‘জয় বাংলা বলে আগে বাড়ো’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে শুক্রবার (৭ জুন) ভোর ৫ টায় ঢাকার হাতিরঝিলে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘জয় বাংলা ম্যারাথন’ হাফ ম্যারাথন।
এ উপলক্ষে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশনসহ প্রতিযোগিতার সব আপডেট প্রকাশের লক্ষ্যে তৈরিকৃত ওয়েবসাইট উদ্বোধন করলেন পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি ও বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিকস অ্যান্ড সাইক্লিং ক্লাবের সভাপতি বনজ কুমার মজুমদার।
মঙ্গলবার (১৪ মে) রাজধানীর মিন্টুরোডে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ‘জয় বাংলা ম্যারাথন প্রতিযোগিতা ২০২৪’র রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বনজ কুমার মজুমদার বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিকস ও সাইক্লিং ক্লাবের উদ্যোগে হাফ ম্যারাথন আয়োজন করা হচ্ছে। ৭ জুন নির্ধারণ করা হয়েছে তারিখটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এই তারিখটি ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণের জন্য বিখ্যাতভাবে স্মরণ করা হয়। ৭ মার্চের ভাষণ নামে পরিচিত এই ভাষণটি বাঙালি জনগণকে জাগিয়ে তুলতে এবং স্বাধীনতার পক্ষে সমর্থন জোগাড় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। 'জয় বাংলা' স্লোগান মুক্তিযুদ্ধে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। তাই ৭ মার্চ, ১৯৭১, বাংলাদেশের স্বাধীনতার দিকে যাত্রার সূচনার প্রতীক এবং বাঙালি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও সার্বভৌমত্বের অন্বেষণে তাদের সাহস, সংকল্প এবং স্থিতিস্থাপকতার স্মারক হিসেবে কাজ করে।
এর আগে, ১৯৬৬ সালের ৭ জুন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ছয় দফা আন্দোলন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথে এখনও একটি নির্দিষ্ট পয়েন্ট অব রেফারেন্স। দিনগুলোর তাৎপর্য স্মরণে রাখতে জয় বাংলা ম্যারাথন নামকরণ করা হয়েছে। এই ম্যারাথনের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে একটি সুস্থ ও সক্রিয় লাইফ স্টাইল চর্চায় উদ্বুদ্ধ করা।
তিনি বলেন, হাফ ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় ৪টি ক্যাটাগরিতে মোট ৫ হাজার প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করবে। প্রতিযোগীদেরকে ৩ ঘণ্টা ৪০ মিনিটের মধ্যে ২২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে। প্রতিটি ক্যাটাগরিতে বিজয়ী ১০ জনকে পুরস্কার প্রদানসহ অংশগ্রহণকারীদের জন্য থাকবে জার্সি, মেডেল ও সার্টিফিকেট। ম্যারাথনের সময় পুরো ট্র্যাক জুড়ে দৌড়বিদদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে একাধিক মেডিকেল টিম এবং হাইড্রেশন পয়েন্ট, অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ১৬ বছরের ঊর্ধ্বে যে কোন নারী-পুরুষ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।
পিবিআই প্রধান বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক্স ও সাইক্লিং ক্লাব প্রতি বছর ঢাকা জেলা পুলিশ লাইনস, মিল ব্যারাক, গেন্ডারিয়া, ঢাকায় ৪০০ থেকে ৮০০ মিটর দৌড়সহ কয়েকটি ইভেন্টের আয়োজন করে, যার অংশগ্রহণকারী ছিল পুলিশ সদস্যরা। আমরা বৃহৎ পরিসরে সাইক্লিং অথবা ম্যারাথন আয়োজনের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে একাধিক মিটিং করি এবং কমিটি গঠন করি।ম্যারাথন আয়োজন চ্যালেঞ্জিং হলেও আমরা এর বাস্তবায়নে অনেকদূর এগিয়েছি। সবার সহযোগিতায় এ মেগা ইভেন্টে বাস্তবায়ন করতে পারব বলে আমরা বিশ্বাস করি।
"জয় বাংলা ম্যারাথন-২০২৪" এর সভাপতি এবং সিটিটিসি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ প্রথম বারের মতো একটি বড় ইভেন্ট আয়োজন করতে যাচ্ছে। অনুষ্ঠানটিতে ৫ হাজার প্রতিযোগীর অংশগ্রহণ হওয়ায় আয়োজকদের কার্যপরিধি বিশাল। সময় কম হলেও আমরা তা করছি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান ম্যারাথন অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন। এছাড়াও পুরস্কার বিতরণ করবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, জয় বাংলা ম্যারাথন এর সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস) মোহাম্মদ জায়েদুল আলম, বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিক্স ও সাইক্লিং ক্লাব এর সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান, ডিএমপি উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া), এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর), পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, পিবিআই মিডিয়া শাখার প্রধানসহ প্রমুখ।