মনবাসনা পূরণ করতেই ‘পদ্মপুরাণ’



এস এম জামাল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
মনবাসনা পুরণ করতেই ‘পদ্মপুরাণ’, ছবি: বার্তা২৪

মনবাসনা পুরণ করতেই ‘পদ্মপুরাণ’, ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

মনের বাসনা পূরণ করতেই গ্রামাঞ্চলে আয়োজন করা হয় পদ্মপুরাণ গানের। সাধারণত রাত জেগে মনসা-মঙ্গলের নাটক পরিবেশন করা হয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গভীর রাত পর্যন্ত তাঁরা যা করেন, এর পুরোটাই নাচ-গান-নাটক। এ নাটক নামেমাত্র মঞ্চে পরিবেশন করা হয়।

বিশেষ করে মানুষকে যখন সর্পদংশনে তাড়া করে তখন মনের ভেতর জমে থাকা এসব আতঙ্ক তাড়ানোর জন্যই এই গানের আয়োজন করা হয়। আবার অনেকের ক্ষেত্রে চর্মজাতীয় ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ায় এসব সারানোর কোন উপায় না পেয়েও এই গানের আসর দিয়ে থাকেন।

এই পদ্মপুরাণ গানের জন্য একটি দলে ১০-১৫জনের সদস্য প্রয়োজন। ঢোলক বাদ্যের সঙ্গে আরও কিছু বাদ্যযন্ত্র নিয়ে কখনো গানের আসর আবার কখনো কথাকাব্য নিয়ে রচিত এই পদ্মপুরাণ গান। এজন্য কোনো মুখস্ত বিদ্যায় কিংবা বই পড়ে তাদের শিখতে হয়নি। শখের বসে আবার অনেকের ভালোলাগার থেকেই এই দলের সদস্য হিসেবে সম্পৃক্ত হয়। এ শিল্পীরা সরাসরি এই আসর মাতিয়ে রাখেন। দর্শক শ্রোতারাও বেশ উপভোগ করেন পদ্মপুরাণ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Oct/21/1540102883644.jpg

এই পদ্মপুরাণ গানের মূল বিষয় হচ্ছে কালনাগিনীর দংশনে লক্ষীন্দরের মৃত্যু থেকে শুরু করে আগাগোড়া বেহুলারই কাহিনী। প্রথম দিকে একটানা সাপের গীত আর সাপের বর্ণনা। নানা প্রকার ও নানা জাতের বাস্তব ও কাল্পনিক সাপের বর্ণনায় পূর্ণ এই গানের প্রথম অংশ। শেষে বর্ণনা করা হয় ভুরা বা ভেলাভাসিয়ে বেহুলার ইন্দ্রপুরীতে গমন ও মৃত স্বামীর প্রাণ ফিরে পাওয়ার বর্ণনা। এভাবেই শেষ করতে হয় মুল অনুষ্ঠানের।

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের তেঘরিয়া গ্রামের পদ্মপুরাণের নামকরা দলনেতা ছিলেন ফজর আলী মৃধা। তার নেতৃত্বে আশপাশ এলাকাসহ পার্শ্ববর্তী জেলায় পদ্মপুরাণ গানের নেতৃত্ব দিতেন। তারই শিষ্যত্ব লাভ করেন তার ছোটভাই ইউনুস আলী মৃধা।

শনিবার (২০ অক্টোবর) মিরপুর উপজেলার মশান গ্রামের জামাল উদ্দিনের বাড়ির আঙ্গিনায় এই গানের আসর বসে। দিনে এবং রাতে চলে একটানা এই গানের আসর।

ইউনুস আলী মৃধা বার্তা২৪.কমকে বলেন, পদ্মপুরাণ গানে দলে ১২-১৫জন থাকে। ঢোলকসহ অন্যান্য বাদকের পাশাপাশি একটি টিমের অন্তত ৩-৪ জন পুরুষকে শাড়ি পরিয়ে, চুল লাগিয়ে ও মেকাপ করে তাদের নারী সাজানো হয়। এভাবেই চলতে থাকে পুরো অনুষ্ঠান। দিন রাত মিলিয়ে আমাদের সম্পন্ন করতে হয় বেহুলা লক্ষীন্দরের আত্মকাহিনীকে কেন্দ্র করে নাটিকার পাশাপাশি গান করা হয়।

তবে এই অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে এক সপ্তাহ সময় লাগে। কিন্তু অর্থনৈতিক দৈনতার কারণে দুই রাত ও এক দিনের মধ্যেই শেষ করতে হয় আসর। গানের জন্য আমরা ৫-১২হাজার টাকা পর্যন্ত নেই।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Oct/21/1540102909553.jpg

পদ্মপুরাণ গানের সাথে কাজ করে আসা আরেক শিল্পী মিরা বার্তা২৪.কমকে জানান, পদ্মপুরাণকে আবার বা মনসার গান বলেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। পদ্মপুরাণ এ অঞ্চলের একটি উল্লেখযোগ্য কাব্য আলেখ্য। সাপের দেবীমনসা বা পদ্মার নাম অনুসারে এই নামকরণ। এই গান বর্ণনামূলক।

তিনি বলেন, যে মনসা দেবীকে পূজা দিতে চাননি চাঁদ সওদাগর, শত বছর ধরে বাঙালি সেই মনসা দেবীকে পূজা দিয়ে যাচ্ছে। শত বছর ধরে বংশ পরম্পরায় এ রীতি পালন করে আসছেন জনগণ। হিন্দু, মুসলমান সবাই। তাঁদের বিশ্বাস, এ সময় মা মনসার পূজা দিলে সারা বছর সাপ আর বিরক্ত করবে না তাঁদের। এমন সব কাহিনী নিয়েই এই পদ্মপুরাণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে।

এই দলের আরেক সদস্য নারী শাওন। যার ভুমিকা নারীর হিসেবে অভিনয় করা। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি রাইচ মিলে কাজ করি। পাশাপাশি নাচগান আমার কাছে ছোটবেলা থকেই ভালো লাগতো। তাই এই দলের সাথে মিশতাম। এখন শিল্পী হিসেবে পদ্মপুরাণ গানে অংশগ্রহণ করে থাকি। এই অনুষ্ঠান তো আর সারা মাস থাকে না। তাই কাজের পাশাপাশি সময় সুযোগ করেই অংশ নিয়ে থাকি। ২-৩দিন ধরে অনুষ্ঠান করলে আমি হাজারখানেক টাকা পেয়ে থাকি।

স্থানীয়দের বিশ্বাস, এই মনসার গানের আয়োজন করলে সাপের কামড়ে পরিবারের কারো অকাল মৃত্যু ঘটবে না।

 

   

লক্ষ্মীপুরের ইউপি নির্বাচনে ৩ নতুন ২ পুরাতন মুখ বিজয়ী



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম লক্ষ্মীপুর
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ৫ টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিনব্যপী শান্তিপূর্ন ও উৎসবমুখর পরিবেশের ভোটে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন নতুন ২ জন পুরাতন মুখ বিজয়ী হয়েছেন।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে দশটায় উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষনা করা হয়।

এদিন সকাল থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দক্ষিণ হামছাদী, দালাল বাজার, বাঙ্গাখাঁ, লাহারকান্দি ও তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

ভোটগ্রহন ও গননা শেষে কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রাপ্ত ভোটে দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন বর্তমান চেয়ারম্যান মীর শাহ আলম। তিনি ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৬২৪৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সৈয়দ আবুল কাশেম আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৬০১ ভোট।

দালাল বাজার ইউনিয়নে বিজয়ী হয়েছেন নজরুল ইসলাম। চশমা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৬৩৫৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নুর নবী অটোরিকশা প্রতীকে পেয়েছেন ৪৭৬০ ভোট।

বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নে মিজানুর রহমান চশমা প্রতীকে ৬৪০১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্বী শেখ জামান রিপন পেয়েছেন ৩৩৯০ ভোট।

লাহারকান্দি ইউনিয়নে টেলিফোন প্রতীকে আশরাফুল আলম বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৫৫৮৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী খোরশেদ আলম অটোরিকশা প্রতীকে পেয়েছেন ৩৭৭৩ ভোট।

তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নে ওমর হুসাইন ভুলু আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৭৫৪২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বোরহান চৌধুরী পেয়েছেন অটোরিকশা প্রতীকে ৬২৩৯ ভোট।

প্রসঙ্গত: সীমানাজনিত মামলা জটিলতা শেষে দীর্ঘ ১৩ বছর পর জেলার সদর উপজেলার ২নং দক্ষিণ হামছাদি, ৩নং দালাল বাজার, ৬ নং বাঙ্গাখাঁ, ১৫ নং লাহারকান্দি ও ১৯ নং তেয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো।

এ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের ব্যাপক প্রস্তুতি ছিল। নির্বাচনে ভোটাররা শান্তিপূর্ন উৎসবমুখর পরিবেশে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করেন।

;

রিসোর্টে তরুণী ধর্ষণের ২৫ দিনেও গ্রেফতার নেই মালিক ও কথিত প্রেমিক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর মোহাম্মদপুর বসিলা গার্ডেন সিটি হাউজিং আবাসিক এলাকায় গড়ে ওঠা একটি রিসোর্টে এক তরুণী ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর প্রায় এক মাস পার হলেও গ্রেফতার হয়নি মামলার মূল দুই আসামি। এদের একজন ওই তরুণীর কথিত প্রেমিক মো. আকাশ (২৮), অপরজন রিসোর্টের মালিক আব্বাস আলী (৪৫)। মামলার অপর আসামি রিসোর্টের ম্যানেজার ইমরান (৩৫) গ্রেফতার রয়েছেন।

পুলিশ বলছে, দুই আসামি পলাতক রয়েছে। অথচ সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, রিসোর্টের মালিক আব্বাস হোটেলে উপস্থিত থেকে ব্যবসা সামলাচ্ছেন। এমনকি দাবি করছেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।

এ ব্যাপারে পুলিশের বক্তব্য, যেকোনো সময়েই ধরা হবে এই ধর্ষণ মামলার আসামিদের।

মোহাম্মদপুর থানার বসিলা ৪০ ফিট সড়কের এসবিপিএন পুলিশ ব্যারাকের পাশেই এই রিসোর্ট। প্রায় এক বিঘা জমির উপর গড়ে তোলা ‘জলতরঙ্গ সুইমিংপুল ও রিসোর্ট’-এ গত ২ এপ্রিল ওই তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

ধর্ষণের শিকার তরুণী বাদী হয়ে জলতরঙ্গ রিসোর্টের মালিক, ম্যানেজার ও তার কথিত প্রেমিকের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় ধর্ষণ মামলা করেন।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২ এপ্রিল রাতে আকাশ নামে এক যুবক তার বান্ধবী ভুক্তভোগী তরুণীকে নিয়ে ঘুরতে যান। সেখানে মেয়ে বান্ধবীকে রিসোর্টের মালিক ও ম্যানেজারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। রাতে সুইমিংপুলে সাঁতার কাটার পর খাওয়া দাওয়া শেষে রিসোর্টটির দ্বিতীয় তলায় একটি রুমে বিশ্রামের জন্য ভূক্তভোগীকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখানে ধর্ষণের শিকার হন ওই তরুণী। তরুণীকে ধর্ষণ শেষে রুমে রেখেই পালিয়ে যান কথিত প্রেমিক আকাশ। ওই সময় ভূক্তভোগী তরুণী জাতীয় জরুরী সেবা-৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী ওই তরুণী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।

ঘটনার ২৫ দিন পর গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বসিলায় এলাকার জলতরঙ্গ রিসোর্টে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এর এক পাশে তিন তলা ভবন। আরেকপাশে বিশাল সুইমিংপুল। প্রবেশ পথের পাশেই রিসোর্টের অফিস কক্ষ। ভেতরে একটি হলুদ সন্ধ্যার আয়োজন চলছে। রিসোর্টে প্রবেশ করতেই এক কর্মী এসে পরিচয় জানতে চান। নিজেদের একটি অনুষ্ঠানে বুকিং দেওয়ার কথা বলে রিসোর্টে প্রবেশ করেন এই প্রতিবেদক। তিন তলা ভবনের নিচতলায় ডাইনিং ও রান্না ঘর। দোতলায় প্রতিটি রুমের দরজায় পদ্মা, মেঘনা, যমুনাসহ দেশের উল্লেখযোগ্য বড় নদীর নামে ৮টি রুম। মাওলানা ভাসানীর নামে একটি কনফারেন্স হলও রয়েছে। ভবনের তৃতীয় তলায় রয়েছে রুফটপ রোস্তোরার আয়োজন। রিসোর্টে আসা অতীথিদের জন্য ছাদে চেয়ার টেবিলে বসে খাওয়ার জন্য ছোট ছোট টেবিল ও ছাতা রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বললে তারা অভিযোগ করে বলেন, নানা অপকর্ম চলে তলতরঙ্গ রিসোর্টে। এখানে নানা বয়সি ছেলে মেয়ের অবাধ মেলামেশা, মদ পান করে মাতলামি করতে দেখা যায়। তাদের মতে, এসব সেখানকার প্রতিদিনের ঘটনা। বিশেষ করে ইয়াবা বিক্রি হয়। গাজার দূর্গন্ধ পান বাসিন্দারা, অভিযোগ তাদের।

এই প্রতিবেদকের অবস্থানকালে সন্ধ্যার দিকে রিসোর্টে গোসল করতে আসেন দুই তরুণ ও কয়েকজন তরুণী তবে সুইমিং পুলিশের পাশে হলুদ সন্ধ্যা চলায় গোসলের অনুমতি মেলেনি সেদিন। রিসোর্টের অফিসে দেখা গেলো ম্যানেজারের চেয়ারে বসে আছেন এক ব্যক্তি। জানালেন তার নাম আব্বাস আলী।

প্রথমে নিজেকে রিসোর্টের ম্যানেজার পরিচয় দিলেও এক পর্যায়ে তিনি দাবি করেন রিসোর্টের মালিক তার ভাই। মালিক কোথায়? জানতে চাইলে বলেন, ব্যবসার কাজে তিনি বিদেশে গেছেন। ভাই না থাকায় আব্বাস সাময়িক দায়িত্ব পালন করছেন।

আব্বাস বলেন, আমি দক্ষিণ সিটিকর্পোরেশনের অঞ্চল-৫ এর কর কর্মকর্তা। আমার ভাইয়ের অনুপস্থিততে আমি এখানে এসে বসেছি।

অথচ এই আব্বাসই ধর্ষণ মামলার তিন নম্বর আসামি এবং আব্বাস নিজেই এই রিসোর্টের মালিক। ওই মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। আব্বাস বলেন, ‘আমরা যাদের কাছ থেকে জমি ভাড়া নিয়েছি তারাই এখন আমাদের ব্যবসায় বাধা দিচ্ছে। আমার এখানে নিজেরা ভবন তৈরি করেছি। অনেক কষ্টে ব্যবসা গড়ে তুলেছি এখন জমির মালিকের চোখ পড়েছে।’

পুলিশের ভাষ্যমতে আপনি পলাতক। কিন্তু, আপনি নিয়মিত রিসোর্টে বসেই অফিস করছেন, কিভাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই মামলা একটি বানোয়াট মামলা। এটা পুলিশ বুঝতে পেরে আমাকে মামলা থেকে অব্যহাতি দিয়েছে।’

ম্যানেজারের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জানতে চাইলে আব্বাস দাবি করেন, ‘আসামি ইমরান রিসোর্টের ম্যানেজার না। সে ইলেকট্রিক মিস্ত্রী। সে স্থায়ী কর্মী নয়, কোনো সমস্যা হলে খন্ডকালীন কর্মী হিসেবে এসে কাজ করে দিয়ে যায়। আকাশের সঙ্গে তার সখ্যতা থাকায় সে অবৈধ কাজের সুযোগ করে দিয়েছে। তাই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।’

আবাসিক এলাকায় রিসোর্ট কোনো? জানতে চাইলে আব্বাস বলেন, ‘আবাসিক এলাকা হলেও এখানে সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাই রিসোর্ট করা অবৈধ না। সিটি করপোরেশনসহ সব কর্তৃপক্ষ আমাদের অনুমতি দিয়েছে।’

ভূক্তভোগী তরুণীর দাবি, মামলার ২৫ দিন পার হয়ে গেলেও এখনও অধরা রয়েছে রিসোর্ট মালিক আব্বাস আলী ও আকাশ। পুলিশ একজনকে আটক করলেও বাকিরা এখনও আটক না হওয়ায় আতঙ্কে দিন পার করছেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজুল হক ভূঞা জানান, ‘এ ঘটনায় ভূক্তভোগী তরুণী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনায় একজনকে আমরা আটক করেছি। বাকি আসামীরা পলাতক রয়েছে। আমরা পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা করছি।

পরে রবিবার (২৮ এপ্রিল) আসামি গ্রেফতার না করার বিষয় জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অনিক ভক্ত বলেন, ‘আমরা কাজ করছি। যেকোনো সময় ধরে ফেলবো।’

পুলিশের চোখে পলাতক আসামি নিয়মিত অফিসে বসছে কিভাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা আসামির মোবাইলের সিডিআর নিয়েছি। অনলাইন অফলাইনে কাজ করছি। কিন্তু, কে কখন অফিসে আসে বা বসে এতো কিছু তো দেখা সম্ভব না। তবে আমরা কাজ করছি। ধরে ফেলবো।’

;

চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম চট্টগ্রাম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রশাসনের আশ্বাসে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার চলমান ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে।

দীর্ঘ দুই ঘণ্টা আলোচনা শেষে রবিবার (২৮ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টায় এ ঘোষণা দেন সংগঠনের আহ্বায়ক মঞ্জুর আলম চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের অনুরোধে জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে ৪৮ ঘণ্টার চলমান ধর্মঘট আমরা স্থগিত করেছি। জেলা প্রশাসক আমাদের দাবিগুলো মেনে নিয়েছেন, সেজন্য তাকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। পরবর্তীতে এরকম কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে পুনরায় ধর্মঘট দেব।’

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামের ৪৮ ঘন্টার পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল। তা চলমান রয়েছে। এ অবস্থায় জেলা প্রসাসক প্রসাশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ আমাদেরকে ডেকেছেন। আমরা উনার ডাকে সাড়া দিয়ে এসেছি এখানে। আমরা তার প্রতি সম্মান রেখে বলবো, চুয়েটে যে দুইজন ছাত্র নির্মমভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন এবং একজন আহত হয়েছেন তার জন্য আমরা মর্মাহত। ওই ছেলেদের আমাদের পক্ষ থেকে কিছু সহযোগিতা দিয়েছি। এরপর আমাদের তিনটা গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের তিনটা গাড়ির বিষয়ে প্রশাসন আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন বিআরটিএর মাধ্যমে গাড়িগুলোর ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আমরা উনার আশ্বাসকে সাধুবাদ জানাই।’

তিনি‌ আরও বলেন, 'আমরা গাড়ি চালানোর জন্য ব্যবসা করি। আমাদের কাপ্তাই সড়কের চুয়েটের সামনে বর্তমানে যে বিবাদমান আন্দোলন, এই আন্দোলনে আমরা ভীত-সন্ত্রস্ত। জানি না আবার গাড়ি চালাতে গিয়ে কোনো ক্ষতিগ্রস্ত হবো কিনা। তারপরও ডিসি মহোদয় আমাদেরকে বলেছেন, উনার কথায় আস্থা রেখে আমরা গাড়ি ছাড়ব। আমাদেরকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেবে, যদি আমাদের কোন গাড়ি যদি সেই দুর্ঘটনা বা আক্রমণের শিকার হয় অথবা আমাদের এবি ট্রাভেলস বা শাহ আমানতের কোন গাড়ি যদি ইচ্ছাকৃত কোন আক্রমণের শিকার হয়, উদ্ভূত কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে আমরা পুনরায় ধর্মঘট শুরু করব। জেলা প্রশাসকের আহবানে আমরা জনস্বার্থের কথা চিন্তা করে ধর্মঘট স্থগিত করলাম।'

বৈঠকে মনজুর আলম বলেন, ‘কাপ্তাই সড়কে গাড়ি চললে চট্টগ্রামের সব সড়কে গাড়ি চলবে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে উদ্যোগ নিয়েছেন সেটি অন্তত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সরকারকে বিব্রত করতে চাইনা। আমরা সবমসময় সরকারকে সহযোগিতা করেছি। আমরা গাড়ি চালাবো। আপনাতত আমাদের দাবিগুলো আপনি পূরণ করার আশ্বাস দিয়েছেন আমরা আপনার আশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’

এর আগে সভায় জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামান বলেন, ‘আপনারা যে দাবিগুলো বলেছেন তার মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে নিরাপত্তা। নিরাপত্তার বিষয়ে আমি আপনাদেরকে আশ্বস্ত করতে চাই, আপনারা গাড়িগুলো চালান আমরা নিরাপত্তা দেব। প্রয়োজনে পুলিশ স্কোয়ার্ড ও আমাদের দুইজন ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে। আর হামলায় গাড়িগুলো কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটি বিআরটিএ দেখবে। এরপর আমরা সেটির ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা যায় কিনা দেখবো। ক্ষতিপূরণের জন্য মাননীয় মন্ত্রী ও সচিব মহোদয়ের সঙ্গে আমরা কথা বলব। যাতে আপনাদের তিন গাড়ির ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা যায়।’

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান বলেন, দুইজন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনার পর থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। নিরাপত্তার বিষয়টি সেখানে খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। গাড়িগুলো যাওয়া আসার সময় সামনে পেছনে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ স্কোয়াড থাকবে।

এ সময় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমা বলেন, ‘সড়কের মধ্যে দাড়িয়ে যে চাদাঁবাজি করা হচ্ছে সেটি বন্ধ করুন। না হয় আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। সড়কে যত্রযত্র গাড়ি থামানো যাবে না। মামলা প্রত্যাহারের যে দাবি তোলা হয়েছে সেটি আসলে তদন্তের আগে জানানো সম্ভব নয়। আর গাড়ি পোড়ানোর বিষয়ে মামলা কেউ করতে চাইলে করতে পারবে।’

বিআরটিএ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক রায়হানা আক্তার বলেন, ‘দুর্ঘটনায় নিহত দুই শিক্ষার্থীর মাথায় হেলমেট ছিল না। মোটরসাইকেলেরও নিবন্ধন ছিল না বলে আমরা জানতে পেরেছি। এ ছাড়া যে বাসটি মোটরসাইকেলটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়েছে, সেটা ছিল ফিটনেসবিহীন। চালকের লাইসেন্স ছিল না।’

সভায় পূর্বাঞ্চলীয় সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী, রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান মেহেবুবসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও পরিবহন মালিক শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রামের পাঁচ জেলায় ৪ দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের এই ঘোষণা দেয় বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্যপরিষদ। পরে অবশ্য তিনটি পরিবহন সংগঠন ধর্মঘট প্রত্যাখানের ঘোষণা দেয়। কিন্তু, এই সংগঠগুলো টেম্পো জাতীয় পরিবহন সংশ্লিষ্ট। ফলে তাদের প্রত্যাখানে তেমন একটা প্রভাব পড়ছে না।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (২২ এপ্রিল) চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই চুয়েট শিক্ষার্থী নিহত হয়। এর জের ধরে ওইদিন থেকেই শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিলেন।

গত ২৪ এপ্রিল ঘাতক বাসের চালককে পুলিশ গ্রেফতার করে। এরপরও ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামাতে ২৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করলে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়।

;

ঢাকায় রাত ১১টার পর চা দোকান বন্ধের নির্দেশ ডিএমপির



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানী ঢাকায় রাত ১১টার পর মহল্লার সব চায়ের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এ সিদ্ধান্ত দ্রুত কার্যকর করতে থানা পুলিশকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।

এ ছাড়া সম্প্রতি ফরিদপুরের মধুখালীতে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা নিয়ে কোনো মহল যাতে রাজধানীতে ষড়যন্ত্র ও বিশৃঙ্খলা ঘটাতে না পারে সেজন্য মাঠপর্যায়ের পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলেছেন তিনি।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাজারবাগ পুলিশ অডিটরিয়ামে মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় তিনি এই নিদের্শনা দেন।

৫০টি থানা এলাকার মার্চ মাসের অপরাধ নিয়ে পর্যালোচনা সভায় ডিএমপির সাবেক পুলিশ কমিশনার মোঃ আসাদুজ্জামান মিয়া সম্মনিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

সভায় ঢাকা মহানগরের আইনশঙ্খৃলা রক্ষা ও জননিরাপত্তা বিধানসহ উত্তম কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ডিএমপির বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ সদস্যকে পুরস্কৃত করা হয়।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘রাজধানীর বিভিন্ন মহল্লার অলিগলিতে মধ্যরাত পর্যন্ত ও কোনো কোনো এলাকায় সারারাত চায়ের দোকান খোলা থাকে। এসব দোকানে চা খাওয়ার পাশাপাশি লোকজন আড্ডা দেয়। অনেক অপরাধীও সাধারণ মানুষের মঙ্গে মিশে থাকে। সুযোগ বুঝে তারা চুরি-ছিনতাই করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ছিনতাই ও অপরাধ প্রতিরোধে রাতে রাস্তার মোড়ের দোকানগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। রাস্তার পাশের বিড়ি, পান ও চায়ের দোকান রাত ১১টার পর বন্ধ থাকবে।’

সমাজে অপরাধের কারণ অনুসন্ধান করে প্রতিরোধে কমিউনিটি পুলিশিং ও বিট পুলিশিং ব্যবস্থা আরো জোরদার করার নির্দেশনাও দেন তিনি।

;