মাস্টার্স পরীক্ষা নিয়ে শঙ্কায় হাত হারানো ফিরোজ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
বাস-ট্রাক সংঘর্ষে হাত হারানো রাজশাহী কলেজ ছাত্র ফিরোজ, ছবি: সংগৃহীত

বাস-ট্রাক সংঘর্ষে হাত হারানো রাজশাহী কলেজ ছাত্র ফিরোজ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাস-ট্রাকের সংঘর্ষে ডান হাত হারিয়েছেন রাজশাহী কলেজ ছাত্র ফিরোজ সরদার। বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৩১নং ওয়ার্ডের বেডে শুয়ে তীব্র যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন তিনি। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ফিরোজ সবার দিকে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকছেন। তার চোখে-মুখে এখনো রয়েছে আতঙ্ক।

রোববার (৩০ জুন) সকালে তার মাস্টার্সের দ্বিতীয় কোর্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা। হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরকণ্ঠে ফিরোজ বন্ধুদের কাছে বারবার জানতে চাইছেন, তার মাস্টার্স শেষ করার কি হবে? ডান হাতে লিখতে অভ্যস্ত ফিরোজ, এখন কিভাবে লিখবেন? তার এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না সহপাঠীরা।

ফিরোজের রুমমেট ও বিভাগের সহপাঠী আতিকুর রহমান বলেন, ‘শুক্রবার রাতে আইসিইউ থেকে ওয়ার্ডে আনার পর থেকেই আমি ওর সঙ্গে ছিলাম। শেষ রাতে জ্ঞান ফিরলেও কথা বলতে পারছিল না ফিরোজ। তবে সকালে ঘুম থেকে জাগার পর প্রথমেই ও আমাকে বলে, আমার তো ডান হাত আর নাই! আমি পরীক্ষায় লিখব কিভাবে? আমার মাস্টার্স শেষ করে বড় চাকরি করার স্বপ্ন আর পূরণ হবে না?’

আতিকুর জানান, ফিরোজ পড়াশোনায় খুব মনোযোগী ছিল। বর্তমানে চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতার বিষয়টিও মাথায় ছিল ওর। এজন্য তৃতীয় বর্ষ থেকেই ও চাকরির জন্যও পড়াশোনা শুরু করেছিল।

আরও পড়ুন: হাত হারানো রাজশাহী কলেজ ছাত্র ফিরোজ শঙ্কামুক্ত

পরীক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের প্রধান অধ্যাপক জোবাইদা আক্তার বলেন, ‘পরীক্ষা তো কাল (রোববার) অনুষ্ঠিত হবে। ফিরোজের ডান হাত কেটে ফেলা হয়েছে। হাসপাতালে বসে ও পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। ফিরোজ আগে ও সুস্থ হোক, আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা সাপেক্ষে পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’

জানতে চাইলে রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ফিরোজের মাস্টার্স পরীক্ষার বিষয়টি আপাতত বড় নয়। ও বেঁচে থাকুক, সুস্থ হোক এটাই আমাদের প্রত্যাশা। তারপর আমরা এ ব্যাপারে তাকে যে ধরনের সুযোগ দেওয়া যায়, তা দেব। সে ডান হাতে লিখতো, এখন তো লিখতে পারবে না। শ্রুতি লেখকদের মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব, তবে এখন ওর যে শারীরিক অবস্থা তাতে সেটিও সম্ভব নয়।’

আরও পড়ুন: বাস-ট্রাক সংঘর্ষে হাত হারালেন রাজশাহী কলেজ শিক্ষার্থী

ফিরোজের সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখা রামেক হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ফিরোজের জ্ঞান ফিরেছে। সে এখন পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত। তার শরীরে প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত দেওয়া হয়েছে। অস্ত্রোপচার সফলভাবে করা হয়েছে। আপাতত তাকে স্বাভাবিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার দেখভালে সার্বক্ষণিক কয়েকজন চিকিৎসক নিয়োজিত রয়েছেন।’

উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজশাহীর কাটাখালি পৌরসভার সামনে বাস-ট্রাকের সংঘর্ষে ফিরোজের ডান হাত কনুই থেকে কাটা পড়ে। ফিরোজ রাজশাহী কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তিনি বগুড়ার নন্দীগ্রাম এর একডালা গ্রামের মাহফুজুর রহমানের ছেলে।

   

উন্নয়ন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় সিটি টোল বন্ধের সুপারিশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারের উন্নয়ন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া, শিক্ষার্থীদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টির কথা উল্লেখ করে রাজধানীতে সিটি টোল আদায় বন্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণের সুপারিশ করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

সোমবার (৬ মে) জাতীয় সংসদ ভবনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি দ্বিতীয় বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। বৈঠক সভাপতিত্ব করেন মো. শফিকুল ইসলাম এমপি।

বৈঠকে কমিটির সদস্য ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মো. আবদুল ওয়াদুদ, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ এমপি, মোহাম্মদ সাইদ খোকন এমপি, মো. ছানোয়ার হোসেন এমপি, মো. মতিয়ার রহমান এমপি, মোহাম্মদ আলী এমপি এবং ফরিদা খানম এমপি উপস্থিত ছিলেন।

সংসদীয় কমিটির এই বৈঠকে ‘স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) বিল, ২০২৪’ এর উপর বিস্তারিত আলোচনা করা হয়, বিলের দফা ৯ এর প্রস্তাবিত ধারা ৩০ ও দফা ৭ এর প্রস্তাবিত ধারা ১ এর প্রয়োজনীয় সংশোধনীপূর্বক অন্যান্য প্রয়োজনীয় সংশোধনী ও পরিমার্জনপূর্বক বিলটি গৃহীত হয় এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনে বিলটি সংশোধনী আকারে সংসদে উত্থাপনের সুপারিশ করা হয়।

বৈঠকে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, অতিরিক্ত সচিব, সমবায় অধিদফতর, বোর্ড বিআরডিবি, আরডিএ, স্থানীয় সরকার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকতাবৃন্দ এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

;

ফেনীতে কালবৈশাখীর তাণ্ডব: গাছ পড়ে মহাসড়কে তীব্র যানজট



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীর আকাশে হঠাৎ মেঘের ঘনঘটা। চারদিক অন্ধকার দুপুরের সময়ও যেন নেমে এসেছিল সন্ধ্যা। মুহূর্তেই শুরু হয় বাতাস। সাথে বিদ্যুৎ চমকানো বজ্রপাত। বাতাসের তীব্রতায় দিশেহারা হয়ে সাধারণ মানুষ খুঁজতে থাকে নিরাপদ আশ্রয়।

তীব্র তাপদাহের পর বৃষ্টি নামাতে জনমনে স্বস্তি ফিরলেও কালবৈশাখী ঝড়ের ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ও মহাসড়কে গাছপালা পড়ে যানচলাচল ধীরগতিতে সৃষ্টি হয় যানজট। এতে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকঘন্টার চেষ্টায় গাছ অপসারণ করা হলে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।

সোমবার (০৬ মে) দুপুর ১২টা থেকেই ফেনীর আকাশে ছিল মেঘের ঘনঘটা। মুহূর্তেই শুরু হয় বাতাস। সময়ের সঙ্গে বাড়তে থাকে বাতাসের গতিবেগ। মুহূর্তেই শুরু হয় কালবৈশাখীর তাণ্ডব। ঝড় পরবর্তী সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, গাছপালা পড়ে গাড়ি চলাচল বন্ধে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।

খবর নিয়ে জানা গেছে, ঝড়ে জেলার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা উপড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এসময় ঝড়ের সঙ্গে কিছু কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টি হওয়ায় ফসলেরও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন সাধারণ মানুষ।

এছাড়াও কালবৈশাখী ঝড়ে জেলার ফেনী-সোনাগাজী সড়ক, ছাগলনাইয়া-শুভপুর সড়ক, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লালপোল, বিসিক ও ফেনী শহরে বিভিন্ন সড়কে গাছপালা পড়ে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যে মহাসড়কের বিসিক ও লালপোলে এলাকায় গাছ পড়ে যাওয়াতে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়৷ এতে দীর্ঘক্ষণ মহাসড়কের একমুখী যানচলাচল বন্ধ থাকে। পরবর্তী কিছু জায়গায় গাছ অপসারণ করলেও ধীরগতিতে যানচলাচল করছে।

দুপুর ১টায় ফেনী শহরের ট্রাংক রোড় এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দুপুরেই যেন সন্ধ্যার আঁধার নেমে আসে। বাতাসের তীব্র বেগের কারণে সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রিকশা থেকে দ্রুত নেমে লোকজনকে আশপাশের ভবনে আশ্রয় নিতে দেখা যায়। ফুটপাতের দোকানিরাও আশ্রয় নেন পার্শ্ববর্তী ভবনে। মুহূর্তেই ফাঁকা হয়ে পড়ে ফেনী শহর। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন গাছপালার ঢাল বিদ্যুৎ এর তারে পড়ে বন্ধ হয়ে যায় বিদুৎ সংযোগ। বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় পানি অপসারিত না হওয়াতে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। এর পাশাপাশি স্কুল-কলেজ থেকে ঘরমুখো শিক্ষার্থীদের গাড়ির সংকটে পড়ে তীব্র ভোগান্তিতে পড়তে দেখা যায়।

আব্দুর রহিম নামের এক পথচারী বলেন, সকাল থেকে বৃষ্টি ছিল না। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদ উঠে। দুপুর থেকে আকাশে মেঘ জমতে থাকে। ১টার দিকে আচমকা অন্ধকার নেমে আসে। হঠাৎ তীব্র বাতাস আর বজ্রপাত শুরু হয়। সঙ্গে বৃষ্টিপাতও বেড়ে যায়।

ফেনী পলিটেকনিকের শিক্ষার্থী ইফরাত জাহান তমা বলেন, কলেজ শেষ করে বাড়ি যাচ্ছি, কিন্তু কয়েকঘণ্টা বাসে বসে ছিলাম। গাছ পড়ে দীর্ঘ যানজট মহাসড়কে। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও বাড়ি পৌঁছাতে পারিনি।

শহরের বাসিন্দা গ্যাস উদ্দিন বলেন, অফিস থেকে দুপুরে খেতে যাওয়ার উদ্দেশ্য বের হয়েছি। হঠাৎ ঝড় শুরু হওয়াতে দোকানে আটকে পড়েছি৷ অনেকদিন পর ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে এটি প্রশান্তির হলেও ঝড়ের প্রভাবে বিভিন্ন জায়গায় গাছপালা ভেঙে পড়ছে, বিদ্যুৎ নেই। শহরে গাড়ি কমে গেছে। এতে মানুষের কিছুটা ভোগান্তি বেড়েছে।

ছাগলনাইয়া উপজেলার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, ঝড় শুরু হওয়ার পর থেকেই বিদ্যুৎ নেই। রাস্তায় গাছপালা পড়ে আছে। যানচলাচল বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন সড়কে। এতে সাধারণ মানুষ কিছুটা ভোগান্তিতে পড়েছে।

হাসিনা আক্তার নামে একজন গৃহিণী বলেন, ঝড়ের পর থেকেই বিদ্যুৎ নেই। কখন আসবে তারও ঠিক ঠিকানা নেই। চারদিক অন্ধকার হয়ে যাওয়াতে দিনের আলোতেই লাইটের চার্জ শেষ। বিদ্যুৎ না আসলে রাতভর অন্ধকারে থাকতে হবে। এতে ভোগান্তি আরও বাড়বে।

রেদওয়ান ইসলাম নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী বলেন, কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে কোনো গাড়ি পাইনি। বৃষ্টিতে ভিজে হেঁটে হেঁটেই বাসায় যেতে হচ্ছে। পাশাপাশি কলেজে বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষা চলছে। চারদিক অন্ধকার হয়ে যাওয়াতে পরীক্ষার্থীদেরও নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে বলে জানান তিনি।

ফেনীর নিজকুঞ্জরা এলাকার কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, মাঠে ধান রয়েছে। বৃষ্টিতে পানি জমে গিয়েছে। পানি না সরলে ধানে পচন ধরার সম্ভাবনা রয়েছে। কিছু ধান কাটা হয়েছে, এখনও কিছু বাকী আছে। যথাসময়ে ধান কাটার লোক না পেলে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন এ কৃষক।

এদিকে এ প্রতিবেদন লেখা অবধি (সন্ধ্যা  সাড়ে ৬টা) জেলার অধিকাংশ জায়গাতেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ফেনী পল্লী বিদুৎ এর জিএম ফজলুর রহমান। তিনি জানান, গাছপালা বিদুৎ এর তারে পড়াতে জেলাশহরসহ সব জায়গায় বিদুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। সব জায়গায় গাছপালা অপসারিত হওয়ার পরেই বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে কতক্ষণ লাগবে নির্দিষ্ট করে জানাতে পারেননি তিনি।

তবে এ ঝড়ে ফসলের তেমন ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ফেনীর উপ পরিচালক একরাম উদ্দিন। তিনি বলেন, বাতাসের তীব্রতা বেশি থাকলেও কালবৈশাখী ঝড় উপর দিয়ে যাওয়াতে ফসলের তেমন ক্ষতির আশঙ্কা নেই৷ এখন মাঠে ফসল রয়েছে শুধু ধান পাশাপাশি কিছু সবজি রয়েছে। এখন ধান কাটার সময় হয়েছে, অনেক জায়গায় ধান কর্তন করে জমিতে রাখা হয়েছে। কৃষকদের লেবার সংকট ও পানির কারণে কিছুটা সমস্যা হলেও তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা নেই৷ সবজির ক্ষেত্রে পানি জমিতে বেশিক্ষণ থাকে না, উঁচু জমি হওয়াতে দ্রুত অপসারিত হয়ে যাবে। তবুও আমরা কৃষকদের সাথে যোগাযোগ রাখছি, এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য পাইনি।

ফেনী ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবুল বাসার জানান, জেলার বিভিন্ন জায়গায় গাছ পড়ে যানচলাচল বন্ধ থাকার সংবাদে ফায়ার সার্ভিসের সব টিম একযোগে মাঠে কাজ শুরু করেছে। বিভিন্ন উপজেলা ইউনিট ও ইতোমধ্যে গাছ অপসারণে কাজ করছে। বিশেষ করে মহাসড়কের লালপোল ও বিসিক এলাকায় গাছ পড়ে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়াতে সেগুলো দ্রুত অপসারণে কাজ করা হচ্ছে। এ ছাড়া কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তিনি।

;

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় কলকাতা-চট্রগ্রাম ফ্লাইট কক্সবাজারে জরুরি অবতরণ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে কলকাতা থেকে আসা ইউএস-বাংলার ফ্লাইট চট্টগ্রামে নামতে না পেরে কক্সবাজারে জরুরি অবতরণ করেছে। যেখানে ৪৫ জন যাত্রী রয়েছে। তারা সবাই নিরাপদে আছেন বলে জানা গেছে।

সোমবার (৬ মে) বিকেল ৫টায় কক্সবাজার বিমানবন্দরে ফ্লাইটটি অবতরণ করে।

বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে চট্টগ্রামে আসা কলকাতা থেকে ইউএস-বাংলার ফ্লাইট কক্সবাজারে জরুরি অবতরণ করেছে। যেখানে ৪৫ জন যাত্রী আছে। তারা সবাই নিরাপদে আছেন। তাদেরকে বিমানের মধ্যেই খাবার দেওয়া হয়েছে।

এদিকে কক্সবাজারের উপর দিয়ে কয়েক ঘণ্টা ধরে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যাচ্ছে, সঙ্গে বজ্রপাতও হচ্ছে। এমন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় সবাই আতঙ্কে আছে। তবে কোথাও ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবরাখবর এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

;

টানা তাপদাহের পর বৃষ্টিতে ভিজলো চুয়াডাঙ্গা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চুয়াডাঙ্গায় টানা ৩৭ দিন তীব্র তাপদাহের পর অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টির দেখা মিলেছে। এতে জনজীবনে নেমে এসেছে স্বস্তি। প্রকৃতি ফিরে পেয়েছে প্রাণ।

সোমবার (০৬ মে) বেলা ৩টা ৩৭ মিনিট থেকে দমকা হাওয়ার সাথে বজ্রসহ শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। ১ ঘণ্টা ৩৮ মিনিট স্থায়ী এসময় মোট ২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। 

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, মার্চ মাসের ২৯ তারিখ থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলায় তাপপ্রবাহ শুরু হয়। পুরো এপ্রিল মাসজুড়ে ছিল মাঝারি, তীব্র ও অতি তীব্র তাপদাহের সাথে গরমের দাপট। এর মধ্যে গত ২৯ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ ডিগ্রি ও পরদিন ৩০ এপ্রিল সর্বোচ্চ ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। যা স্বাধীনতার পর থেকে চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। ওই সময় স্থানীয় আবহাওয়া অফিস পূর্বাভাস দিয়েছিল, মে মাসের ৫-৬ তারিখ নাগাদ এ জেলায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।


সোমবার বেলা তিনটায় এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫২ শতাংশ। সন্ধ্যা ছয়টায় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ৯৪ শতাংশ।

চুয়ায়াডা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, দুপুরের পর থেকেই চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন স্থানের আকাশে কালো মেঘে ঢেকে যায়। বেলা ৩টা ৩৭ মিনিট থেকে দমকা হাওয়ার সাথে শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। বিকেল ৫টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী ছিল বৃষ্টি। এসময় মোট ২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সেই সাথে ডায়ামিটারে ০১ সেন্টিমিটার শিলা রেকর্ড করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এই বৃষ্টির মধ্যদিয়ে চুয়াডাঙ্গায় তাপপ্রবাহ শেষ হয়েছে। আগামী ১২-১৩ মে পর্যন্ত এ জেলায় থেমে থেমে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এসময় কালবৈশাখী ঝড়, শিলাবৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে, টানা তাপদাহের পর চুয়াডাঙ্গায় স্বস্তির বৃষ্টিতে খুশি এ অঞ্চলের মানুষ। বৃষ্টি শুরুর পর শিশু-কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষকে বৃষ্টির পানিতে ভিজতে দেখা গেছে। অনেকে উল্লাস উদযাপন করেছেন।

চুয়াডাঙ্গা শহরের রিকশা চালক আজিজুর রহমান জানান, ‘অনেকদিন ধরি গরমে প্রায় মরে যাওয়ার অবস্থায় পড়েলাম, এখন পানি (বৃষ্টি) হওয়ায় খুব ভালো লাগছি। ভাড়া না হলেও খুব একটা আক্ষেপ নেই আর।’

চুয়াডাঙ্গা শান্তিপাড়ার কিশোর রাসেল আলী বলেন, ‘টানা রোদ-গরমের পর এমন বৃষ্টি হচ্ছে। তাই বৃষ্টির পানিতে ভেজার লোভ আর সামলাতে পারলাম না। আমার দেখাদেখি পাড়ার অনেক শিশু-কিশোর বৃষ্টিতে ভিজছে।’

;