১৫৯৯ একর জমির মালিক মল্লিকবাড়ি বন বিট নিজেই ভূমিহীন



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ভালুকা (ময়মনসিংহ) থেকে ফিরে: ১৫৯৯ একর জমির মালিক হয়েও মল্লিকবাড়ি বন বিট এখন নিজেই ভূমিহীনে পরিণত হয়েছে। শুধু কি ভূমিহীন; যদি বাস্তহারা বলা যায় তাতেও ভুল হবে না। তার নিজের দাঁড়াবার জন্য সামান্য ঠাঁইও নেই।

অন্য বিটের আশ্রিত হিসেবে রয়েছেন খোদ বিট অফিসার। অথচ গেজেট অনুযায়ী মল্লিকবাড়ি বন বিটের জমির পরিমাণ ১৫৯৯ একর। সবটাই এখন ভূমিদস্যুদের গ্রাসে চলে গেছে। এক শতাংশ জমিও আর অবশিষ্ট নেই। বন বিভাগের সর্বোচ্চ কর্তারাও ২ বছর আগে সরেজমিন পরিদর্শন করেছিলেন। লক্ষ্য ছিলো একটু জায়গা উদ্ধার করে সেখানে অন্তত বিট অফিস স্থাপন করা। কিন্তু রহস্যজনক কারণে সে উদ্যোগও থেমে যায়।

একজনতো টিপ্পনি কেটে বলেই বসলেন, এটি বিসিএস’এ প্রশ্ন হওয়ার মতো। কোন বিটের জমি নেই। মল্লিকবাড়িতে একজন বিট অফিসার রয়েছে, আবার তার অধীনে একজন বন প্রহরী ও ২ জন বাগানমালি রয়েছে। প্রশ্ন ছিলো কতোদিন আগে থেকে এই অবস্থা। এর সঠিক জবাব কেউই দিতে পারেন নি। কেউ বলেছেন ৪০ বছর, কেউ বলছেন ৫০ বছর, আবার কেউ কেউ ২০ বছরের কথা। এলাকার প্রভাবশালীরাই ধীরে ধীরে গ্রাস করে ফেলেছে পুরো বিটের জমি। অথচ এরমধ্যে রিজার্ভ ফরেস্টও রয়েছে।

বন আইনে রিজার্ভ ফরেস্ট (সংরক্ষিত বন) সম্পর্কে বলা হয়েছে, এখানে সাধারণ জনগণের প্রবেশ করতে হলে বন বিভাগের পূর্বানুমতি নিতে হবে। কেউ যদি অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করে প্রয়োজনে গুলি ব্যবহার করার এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে বন বিভাগকে। অথচ সেখানে এখন বন বিভাগ প্রবেশ করার সাহস পায় না। বিট অফিস স্থাপনের জায়গা বের করতে গেলে তাদের তাড়িয়ে দিয়েছে দখলবাজরা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/16/1547620473247.jpg

বিট অফিসার কুদরত-ই খুদা বার্তা২৪.কম কে বলেন, গেজেট অনুযায়ী মোট জমির পরিমাণ ১৫৯৯.০১ হলেও ২০ ধারা (রিজার্ভ ফরেস্ট) ভুক্ত রয়েছে ১৭টি দাগে ১৫৪.৮০ একর। ৫৩১ নম্বর দাগে রিজার্ভ ফরেস্ট রয়েছে ২১.৮০ একর। এখানে কাশেম সুপার নামের এক প্রভাবশালী প্রায় ৭ একরের মতো দখল করে রেখেছে।

বিট অফিসার বলেন, তিনি যোগদানের পর জমি উদ্ধারে ২৫টির মতো মামলা দিয়েছেন। তার আগের বিট অফিসারও প্রায় ৬টি মামলা দায়ের করে গেছেন। যেগুলো এখন বিভিন্ন পর্যায়ে বিচারাধীন রয়েছে।

মল্লিকবাড়ি বন বিটটি ময়মনসিংহ বন বিভাগের ভালুকা রেঞ্জের আওতাধীন। ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ের পাশে অবস্থিত হওয়ায় এখানকার জমি সোনার চেয়েও দাবী। এক শতাংশ জমির দাম ক্ষেত্র বিশেষে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত রয়েছে। এখানে জমি জবরদখলে নামিদামী কোম্পানিও পিছুপা হয় নি। স্কয়ার, ওরিয়ন, এনভয়, বাদশা গ্রুপ, লভেলো আইসক্রিম, লাবিব ডাইং ও ব্র্যাকের মতো জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান বনের জায়গা দখলে রেখেছে। বন বিভাগ মামলা দিয়ে নিজের দায় সেরেছে।

রাজনীতিতে অনেক মত পথ থাকলেও ভালুকায় বনের জমি দখলে আওয়ামী লীগ বিএনপি একাট্টা। কারো মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। বন বিভাগের জমি দখলে এখনও নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে বিএনপি নেতা শহীদুল ইসলাম শহীদ। বনের জমি বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে দখল করতে করতে তার নামই হয়ে গেছে বাউন্ডারি শহীদ। একসময় বনের নার্সারীতে (দৈনিক ৫ কেজি গমের বিনিময়ে) চারা লাগানোর কাজ করতেন। এখন নিজেই শত কোটি, মতান্তরে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। তার নিজের দখলেই রয়েছে কয়েকশ একর জমি।

নিজে যেমন বনের জমি দখল করেছেন আবার বাইরে থেকে শিল্পপতিদের ডেকে এনে জমি দখল করে দিয়েছেন। জমি দখলের পদ্ধতিটা এখানে একটু ভিন্ন রকমের। প্রথমে ব্যক্তিমালিকানার কিছু জমি সংগ্রহ করেন। এরপর তার চারপাশে কয়েকশ বিঘা জমি বাউন্ডারি দিয়ে ঘিরে নেন। আর বাউন্ডারি স্থাপনে কোটি টাকার খেলার নেতৃত্ব দেন বাউন্ডারি শহীদ।  

তার রয়েছে কয়েকশ লাঠিয়াল বাহিনী। আর থানা পুলিশ যাতে কোনো বাধা হয়ে না দাঁড়ায় সে জন্য ব্যবহার করা হয় নগদ টাকা। আর এই টাকার গন্ধে বুদ হয়ে যায় পুলিশ প্রশাসন। সেই সুযোগে নির্বিঘ্নে জমি দখল করে নেয় দখলবাজরা। বন বিভাগের লোকজনও অনেক সময় নগদ টাকার গন্ধে চোখ বুজে থেকেছেন। আবার কখনও কখনও দায়সারা গোছের মামলা দিয়ে নিজের দায় সেরেছে।

শুধু কি মল্লিকবাড়ি বন বিট। অন্যান্য বিটের অবস্থাও যায় যায়। যেদিকে নজর যায় শুধু দখলবাজদের দৌরাত্ব্য। ঢাকা ময়মনসিংহ রোডের সিডস্টোর বাজারের জায়গাটি রিজার্ভ ফরেস্টের। যেখানে হরেক রকমের বন থাকার কথা, সে সব জায়গায় শোভা পাচ্ছে সারিসারি অট্টালিকা। প্রতিনিয়ত বেহাত হয়ে যাচ্ছে বনের জায়গা।

ময়মনসিংহ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা একেএম রুহুল আমিন বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, আমি সম্প্রতি এখানে যোগদান করেছি। আগে কি হয়েছে বলতে পারবো না। তবে আমরা মল্লিকবাড়ি বিটে মাথা ঢোকানোর চেষ্টা করছি। খুব শিগগিরই আমরা একটু হলেও দখলমুক্ত করে বাগান করা হবে।

কেন্দ্রীয় বন অঞ্চলের বন সংরক্ষক রকিবুল হাসান মুকুল বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, সারাদেশে বনের জমি ডিমার্কেশন করার জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এখানে বন বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সকলে থাকবে। মার্ক করার কাজ শেষ হলে উদ্ধারে বিশেষ অভিযান করা হবে।

পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল্লাহ আল মহসিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। আমরা শিগগিরই তদন্ত টিম পাঠাবো। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

   

আরসার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত আছে: র‌্যাব



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

মিয়ানমারের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসার বিরুদ্ধে র‌্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত আছে। কোন প্রকার তথ্য পেলেই অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।

শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে এক প্রশ্নের উত্তরে র‌্যাবের মিডিয়া অ্যান্ড লিগ্যাল উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটা আতঙ্কের নাম আরসা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এই আরসা গোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে হত্যাকানণ্ড অপহরণসহ নানান অপরাধের সাথে জড়িত। এর আগে আমরা নানা ধরনের অভিযান পরিচালনা করে এখন পর্যন্ত ১১০ জন আরসা সদস্যকে গ্রেফতার করেছি এবং বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও অস্ত্র সরঞ্জামাদী উদ্ধার করেছি।

তিনি আরও বলেন, র‍্যাবের অব্যাহত নজরদারি, গোয়েন্দা তাৎপরতা অভিযানের প্রেক্ষিতে আরসা নেতৃত্ব শূন্য হয়ে যায়। পাশের দেশ থেকে অস্ত্র আসছে এমন গোয়েন্দা তথ্য থেকে আমরা গতকাল অভিযান চালিয়ে দুইজন কে গ্রেফতার করেছি।

আরাফাত বলেন, আরসার এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে নিষ্ক্রিয় রাখতে আমরা স্থানীয় থানা এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে নিবিড় যোগাযোগ রাখছি। আমরা তাদের ট্র্যাকিং করছি এবং তাদের বিরুদ্ধে আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত আছে। আমরা যখনই কোন তথ্য পাচ্ছি আমরা অভিযান চালাচ্ছি।

গত বুধবার ভোর রাতে কক্সবাজারের উখিয়ার গহিন পাহাড়ে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি অস্ত্র, গ্রেনেড ও রকেট শেল উদ্ধার করেছে র‍্যাব। এ অভিযানের সময় আরসা কমান্ডার মাস্টার সলিমুল্লাহ (৩৮) এবং তার সহযোগী মো. রিয়াজকে (২৭) গ্রেফতার করা হয়। তারা দুজনই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক।

;

উত্তরা, উত্তরখান এলাকায় শনিবার গ্যাস কম থাকবে



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
উত্তরা, উত্তরখান এলাকায় শনিবার গ্যাসের কম থাকবে

উত্তরা, উত্তরখান এলাকায় শনিবার গ্যাসের কম থাকবে

  • Font increase
  • Font Decrease

গ্যাস পাইপলাইনে নির্মাণের প্রয়োজনীয় কাজের জন্য শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর উত্তরা, উত্তরখান, দক্ষিণ খান এলাকায় গ্যাস সরবরাহ কম থাকবে।

শুক্রবার (১৭ মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।

এতে বলা হয়েছে, শনিবার সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত মোট ১৫ ঘণ্টা উত্তরা, উত্তরখান, দক্ষিণ খান ও এর আশপাশের এলাকায় গ্যাসের স্বল্পচাপ বিরাজ করবে। গ্রাহকবৃন্দের সাময়িক অসুবিধার জন্য তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

;

চিংড়ি ঘেরে মিলল ২ মরদেহ, শর্ট সার্কিট দিয়ে হত্যার অভিযোগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

কক্সবাজার শহরের খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে চিংড়ি ঘের থেকে দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহ দুটি পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর জানায় স্থানীয়রা।

শুক্রবার (১৭ মে) সকাল ১১ টায় খুরুশকুল মনুপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে এ মরদেহ দুটি পড়ে থাকতে দেখেছে স্থানীয় লোকজন।

নিহতরা হলেন, খুরুশকুল মনু পাড়া এলাকার বাসিন্দা জামালের ছেলে আবদুল খালেক (২৫) এবং আবু তাহেরের ছেলে মো. ইয়াছিন। উভয়ের বাড়ি খুরুশকুল মনু পাড়া এলাকায়। তারা দুইজনে পেশায় মৎস্যজীবী বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।

খুরুশকুলের চেয়ারম্যান শাহজাহান সিদ্দিকী জানিয়েছেন, গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে এসেছেন। মরদেহ দুটি প্রত্যক্ষ করে দেখেছেন তাদের শরীরে একাধিক বৈদ্যুতিক শর্টের চিহ্ন রয়েছে। তারা দুইজন মনুপাড়া এলাকার বাসিন্দা বলে জানান তিনি।

নিহত ইয়াছিন আরাফাতের মা জানিয়েছেন, তার ছেলে গতকাল রাত ১০টার সময় বাড়ি থেকে বের হয়। আজকে সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তবে কে বা কারা তাদের হত্যা করেছে সে বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান তিনি। হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে ছেলে হত্যার সঠিক বিচার দাবি করেন তিনি।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তাদের গায়ে মারধরের এবং বৈদ্যুতিক শর্টের আঘাত রয়েছে। কে বা কারা তাদের মেরে ফেলে রেখেছে সেই বিষয়ে এখনো কেউ কিছু বলছে না।

তবে চেয়ারম্যান শাহজাহান সিদ্দিকী এবং সেখানকার ইউপি সদস্য নাসির উদ্দীনের দাবি সাবেক ইউপি সদস্য শামসুল হুদার মাছের ঘেরে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ এর শর্ট সার্কিট দিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি অপারেশন) শাকিল হাসান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে একজনের পায়ে এবং আরেকজনের বাঁ হাতের নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের পর হত্যার মূল কারণ জানা যাবে।

;

দীর্ঘ শত্রুতা ও প্রতিশোধের জেরে হত্যাকাণ্ড, গ্রেফতার ৪



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নড়াইলের লোহাগড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিকদার মোস্তফা কামালকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

গ্রেফতারকৃতরা হল- প্রধান আসামি শুটার সাজেদুল মল্লিক (২৫), পাভেল শেখ (২৮), মামুন মোল্যা (২৬) ও মো. রহমত উল্লাহ শেখ (১৯)।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের বায়েজিদ ও নড়াইল এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা উক্ত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছে বলে জানান র‍্যাব।

র‍্যাব জানায়, দীর্ঘ বিরোধের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। ভুক্তভোগী নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও একই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আকবর হোসেন লিপন এর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব থেকে শত্রুতা বিরাজমান ছিল।

শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম। 

তিনি বলেন, গত ১০ মে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালকে দুর্বৃত্তরা অতর্কিত হামলা করে ও এলোপাথারি গুলি করে হত্যা করেন। ওই ঘটনায় ভিকটিমের বড় ভাই বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। একজন সাবেক ইউপি সদস্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে র‌্যাব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করতে মাঠে নামে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (১৬ মে)  রাতে র‌্যাব-৬, র‌্যাব-৭ এবং র‌্যাব-১০ এর যৌথ আভিযানে  ওই  হত্যার ঘটনায় জড়িত শুটারসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।

আসামিদের বরাত দিয়ে কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, দীর্ঘ বিরোধের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। ভুক্তভোগী নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও একই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আকবর হোসেন লিপনের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব থেকে শত্রুতা বিরাজমান ছিল।

তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে পূর্ব বিরোধের জের ধরে ভুক্তভোগী মোস্তফা কামাল এবং আকবর হোসেন লিপনের অনুসারীদের মধ্যে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে লিপন গুরুতর আহত হয় এবং তার একটি হাত কাটা পড়ে। পরবর্তীতে লিপন ও তার অনুসারীরা মোস্তফা কামাল এর উপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকে। লিপনের নির্দেশনায় ঘটনার দিন সকালে তার ছোট ভাইয়ের বাড়িতে গ্রেফতারকৃত সাজেদুলসহ অন্যান্য আসামিরা ভিকটিম মোস্তফা কামালকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী মোস্তফা কামালের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় গ্রেফতারকৃত সাজেদুলসহ অন্যান্য আসামিরা সুইচ গিয়ার চাকু, রাম দাসহ বিদেশি অস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়ে ওৎ পেতে থাকে। ঘটনাস্থলে পৌঁছানো মাত্রই সুযোগ বুঝে গ্রেফতারকৃত সাজেদুলের হাতে থাকা বিদেশি পিস্তল দিয়ে মোস্তফা কামালকে লক্ষ্য করে ৩ রাউন্ড গুলি করে; যার মধ্যে ২ রাউন্ড গুলি তার বুকে ও পিঠে লাগে।

র‍্যাব জানান, গ্রেফতারকৃত সাজেদুল স্থানীয় একটি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর ১ম বর্ষের ছাত্র। সে আকবর হোসেন লিপন এর অন্যতম প্রধান সহযোগী। সে লিপনের নেতৃত্বে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতো বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি, চুরি ও চাঁদাবাজি সংক্রান্ত ৩টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত রহমত উল্লাহ শেখ পেশায় একজন শ্রমিক। সে গ্রেফতারকৃত সাজেদুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ মারামারি, ছিনতাই, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত সাজেদুল এর সহযোগী হিসেবে তাকে উক্ত হত্যাকান্ড সংঘটিত করার জন্য ১ লক্ষ টাকায় চুক্তিবদ্ধ করা হয়েছিল এবং হত্যাকাণ্ডের সময় সে গ্রেফতারকৃত সাজেদুল সাথে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছিল বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি সংক্রান্ত ১টি মামলা রয়েছে এবং উক্ত মামলায় কারাভোগ করেছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত পাভেল স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এইচএচসি পর্যন্ত পড়ালেখা করে। সে লিপনের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করতো। সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত রয়েছে বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি ও চুরি সংক্রান্ত ৩টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত মামুন মোল্যা পেশায় একজন গাড়ি চালক। সে লিপনের নেতৃত্বে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। তার কাছে থাকা ছুরি চাকুসহ অন্যান্য দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে মোস্তফা কামালকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি ও চুরি সংক্রান্ত ২টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

;