সংবাদ সম্মেলনে মিল্কভিটার এমডি
‘মিল্কভিটার পাস্তুরিত দুধ নিরাপদ, ক্ষতিকর উপাদান নেই’
মিল্কভিটার পাস্তুরিত তরল দুধে ক্ষতিকর উপাদান নেই। নমুনা পরীক্ষায় একাধিক দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের গবেষণা প্রতিবেদনে সর্বোচ্চ মান অর্জন করেছে বিধায় এটি সকলের জন্য নিরাপদ। বাজেটকে কেন্দ্র করে একটি চক্র ক্ষতিকর গুঁড়া দুধ আমদানির পথ সুগম করতে পাস্তুরিত তরল দুধের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে আসছে।
শনিবার (২৯ জুন) বিকালে তেজগাঁওয়ের দুগ্ধ ভবনে এক সংবাদ সম্মলেনে এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেডের (মিল্কভিটা) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. দেলোয়ার হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে সরকারের অতিরিক্ত সচিব মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রান্তিক সমবায়ীরা নিজস্ব গাভী থেকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে কাঁচা তরল দুধ সংগ্রহ করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে গুণগতমান যাচাই বাছাই করে পাস্তুরিত তরল দুধ উৎপাদন করা হয়। যথাযথ তাপ-নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অনুসরণ করে। মিল্কভিটার নিজস্ব গবেষণাগারে ফ্যাট, এসএনএফ ও ব্যাকটেরিয়াল কাউন্ট ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান পরীক্ষা-নিরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই বাজারে তরল দুধ বিপণন করা হয়। ফলে তরল দুধে ক্ষতিকর সীসা বা অনুজীব থাকার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই) ও বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) প্রতিবেদনে ক্ষতিকর কিছু পাওয়া যায়নি। আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান এসজিএস-বিডি এবং আইসিডিডিআরবি’র প্রতিবেদনেও মিল্কভিটার তরল দুধ সর্বোচ্চ মান অর্জন করেছে।
মিল্কভিটার এমডি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ভোক্তারা আস্থার সঙ্গে নিরাপদ পাস্তুরিত তরল দুধ খেতে পারেন। লাখ লাখ প্রান্তিক খামারির নিজস্ব গাভীর দুধ সংগ্রহের পর পাস্তুরিত করে মিল্কভিটা বাজারজাত করা হয়। যা গত চার দশকে জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিবছর বাজেটকে কেন্দ্র করে একটি অসাধুচক্র তরলদুধ নিয়ে অপপ্রচার শুরু করেছে। আসলে তারা মানহীন ও ক্ষতিকর প্যাকেটজাত গুঁড়া দুধ আমদানি করতে চায়। তাদের লক্ষ্য দেশীয় দুগ্ধশিল্পকে ধ্বংস করা।
গত ২৫ জুন প্রকাশিত ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের একজন গবেষকের প্রকাশিত প্রতিবেদনের জবাবে তিনি বলেন, এ প্রতিবেদন মিথ্যা। এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের প্রতিবেদন নয়। তারপরও জনস্বার্থ স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট বিধায় আমরা ফার্মেসি বিভাগকে যে কোনো সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমরা আইনগতভাবে বিষয়টি মোকাবিলার কথা ভাবছি। সরকারি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। তবে শিগগির ব্যবস্থাপনা পর্ষদে আলোচনার পর মামলার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
মিল্কভিটার অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তরল দুধ নিয়ে যত মাথা ব্যথা। অপপ্রচারে তরল দুধের বিক্রি কমে গেছে। এতে সর্বশান্ত হওয়ার পথে দেশীয় খামারিরা। অথচ গুঁড়া দুধের ক্ষতির দিক নিয়ে কোনো আলোচনা নেই।
সংবাদ সম্মেলনে বিদেশ থেকে আমদানি করা গুঁড়া দুধের মান যাচাই করা, বাল্ক গুঁড়া দুধ আমদানিতে করের পরিমান ১০ ভাগ থেকে ২৫ ভাগে উন্নীত করা, উন্নত জাতের গাভী ও ষাড়ের বীজের আমদানি শুল্ক মওকুফ, গো-খাদ্যের কাচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক মওকুফ, গো-খাদ্য বিপণন কর রেয়াত, ডেইরি খাতকে ‘থ্রাস্ট সেক্টর’ ঘোষণা এবং দেশে উৎপাদিত দুগ্ধজাত পণ্যের ১৫ ভাগ কর মওকুফের দাবি জানানো হয়।
এ সময় অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (উৎপাদন) খন্দকার আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ) তোফায়েল আহমেদ, মহাব্যবস্থাপক (বিপণন, ক্রয় ও কারিগরি) আবু মো. শরিফুল ইসলাম ও উপমহাব্যবস্থাপক (মান নিয়ন্ত্রণ) রেহানা রহমান উপস্থিত ছিলেন।