বিল না পেয়ে রাজশাহী চিনিকলে চাষীদের তালা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, রাজশাহী, বার্তা২৪.কম
রাজশাহী চিনিকল/ ছবি: বার্তা২৪.কম

রাজশাহী চিনিকল/ ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহী চিনিকলে আখ বিক্রি করে বিল পাচ্ছেন না আখচাষীরা। ফলে চাষীরা একত্রিত হয়ে গত ২৭ মার্চ সকালে বাঘার আড়ানী সাবজোন অফিসে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন। 

গত তিন দিন ধরে ঐ সাবজোন অফিস তালাবদ্ধ থাকলেও তা খোলার ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ফলে বাঘা উপজেলার এই সাবজোনের আটটি আখ ক্রয়কেন্দ্রের চাষীরা চরম বিপাকে পড়েছেন।

এদিকে, এই ঘটনার পর আখ ক্রয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাঘা উপজেলার শতাধিক কৃষক আখ কেটে রাখলেও বিক্রি করতে পারছেন না।

তারা বলছেন- কয়েক হাজার মণ আখ কেটে মাঠে ফেলে রাখায়, তা শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আগামী দুই দিনের মধ্যে তা বিক্রি করা না গেলে বিক্রয় অনুপযোগী হয়ে পড়বে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আড়ানী সাবজোনের অধীনে আটটি আখ ক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এসব আখ ক্রয়কেন্দ্রে এক হাজার ৫০০ জনেরও বেশি চাষী তাদের আবাদকৃত আখ বিক্রি করে থাকেন। 

তারা ম্যাসেজের মাধ্যমে পূর্জি (আখ বিক্রির রশিদ) পেয়ে সেই অনুযায়ী আখ সরবরাহ করেছেন। তাদের আখ দেওয়ার প্রায় তিন মাস অতিবাহিত হলেও কোনো টাকা দেওয়া হয়নি। নিরুপায় হয়ে চাষিরা আড়ানী সাবজোন অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন।

চিনিকল সূত্র জানিয়েছে, রাজশাহী চিনিকলে গত বছরের ২৩ নভেম্বর থেকে আখমাড়াই শুরু হয়। এর একদিন আগে থেকে আখ ক্রয়কেন্দ্রগুলোতে কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় কার্যক্রম শুরু করে। প্রথম দিকে দুই-একটি বিল চাষীদের দেওয়া হলেও পরে আর কোনো বিল দেওয়া হয়নি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/29/1553861305961.jpg

আড়ানী আখ ক্রয়কেন্দ্রের অধীনস্থ কুশাবড়িয়ার আখচাষী রুবেল আলী, নূরনগরের বজলুর রহমান, পাঁচপাড়া  ইউনিটের আব্দুল মালেক শুক্রবার (২৯ মার্চ) দুপুরে অভিযোগ করেন, তারা প্রত্যেকেই চিনিকল থেকে এক থেকে দেড় লাখ টাকা পাবেন। পূর্জি অনুযায়ী আখ বিক্রি করেছেন, তবে কোনো টাকা পাননি। বারবার টাকার জন্য তাগাদা দেওয়া হলেও কর্তৃপক্ষের কোনো সাড়া মেলেনি। তাই তারা অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।

তারা জানান, ধার-দেনা করে আবাদ করেন। আখ বিক্রি করে পাওয়া টাকা দিয়ে ধার পরিশোধ করার প্রত্যাশায় ছিলেন। তা এখন পারছেন না। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। চিনিকল কর্তৃপক্ষ টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত তারা অফিসের তালা খুলতে দেবেন না বলেও জানান।

আড়ানী আখ ক্রয়কেন্দ্রের সাবজোন প্রধান রুস্তম আলী শুক্রবার দুপুরে বার্তা২৪.কম-কে  বলেন, ‘পূর্জি অনুয়ায়ী সিআইসি আখ ক্রয় করেছে। সেই মোতাবেক বিলও দিয়েছেন। টাকা পরিশোধ করবেন চিনিকল কর্তৃপক্ষ।’ 

‘অফিসে কাজ করার সময় চাষীরা এসে আমাদের বের করে দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা বলেছেন, বাড়ি চলে যেতে। এরপর আর কোনো নির্দেশনা না আসায় অফিসে যাচ্ছি না।’

রাজশাহী চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশফাকুর রহমান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘রাজশাহী চিনিকলের অধীনে চাষীরা প্রায় ২৬ থেকে ২৭ কোটি টাকা পাবেন। হেড অফিস থেকে আমাদের কাছে টাকা সরবরাহ করা হয়নি। টাকা পেলে তাৎক্ষণিক চাষীদের দেওয়া হবে।’

তবে কবে নাগাদ এই টাকা চাষীরা পেতে পারেন এই প্রশ্নের জবাবে কিছুই জানাতে পারেননি চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

   

ক্রেতাশূন্য পশুর হাট, লোকসানে ব্যবসায়ীরা



মেহেদী হাছান মাহীম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪. কম, ঢাকা
ক্রেতাশূন্য পশুর হাট, লোকসানে ব্যবসায়ীরা

ক্রেতাশূন্য পশুর হাট, লোকসানে ব্যবসায়ীরা

  • Font increase
  • Font Decrease

রাত পোহালেই মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় উৎসবের দিন পবিত্র ঈদুল আজহা। আর এ মুহূর্তে আসন্ন এই ঈদকে কেন্দ্র করে হাটগুলোতে চলছে গবাদি পশু বিক্রি। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কমলাপুর হাটসহ বিভিন্ন হাটে পশু বিক্রি প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে কোরবানি পশুর হাট। ক্রেতারা কোরবানির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন পছন্দের গরু-ছাগল ও ভেড়া। ক্রেতারা তাদের সাধ্যের মধ্যে বড়, মাঝারি এবং ছোট সাইজের পশু কিনছেন। কিন্তু, পশু বিক্রি করলেও তেমন লাভ হয়নি বলে জানিয়েছেন খামারিরা। অনেকে আবার লোকসানেও বিক্রি করেছেন পশু। 

মাতুয়াইল থেকে বাবা মো. শাহজাহানের সাথে যাত্রাবাড়ী হাটে গরু বিক্রি করতে এসেছেন মো: রাকিব। চারদিন ধরে দুইটি গরু নিয়ে হাটে তিনি। ঈদের আগের দিনেও গরু বিক্রি না হওয়ায় চোখে-মুখে হতাশার ছাপ ফুটে উঠেছে রাকিবের। রাকিব নিজ বাড়িতে গরু দুইটি পালন করে আসছেন। শখের দুটি গরুকে বিক্রি করতে না পারায় মন খারাপ তার।

গরু বিক্রি না হওয়া প্রসঙ্গে রাকিব বার্তা ২৪. কমকে বলেন, ক্রেতারা গরুর দাম একেবারেই কম বলে। এর চাইতে কসাইয়ের কাছে গরু বিক্রি করলে আরও ভালো দাম পাবো। ক্রেতার কাছে গরু দুইটির মূল্য চেয়েছে ৩ লাখ টাকা। কিন্তু, কোনো রকমের সাড়া না পেয়ে গরুগুলোকে পুনরায় বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রাকিব।

রাকিব আরও বলেন, দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে গরু দুইটাকে লালন-পালন করে আসছি।


এ-পর্যন্ত গরু দুইটির পেছনে প্রায় দুই লাখ টাকার মতো খরচ করেছি। কিন্তু, হাটে নিয়ে আসার পর ক্রেতারা একেবারেই কম দাম বলছে।

একইরকম অভিজ্ঞতা কিশোরগঞ্জ থেকে আসা মো. রুবেল মিয়ার। টানা তিন বছর যাত্রাবাড়ী হাটে তিনি তার গরু নিয়ে আসেন। এবারের বাজার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টানা তিনবছর পশুর হাটে গরু বিক্রি করতে এসেছি আমি। তবে, গত দুই বছরের তুলনায় এবারের অভিজ্ঞতা সবচেয়ে খারাপ। গো-খাদ্যের প্রচুর দাম হওয়ার কারণে এবারে গরুর দাম বিগত কয়েকবছরের তুলনায় অনেক বেশি।

তিনি আরও বলেন, মাত্র দুইদিন হয়েছে আমি এখানে এসেছি। এই হাটে মোট ১২ টা গরু নিয়ে এসেছি। তারমধ্যে একেবারেই সীমিত লাভে মাত্র ৪ টি গরু বিক্রি করেছি। খামার থেকে যাত্রাবাড়ী পশুর হাটে আসতে এপর্যন্ত আমার ২৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।    

কমলাপুর হাটেও দেখা যায় একই চিত্র। হাট ফাকা তবে ব্যবসায়ীদের চোখেমুখে নেই আনন্দের ছাপ। এই হাট ঘুরতে ঘুরতে দেখা হয় মো. আনোয়ারুল হোসেনের সাথে। জামালপুর থেকে ১২টি গরু নিয়ে ৪ দিন আগে এসেছেন কমলাপুর পশুর হাটে। মোট ২৫ লাখ টাকার গরু নিয়ে এসেছেন। ১২ টি গরুর মধ্যে গতকাল রাতে তিনি ৪টি গরু সীমিত লাভে বিক্রি করে দিয়েছেন। ঈদের আগের দিনও হাটে ক্রেতা কম দেখে ৫ টি গরু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা লসের মধ্যেই বিক্রি করে দিয়েছেন।

লোকসানে গরু বিক্রি করে হতাশায় ভুগছেন আনোয়ার। তিনি বলেন, যে পরিমাণ আশা করেছি তার কিছুই হয়নি। যা লাভ হয়েছে তা দিয়ে কিছুই হবে না। এখনও ৩টি গরু বাকি আছে। বিক্রি না হলে আবার নিয়ে যেতেও খরচ। এবারে ঈদ আর ঈদ রইল না।


কেন লোকসান?

যাত্রাবাড়ী হাটের গরু বিক্রেতা মো: রাকিব বলেন, ২০২৩ সালে গো খাদ্যের দামের তুলনায় এই বছর গো খাদ্যের দাম অনেক বেড়েছে। আগে এক বস্তা ভুসির দাম ছিল ১৯০০ থেকে ২০০০ টাকা। কিন্তু, এখন তা প্রায় ২৩০০ থেকে ২৫০০ টাকা। ভালো স্বাস্থ্যের জন্য গরুকে বিভিন্ন ধরণের সবজি-ফলমূল খাওয়াতে হয়। সেই খাবারের দামও আগের থেকে অনেকগুন বেড়েছে।

একই বিষয়ে কমলাপুর হাটের গরু বিক্রেতা মো: আনোয়ার বলেন, দিন যত যাচ্ছে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। সবাই বলে খামারিরা বাড়তি দাম বলে কিন্তু কেন বাড়ায় এটা জিজ্ঞেস করে না! আগে মাসে কারেন্ট বিল আসতো ৩০০ টাকা এখন তা বাইড়া আসে ৫০০ টাকা।

ক্রেতারা খুশি

গেন্ডারিয়ার এলাকাবাসী মুফিদুল ইসলাম। গত দুদিন ধরে হাট ঘুরছিলেন। আজ একটি ষাড় গরু নিলেন ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে।

বার্তা২৪.কমকে তিনি জানান, সাধ্যের মধ্যে আজকে গরুটি কিনতে পারলাম। গত দুদিনের চেয়ে আজ দাম অনেকটাই কম। দামের তারতম্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দাম যে পরিমাণ বেড়েছে তাতে গরুর দাম খামারিরা বেশি চায়নি। কিন্তু আমাদেরওতো আর বেতন বাড়ে না। সারাবছর টাকা জমাই কোরবানির জন্য। তবে দিন দিন নিত্যপণ্যের দাম হু হু করে বাড়লে এই খামারিরা আরও মাঠে মারা যাবে। এর প্রভাব আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতাদের উপরেই পড়বে। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে সরকারের আরও যত্নবান হওয়া উচিত।

;

মিরপুর গোলারটেক মাঠে ঈদের প্রধান জামাত ডিএনসিসির



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ঈদের প্রধান জামাত রাজধানীর মিরপুর গোলারটেক মাঠে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে ডিএনসিসি।

সোমবার (১৭ জুন) সকাল ৭টায় জামাত শুরু হবে বলে জানানো হয়। এ দিন প্রধান জামাতে এলাকাবাসীর সঙ্গে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এবং ডিএনসিসির কাউন্সিলররা এবং কর্মকর্তারা এই জামাতে অংশগ্রহণ করবেন।

রোববার (১৬ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

আতিকুল ইসলাম বলেন, 'ঢাকা উত্তরে বসবাসরত নগরীবাসীর মধ্যে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দিতে এবার ঈদে গোলারটেক মাঠে ডিএনসিসির প্রধান জামাত আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে এলাকাবাসীর মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠবে। আমি নিজেও এই জামাতে অংশগ্রহণ করবো। এর ফলে ঢাকা উত্তরের জনগণের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার সুযোগ হবে। ওয়ার্ড ভিত্তিক ঈদের জামাত আয়োজনের পাশাপাশি এবার প্রথম বড় পরিসরে মিরপুরে ডিএনসিসির প্রধান জামাত আয়োজন হচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় নগরবাসীকে সম্পৃক্ত করে বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদযাপন এবং সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য উৎসব আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গুলশানে এ বছর পহেলা বৈশাখ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসও উদযাপন করা হয়েছে।'

মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থান সংলগ্ন গোলারটেক মাঠে আয়োজিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ঈদের জামাতে ৩০ হাজারের অধিক মুসুল্লি নামাজ আদায় করতে পারবে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫টি করে ঈদের জামাত আয়োজন করা হয়েছে। কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে ৫৪টি ওয়ার্ডে মোট ২৭০টি ঈদের জামাত আয়োজন করা হচ্ছে ডিএনসিসির উদ্যোগে। এর মধ্যে প্রথমবারের মতো মিরপুর গোলারটেক মাঠে ডিএনসিসির ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

;

বন্যার পানিতে ভাসছে দেড় লক্ষাধিক মানুষের ঈদ আনন্দ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
বন্যার পানিতে ভাসছে দেড় লক্ষাধিক মানুষের ঈদ আনন্দ

বন্যার পানিতে ভাসছে দেড় লক্ষাধিক মানুষের ঈদ আনন্দ

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদ মানে হাসি। ঈদ মানে খুশি। সেই হাসি-খুশি নেই সিলেটের দেড় লক্ষাধিক মানুষের মুখে। সোমবার (১৭জুন) পালিত হবে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ত্যাগের মহিমা নিয়ে ঈদ উদযাপন করবে সারাদেশের মানুষ। কিন্তু ইতোমধ্যেই সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। তাই সিলেটের দেড় লক্ষাধিক মানুষের মুখে নেই ঈদের আনন্দ।

জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বৃষ্টির পানিতে সিলেটের সীমান্ত উপজেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্ট হয়েছে। ইতোমধ্যেই প্রদান দুটি নদী সুরমা ও কুশিয়ারা দুটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও কিছু কিছু স্থানে পানি বিপদসীমার কাছাকাছি রয়েছে।

সিলেটের ১৩টি উপজেলার মধ্যে ৯টিতে বন্যা দেখা দিয়েছে। পুরো জেলায় ১ লাখ ৭৯ হাজার ১৮ জন মানুষ বন্যাকবলিত হয়েছেন। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে গোয়াইনঘাট উপজেলা। এই উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের ১ লাখ ১৪ হাজার ৬০০ জন। জেলার ১৩টি উপজেলায় মোট ৫৩৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে জেলা প্রশাসন। আশ্রয় নিয়েছেন ৫৩ জন। এরমধ্যে ওসমানী নগরে ৪৩ জন ও বালাগঞ্জে ১০জন আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট কার্যালয়ের তথ্যমতে, রোববার (১৬জুন) বিকাল ৩টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে ৯২ সেন্টিমিটার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার ও গোয়াইনঘাটের সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো.ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সিলেটে ১৬ জুন সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ভারী বর্ষণের সতর্কবাণী দিয়েছেন।

এদিকে, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক। উপজেলার গোয়াইনঘাট-সারিঘাট ও সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কের উপর দিয়ে একাধিক স্থানে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তাছাড়া কানাইঘাট উপজেলায় বিভিন্ন এলাকা বন্যার পানিতে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। বাজার হাটে হাঁটু সমান পানিও দেখা যায়।

নতুন করে কানাইঘাট উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নে হাওর ও নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ ওই এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন এবং অতি ঝুঁকিপূর্ণ প্রবণ এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্রে দ্রুত অবস্থান নিতে মাইকিং করা হচ্ছে।

সিলেট জেলা প্রশাসন ও সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি আছে। জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি উপজেলায় উদ্ধারকাজের জন্য নৌকাও প্রস্তুত আছে। ঈদের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ খাবারের আয়োজনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বন্যা পরিস্থিতিতে ত্রাণসহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

;

ফাঁকা রাজধানীতে শুধু হাসপাতালের সামনে ভিড়



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদ উৎসব পালন করতে মেগাসিটি ঢাকার বেশিরভাগ বাসিন্দারা গ্রামে ফিরে গেছেন। এ কারণে নগরীর প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে গলির সড়কগুলোও প্রায় খাঁ খাঁ করছে। মুহূর্তেই এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলে যাওয়া যাচ্ছে। কোথাও কোনো সিগন্যালে দাঁড়ানোর প্রয়োজন পড়ছে না। অন্য সময়ে ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি গণপরিবহন গিজগিজ করলেও ঈদের আগের দিনে মাঝে মধ্যে দু’চারটি বাসের দেখা মিলছে।

রোববার (১৬ জুন) হাসপাতালগুলোর সামনে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। ধানমন্ডিতে পপুলার মেডিকেল কলেজ, গ্রিন রোডে অবস্থিত ল্যাবএইড হাসপাতাল, গ্রিন লাইফ হাসপাতালের সামনে রাস্তার ওপর অ্যাম্বুলেন্স দীর্ঘ সারির পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ির উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। যা নগরীর আর কোনো সড়কে দেখা যায়নি।

আজও অনেকেই রাজধানী ছেড়েছেন। যে কারণে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ ও রেল স্টেশন কমলাপুর ও বিমানবন্দরে কিছুটা যাত্রীর চাপ দেখা গেছে।

রাজধানীতে মধ্যম আয়ের লোকদের শপিংয়ের অন্যতম গন্তব্য নিউ মার্কেটও ক্রেতা শূন্য। অনেকেই দোকান খুলে বসে থাকলেও ক্রেতার দেখা মিলছে না। ফাঁকা সড়কের মধ্যে, মাঝে মধ্যে দু’চারজন ক্রেতা হাজির হচ্ছেন। যে কারণে দুপুরের পর কিছু দোকান বন্ধ করে দিয়েছেন।


কাপড়ের দোকানে ক্রেতার সমাগম না থাকলেও জুতার দোকানে কিছুটা ক্রেতা সমাগম দেখা গেছে। রাজধানীর নিউ এলিফ্যান্ট রোড ও বাটা সিগন্যাল এলাকায় কিছুটা সরব দেখা গেছে। অনেকেই ঘুরে দেখছেন নতুন কোনো ডিজাইন এসেছে কিনা। তবে ক্রেতার তালিকায় তরুণদের আধিক্য লক্ষণীয়। অনেকে বন্ধুদের নিয়ে এসেছেন জুতা কিনতে।

মিরপুর রোড, রোকেয়া সরণি, বিজয় সরণি, প্রগতী সরণি ঘুরে তেমন লোক সমাগম দেখা যায় নি। 

গলি ও মহল্লার প্রশস্ত সড়কগুলোকে শোভা পাচ্ছে অস্থায়ী বিশাল বিশাল সেড। যেখানে কোরবানির পশু এনে রাখা হয়েছে। কিছু লোকজন কোরবানির পশুর পরিচর্যায় ব্যস্ত, আর ছোট শিশুরা মেতে উঠেছেন ভিডিও এবং সেলফি তোলায়।

অন্যদিকে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা পাড়া-মহল্লায় ঘুরছে গরু ছাগলের খাবার নিয়ে। তাদের কারো ভ্যানে কাঁঠাল পাতা, কোনো ভ্যানে খড় ও ঘাস শোভা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে পুরো উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে রাজধানীজুড়ে। আকাশ মেঘলা থাকায় রাজধানীর তাপমাত্রা কয়েকদিনের তুলনায় অনেকটা কম। তাই ফাঁকা রাস্তায় ব্যাটবল হাতে নেমেছেন শিশুরা।

;