রাজধানীতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন প্রতি ঘণ্টায় ৩ জন
চলতি বছরে এ পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৬১৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। রাজধানীতে প্রতি বছরের মতো এবারও এ সময়ে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৭১ জন। গড়ে প্রতি ঘণ্টায় তিনজন করে।
ডেঙ্গুকে মহামারি বলতে না চাইলেও, কিছুটা অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
সরেজমিন দেখা যায়, শিশু ফারহান কেবল মুখে একটু কথা ফুটেছে। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে গত সাত দিন ধরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছে। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে তাকে। হাতে সব সময়ের জন্য স্যালাইন চলছে। প্লাটিলেট কমে যাওয়ায় রক্ত দিতে হচ্ছে।
ফারহানের বাবা থাকেন বিদেশে। শিশুটির এমন অবস্থা আর মানতে পারছে না মা শারমিন। শুধু ফারহান না, এমন সময় পার করতে হচ্ছে অনেক শিশু থেকে বৃদ্ধকে।
সরকারের স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর একাধিক হাসপাতালে এখন চার হাজার ৪৩৮ জন রোগী ভর্তি আছেন। শুধু জুন মাসেই ভর্তি হয়েছেন তিন হাজার ৫৩২ জন। এর মানে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানী জুড়ে।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) বলছে, একবার আক্রান্ত হলে ওই একই ব্যক্তি যদি দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হন, তখন তার ক্ষেত্রে রোগটি বেশি জটিল হতে পারে। গতবার যেহেতু একটু কম ছিল, সেহেতু এবার বৃদ্ধি পাবে এটাই স্বাভাবিক।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক মেডিসিন বিভাগের ডিন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেক বেশি। তবে মহামারি আকার ধারণ করেনি। প্রতিদিনই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীরা আসছেন। এবারের সংখ্যাটা অনেক বেশি। এমন রোগী পাওয়া যাচ্ছে, যারা দ্বিতীয়বারের মতো, তৃতীয়বারের মতো আক্রান্ত হয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে এবারের ডেঙ্গু পরিস্থিতি আগের চাইতে উদ্বেগজনক।’
এদিকে ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলছেন, ‘ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়লেও সেটি এখনো উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছায়নি, নিয়ন্ত্রণে আছে।’
যেহেতু মশার বংশবিস্তার কমাতে পারলেই এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে, তাই সিটি করপোরেশন ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা বলছেন, যে কোনো মূল্যে এডিস মশার বংশবিস্তার কমাতে হবে। এজন্য কোনোভাবেই বাসার আশেপাশে পানি জমতে দেওয়া যাবে না।