দেশের প্রথম রেলস্টেশন ‘জগতি স্টেশন’



এস এম জামাল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
দেশের প্রথম রেলস্টেশন ‘জগতি স্টেশন’। ছবি: বার্তা২৪.কম

দেশের প্রথম রেলস্টেশন ‘জগতি স্টেশন’। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের প্রথম রেলস্টেশন হচ্ছে কুষ্টিয়ার ‘জগতি স্টেশন’। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগে ঔপনিবেশিক বাংলায় রেলওয়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে উন্নতি, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও পণ্য পরিবহনের কাজে এ অঞ্চলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে স্টেশনটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।

১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের রানাঘাট থেকে কুষ্টিয়ার দর্শনা ও পোড়াদহ হয়ে জগতি পর্যন্ত ব্রডগেজ এই রেলপথের উদ্বোধন করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর এই অঞ্চলের মানুষের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে জগতি স্টেশনটি। তখন জ্বালানি হিসেবে ‘কয়লা’ পুড়িয়ে সাদা-কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে ঝিকঝিক শব্দে স্টিম ইঞ্জিনের (বাষ্পচালিত) রেলগাড়ি এসে থামত স্টেশনে।

রেলগাড়ি দেখতে আশপাশের কৌতূহলী মানুষজনের ভিড় জমত। পণ্য পরিবহনসহ যাত্রীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল এই রেলস্টেশনটি। কিন্তু কালের বিবর্তনে পুরনো স্টেশনটি আজ তার জৌলুশ হারিয়ে ফেলেছে।

অবহেলা আর সংস্কারের অভাবে স্টেশনের লাল রঙের দ্বিতল ভবনের ছাদ জুড়ে জন্মেছে পরগাছা। ফটল ধরেছে তার সারা শরীরে। স্টেশনটি বর্তমানে প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া স্টেশনের কয়েকশ বিঘা জমি অবৈধ দখলে চলে গেছে। এসব দেখভাল করার যেন কেউ নেই।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ১৮২৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জর্জ স্টিফেনসনের আবিষ্কৃত বিশ্বের প্রথম স্টিম ইঞ্জিনের রেল উদ্বোধন করা হয়। ‘লোকোমোশান’ নামের ওই ট্রেনটি ব্রিটেনের স্টকটন থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে ডালিংটন পর্যন্ত যায়। প্রথম এই রেল ইঞ্জিনের প্রথম চালক ছিলেন রেলের আবিষ্কারক সিভিল ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার জর্জ স্টিফেনসন নিজেই। ওই সময় ক্রমান্বয়ে বিশ্বজুড়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে রেলওয়ের বিপ্লব শুরু হয়। রেলের এই অগ্রগতিতে ইউরোপ ও আমেরিকার তুলনায় ব্রিটিশ শাসনাধীন বাংলাও পিছিয়ে ছিল না।

রাজনৈতিক, ভৌগোলিক ও কৌশলগত সুবিধাসহ বাণিজ্যিক স্বার্থ বিবেচনায় ব্রিটিশ সরকার ঔপনিবেশিক বাংলায় রেলওয়ে স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এই পর্যায়ে ১৮৫৩ সালের ১৬ এপ্রিল গেট ইন্ডিয়ার পেনিনসুলার রেলওয়ে নামক কোম্পানির নির্মিত মুম্বাই থেকে থানে পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথের উদ্বোধন করা হয়। এটিই ছিল ব্রিটিশ ভারতে রেলওয়ের প্রথম যাত্রা।

অপরদিকে ১৮৫৪ সালে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া থেকে হুগলি পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার রেলপথ উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে বাংলায় প্রথম রেলপথ চালু করা হয়।

এরপর বর্তমান বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখার মধ্যে রেললাইন স্থাপনের বিষয়টিও ব্রিটিশ সরকার গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নেয়। ১৮৬২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে কর্তৃক কলকাতার শিয়ালদহ থেকে রানাঘাট পর্যন্ত রেলপথ উদ্বোধন করা হয়। পরে এই লাইনকে বর্ধিত করা হয়। ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার (সাবেক নদীয়া) দর্শনা থেকে পোড়াদহ হয়ে জগতি পর্যন্ত ৫৩.১১ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রডগেজ লাইন নির্মাণের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভূ-খণ্ডে প্রথম রেল যোগযোগ স্থাপিত হয়।

পরে ঢাকার সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করতে ১৮৭১ সালের ১ জানুয়ারি জগতি স্টেশন থেকে বর্তমান রাজবাড়ী জেলার পদ্মা তীরবর্তী গোয়ালন্দ ঘাট পর্যন্ত রেললাইন চালু করা হয়।

এ সময় মানুষ কলকাতা থেকে ট্রেনে চেপে জগতি স্টেশন হয়ে গোয়ালন্দ ঘাটে নামতেন এবং স্টিমারে পদ্মানদী পার হয়ে চলে যেতেন ঢাকায়।

ব্রিটিশ সরকার জগতি রেলস্টেশন প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে আরও কিছু অবকাঠামো গড়ে তোলা হয় এখানে। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেগুলো আজ শুধুই স্মৃতি হয়ে রয়েছে। স্টেশনের ওয়েটিং রুম ভেঙে পড়েছে। প্লাটফর্মে ইট ও গাঁথুনি ক্ষয়ে গেছে। সংস্কারবিহীন স্টেশনের দ্বিতল ভবনের ছাদে জন্মেছে আগাছা। রেলের স্টিম ইঞ্জিনে পানি খাওয়ানোর জন্য প্লাটফর্মের দুই পাশে নির্মিত বিশাল আয়তনের ওভারহেড পানির ট্যাংক দুটি ইতোমধ্যে পরিত্যক্ত হয়ে গেছে। ট্যাংক দুটিতে সে সময় কয়লার ইঞ্জিনচালিত পাম্প দিয়ে ভূগর্ভ থেকে পানি উত্তোলন করা হতো।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/05/1541416397435.gif

স্বাধীনতার পূর্বে কুষ্টিয়ায় চিনিকল প্রতিষ্ঠার পর এখানে আখ সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল এই স্টেশনের। তখন আশপাশের জেলার জন্য ট্রেনে আনা খাদ্যশস্যসহ অন্যান্য পণ্যসামগ্রী খালাস ও যাত্রী ওঠা-নামা করত এই স্টেশনে। অথচ জগতি স্টেশনটি আজ কোলাহল মুক্ত নীরব নিথর। বর্তমানে এখানে যাত্রীসেবামূলক কিছুই নেই। চারদিকে বিরাজ করে নির্জন এক ভুতুড়ে পরিবেশ। স্টপেজ না থাকায় বর্তমানে এই স্টেশনের ওপর দিয়ে চলে যায় রাজশাহী-গোয়ালন্দঘাটগামী আন্তনগর ট্রেন মধুমতি এক্সপ্রেস।

এখানে শুধুমাত্র স্টপেজ রয়েছে সরকারের লিজ দেয়া খুলনা-গোয়ালন্দঘাট মেইল ট্রেন নকশিকাঁথা এক্সপ্রেস এবং পোড়াদহ ও রাজবাড়ির মধ্যে চলাচলকারী শাটল ট্রেনের। এই দুটি ট্রেনের অল্পসংখ্যক যাত্রী ওঠা-নামা করে।

তবে স্টেশনে যাত্রীসেবা না থাকায় তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। জনবলের অভাবও রয়েছে প্রকট। বর্তমানে এই স্টশনে স্টাফ রয়েছে মাত্র পাঁচজন। এদের মধ্যে ১ জন স্টেশন মাস্টার, ৩ জন পয়েন্সম্যান ও ১ জন গেটম্যান।

অপরদিকে ২ জন স্টেশন মাস্টার, ৩ জন বুকিং সহকারী, ৩ জন ল্যামম্যান, ৩ জন পয়েন্সম্যান ও ২ জন সুইপারের পদ দীর্ঘদিন থেকে শূন্য রয়েছে।

নিরাপত্তা কর্মী না থাকায় লাইনের সঙ্গে সংযুক্ত পিনসহ রেলের মূল্যবান সম্পদ খোয়া যাচ্ছে বলে জানান রেলওয়ে কর্মচারীরা।

রেলওয়ের একটি সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠার সময় জগতি স্টেশনের আওতায় রেলের অন্তত ৭শ বিঘা জমি ছিল। কিন্তু এসব জমির অধিকাংশই এখন স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে। এসব জমি উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই।

এদিকে কালের সাক্ষী হয়ে টিকে থাকা ঐতিহ্যের ধারক দেশের প্রথম এই স্টেশনটি আধুনিকায়ন না হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে রয়েছে চাপা ক্ষোভ। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আধুনিকায়নসহ স্টেশনটির হারানো সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা হোক।

কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও জগতি গ্রামের বাসিন্দা শিমুল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমাদের এই জগতিতে অবস্থিত দেশের প্রথম রেলওয়ে স্টেশনটির এ বেহালদশা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আগের সেই হারানো সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনাসহ স্টেশনটি আধুনিকায়ন করে যাত্রী সেবার মান উন্নয়নের দাবি জানাচ্ছি।’

জগতি স্টেশন মাস্টার মুসলিম উদ্দিন মোল্লা বার্তা২৪.কমকে জানান, জরাজীর্ণ স্টেশন ভবন, লোকবলের অভাব, যাত্রীসেবা না থাকাসহ নানা সঙ্কটে জগতি স্টেশনের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

   

হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়ল আরও দুই দিন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

এপ্রিলের পর মে মাসেও দেশজুড়ে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এমন অবস্থায় আরও দুই দিন বা ৪৮ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বৃহস্পতিবার (২ মে) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার জন্য এই হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় বলেন, আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা ঢাকা বিভাগের পশ্চিমাঞ্চলসহ খুলনা, রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে।

এর আগে গত ৩, ১৯, ২২, ২৫ ও ২৮ এপ্রিল তিনদিনের হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছিল। এরপর ৩০ এপ্রিল দুদিনের হিট অ্যালার্ট জারি করেছিল সংস্থাটি।

এ মৌসুমে চলতি বছরের এপ্রিলে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০২৩ সালের ১৬ এপ্রিল ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

চলতি মৌসুমে গত ৩১ মার্চ থেকে টানা ৩৩ দিন ধরে চলছে তাপপ্রবাহ। তবে আগামী সপ্তাহে সারা দেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়ার আভাস রয়েছে।

;

দ্বাদশ সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন চলবে ৯ মে পর্যন্ত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন আজ বিকাল ৫টায় শুরু হয়েছে। সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদের কার্য-উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে অধিবেশনের মেয়াদকালসহ অন্যান্য কার্যক্রমের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। চলতি অধিবেশন ৯ মে পর্যন্ত চলবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়।

অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মনোনয়ন দেন। এবারের অধিবেশনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা হলেন, আওয়ামী লীগের এমএ মান্নান, আসাদুজ্জামান নূর ও শফিকুল ইসলাম শিমুল, জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপু এবং সংরক্ষিত আসনের ফজিলাতুন নেসা। স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে অগ্রবর্তিতার ভিত্তিতে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা সংসদ পরিচালনা করবেন।

পরে স্পিকার সংসদে শোকপ্রস্তাব উত্থাপন করেন। চলতি সংসদের সদস্য মো. আবদুল হাইয়ের মৃত্যুতে আনীত শোক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। আলোচনা শেষে রেওয়াজ অনুযায়ী অধিবেশন মূলতবি করা হবে।

 

;

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ইউরোপের দেশসমূহ বাংলাদেশের পাশে আছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

  • Font increase
  • Font Decrease

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও পশ্চিম ইউরোপের দেশসমূহ বাংলাদেশের পাশে আছে বলে জানিয়েছেন সংসদে আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। 

বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকেলে দ্বাদশ সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এক প্রশ্নোত্তরে তিনি এ তথ্য জানান।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ নাহিদ নিগারের লিখিত প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গা শরনার্থীদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সাথে আলোচনার পাশাপাশি দেশটির উপর আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করে চলেছে। ক্রমাগত কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও পশ্চিম ইউরোপের দেশসমূহ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে তাদের টেকসই, নিরাপদ ও দ্রুত প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারকে সকল প্রকার মানবিক ও রাজনৈতিক সহায়তা ও সমর্থন প্রদান অব্যাহত রেখেছে। 

একই প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ জানান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, সৌদি আরবসহ আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার দেশসমূহের সাথে দ্বি-পাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। যার মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও উক্ত দেশসমূহে বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধিতে দূতাবাসের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুয়ায়ী ‘অর্থনৈতিক কূটনীতি’ অনুসরণ করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও ভাবমূর্তি বৃদ্ধি প্রধান লক্ষ্য। মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও অন্যান্য দেশে নতুন শ্রমবাজার বৃদ্ধিসহ বাংলাদেশ থেকে দক্ষ ও আধা দক্ষ শ্রমশক্তি রপ্তানীতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সাথে একযোগে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীর সঠিক দিক নির্দেশনায় এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের নিরলস প্রচেষ্টায় অনেক দেশের সাথে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, কূটনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে ল্যাটিন এবং আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলোতে সাম্প্রতিক সময়ে আমরা বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছি। দক্ষিণ আমেরিকান দেশগুলো যেমন- ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে, চিলি, উরুগুয়ের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য খুবই সীমিত পরিমাণে হয়ে থাকে, যেমনটি রয়েছে আফ্রিকার দেশগুলোতেও।

অথচ বাণিজ্যসহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নানা ক্ষেত্রে এ অঞ্চলগুলো অনেক সম্ভবনাময়। তাই নিয়মিত অংশীদারদের বাইরেও এখন সম্ভাবনাময় ও অনুদঘাটিত গন্তব্যসমূহের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্রাজিল, মেক্সিকো, এসোয়াতিনি, বতসোয়ানা, দক্ষিণ আফ্রিকায় এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় উচ্চ পর্যায়ের সফর অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রত্যেকটি সফরেই বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলো বের করা গেছে এবং ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীগণের যোগাযোগের মাধ্যম তা তৈরি করা গেছে।

;

নাফ নদী থেকে ১০ জেলেকে ধরে নিয়ে গেলো আরাকান আর্মি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নাফ নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে কক্সবাজারের উখিয়ার থাইংখালীর সীমান্ত এলাকা থেকে ১০ বাংলাদেশী জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্টি আরাকান আর্মি (এএ)।

বুধবার (১ মে) সকাল ৮ টার উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালীর রহমতের বিল সীমান্তে নাফ নদী থেকে তাদেরকে ধরে নিয়ে যায়।

অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী মুঠোফোনে জানান, জেলেরা নাফনদীর বাংলাদেশ অংশে মাছ ধরতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন।

গফুর উদ্দিন বলেন, আরাকান আর্মির সদস্যরাই আমাদের জেলেদের নিয়ে গেছে। কারণ রহমতের বিল সীমান্তে মিয়ানমার অংশে এখন সেদেশের কোনো সরকারী বাহিনী নেই। যারা ছিলো তাঁরা সবাই সংঘাতের সময় পালিয়ে বাংলাদেশে চলে এসেছিলো। এখন রহমতের বিলের ওপারে মিয়ানমানের ওই এলাকাটি আরাকান আর্মির দখলেই আছে। এছাড়া বিভিন্ন সূত্রে থেকে আরাকান আর্মিই জেলেদের নিয়ে গেছে সে খবর পেয়েছেন বলেও জানান তিনি।

পালংখলী ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ড রহমতেরবিলের ইউপি সদস্য আলতাছ আহমেদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমাদের এলাকার ১০ জেলে নাফ নদীর মিয়ানমার অংশে প্রবেশ করলে সেখান থেকে আরাকান আর্মি ধরে নিয়ে যায়। আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। প্রশাসন বলেছে ব্যবস্থা নিচ্ছে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তানভীর হোসেন মুঠোফোনে জানান, যেহেতু সীমান্ত এলাকা থেকেই অপহরণের শিকার হয়েছে তাঁরা, তাই গতকালকে রাতেই বিষয়টি বিজিবিকে জানানো হয়েছে এবং তাঁদেরকে উদ্ধারের জন্য ইতোমধ্যে বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে জানানো হয়েছে।

আরাকান আর্মির নাম সরাসরি না বললেও তানভীর হোসেন বলেন, তিনিও শুনেছেন মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনই এ কাজ করেছে।

অপহৃতরা হলেন, মৃত জালাল আহমেদের ছেলে সাইফুল ইসলাম, মৃত আলী আহমদের ছেলে আব্দুর রহমান ও আয়ুবুল ইসলাম, তাহেরের ছেলে মোঃ সোহান, মৃত সোহাব হোসেনের ছেলে জানি আলম, মৃত আব্দুস সালামের ছেলে আব্দু রহিম, জালাল আহমেদের ছেলে আনোয়ার। এরা সকলেই উখিয়ার থাইংখালীর রহমতের বিল এলাকার ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বলেন জানান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন।

রহমতের বিলের পাশাপাশি এলাকা পালংখালী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পুটিবুনিয়া এলাকার আছে তিনজন। তারা হলেন, মৃত মোঃ হোসেনের ছেলে ওসমান গনি, মৃত আজিজ সালামের ছেলে আবুল হাসিম ও একই এলাকার মোঃ ওসমান।

এদিকে অপহৃতদের পরিবার উৎকণ্ঠায় আছেন। যেকোনো মূল্যে অহপহৃতদেরকে অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবী অপহৃতদের পরিবারের।

;