মাছ বাজারগুলো ইলিশে ভরপুর



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
মাছ বাজারগুলো ইলিশে ভরপুর। ছবি: বার্তা২৪.কম

মাছ বাজারগুলো ইলিশে ভরপুর। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর ঝিনাইদহের মাছের বাজারগুলো এখন ইলিশে ভরপুর। প্রতিদিন উপকূলীয় জেলাগুলো থেকে ট্রাকযোগে ইলিশ আসছে ঝিনাইদহ, কালীগঞ্জ ও কোটচাঁদপুর মাছের আড়তগুলোতে। সেখান থেকে মাছগুলো ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন হাটবাজারে। দামও সস্তা।

ঝিনাইদহ শহরের মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রচুর ইলিশ আমদানি হয়েছে। দামও ক্রেতাদের হাতের নাগালে। তবে ক্রেতার সংখ্যা কম।

ছোট সাইজের ইলিশ প্রতি কেজি ৩শ টাকা, মাঝারি সাইজের ইলিশ প্রতি কেজি ৫শ টাকা ও ৭শ গ্রাম ওজনের ইলিশ সাড়ে ৬শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, এবার ইলিশ আমদানি বেশি হচ্ছে। ছোট সাইজের ইলিশের পেটে ডিম নেই। কিন্তু মাঝারি সাইজের ইলিশের পেট ডিমে ভর্তি। আর কিছুদিন থাকলে এ মাছগুলো ডিম ছাড়ত।

   

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করার ইচ্ছে নেই: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করা ও স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার ইচ্ছে নেই। তবে যারা সরকারের উন্নয়নের অপপ্রচার করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। সেই সঙ্গে সরকারের উন্নয়ন কে থামানোর জন্য বিদেশি স্পনসরশীপে অপপ্রচার চালানো হয় বলেও জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (২ মে) রাজধানীর ধানমন্ডি টিআইবি কার্যালয়ে আয়োজিত বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৪ উপলক্ষে 'বর্তমান বৈশ্বিক পরিবেশগত সংকটের প্রেক্ষাপটে মুক্ত গণমাধ্যম এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা' শীর্ষক আলোচনা সভায় এই অভিমত জানানো হয়। ইউনেস্কো, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এবং আর্টিকেল নাইনটিন-এর যৌথ এই সভার আয়োজন করা হয়।

মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, বিদেশি সহযোগীতা গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের কিছু জায়গা থেকে সিস্টেমেটিক ডিসইনফরমেশন ক্যাম্পেইন করা হয়।সরকারের উন্নয়ন কে বাঁধাগ্রস্থ করতে এ ধরণের প্রচারণা চালানো হয়। এটা কেনো হয় আমরা জানি। বিদেশী স্পনসরশীপে এটা করা হয় মাঝে মধ্যে। হিল ট্র‍্যাকস, গার্মেন্টস নিয়ে বিভিন্ন ধরণের ষড়যন্ত্র আছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে অনেক মিথ্যাচার হয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে বড় মিথ্যা হচ্ছে ভারত নিয়ে মিথ্যাচার। রিপোর্টিং এর সত্যতা থাকতে হবে, যে কোন ধরণের সমালোচনাকে আমরা স্বাগত জানাই, তবে মিথ্যাচারকে নয়। সরকারের কার্যক্রম নিয়ে যে কোন সমালোচনা যে কেউ করতে পারে, কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে যখন ধারাবাহিক মিথ্যাচার করা হয় তখন প্রশ্ন ওঠে।

রামপাল নিয়ে মিথ্যাচারকে অশুভ প্রচেষ্টা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় মিথ্যা হলো এটা বলা হয়েছে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র ভারতে করতে দেওয়া হয়নি, এজন্য বাংলাদেশের পরিবেশের ক্ষতি করে করা হয়েছে। এনটিপিসি যারা আমাদের পার্টনার তাদের কোন ঠেকায় পরেনি যে এখানে প্ল্যান্ট করবে। ভারতের নিজেরই প্রচুর জ্বালানি প্রয়োজন। এখানে এনটিমিসির আসার কোন প্রয়োজন নাই। আমরা নিজের স্বার্থে তাদের এনেছি। এনটিপিসিকে নিজে ৭০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। ওর আরও ৭০ হাজার উৎপাদন করার সক্ষমতা আছে। ভারতের এক্সিম ব্যাংক থেকে আমরা বিনিয়োগ এনেছি, এনটিপিসির সঙ্গে পার্টনারশিপ করেছি। যেহেতু তাদের বিনিয়োগ ৫০ শতাংশ, অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশপাশি ৫০ শতাংশ লাভ নেওয়া যাবে। দিন শেষে এটা ব্যবহার করবে এদেশের মানুষ।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নামে যখন এর অপব্যবহার হয় তখন এটার পরিণাম খুবই ভয়াবহ, এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা গণমাধ্যমের প্রসার ও এর স্বাধীনতার জন্য ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে। আমার প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। এ ক্ষেত্রে সবাইকে আমরা স্বাগত জানাই যারা বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করতে চায়। আমরা শুধু উন্নয়নই করতে চাই না আমরা টেকসই উন্নয়ন করতে চাই, যেটা আমাদের পরিবেশকে সুরক্ষা দিবে। পরিবেশ রক্ষায় সরকারকে যে সহযোগিতা করবে তাকে স্বাগত জানাচ্ছি।

পরিবেশ রক্ষায় কোন প্রতিবেদন করতে গিয়ে কোন সাংবাদিক আক্রমণের স্বীকার হয় তাহলে তাকে সুরক্ষা দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। তবে সেটা যেন সঠিক তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে, ডাটা প্রোটেকশন অ্যাক্ট, এআই অ্যাক্ট নিয়ে আইন হচ্ছে। কোন আইনের যেনো অপব্যবহার না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, তবে আইনের প্রয়োজনীয়তা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নামে কেউ যদি এর অপব্যবহার করে সেটা রোধ করতে হবে। আইন যেমন প্রয়োজন ঠিক একইভাবে কোন আইনের যাতে অপব্যবহার না হয় সেদিকেও নজর রাখতে হবে। কোন আইনের অপব্যবহার হলে সকলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে। তথ্য অধিকার আইনে যে সকল তথ্য জনগণের জানার অধিকার রয়েছে সে সব তথ্য সরকারি সংস্থাকে দিতে বাধ্য।

অন্য একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি কোন আইনে অসঙ্গতি থাকে সেগুলো আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সংশোধন করা হবে, সরকারের কোন উদ্দেশ্য নেই আইন দ্বারা মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করা।

সভায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবির) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ বৈশ্বিক উষ্ণায়ণ মোকাবিলায় প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছে। ক্রমবর্ধমান ভূমি দস্যুতা, উন্ননয়নের নামে জীব বৈচিত্র ধ্বংস করা, নগরায়নের নামে জবর দখল এখন স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পরিণত হয়েছে। পরিবেশের উপর এমন আগ্রাসনে ক্ষমতাসীনদের একাংশ লাভবান হচ্ছে বিধায় এদের সুরক্ষা দিচ্ছে তারা। এসব নিয়ে যারা কাজ করবে গণমাধ্যমসহ সুশীল সমাজ সেই পরিবেশ দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে। আইনের মধ্যেও দুর্বলতা রয়েছে। যাদের আইন প্রয়োগ করার কথা, জবাবদিহীতা নিশ্চিত করার কথা তাদের ও যোগ সাজোশ রয়েছে। সম্প্রতিক বছরগুলোতে ২৩টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, ৪৩ জন সাংবাদিক হামলা মামলার শিকার হয়েছে এই কাজ করতে গিয়ে। বিভিন্ন সংস্থার ফান্ড বন্ধ করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে, হামলার ঘটনা ঘটেছে, তৃণমূলে দখলটা বেশি এসব এলাকায় ঝুঁকিটা বেশি, যদি আমরা এই চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করতে না পারি।

তিনি আরও বলেন, কোনভাবেই মিডিয়া এবং সিভিল সোসাইটির স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করা যাবে না। এর জন্য ভয়াবহ পরিণতি হবে। ক্ষমতার অপব্যবহারের সাথে আন্তর্জাতিক যোগসাজসেও পরিবেশ ধ্বংস করা হয়, এর বড় উদাহরণ সুন্দরবন ধ্বংস করে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এর প্রতিবাদ করায় কিছু পরিবেশবাদী নেতার ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিলো।

ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট ফোরাম এর সভাপতি ও মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক রেজওয়ানুল হক বলেন, সাংবাদিকতা সারা বিশ্বেই চ্যালেঞ্জের মুখে। পরিবেশ বিষয়ক সাংবাদিকতা একটু বেশি চ্যালেঞ্জিং। বালু মহল, পাহাড় কেটে লেক। এসবের পেছনে অনেক ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা জড়িত। তাদের বাধার মুখে পড়তে হয়। টিভি সাংবাদিকদের দেখার কেউ নাই। ঝুঁকি নিয়ে সাংবাদিকরা কোন একটা কাজ করতে গেলে বিপদে পড়লে কেউ পাশে থাকে না।

;

মোহাম্মদপুরে হ্যান্ড গ্রেনেড উদ্ধার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার জাকির হোসেন রোডে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি হ্যান্ড গ্রেনেড উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বুধবার (১ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে স্থানীয়দের দেওয়া খবরে ঘটনাস্থলে যায় থানা পুলিশ। পরবর্তীতে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের বোম ডিসপোজাল ইউনিট গিয়ে গ্রেনেডটি উদ্ধার করে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তোফাজ্জল হোসেন।

তিনি বলেন, মোহাম্মদপুরের জাকির হোসেন রোড খেলার মাঠের পাশের ড্রেন তৈরির কাজ করার সময় একটি পরিত্যক্ত গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের বোম ডিসপোজাল ইউনিট গিয়ে গ্রেনেড উদ্ধার করে নিস্ক্রিয় করেছে।

তিনি আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে গ্রেনেডটি মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত। দীর্ঘদিন মাটির নিচে থাকায় জং ধরে গেছে। সতর্কতার সঙ্গে উদ্ধার হওয়ায় কোনো সমস্যা হয়নি।

;

নলকূপেও পানি মিলছে না ঠাকুরগাঁওয়ের কয়েকটি গ্রামে



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশজুড়ে প্রচণ্ড দাবদাহ, নেই বৃষ্টি। পুড়ছে উত্তরের জনপদগুলো। এমন পরিস্থিতিতে ঠাকুরগাঁওয়ে কয়েকটি গ্রামে নেমে গেছে পানির স্তর। এতে অনেক নলকূপে মিলছে না পর্যাপ্ত পানি। ফলে খাবার পানিসহ দৈনন্দিন কাজে পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, জেলার সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের দক্ষিণ ঠাকুরগাঁও গ্রাম ও হরিপুর উপজেলার শাহানাবাদ, হাটপুকুর, খালেকপাড়া গ্রামের টিউবওয়েল গুলোতে পানি উঠছেনা। ক্রমশ বেড়ে চলছে এমন দূর্ভোগ। এতে দৈনন্দিন জীবনের কাজে ব্যত্যয় ঘটছে৷

দুই সপ্তাহ ধরে তীব্র তাপপ্রবাহে নেমে গেছে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্থর। টিউবওয়েলের পানি ঠিকমতো উঠছে না। পাম্প বসিয়েও পানি মিলছে না। যারা বডিং করে পাম্প বসিয়েছেন, তারা কিছুটা পানি পাচ্ছেন। তাদের বাড়ি থেকে পানি আনতে গেলেও বিপাকে পড়তে হচ্ছে। বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যাওয়ায় তারা পানি দিতে চাচ্ছেন না। বাড়িতে ব্যবহৃত কাপড়, থালাবাসন ধোয়া ও রান্নাবান্না করতে যে পানি দরকার তা মিলছে না। দীর্ঘ সময় পর একটু পানি উঠলেই কিছু সময়ের মধ্যে আবার তা শেষ হয়ে যায়।

শাহানাবাদ গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, এমনিতে গরমে জীবন অতিষ্ঠ। তারপর আবার টিউবওয়েল গুলোতে পানি পাওয়া যাচ্ছেনা। অনেকক্ষণ ধরে পানি দিয়ে পানি উঠানোর চেষ্টা করলেও পাওয়া যায়না। হঠাৎ করে অল্প পানি উঠলে আবার নাই হয়ে যায়। এ

রফিকুল ইসলাম বলেন, মাদরাসার শিক্ষার্থীদের প্রায় সময়ে ওযু করার জন্য পানির প্রয়োজন হয়। কয়েকদিন থেকে টিউবওয়েল গুলোতে পর্যাপ্ত পানি মিলছে না। এতে সবারই অনেক রকম সমস্যা হচ্ছে। যদিও এটি এখন চলমান জাতীয় সমস্যা। আমরা আবদার করছি যাতে স্থানীয় ভাবে এটি সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হয়।

ঠাকুরগাঁওয়ের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী পরিচালক শামীম আনোয়ার বলেন, সারাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে এমন সমস্যা দেখা দিয়েছে। তার মধ্যে এ জেলায় কয়েকটি জায়গায় এমন চিত্র দেখা দিয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে এটির সমাধান করা যায়।

;

ঢাকায় পৌঁছেছে ভূমধ্যসাগরে নিহত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভূমধ্যসাগরে নিহত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ লিবিয়া থেকে বৃহস্পতিবার (২ মে) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মরদেহবাহী সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের এসভি৮০৮ ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় বলে জানা যায়।

এর আগে, মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) মৃতদেহগুলো তিউনিস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হয়। ওই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন তিউনিসিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মাদ খায়রুল বাশার ও দূতাবাসের মিনিস্টার (শ্রম) গাজী মো. আসাদুজ্জামান কবির। 

এ ঘটনায় একটি মামলাও হয়েছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি একটি অভিবাসী দল নৌকায় করে স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় লিবিয়ার জোয়ারা উপকূল থেকে ইউরোপের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। যাত্রাপথে নৌকাটি তিউনিসীয় উপকূলে গেলে মধ্য রাত সাড়ে চারটার দিকে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। নৌকাটিতে মোট ৫৩ জনের মধ্যে ৫২ জন যাত্রী এবং একজন চালক ছিলেন। 

দুর্ঘটনার পর তাদের মধ্যে ৪৪ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন। বাকিদের মধ্যে পাকিস্তানের আট জন, সিরিয়ার পাঁচ জন, মিশরের তিন জন ও নৌকা চালক রয়েছেন।

ওই ঘটনায় নৌকায় থাকা ৯ জন যাত্রী মারা গেছেন। তাদের মধ্যে আট জন বাংলাদেশি নাগরিক। নিহত অপর ব্যক্তি পাকিস্তানের নাগরিক।

নিহত বাংলাদেশিরা হলেন মামুন শেখ, সজল বৈরাগী, নয়ন বিশ্বাস, রিফাত শেখ, সজীব কাজী, ইমরুল কায়েস আপন, মো. কায়সার ও রাসেল শেখ। তারা পাঁচজন মাদারীপুরের ও তিনজন গোপালগঞ্জের।

ব্র্যাকের সহযোগি পরিচালক (মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্লাটফর্ম) শরিফুল হাসান জানান, ওই নৌকায় থাকা আরও ১১ বাংলাদেশী দেশে ফিরেছে তারা। তাদের মধ্যে মাদারিপুর রাজৈর উপজেলার দুজন ব্র‍্যাকের সাথে যোগাযোগ করেন। তারা অভিযোগ করেন ওই ৮ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় যেহেতু একটা মামলা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তে বিস্তারিত উঠে আসবে বলে আশা করছি‌।

পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় ঢাকার বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা করেন নিহত সজল বৈরাগীর বাবা সুনীল বৈরাগী। মামলার দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। সংঘবদ্ধভাবে খুনের ৩০২/৩৪ ধারা এবং মানবপাচার প্রতিরোধ আইনে গত ১৯ এপ্রিল মামলা দায়ের করার দুইদিন পরই তাদের আটক করা হয়।

মামলার এজাহারে সুনীল বৈরাগী অভিযোগ করেন, তার ছেলে সজল বৈরাগী উন্নত জীবনের আশায় ইতালি যেতে ইচ্ছুক ছিলেন। সজলের পূর্ব পরিচিত যুবরাজ কাজী (২৪) এবং লিবিয়ায় অবস্থানরত মোশারফ কাজী ১৪ লাখ টাকার বিনিময়ে তাকে বৈধ পথে ইতালি প্রেরণের প্রস্তাব দেন। সজল বৈরাগী ও তার পরিবার এই প্রস্তাবে রাজি হয়।

দুই পক্ষের সম্মতিতে গত বছর ১৭ নভেম্বর যুবরাজ কাজীর গোপালগঞ্জের বাসায় আড়াই লাখ টাকা এবং পাসপোর্ট দেন সজল। ৩০ ডিসেম্বর তাকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেয়া হয়।

বিমানবন্দরে প্রবেশের আগে গাড়ি থেকে নামার আগেই সজলের কাছ থেকে আরও নগদ পাঁচ লাখ টাকা নেন যুবরাজ কাজী। ৩১ ডিসেম্বর সকাল ছয়টায় দুবাই রওনা হন তিনি।

৮ জানুয়ারি গোপালগঞ্জের বাসায় গিয়ে যুবরাজ কাজীর হাতে আরও সাড়ে ছয় লাখ টাকা দিয়ে আসেন পিতা সুনীল বৈরাগী। কিন্তু এরপর থেকে ছেলের সাথে যোগাযোগ করতে পারেননি সুনীল।

এরপর গণমাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর চারটার মধ্যে লিবিয়া থেকে ইতালি অভিমুখে যাত্রা করা একটি ট্রলারে যে আট বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন তার মধ্যে সজল রয়েছেন।

তিনি অভিযোগ করেন, ২০ জনের একটা চক্র পারস্পরিক যোগসাজশে নিহতদের উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার করেন। তারা নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও উত্তাল সাগরে ছোট নৌকায় তুলে দিয়ে পানিতে ডুবিয়ে তাদের মৃত্যু ঘটান।

;