ফেঁসে গেলেন মামলার বাদী হাছিনা!



আরিফ আহমেদ সিদ্দিকী, পাবনা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪
পাবনা ম্যাপ, ছবি: সংগৃহীত

পাবনা ম্যাপ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রতিবেশীকে ঘায়েল করতে ‘ছেলেকে অপহরণের’ মিথ্যা মামলা দায়ের করে নিজেই ফেঁসে গেলেন পাবনার চাটমোহর উপজেলার আটলংকা গ্রামের আতাউর রহমান ওরফে আক্তারের স্ত্রী হাছিনা খাতুন (৩০)।

বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

চাটমোহর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শরিফুল ইসলাম জানান, আটলংকা গ্রামের হাছিনা খাতুন তার প্রতিবেশী মকবুল হোসেন, তার স্ত্রী শামসুন্নাহার ও ছেলে সুজনকে ফাঁসাতে অপহরণ মামলা করেছিলেন। সেই মামলা পুলিশ ও সিআইডি কর্তৃক তিনবার তদন্ত করার পর আদালতে উদ্দেশ্যমুলক মামলা হিসেবে মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

আর মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করার কারণে হাছিনা খাতুনের বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে প্রসিকিউশন দাখিল করেন। যার প্রেক্ষিতে হাছিনা খাতুনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারী করেন আদালত। চাটমোহর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাসির উদ্দিন সঙ্গী ফোর্সসহ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে। এরপর শুক্রবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

যেভাবে ফেঁসে গেলেন হাছিনা: ২০১৬ সালের ২ নভেম্বর রাতে ছেলেকে অপহরণের অভিযোগ এনে চাটমোহর থানায় মামলা দায়ের করেন চাটমোহর উপজেলার আটলংকা গ্রামের বাসিন্দা মালয়েশিয়া প্রবাসী আতাউর রহমান ওরফে আক্তারের স্ত্রী হাছিনা খাতুন। মামলা নং ০২। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, ২০১৬ সালের ৩১ অক্টোবর দুপুরে তার ছেলে জিয়াউর রহমান ওরফে জিয়া (১৩) কে বাড়ি থেকে অপহরণ করে অপহরণকারী চক্রের কাছে সোয়া দুই লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়। মামলায় আসামী করা হয় জয়দেব নামের অজ্ঞাতনামা একজন আটলংকা গ্রামের মৃত নুরু মৌলভীর ছেলে মকবুল হোসেন (৬১), তার স্ত্রী শামসুন্নাহার (৫১) ও ছেলে সুজন হোসেন (৩১) কে। আর সাক্ষী করা হয় একই গ্রামের তিনজনকে।

মামলার প্রথমে তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এসআই তৌরিদুল ইসলাম। তিনি তদন্তে মামলার বাদিনীর অভিযোগ সাক্ষ্য প্রমাণে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ার পর ২০১৬ সালের ২৪ ডিসেম্বর আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট মিথ্যা নং-৪৩, ধারা ৩৪৩/৩৬৫/৩৮৫/৩৮৭ পেনাল কোড দাখিল করেন। এরপর বাদীনি হাছিনা খাতুনের নারাজি আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

২০১৭ সালের ৫ মার্চ সিআইডির এসআই এএসএম আরিফুজ্জামান জিন্নাহর উপর তদন্তভার অর্পণ করা হয়। তিনি ১৫ মার্চ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুন:তদন্ত করে বাদীনি ও সাক্ষীদের ছাড়াও এলাকার নিরপেক্ষ মানুষের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। তিনিও তদন্তে মামলায় করা অভিযোগের কোনও সত্যতা না পাওয়ায় অভিযুক্ত আসামীদের মামলা থেকে অব্যাহতি ও বাদীনির বিরুদ্ধে দ: বি: ২১১ ধারায় প্রসিকিউশনের আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট মিথ্যা হিসেবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর সাক্ষ্য স্মারকলিপি দাখিল করেন।

এরপর মামলাটির অধিকতর তদন্তের জন্য তদন্তকারী অফিসার পরিবর্তন করে একই বছরের ১৯ জুন’১৭  সিআইডি জোন পাবনার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এএফএফ তারিক হোসেন খানের উপর দায়িত্ব অর্পণ করেন কর্তৃপক্ষ। তিনি ঘটনাস্থল সরেজমিনে পুন:পরিদর্শন করে মামলাটির বিস্তারিত তদন্ত করেন ও মামলার রহস্য উদঘাটনে গুপ্তচর নিয়োগ করেন। বাদী ও সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

সর্বশেষ তার তদন্তেও বাদীনির অপহরণের অভিযোগটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। তিনিও আসামীদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি এবং বাদীনির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আবেদন সহ চূড়ান্ত রিপোর্ট মিথ্যা হিসেবে দাখিল করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সাক্ষ্য স্মারকলিপি দাখিল করেন। এরপর সেখান থেকে ১৭ ডিসেম্বর’১৭ আদেশপ্রাপ্ত হয়ে ২৬ ডিসেম্বর’১৭ তারিখে চাটমোহর থানার ‘চূড়ান্ত রিপোর্ট’ মিথ্যা নং ৪৬ বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

ঘটনার পেছনের ঘটনা: তিনবারের তদন্তে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা এই মিথ্যা অপহরণ মামলার পেছনের ঘটনা উদঘাটন করতে সক্ষম হন। বেরিয়ে আসে এক নতুন কাহিনী। তদন্তে জানা যায়, বাদীনি ও বিবাদীদের বাড়ি একই এলাকায় এবং পাশাপাশি। বিবাদী শামসুন্নাহার (স্বামী মকবুল হোসেন) এনজিওতে চাকুরী করা অবস্থায় আটলংকা গ্রামে জমি কিনে বসতবাড়ি তৈরি করে বসবাস করে আসছিলেন।

আর্থিক সংকটের কারণে এবং ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ মেটাতে গিয়ে দেনাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। সেই ধারদেনা মেটানোর জন্য তিনি বাড়ি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন। আর সেই বাড়ি কেনার ইচ্ছা পোষণ করেন প্রতিবেশী প্রবাসী আতাউর ওরফে আক্তারের স্ত্রী হাছিনা খাতুন। এই বাড়ী কেনাবেচা নিয়েই দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।

এরই এক পর্যায়ে মকবুল ও তার স্ত্রী-সন্তানকে এলাকা থেকে উৎখাতের জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন হাছিনা খাতুন। সেই অকৌশলের অংশ হিসেবে তিনি তার ছেলেকে অপহরণের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন। মকবুল ও তার পরিবারকে হয়রানী এবং অবৈধ লাভের আশায় হাছিনার ছেলে ভিকটিম জিয়াউর রহমান ওরফে জিয়া ৩১ অক্টোবর’২০১৬ তারিখ দুপুর ২টার দিকে নিজে নিজে আত্মগোপন করে এবং একই তারিখ রাত ৮টার দিকে নিজে নিজে উদ্ধার হয়ে তার মামার কাছে যায়।

পরবর্তীতে বাদীনি হাছিনা খাতুন ২ নভেম্বর’১৬ তারিখ রাত সাড়ে ৮টার দিকে চাটমোহর থানায় চারজনকে আসামী করে অপহরণ মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত ও সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে সাজানো অপহরণ মামলাটি আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় জেলে যেতে হলো হাছিনা খাতুনকে।

এ বিষয়ে বিবাদী মকবুল হোসেন ও তার ছেলে সুজন হোসেন জানান, মিথ্যা মামলা দায়ের করে হাছিনা খাতুন আমাদের মানসিক, পারিবারিক ও আর্থিক ক্ষতিসাধন করেছেন। সর্বোপরি আমাদের হয়রানী করেছেন। তার কারণে গ্রাম ছেড়ে চাটমোহরে গিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে। সত্যের জয় সবসময়। তাই তার ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। তার উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

   

পেনশন স্কিমে নিবন্ধন না করলে আশ্রয়ণের ঘর বাতিলের হুমকি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীর পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধন না করলে বরাদ্দকৃত ঘর বাতিলের হুমকি দিয়েছেন ইউনিয়নের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা সাহাব উদ্দিন। অভিযোগ উঠেছে তিনি বলেছেন, পেনশন স্কিমে নিবন্ধন করো; নয়ত আশ্রয়ণের ঘর বাতিল করে দেব।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার (১৩ মে) উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের রাজষপুর আশ্রয়ণে গিয়ে বাসিন্দাদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধন করতে বলেন ভূমি কর্মকর্তা সাহাবউদ্দি। এ সময় তিনি ওই আশ্রয়ণের সর্দার মো. শাহাদাতকে মঙ্গলবারের (১৪ মে) মধ্যে বাসিন্দাদের নিয়ে পরশুরাম সোনালী ব্যাংকে গিয়ে ছবি ও আইডি কার্ড দিয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করতে নির্দেশনা দেন। পেনশন স্কিম চালু না করলে বরাদ্দকৃত ঘর বাতিল করবেন বলেও জানান তিনি। একইসময় তার সঙ্গে স্থানীয় ইউপি সদস্য পেয়ার আহম্মদও আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের দ্রুত পেনশন স্কিম চালু করতে বলেন। 

রাজষপুর আশ্রয়ণের বাসিন্দা পারভীন আক্তার বলেন, ঘরবাড়ি না থাকায় আমরা আশ্রয়ণে থাকি। সেখানের সবারই আর্থিক অবস্থা খারাপ। তারমধ্যে যদি এমন কিছু করে আমাদের আর যাওয়ার জায়গা থাকবে না। গরিব মানুষ কাউকে কিছু বলতেও পারিনা। খুব কষ্টে দিন পার করেছি।

আরেকজন বাসিন্দা বিজলি আক্তার বলেন, আশ্রয়ণের সর্দার শাহাদাত ও ইউপি সদস্য পেয়ার আহাম্মদ একটি লিফলেট দিয়ে ব্যাংকে পাঠিয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে তাদের কথা মতো ছবি, এনআইডি আর লিফলেট নিয়ে সোনালী ব্যাংকে গিয়েছি। কিন্তু সঙ্গে ৫০০ টাকা না নেওয়ায় ব্যাংকের কর্মকর্তারা ফিরিয়ে দিয়েছেন। 

তিনি বলেন, আমি অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনমতে বেঁচে আছি। এসব পেনশন স্কিমের বিষয়ে কিছু জানিনা। ভূমি অফিসের একজন স্যার পেনশন স্কিমে নিবন্ধন না করলে আমাদের ঘর বাতিল করে দেবেন বলেছে। এখন কিভাবে কি করব জানিনা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য পেয়ার আহম্মদ বলেন, আমি ভূমি কর্মকর্তার সঙ্গে সেখানে গিয়েছি। তাদের পেনশন স্কিমে নিবন্ধন করতে বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে চিথলিয়া ইউনিয়নের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা সাহাব উদ্দিন বলেন, সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধন করতে বলেছি। কাউকে জোর করা বা ঘর বাতিলের কথা বলিনি৷  

পরশুরাম উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, পেনশন স্কিম নিবন্ধন করতে সবাইকে অনুরোধ করা হচ্ছে। আশ্রয়ণের বাসিন্দারা নিবন্ধন না করলে বরাদ্দকৃত ঘর বাতিলের বিষয়টি সঠিক নয়। 

পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজা হাবিব শাপলা বলেন, ভালো কাজের জন্য মানুষকে বলতে হয়। কিন্তু খারাপ কাজের জন্য বলতে হয় না। পেনশন স্কিম চালু করলে তাদের ভবিষ্যতের জন্যই উপকার হবে। তবে নিবন্ধন না করলে তাদের ঘর বাতিল করে দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। 

;

লিচুর ফলনে ধস, হাজার টাকা শ’



ছাইদুর রহমান নাঈম, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

লিচুর ব্যাপক চাহিদা থাকলেও এবার ফলন বিপর্যয় ও অধিক দামের কারণে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন মানুষ। তাপপ্রবাহ দীর্ঘমেয়াদী হওয়ার কারণে বেশিরভাগ লিচু বাগানের লিচুর গুটি রোদে পুড়ে শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে; ধারণ করেছে কালো রঙ।

গত কয়েক দিনের অতি তাপপ্রবাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে লিচু বাগানের অধিকাংশ গাছের লিচু ঝরে পড়েছে; যার ফলে এখন লিচুশূন্য হয়ে পড়েছে বাগানগুলো অথচ কিছুদিন আগেও এলাকার লিচু বাগানগুলো লিচুর গুটিতে ভরপুর ছিল।

কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার লিচু উৎপাদনকারী গ্রামের নাম মঙ্গলবাড়িয়া। দেশ এবং বিদেশে এই মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের লিচুর বেশ খ্যাতি রয়েছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, অল্প কিছু গাছে সামান্য পরিমাণ লিচু টিকে আছে। গাছের নিচে অনেকেই লিচু বিক্রি করছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছে মানুষ। ১০০ লিচু এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেউ অল্প হলেও নিচ্ছেন আবার কেউ দাম শুনে কিনার আগ্রহ হারিয়েছেন। 

লিচুর গুটি রোদে পুড়ে, শুকিয়ে কালো রং ধারণ করেছে

মনোহরদী থেকে আসা শাহ বকুল বলেন,' আগ্রহ নিয়ে এসেছিলাম দেখতে কিন্তু হতাশ হলাম। এবার লিচু কম। যাও আছে চড়া দাম। এর চেয়ে এলাকা থেকে লিচু কিনব ভাবছি।'

কাপাসিয়া থেকে আসা রাজিব মাহমুদ বলেন, দাম বেশি তাই ৫০ টি লিচু পাঁচশো টাকা নিয়ে নিলাম। শুধু খেয়ে দেখার জন্য৷ নেওয়ার ইচ্ছে ছিলো কিন্তু সিদ্ধান্ত বদল করতে হলো দামের কারণে৷ 

জানা যায় প্রায় দুইশত বছর পূর্বে সুদূর চীন দেশ থেকে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের একজন পুলিশ কর্মকর্তা সর্বপ্রথম এ জাতের লিচুর চারা নিয়ে এসেছিলেন এই গ্রামের । পরবর্তীতে এ লিচুর সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ার পর কলম পদ্ধতিতে সংগৃহীত চারা উক্ত গ্রামের ছড়িয়ে পড়ে এবং শুরু হয় লিচুর আবাদ।

মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের এক লিচু চাষী আব্দুল মজিদ বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব দুইশত লিচু গাছ আছে। এছাড়াও আমি শতাধিক লিচু গাছ কিনে রেখেছিলাম। লিচু গাছগুলোতে মৌসুমের শুরুতে মকুলে ভরপুর ছিল। কিন্তু এবার প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও গত কয়েকদিনের অতি গরমের কারণে লিচু বাগানের অধিকাংশ গাছের লিচু ঝরে পড়েছে। এর ফলে এখন লিচু বাগানের গাছগুলো লিচু শূন্য হয়ে পড়েছে। এর ফলে এখন আমাদের মাথায় হাত পড়েছে।’

তিনি বলেন, প্রতিবছর এই গ্রাম থেকে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হলেও এবার লিচু চাষীরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

লিচু আকারেও বেশ ছোট

এ বিষয়ে পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর ই আলম জানান, মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে প্রায় ৫ হাজার লিচু গাছ রয়েছে। এই গ্রাম থেকে ৮ থেকে ১০ দশ কোটি টাকার লিচু বেচাকেনা হতো তবে এবার প্রাকৃতিক প্রচণ্ড গরমের কারণে অন্যান্য ফসলাদীর ন্যায় লিচু চাষিরা অনেক ক্ষতি সম্মুখীন হয়েছেন। আমরা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই এলাকায় লিচু চাষীদের নিয়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে লিচু চাষের করণীয় বিষয় নিয়ে প্রচারপত্র বিতরণ করেছি। এছাড়াও ৪ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে লিচু বাগানের খোঁজখবর নেওয়া এবং লিচু চাষীদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এবার লিচু চাষীরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

কিশোরগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (খামার বাড়ি) উপপরিচালক মো. আবদুস সাত্তার বলেন, প্রচণ্ড দাবদাহ এবং উপযুক্ত সেচ সুবিধার অভাবে এবার মঙ্গল বাড়িয়া জাতের লিচুর ফলনে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। সেচ সুবিধার বিষয়টি মাথায় রেখে চাষীদের কৌশলী ভূমিকা পালন করতে হবে।

;

রংপুরে তুলা গবেষণা কেন্দ্রে আগুন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরে নগরীতে তুলা গবেষণা কেন্দ্রে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বেশকিছু তুলার বস্তা পুড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। 

বুধবার (১৫ মে) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তুলার গুদামে এ ঘটনা ঘটে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তুলার  গোডাউনে আগুন জ্বলে উঠে। এতে প্রাথমিকভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা এসে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। 

ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক শওকত আলী জানান, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের দোতলায় একটি পাকা গোডাউন ঘর ছিল, সেখানে আগুন লাগলে আমাদের খবর দেয়। খবর পেয়ে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে। তুলার বস্তা ছাড়া অন্য কিছু পোড়া যায়নি।

তিনি বলেন, কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না।

;

রেস্তোরাঁয় নেই রান্নাঘর, চলে অসামাজিক কাজ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর শিক্ষাপাড়া খ্যাত চকবাজার থানার অদূরে গুলজার মোড়ে অবস্থিত 'কফি ম্যাক্স' রেস্তোরাঁ। নামে রেস্তোরাঁ হলেও তার আসল কর্মকাণ্ড ধরা পড়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের একটি অভিযানে। এসময় ওই রেস্তোরাঁ রান্নার কোনো আলামত না পেলেও পাওয়া যায় অসামাজিক কাজে বেশকিছু উপকরণ। পরে এই রেস্তোরাঁকে সার্বিক বিষয় বিবেচনায় সিলগালাসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের নির্দেশ দেয় আভিযানিক দল।

বুধবার (১৫ মে) দুপুরে চকবাজার এলাকায় পরিচালিত এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মাদ ফয়েজ উল্লাহ। এরপর পৃথক একটি অভিযানে একই থানার কেয়ারি মোড়ে অবস্থিত দাবা রোস্তারাঁকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার উৎপাদন এবং পরিবেশনের দায়ে সিলগালা করে দেওয়া হয়।

এ অভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রানা দেবনাথ, সহকারী পরিচালক মোহাম্মাদ আনিছুর রহমানসহ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সহযোগিতা করেন।

ভোক্তা অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মাদ ফয়েজ উল্লাহ জানান, কফি ম্যাক্স রোস্তোরাঁয় অভিযানের সময় আমরা বেশ কিছু অসামাজিক কার্যকলাপের আলামত ও উপকরণ পাই। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে প্রতিষ্ঠানটিকে বন্ধের আদেশসহ সিলগালা করা হয়েছে। এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রেড লাইসেন্স অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির মালিক জনাব নজরুল ইসলাম নামক ব্যক্তি। কিন্তু অভিযান পরিচালনার সময় প্রতিষ্ঠানটির কর্তব্যরত কর্মচারী প্রতিষ্ঠানের মালিকের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করতে পারেনি।

তিনি আরও জানান, অন্যদিকে দাবা নামক ফাস্টফুড আন রেস্টুরেন্টে খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং নোংরা পরিবেশে খাবার উৎপাদন ও পরিবেশন করা হচ্ছে। যেখানে পূর্বের দিনের নষ্ট খাবার গুলোও নতুন করে পরিবেশন করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ট্রেড লাইসেন্স অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। যিনি মেসার্স কফি ম্যাক্স নামক প্রতিষ্ঠানটিরও স্বত্বাধিকারী। দাবা নামক রেস্টুরেন্টে সার্বিক পরিবেশ ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রতিষ্ঠানটিকে সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধের নোটিশ প্রদানসহ সিলগালা করা হয়েছে।

;