ব্যাংক পরিচয় দিয়ে আজিজ কো-অপারেটিভের ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ
সমবায় অধিদফতর আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেডকে সমগ্র বাংলাদেশে ২৬টি শাখার অনুমোদন দিয়েছিল। অনুমোদন পাওয়ার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম ছিল এমএলএম কোম্পানির মতো।
কিন্তু এমএলএম কোম্পানি হয়েও ব্যাংক বলে চালিয়ে ১১ হাজার ৪২৫ জন গ্রাহকের থেকে ৩০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম। এছাড়া অনুমোদিত ২৬টি শাখার জায়গায় সমগ্র বাংলাদেশে ১৬০টি শাখা অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়।
এ বিষয়ে রাজধানীর বংশাল থানায় করা অর্থ আত্মসাৎ ও প্রাণনাশের হুমকির বিরুদ্ধে করা এক মামলায় মোঃ তাজুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতারের পর আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানা যায়।
রোববার (১৪ জুলাই) সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, 'আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেডের কার্যক্রম ১৯৮৪ সালে শুরু হয়। প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম ছিল সম্পূর্ণ এমএলএম কোম্পানির মতো। এছাড়া ব্যাংক হিসেবে এই প্রতিষ্ঠনের কোনো স্বীকৃতি নেই। কিন্তু নামের শেষে ব্যাংক শব্দটি ব্যবহার করে সমিতির কার্যক্রম পরিচালনা করে, মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে ৩০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেই।'
তিনি বলেন, 'আত্মসাৎকৃত এই ৩০০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলামের ৫০টি ব্যাংক একাউন্টে জমা করা হয়। পরে এসব একাউন্ট থেকে অনলাইনে ট্রান্সফার করে টাকা স্ত্রী ও তিন ছেলের একাউন্টে স্থানান্তর করেন তিনি। এরমধ্যে তার দুই ছেলে কানাডা থাকেন, যাদের কাছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। এছাড়া এসব টাকার কিছু অংশ দিয়ে তিনি দেশের বিভিন্ন এলাকায় মার্কেট ও জমি ক্রয় করেন।'
গ্রাহকরা কেন এমন প্রতিষ্ঠানে টাকা জমা দিতেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, '১২ শতাংশ সুদ ও ১৮ শতাংশ লাভাংশ দেওয়ার কথা বলে ১৬০টি শাখা থেকে টাকা নেওয়া হতো গ্রাহকদের কাছ থেকে। পরে টাকা দেওয়ার সময় হলে, গ্রাহকরা টাকা চাইলে তাদের আজ নয় কাল করে সময় দেওয়া হতো। এক পর্যায়ে গ্রাহকরা না মানলে তাদের হুমকিও দেওয়া হত।'
এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এ ঘটনায় তাজুল ইসলামের স্ত্রী ও তিন ছেলে জড়িত। তারাও মামলার আসামি। এছাড়া এ বিষয়ে মানিলন্ডারিং আইনেও একটি মামলা করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি।'