদের বুকে জড়িয়ে শখের একটা টিভি নিয়ে ঘর থেকে বের হয়েছি। একটু সামনে গিয়ে পেছনে তাকাতেই সব পুড়ে ছাই। প্রথমে ভেবেছিলাম অনেক দূরে আগুন লেগেছে। সে আগুন আমার ঘর পর্যন্ত আসবে না। তবে শেষরক্ষা আমার হলো না।'
শুধু মুসলেমা না। এ বস্তির প্রতিটি ঘরে একজন করে মুসলেমা কাঁদছে!
নেত্রকোণার মদনে তীব্র দাবদাহে হিট স্ট্রোকে আব্দুস সাত্তার (৭২) নামে এক বৃদ্ধ মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে উপজেলার দেওয়ান বাজারে কেনাকাটা করে বাড়ি ফেরার পথে মদন বাজার মুক্তিযোদ্ধা মোড়ে অটোরিকশার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। আব্দুস সাত্তার উপজেলার পরশখিলা ভাটিপাড়া গ্রামের মৃত সিরাজ আলীর ছেলে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আব্দুস সাত্তার উপজেলার দেওয়ান বাজার সাপ্তাহিক হাটে পারিবারিক নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনাকাটার জন্য আসেন। কেনাকাটা শেষে অটোরিকশা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। পথিমধ্যে মদন বাজার মুক্তিযোদ্ধা চৌরাস্তা মোড় এলাকায় আসার পর প্রচণ্ড তাপদাহে জ্ঞান হারিয়ে অটো রিকশা থেকে পড়ে যান।
পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আব্দুস সাত্তারের ভাতিজা স্কুল শিক্ষক মোঃ ওয়াদুদ মিয়া বলেন, আমার চাচা সকালে বাড়ি থেকে দেওয়ান বাজারে পারিবারিক নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করতে বাজারে যান। বাজার করে বাড়ি ফেরার পথে তীব্র তাপদাহে হিট স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেছেন।
চুরির টাকায় বান্ধবীকে ফোন উপহার অতঃপর বিপুল স্বর্ণসহ গ্রেফতার
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
জাতীয়
রাজধানীর ওয়ারি থানার অভয়দাস লেন এলাকার একটি বাড়ি থেকে ৩৩ ভরি স্বর্ণালংকার ও বিদেশি ডলার চুরি করেন চোর মোবারক ওরফে মগা ও তার সহযোগীরা। এরপর সেগুলো বিক্রি করেন পুরান ঢাকার তাঁতিবাজারের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছে। আর স্বর্ণ বিক্রির টাকায় মোবারক তার বান্ধবীকে কিনে দেন দামি মোবাইল, বন্ধুদের নিয়ে যান কক্সবাজারে। সেখানে মাদকের ধোঁয়ায় ওড়ান সেই টাকা।
তবে শেষ রক্ষা হয়নি একে একে গ্রেফতার করা হয় চোর চক্রের চার সদস্য ও চোরাই স্বর্ণকেনা ব্যবসায়ীকে। এছাড়াও রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় চুরির ঘটনা তদন্তে নেমে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ও টাকা উদ্ধার করা হয়।
ডিবি বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সিঁদেল চুরির ঘটনা তদন্তের অভিযানে ৬১ ভরি স্বর্ণ এবং প্রায় ৮ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩৬ জনকে গ্রেফতার করা করা হয়। ডিএমপির ১০টি বিভাগ তাদের বিভিন্ন সময় তাদের গ্রেফতার করে।
ওয়ারি ও রমনার ঘটনায় গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোবারক ওরফে মগা (১৯), রাকিব মিয়া (১৮), শেখ ফরিদ, মো. ডালিম (৩৬) ও সাদ্দাম হোসেন বনি (৩৪)। অপর এক অভিযানে গ্রেফতারকৃতরা হলো- গিয়াস উদ্দিন (৩৫)।
বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, রাজধানীর ওয়ারি থানার অভয়দাস লেন এলাকার একটি বাড়ির বেড রুমের গ্রিল কেটে ৩৩ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৩০০ ডলার চুরির ঘটনায় একটি মামলার তদন্তে নেমে চোর চক্রের মূল পরিকল্পনাকারী মোবারক ওরফে মগাকে (১৯) কে বাগেরহাট জেলার মংলা থানার পশুর নদী এলাকা থেকে চোরাইকৃত স্বর্ণ বিক্রির ৫০ হাজার টাকাসহ গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাকিব মিয়া (১৮) কে নেত্রকোনা ৪০ হাজার টাকাসহ গ্রেফতার করা হয়। তারা দুজনেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয়।
আদালতে আসামিরা জানায়, হেস্কো ব্লেড দিয়ে বাসার বেডরুমের পিছনের গ্রীল কেটে প্রবেশ করেন। এরপর বাসার আলমারিতে থাকা স্বর্ণলংকার ও ডলার চুরি করে। চোরাই স্বর্ণ মোবারক ওরফে মগা ও রাকিব পুরান ঢাকার তাতি বাজার স্বর্ণ ব্যবসায়ী শেখ ফরিদের কাছে নগদ পাঁচ লাখ ৬৭ হাজার টাকায় বিক্রি করে। এই টাকা দিয়ে মো. মোবারক ওরফে মগা ও রাকিব তাদের ৮ বন্ধুকে নিয়ে কক্সবাজার ঘুরতে যায়। সেখানে মাদক গ্রহণ করে। এছাড়া মোবারক তার প্রেমিকাকে একটি মোবাইল ফোন গিফট করে।
অতিরিক্ত কমিশনার হারুন আর বলেন, তাতিবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী শেখ ফরিদ দীর্ঘদিন ধরে স্বর্ণ ব্যাবসার আড়ালে চোরাই স্বর্ণ কেনা-বেচার করে আসছিলেন। গ্রেফতার ফরিদকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে ডিবি পুলিশকে জানায়, যাত্রাবাড়ী থানার কাজলা এলাকায় তার বাসায় গলিত ২০ ভরি ওজনের স্বর্ণের পাত রয়েছে। পরে সেটি উদ্ধার করা হয়। একই মামলা তদন্তে নেমে মো. ডালিম (৩৬) ও সাদ্দাম হোসেন বনি (৩৪) আরও দুইজন পেশাদার চোরকে চুরির কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিসহ গ্রেফতার কার হয়। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক চুরির মামলাসহ মাদক মামলা রয়েছে।
অপর দিকে ধানমন্ডি থানার ১১ নম্বর রোড এলাকায় একইভাবে বন্ধ বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে বেড রুমের জানালার গ্রিল কেটে চুরির ঘটনা ঘটে। বাসার আলমারির ড্রয়ার ভেঙ্গে ৪১ ভরি স্বর্ণ ও নগদ ৩৭ লাখ টাকা চুরির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর দায়ের করা মামলার তদন্তে নামে ডিবির রমনা বিভাগ। তদন্তে নেমে সিসিটিভির ফুটেজ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় চোরদের শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার চরপলাশ এলাকায় অভিযান চালিয়ে গিয়াস উদ্দিনকে (৩৫) গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে তার দেখানো মতে গিয়াসের বাড়িতে মাটির নিচে পুতে রাখা অবস্থায় ৪১ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ সাত লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া চোরাই কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হয়।
এপ্রিলের পর মে মাসেও দেশজুড়ে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এমন অবস্থায় আরও দুই দিন বা ৪৮ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার (২ মে) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার জন্য এই হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় বলেন, আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা ঢাকা বিভাগের পশ্চিমাঞ্চলসহ খুলনা, রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে।
এর আগে গত ৩, ১৯, ২২, ২৫ ও ২৮ এপ্রিল তিনদিনের হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছিল। এরপর ৩০ এপ্রিল দুদিনের হিট অ্যালার্ট জারি করেছিল সংস্থাটি।
এ মৌসুমে চলতি বছরের এপ্রিলে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০২৩ সালের ১৬ এপ্রিল ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চলতি মৌসুমে গত ৩১ মার্চ থেকে টানা ৩৩ দিন ধরে চলছে তাপপ্রবাহ। তবে আগামী সপ্তাহে সারা দেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়ার আভাস রয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন আজ বিকাল ৫টায় শুরু হয়েছে। সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদের কার্য-উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে অধিবেশনের মেয়াদকালসহ অন্যান্য কার্যক্রমের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। চলতি অধিবেশন ৯ মে পর্যন্ত চলবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মনোনয়ন দেন। এবারের অধিবেশনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা হলেন, আওয়ামী লীগের এমএ মান্নান, আসাদুজ্জামান নূর ও শফিকুল ইসলাম শিমুল, জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপু এবং সংরক্ষিত আসনের ফজিলাতুন নেসা। স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে অগ্রবর্তিতার ভিত্তিতে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা সংসদ পরিচালনা করবেন।
পরে স্পিকার সংসদে শোকপ্রস্তাব উত্থাপন করেন। চলতি সংসদের সদস্য মো. আবদুল হাইয়ের মৃত্যুতে আনীত শোক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। আলোচনা শেষে রেওয়াজ অনুযায়ী অধিবেশন মূলতবি করা হবে।