বরগুনা সরকারি কলেজের ‘আতঙ্ক’ নয়ন
বরগুনা থেকে: বরগুনায় প্রকাশ্যে নেওয়াজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার পর একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে। এ কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত নয়ন বন্ড এখনও পুলিশের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। স্থানীয় বাসিন্দা ও শির্ক্ষাথীরা বলছেন, এই নয়নই ছিল বরগুনা সরকারি কলেজের এক আতঙ্কের নাম।
শনিবার (২৯ জুন) সরেজমিনে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে ঘটনাস্থলের আশেপাশের মানুষদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।
শিক্ষার্থীরা বলছে, বরগুনার কলেজ রোড, ডিকেপি, দীঘিরপাড়, কেজিস্কুল ও ধানসিঁড়ি সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় দাপিয়ে বেড়াত নয়ন ও তার সহযোগীরা।
বরগুনা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ফাতেমা ও তার সহপাঠীরা বার্তা২৪.কম’কে বলেন, নয়নকে তারা চিনেন। নয়ন ও তার সহযোগীরা কলেজের সামনে আড্ডা দিত। সেখান দিয়ে যাতায়াত করলে বিভিন্ন ধরনের কথা বলত। কেউ কোনোদিন প্রতিবাদ করেনি।
আরেক শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম বলেন, কলেজের অলিখিত ভিপি ছিলেন নয়ন। আমরা তাকে নয়ন বন্ড হিসেবে চিনি। যখন তখন সে কলেজে ঢুকে চিল্লাফাল্লা করত। আমাদের ডেকে র্যাগ দিত।
কলেজের সামনে দোকানদাররা জানান, কলেজের সামনে এই রোডটাতে প্রতিনিয়তই নয়ন ও তার গ্রুপের সদস্যরা মারামারি করত। তারপর থেকে তাদের মারামারি নজরদারিতে আনতে এই রোড জুড়ে একাধিক সিসি ক্যামেরা বসানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদক কারবারি থেকে শুরু করে, মারামরি, ছিনতাইসহ নানা অভিযোগ নয়নের বিরুদ্ধে। আর সবগুলো কাজ এই কলেজ রোড এলাকায় করতেন নয়ন।
মূল নাম সাব্বির আহমেদ নয়ন হলেও কর্মকাণ্ডের জন্য রহস্য উপন্যাসের চরিত্র জেমস বন্ডের নাম নিজের নামে জুড়ে দেয় নয়ন। ফলে সহযোগীরা তাকে ডাকা শুরু করে ‘নয়ন বন্ড’ নামে।
বরগুনা সদর থানা পুলিশ জানায়, এই বন্ডের নামেই আছে ৮টি মামলা।
জানতে চাইলে বরগুনা সদর থানার ওসি আবীর হোসেন বার্তা২৪. কমকে বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগে প্রত্যেকবারই গ্রেফতার ছিল নয়ন। তবে কারাগার থেকে বের হয়ে এসে আবার অপরাধে জড়িয়ে পড়ত।
অবশ্য অনেকেই বলছেন, এলাকার চিহ্নিত অপরাধী হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন সময় প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় আইনে ফাঁক-ফোকর দিয়ে মুক্ত হতেন। তারপর আরও ভয়ানক হয়ে উঠতে থাকেন।
উল্লেখ্য, প্রকাশ্য দিবালোকে বরগুনা সরকারি কলেজ গেটে স্ত্রীর সামনে শাহ নেয়াজ রিফাত শরীফ (২৫) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
বুধবার (২৬ জুন) নিহত রিফাতের বাবা ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত পাঁচ থেকে ছয় জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন