কপোতাক্ষ নদের ভাঙনে হুমকিতে বেড়িবাঁধ
খুলনা জেলার কয়রা উপজেলা সদরে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। কয়রা উপজেলা পরিষদের অদূরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৩-১৪/২ পোল্ডারের মদিনাবাদ লঞ্চঘাট সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদের ভাঙনে বেড়িবাঁধেও ফাটল দেখা দেয়।
গত মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) কপোতাক্ষ নদের ভয়াবহ ভাঙনে প্রায় ৩শ মিটার দীর্ঘ বেড়িবাঁধ ভেঙে বিলিন হয়ে যায়। পরে মঙ্গল ও বুধবার গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে বাঁধ সংস্কারের কাজ করে।
কয়রা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কপোতাক্ষ নদের ভাঙনে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে ছুটে যাই, তারপর গ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে বাঁশ আর বালি দিয়ে আপাতত সংস্কারের কাজ করি। এলাকবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতেই বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ করেছে। নদী ভাঙন থেকে গ্রামকে রক্ষা আর বেড়িবাঁধ সংস্কারের উপর গুরুত্বারোপ করে পাউবো’র দৃষ্টি আকর্ষণ করেন চেয়ারম্যান’।
কয়রার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিমুল কুমার সাহা বলেন, ‘ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগেও ভাঙনরোধে স্থানীয়দের নিয়ে বাঁধ সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে’।
এ বিষয়ে খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনের সংসদ সদস্য নুরুল হক বলেন, ‘উপকূলীয় এলাকার রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই খারাপ। পাউবো’র কর্মকর্তাদের আমি জানিয়েছি। খুব অল্প সময়ের ভেতরেই স্থায়ীভাবে বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হবে’।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তা মশিউল আলম বলেন, ‘১৩-১৪/২ পোল্ডারের মদিনাবাদ লঞ্চঘাট সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধের ফাটল ও নদীভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাঙনরোধে জরুরি ভিত্তিতেই কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি’।
সূত্র থেকে জানা যায়, নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলেও অর্থ সংকটে বেড়িবাঁধ মেরামত করতে পারেনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। চাহিদার ১০ ভাগের এক ভাগের মতো অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়।
অব্যাহত নদী ভাঙনে দিশেহারা খুলনার কয়রা উপজেলার মানুষ। কখনো শাকবাড়িয়া আবার কখনো কপোতাক্ষের ভাঙনে প্রতিনিয়তই চরম আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটায় গ্রামবাসী। তড়িৎ গতিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে কয়রা উপজেলা পরিষদ সহ গোটা এলাকা প্লাবিত আরেকটি আইলার দেখা দিতে পারে। যেকোন সময় লোনা পানি ভেসে যেতে পারে ঘরবাড়িসহ আদালত, থানা ভবন, রেজিষ্ট্রি অফিস সহ উপজেলা পরিষদের সকল স্থাপনা। ক্ষয়-ক্ষতি ঘটতে পারে এলাকার ফসলী জমি ও মৎস্য ঘেরের কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদের। জীবনহানি ঘটতে পারে মানুষ সহ এলাকার অসংখ্য গবাদি পশু-পাখির। চলতি মৌসুমে কয়রার এসব ভাঙন কবলিত বেড়িবাঁধগুলো মেরামত করা না গেলে আগামী বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ হুমকির মুখে পরবে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ।