রামু ট্রাজেডি: সাক্ষীর অভাবে ঝুলে আছে ১৮ মামলা
কক্সবাজার: আজ (২৯ সেপ্টেম্বর) রামু ট্রাজেডির ৬ বছর। এই দিন রাতে ফেসবুকে গুজবের জের ধরে রামুর বৌদ্ধ মন্দিরে চালানো হয় ভয়াবহ হামলা। পুড়িয়ে দেয়া হয় শত বছরের বুদ্ধমূর্তি, আরাধনার মন্দির আর আঘাত আসে ঐতিহ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনে। ২০১২ সালে ওই হামলার ঘটনা ঘটে।
তবে বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টায় সেখান থেকে উঠে আসা গেলেও আসামিদের বিচার নিয়ে চরম হতাশা বিরাজ করছে রামুর বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মাঝে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, রামুর ঘটনার পরপরই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ১৯টি মামলার মধ্যে একটি আপোষ হয়ে গেছে বহু আগেই। পুলিশ বাদী হয়ে করা বাকি ১৮টি মামলা এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। সেই সময় সন্দেহভাজন আটক সবাই জামিনে মুক্ত রয়েছে। অথচ ঘটনার সূত্রপাত যার ফেসবুক থেকে শুরু সেই উত্তম বড়ুয়ার হদিস নেই। গেল ছয়টি বছর ধরে তার খোঁজ দিতে পারেনি প্রশাসন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মমতাজ উদ্দিন আহমদ বার্তা২৪.কমকে জানান, ঘটনার সময় প্রত্যক্ষদর্শীরা বর্তমানে সাক্ষী দিতে না আসায় মামলাগুলো ঝুলে আছে। যদি তারা সাক্ষী দিতে আসে তাহলে একটি সুষ্ঠু বিচার করা হতো। সাক্ষীরা না আসায় এখন কিছু করা যাচ্ছে না।
তিনি আরও জানান, ১৮টি মামলার মধ্যে ১৪টি মামলা আদালতে বিচারের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। বিচারের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বাকি ৪টি মামলা। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন সাক্ষ্য না দেওয়ার কারণে বিচারকাজ বিলম্বিত হচ্ছে।
তবে বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরুরা বলছেন, ভয়, আর মামলা প্রক্রিয়ার প্রতি অবিশ্বাসের জায়গা থেকে সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে অনীহা দেখাচ্ছেন।
বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু বার্তা২৪.কমকে বলেন, সাক্ষীদের মাঝে একটা চিন্তা কাজ করছে। সেটি হচ্ছে অনেক লোককে কোনো কারণ ছাড়া এ মামলায় জড়িত করা হয়েছে। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, এ ঘটনার যারা মূল নায়ক তাদের এই মামলাগুলোতে আসামি করা হয়নি। যার কারণে সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে যেতে ভয় পাচ্ছে।
তবে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ বিএম মাসুদ হোসেন বার্তা২৪.কমকে জানান, রামুতে হামলার ঘটনায় ১৮টি মামলা হয়। প্রত্যেকটি মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। ওই মামলাগুলো এখন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। তবে আদালত যদি মনে করে সাক্ষীদের নোটিশের মাধ্যমে আদালতে নিয়ে আসার, সে ব্যাপারে পুলিশ সহযোগিতা করবে।