টুপি-আতর বিক্রি করে সংসার চালান মুক্তিযোদ্ধা মকলেছুর



হাসান আদিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
টুপি-আতর বিক্রি করছেন মুক্তযোদ্ধা মকলেছুর রহমান / ছবি: বার্তা২৪

টুপি-আতর বিক্রি করছেন মুক্তযোদ্ধা মকলেছুর রহমান / ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বাবা-মায়ের নিষেধ উপেক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধে যান কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ২১ বছর বয়সী মকলেছুর রহমান। যুদ্ধ শেষে বীরের বেশে বাড়ি ফেরেন। তবে কিছুদিন পরই রাজশাহীর বাঘায় বেড়াতে এসে পছন্দের পাত্রীকে বিয়ে করেন তিনি। মেয়ের বাবা ‘রিফিউজি’ হওয়ায় তা মেনে নেননি মকলেছুরের অভিমানী বাবা গোলাম রহমান।

১৯৭২ সালের মাঝামাঝি সময় বাধ্য হয়ে রাজশাহীর বাঘায় শ্বশুর বাড়িতে সংসার পাতেন মুক্তিযোদ্ধা মকলেছুর। স্বীকৃতি আর সার্টিফিকেটের জন্য দৌড়াননি তিনি। ফলে তার নেই কোনো মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতিপত্র। প্রথম দিকে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে সংসার চালিয়ে আসছিলেন। তবে ১৯৮৮ সালের প্রথম দিক থেকে শুরু করেন আতর-সুরমা ও টুপির ব্যবসা। ৩০ বছর ধরে এই ব্যবসা করছেন মকলেছুর।

তাঁর দুই ছেলে রয়েছে। তবে বিয়ে করার পর পৃথক সংসার করছেন তারা। ফলে স্ত্রীকে নিয়ে দুই জনের সংসার চালাতে হচ্ছে ৬৮ বছর বয়সী মকলেছুর রহমানকে। বাঘা উপজেলার আড়ানী মোমিনপুর গ্রামে কুঁড়ে ঘরে বসবাস করেন তারা।

যৌবনে কাজ করতে পারলেও এখন আর কুলিয়ে ওঠেন না তিনি। ফলে স্ত্রীকে নিয়ে এক বেলা খেয়ে দিন কাটে তাঁর। বাঘা উপজেলার আড়ানী বাজারের মূল গলিতে টেবিলের উপর কিছু আতর-সুরমা-টুপি নিয়ে রোজ বিক্রি করতে দেখা যায় তাঁকে।

দোকান থেকে দিনে ৮০ থেকে ১০০ টাকা আয় হয়। পাশাপাশি বৃদ্ধ বয়সেও রং মিস্ত্রির কাজ করেন। তবে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় কাজে নিতে চান না অনেকে। ফলে অসুসস্থ স্ত্রীর প্রতিদিনের ৪৮ টাকার ঔষধ কিনতে ধার-দেনাও করতে হয়।

মুক্তিযুদ্ধের ৪৯তম বছরে এসে বাধ্য হয়ে স্বীকৃতি আর সরকারি সহায়তা পাওয়ার প্র্রত্যাশা করছেন মকলেছুর রহমান। জানতে চাইলে তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি। ভারতে প্রশিক্ষণ নিতে গেছি। বাবা-মাকে জানিয়েও যাইনি। বাড়িতে ফিরলে মা কান্নাকাটি করেছে আর বকেছে। আবার আদরও করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম দিকে অনেকেই সার্টিফিকেট নিতে বলতো। আমি ভাবতাম ওসব নিয়ে কী হবে? দেশ স্বাধীন করেছি, স্বাধীন দেশে বাস করছি। এটাই তো আমাদের চাওয়া-পাওয়া ছিল। কিন্তু অনেকেই আছে, তারা ময়দানে যুদ্ধ করেনি। হয়তো কোনোভাবে সহায়তা করেছে, তারা আজ সার্টিফিকেট নিয়ে সরকারি সুবিধা নিচ্ছে। আমরা কিছুই পাচ্ছি না।’

যুদ্ধে যাওয়ার দিনগুলো স্মরণ করে মোখলেছুর বলেন, ‘রেডিও শুনতাম যুদ্ধ নিয়ে। একপর্যায়ে বাড়িতে বললাম। কিন্তু সবাই খুব ভয় দেখালো। আব্বা রাগ করলো। তার দুই দিন পর বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরিচিত অন্যদের সঙ্গে কেমনে কেমনে জানি ভারতে চলে যায়। সেখানে প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নেই। ফিরে আসি কুষ্টিয়াতেই। ওখানে মুক্তিযুদ্ধের শেষ দুই মাসের মতো আমরা যুদ্ধ করি।’

মুক্তিযুদ্ধে বীরের বেশে জয়ী হয়ে ফিরলেও জীবনযুদ্ধে চরমভাবে পরাজিত বলে জানালেন মকলেছুর রহমান। বললেন, ‘মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। ছেলেরা সব আলাদা। বাড়িতে বউ আছে, তার জন্য খাবার খরচের চেয়ে ওষুধের খরচ বেশি। শেষ বয়সে আর শ্রম দিতে পারছি না। সরকার যদি কোনোভাবে একটু সহায়তা করতো তবে জীবনের শেষ দিনগুলো স্বাধীন দেশে শান্তিতে কাটাতে পারতাম।’

তবে এরজন্য কারও পা ধরতে পারবেন না বলে জানান স্বীকৃতি না পাওয়া এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন রেজা বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ কখনো আমাদেরকে জানায়ওনি। উনি নিজেও কখনো বলেননি। তবে যেহেতু জানলাম- বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখা হবে। যদি উনি মুক্তিযুদ্ধ করেন, তবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

   

নীলফামারীতে ১৮০ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক দুই



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
নীলফামারীতে ১৮০ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক দুই

নীলফামারীতে ১৮০ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক দুই

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীর জলঢাকায় ১৮০ বোতল ফেনসিডিলসহ দুইজনকে আটক করেছে থানা পুলিশ।

শুক্রবার (১০ মে) তাদের আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে কৈমারী ইউনিয়নের বড়ঘাট বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন, লালমনিরহাটের হাতিবান্ধার সিংগিমারী এলাকার জনাব আলীর ছেলে হাফিজুল ইসলাম (২৮) ও কুমিল্লার মোহনগঞ্জের রফিকুল ইসলামের ছেলে আলমগীর হোসেন (২৫)।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের ১৮০ বোতল ফেনসিডিল একটি ইজিবাইক জব্দ করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা আদালতে পাঠানো হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুক্তারুল আলম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

;

সেওতা কবরস্থানে পাইলট জাওয়াদের দাফন সম্পন্ন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মানিকগঞ্জ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পাইলট আসিম জাওয়াদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার (১০ মে) দুপুর ৩টায় গার্ড অব অনার প্রদানের পর মানিকগঞ্জ শহরের সেওতা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে শুক্রবার বাদ জুমা মানিকগঞ্জ জেলা শহরের শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়াম মাঠে নিহত পাইলট আসিমের তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়। এ সময় আসিম জাওয়াদের বাবা, বিমান বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাসহ অসংখ্য লোকজন উপস্থিত ছিলেন। আর দুপুর পৌনে ১২টায় তার মরদেহ বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি হেলিকপ্টার মানিকগঞ্জ শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে অবতরণ করে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুর সাড় ১২টার দিকে পতেঙ্গার বানৌজা ঈসা খাঁ হাসপাতালে (নেভি হাসপাতাল) পাইলট জাওয়াদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর আগে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিমান বাহিনীর ইয়াক-১৩০ নামক একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। পরে চট্টগ্রাম বোট ক্লাবের অদূরে কর্ণফুলী নদীতে আছড়ে পড়ে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমানটি।

;

খুলনায় ৪ কেজি গাঁজাসহ আটক ২



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, খুলনা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খুলনার খান জাহান আলী সেতুর টোল প্লাজা এলাকা হতে ৪ কেজি গাঁজাসহ ২ জনকে আটক করেছে কোস্ট গার্ড।

শুক্রবার (১০ মে) সকাল ৫টার দিকে খুলনা জেলার রূপসা থানাধীন খান জাহান আলী সেতুর পূর্ব পার্শ্বে টোল প্লাজা সংলগ্ন এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে আটক করা হয়।

কোস্ট গার্ড জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের একটি দল জেলার রূপসা থানাধীন খান জাহান আলী সেতুর পূর্ব পার্শ্বে টোল প্লাজা সংলগ্ন এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযান চলাকালীন ফেনী হতে খুলনাগামী একটি বাস তল্লাশি করা হয়। এ সময় ৪ কেজি ৪৩ গ্রাম গাঁজাসহ ২ জন মাদক কারবারীকে আটক করা হয়। জব্দকৃত গাঁজা ও আটককৃত ব্যক্তিদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রূপসা থানায় হস্তান্তর করা হয়।

;

অক্ষয় তৃতীয়া উপলক্ষে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের গঙ্গাস্নান



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট বার্তা ২৪.কম, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

অক্ষয় পুণ্যলাভের আশায় কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের গঙ্গাস্নান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১০ মে) আন্তর্জাতিক হরিভাবনামৃত সংঘ ও আশ্রম (Hiscoher) এর অক্ষয় তৃতীয়াব্রতম সনাতন ধর্ম্ম সম্মেলন ১৪৩১ আয়োজনে পটুয়াখালীর সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে এ গঙ্গাস্নান অনুষ্ঠিত হয়।

এদিন ভোর ৫টা থেকে আহ্বানী, সমবেত প্রার্থনা, মঙ্গলঘাট স্থাপন, শ্রী শ্রী বিষ্ণ পূজা,গঙ্গা মায়ের পূজা শেষে সকাল ১০টায় গঙ্গাস্নান করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রীগুরু প্রাণপুরুষ শ্রীশ্রী জয়দেব ঠাকুর। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঠাকুরের সহধর্মিণী জগৎমাতা হরপ্রিয়া দেবী ও পরমপূজ্যপাদ ঋত্বিক মহারাজ ডাঃ রাধাস্বামী।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে কলাপাড়া পৌর মেয়র শ্রী বিপুল চন্দ্র হাওলাদার এর সভাপতিত্বে ভাগবত আলোচনা রাখেন আন্তর্জাতিক হরিভাবনামৃত সংঘ ও আশ্রমের সভাপতি ও বাগেরহাট জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. পরিতোষ রায়, ঝালকাঠি নলছিটি উপজেলার চেয়ারম্যান ছিদ্দিকুর রহমান, কুয়াকাটা শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণ তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমের সাধারণ সম্পাদক শ্রী নিহার রঞ্জন, আশ্রমের (HISCOHER) ভক্ত প্রভাষক শ্রী সঞ্জয় মন্ডল, ভক্ত শ্রী শ্যামল চন্দ্র মালো, ভক্ত শ্রী গোবিন্দ দেবনাথসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত জয়দেব ভক্তবৃন্দ।

প্রতিবছর দূর-দূরান্ত থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা গঙ্গাস্নানে আসেন। এ সময় হাজারো মানুষের কোলাহলে মুখরিত হয়ে ওঠে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। সৈকতে দেখা যায় অনেকেই স্নান শেষে পরিবার নিয়ে গীতা পাঠ করছেন, আবার কেউ প্রার্থনাসহ ধর্মীয় রীতি-নীতি মগ্ন হয়েছেন।

ভক্তরা বিশ্বাস করেন, এই দিন গঙ্গাস্নান করলে অক্ষয় পুণ্য অর্জন করা যায়। আবার অনেকেই মনে করেন, এই তিথিতে স্বয়ং নারায়ণের বাস থাকে গঙ্গায়।

অনুষ্ঠান শেষে ভক্তদের মাঝে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়। পরে বাস ও গাড়ি যোগে অক্ষয় তৃতীয়া অনুষ্ঠানের ২য় পর্ব ভক্তবৃন্দরা খুলনায় আন্তর্জাতিক হরিভাবনামৃত সংঘের কেন্দ্রীয় আশ্রমে শনি ও রোববার দুই দিনব্যাপী অষ্টপ্রহর মহানামযজ্ঞ ও পদাবলী কীর্তন অনুষ্ঠানে যোগদানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।

;