ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা জানেন না কর্মপরিধি
পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র ১০ দিন। ভোটারদের মন জয় করতে ব্যস্ত রাজশাহীর প্রার্থীরা। প্রতিশ্রুতির পসরা নিয়ে হাজির হচ্ছেন দ্বারে দ্বারে। কিন্তু অধিকাংশ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীই জানেন না, ওই পদের কর্মপরিধি।
তবে সবকিছু ছাপিয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে শেষমুহুর্তের প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আট উপজেলায় ৬০৬টি ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন।
জানা গেছে, প্রথমধাপে আগামী ১০মার্চ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। তাই প্রচার-প্রচারণায় এখন সরগরম গ্রামের অলি-গলি থেকে পাড়ার উঠান। সবখানেই ভোটের হাওয়া। প্রার্থীরা এলাকার উন্নয়নে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। চাইছেন ভোটারদের কাছে টানতে।
জিউপাড়া ইউনিয়নের সোনিয়া জানান, নারী চেয়ারম্যানের কাছে দাবি থাকবে, তিনি যেন নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করেন। বিশেষ করে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ, নারী শিক্ষা ও বিভিন্ন ভাতা প্রদানের ন্যায্যতা নিশ্চিত করেন।
তবে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের অনেকেই জানেন না ওই পদের কর্মপরিধি। তবুও উন্নয়নের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ভোটারদের।
পুঠিয়ার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমি জানিনা ভাইস চেয়ারম্যানের কাজ কী? আমার মতামতের মূল্যায়ন কতটুকু হবে। তবে সমাজ পরিবর্তনে আমি কাজ করতে চাই।’
পুঠিয়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মৌসুমী রহমান বলেন, ‘আমি কী কাজ করতে পারব তা জানা নেই। তবে নারীদের উন্নয়নে আমি সোচ্চার থাকতে চাই’।
এদিকে, চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ঘিরে এলাকার উন্নয়নের আশা দেখছেন ভোটাররা। পুঠিয়ার রুবেল হোসেন বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী উপজেলা ভারতীয় সীমান্তের কারণে প্রচুর মাদক আসে। সেই মাদকের প্রভাবে পুঠিয়ার যুবসমাজও ডুবতে বসেছে। তাই চেয়ারম্যানের কাছে প্রত্যাশা যেন মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন।
পুঠিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী জিএম হিরা বাচ্চু জানান, গত দশ বছরে তার উপজেলায় কোনো উন্নয়ন হয় নি। কেবল চেয়ার দখল করে বসেছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যানরা। তবে তিনি নির্বাচিত হলে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চান।
বাগমারা উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতা অনিল সরকার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার পক্ষে কাজ করছেন। ভোটাররা বুঝতে পেরেছেন সরকার দলীয় প্রার্থী বিজয়ী করলে এলাকার উন্নয়ন হবে। তাই তারা নৌকাকেই বিজয়ী করবেন বলেও আশা তার।’
এদিকে, নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে ভোটগ্রহণের সকল প্রস্তুতি এখন শেষ পর্যায়ে। রাজশাহীর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জানান, এরই মধ্যে নির্বাচন গ্রহণ কর্মকর্তাদের নিয়োগ শেষ হয়েছে। বেশির ভাগ উপজেলাতেই তাদের প্রশিক্ষণও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ চলছে। জেলার ৮টি উপজেলায় ৬০৬টি ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও স্বাভাবিক রয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় আছে এলাকায়।’
জানা যায়, রাজশাহীর নয়টি উপজেলার মধ্যে আইনি জটিলতা কারণে ভোট হচ্ছে না পবা উপজেলা পরিষদে। আর এরই মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাঘা ও মোহনপুরে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থী।
ফলে এখন ছয় উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন ১৫ জন। আর ভোটারসংখ্যা ১৬ লাখ ২৪ হাজার ৮৯৩।