ইসলামে বর্ণবাদ ও বর্ণবৈষম্য বলে কিছু নেই



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মীয়, জাতিগত, ভাষাগত সংখ্যালঘুর মানবাধিকারের দাবিতে সোচ্চার বিশ্ব সম্প্রদায় আইনগত ও সামরিক-বেসামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেও বিশ্বব্যাপী নিপীড়িত মানবতার আহাজারি থামাতে পারছে না। বরং ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার সংরক্ষণের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত থাকার পরেও মুসলিমরাই হচ্ছে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত। ‘ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার’ সম্পর্কে ঐতিহাসিক পর্যালোচনা: পর্ব-১

নীতিগত ও ব্যবহারিক অর্থে ইসলাম কোনো জাতি, বর্ণ, অঞ্চল বা রঙের পার্থক্য মানে না। সাদা আর কালো, নাগরিক আর সৈনিক, শাসক আর শাসিত, সব সমান; কেবল নীতিগত বা তত্ত্বগতভাবেই নয়, ব্যবহারিক-প্রায়োগিক কাজেও। ময়দানে বা মেহমানখানায় হোক, তাবুতে বা প্রাসাদে হোক, মসজিদে বা বাজারে হোক, তারা মেলামেশা ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন অবাধে, অকপটে; স্বাধীনতা ও সাম্যের ভিত্তিতে।

ইসলামের প্রথম মোয়াজ্জিন ছিলেন একজন নিগ্রো ক্রীতদাস। সাদা-চামড়ার বর্ণবাদী মানুষের কাছে তার সধর্মীয় কালো মানুষেরা স্বর্গের রাজ্যে সমান হতে পারে, এই পৃথিবীর রাজ্যে কিছুতেই নয়। পৃথিবীর বাস্তব জীবনে এমনই কঠোর পার্থক্য বিরাজমান। কিন্তু ইসলাম বর্ণবাদ ও বর্ণবৈষম্যকে প্রথম দিন থেকেই সমাজ, ধর্ম ও জীবনের সর্বক্ষেত্রে অস্বীকার করেছে।

ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিম প্রজাদেরকে বলে ‘আহল উজ-জিম্মাহ’ বা ‘জিম্মি।’ শব্দটির অর্থ হলো- ‘যারা নিরাপত্তায় বাস করে।’ হজরত আলী (রা.) জিম্মিদের সম্পর্কে ইসলামী বিধান ও দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট করেছেন তার বিখ্যাত ও অনুসরণযোগ্য এই উক্তির মাধ্যমে, ‘জিম্মির রক্ত মুসলমানের রক্তের মতো।’

সাধারণভাবে ভুল তথ্য ও ধারণার ভিত্তিতে ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিম প্রজারা কঠিন অসুবিধায় থাকার যে অভিযোগ, তার সমর্থনে শুধু যে শাস্ত্রবিদ আর আইনবিদদের সংকীর্ণতার কথা উল্লেখ করা হয় তা নয়; হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অমুসলিমদেরকে সুনজরে দেখেননি আর তাদের সঙ্গে তার শিষ্যদের বন্ধুসুলভ সম্পর্ক উৎসাহিত করেননি, এমনটি দেখানোর জন্য কোরআনের কয়েকটি আয়াতের উল্লেখও করা হয়। কিন্তু এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনাকালে মনে রাখতে হবে, এই আয়াতগুলো অবতীর্ণ হওয়ার প্রেক্ষাপট, সেই সময়ে জীবন-মরণ সংগ্রামে লিপ্ত অবস্থায় ইসলাম কী কঠিন চাপ ও কষ্টের ভিতর দিয়ে অতিক্রম করছিল; আবার পৌত্তলিক আর ইহুদি ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়গুলো কী রকম ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মুসলমানদেরকে কলুষিত করে নতুন ধর্ম থেকে ভাঙানি দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।

এরূপ বিপদের সময়ে নবী করিম (সা.)-এর একান্ত (ঐশী) কর্তব্যই ছিল বিরোধী পক্ষগুলোর প্রতারণা আর বিশ্বাসঘাতকতামূলক অভিসন্ধির বিরুদ্ধে শিষ্যদের সতর্ক করে দেওয়া। আর তুলনামূলক ইতিহাসের কোনো ছাত্রই তাকে দোষারোপ করতে পারবে না- তিনি শত্রু আর বিদেশিদের ষড়যন্ত্র থেকে তার ক্ষুদ্র মদিনা নামক গণরাজ্যকে রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন বলে। কিন্তু যখন আমরা অমুসলিম-সংখ্যালঘুসহ নাগরিকদের প্রতি তার সাধারণ ব্যবহার বিচার করতে বসি, তখন আমরা তাতে ইসলামের মানবিকবোধ ও নবীর প্রশস্ত হৃদয়ের সহনশীলতা আর সহানুভূতির স্পষ্ট চিহ্ন দেখতে পাই।

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কথা ও কাজের মধ্যে দেখা যাবে অধীনস্থ জাতিগুলোকে কিরূপ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল। কোনো বিজয়ী জাতি বা ধর্ম এর চেয়ে ভালো নিরাপত্তা কি কখনো দিতে পেরেছে? না পারেনি। উদাহরণ রয়েছে শত শত। যেমন, ‘নজরান ও পার্শ্ববর্তী এলাকার (খিস্টানদের) প্রতি, আল্লাহর নিরাপত্তা আর তার রাসূলের প্রতিশ্রুতি তাদের জীবনের প্রতি, তাদের ধর্মের প্রতি আর সম্পদের প্রতি প্রসারিত করা হলো, যারা উপস্থিত আছে আর যারা অনুপস্থিত আছে আর তাদের ছাড়াও অন্যদের প্রতি; তাদের ধর্মের ব্যাপারে আর তাদের ধর্মাচরণের ব্যাপারে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করা হবে না; তাদের অধিকার আর সুযোগ-সুবিধার কোনো পরিবর্তন করা হবে না; কোনো বিশপকে তার এলাকা থেকে অপসারণ করা হবে না; কোনো মঠ থেকে কোনো সাধুকেও না, কোনো পুরোহিতকে তার পদ থেকেও না; আর তারা আগের মতো ছোট বড় সকল অধিকার ভোগ করতে থাকবে; কোনো মূর্তি বা ক্রস ধ্বংস করা যাবে না; তারা কাউকে উৎপীড়ন করবে না, বা তাদেরকেও উৎপীড়ন করা হবে না; তারা অজ্ঞতার যুগের মতো রক্তের প্রতিশোধ প্রথা আচরণ করবে না; তাদের কাছ থেকে উশর-খাজনা আদায় করা হবে না বা তাদেরকে সেনাবাহিনীর জন্য আহার্য যোগাতেও হবে না।’

নবী করিম (সা,)-এর নিষ্ঠাবান অনুসারীরাও রেখেছেন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। হিরা অধিকারের পর জনসাধারণ আনুগত্যের শপথ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খালিদ ইবনে ওয়ালিদ একটি ঘোষণা প্রচার করেন। এই ঘোষণায় তিনি খ্রিস্টানদের জীবন, স্বাধীনতা আর সম্পত্তির নিরাপত্তা দান করেন, আর ঘোষণা করেন, ‘তাদেরকে নাকূস (প্রাচ্যের খ্রিস্টান গির্জায় ঘণ্টার পরিবর্তে ব্যবহৃত একখণ্ড কাষ্ঠ) বাজাতে আর উৎসবের সময় ক্রস বের করতে বাধা দেওয়া হবে না।’

ইসলামী সমাজ ব্যবস্থায় অমুসলিম প্রজাদের জন্য গির্জা বা মন্দির নির্মাণ নিষিদ্ধ ছিল না। পরবর্তী সময়ে, বাগদাদে, আল-মামূনের শাসনকালে সমস্ত সাম্রাজ্যে শত শত ইহুদি সিনাগগ ও অগ্নি-মন্দির ছাড়াও এগার হাজার খ্রিস্টান গির্জার অস্তিত্বের কথা জানা যায়। অথচ এই সুশিক্ষিত খলিফাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, ‘খ্রিস্টানদের ঘোর শত্রু’ (!) বলে। কিন্তু তিনি তার পরামর্শ সভায় তার অধীনস্থ সকল সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি গ্রহণ করেছিলেন। মুসলিম, ইহুদি, খ্রিস্টান, সাবাঈ আর যরথুস্ত্রীয়। এদিকে খ্রিস্টান পুরোহিততন্ত্রের অধিকার আর সুবিধাবলীও যত্ন সহকারে নিশ্চিত করা হত।

অমুসলিম প্রজাদের কল্যাণ সাধনে ব্যগ্র বাগদাদের খলিফারা স্পেনের কর্ডোভার সুলতানদের মতো একটি বিশেষ বিভাগ সৃষ্টি করেন। এই বিভাগের দায়িত্ব ছিল জিম্মিদের নিরাপত্তা ও স্বার্থ সংরক্ষণ। এই বিভাগটির প্রধানকে বাগদাদে বলা হত, ‘কাতিব আল জিহবাযেহ’ আর স্পেনে বলা হত ‘কাতিব আল জিমাম।’ বিষয়টি ছিল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য একটি আলাদা মন্ত্রণালয়স্বরূপ।

একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য ঘটনা- যার নজির আধুনিক ইতিহাসেও বিরল। তা হচ্ছে, মিসর বিজয়ের পর খলিফা হজরত ওমর (রা.) যত্ন সহকারে খ্রিস্টান গির্জার ওয়াকফ্ সম্পত্তির সংরক্ষণ করেন, আর ভূতপূর্ব সরকার পুরোহিত শ্রেণীর পোষণের জন্য যে ভাতার ব্যবস্থা করেছিল তা তিনি চালু করেন। পরবর্তী খলিফা হজরত ওসমান (রা.)-এর শাসনকালে মার্ভের খ্রিস্টান পুরোহিত ফ্রান্সের বিশপ সাইমেয়নকে এইরূপ সম্বোধন করেন, ‘আরবদেরকে (মুসলিমদেরকে) আল্লাহ পৃথিবীর রাজত্ব দান করেছেন, তারা খ্রিস্টান ধর্মকে আক্রমণ করে না; উপরন্তু তারা আমাদের ধর্মকে সাহায্য করে। তারা আমাদের খোদা ও সেন্টদেরকে সম্মান করে আর আমাদের গির্জা আর মঠের জন্য সম্পত্তি দান করে।’

   

সৌদি পৌঁছেছেন ২১ হাজার ৬৩ জন হজযাত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ থেকে চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে ২১ হাজার ৬৩ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টালের বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

সৌদিতে যাওয়া হজযাত্রীদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৭৪৭ জন জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার গেছেন ১৭ হাজার ৩১৬ জন।

বাংলাদেশ থেকে ৫৩টি ফ্লাইটে এসব হজযাত্রী সৌদি পৌঁছেছেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ১৮টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ১৬টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ১৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করে।

এর আগে, গত ৯ মে বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রথম ডেডিকেটেড ফ্লাইট ৪১৫ জন হজযাত্রী নিয়ে সৌদির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এর মাধ্যমেই চলতি বছরের হজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। শেষ হবে ১০ জুন।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৫ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ২০ জুন এবং শেষ হবে ২২ জুলাই।

;

৬ এজেন্সিকে শোকজ

১ হাজার ৮৭০ জনের হজযাত্রা অনিশ্চিত



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
১ হাজার ৮৭০ জনের হজযাত্রা অনিশ্চিত, ছবি: বার্তা২৪.কম

১ হাজার ৮৭০ জনের হজযাত্রা অনিশ্চিত, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নির্ধারিত সময়ের পরও দুই দফায় সময় বাড়ানো হয় হজযাত্রীদের ভিসা করার জন্য। এরপরও কোনো হজযাত্রীর ভিসা আবেদন করেনি ৫টি এজেন্সি। আর একটি এজেন্সি মাত্র ৫ জনের ভিসার আবেদন করেছে। ফলে এসব এজেন্সির ১৮৭০ জন হজযাত্রী শেষ পর্যন্ত হজ করতে পারবেন কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

কেন এসব এজেন্সি বর্ধিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা করানো হয়নি তার ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (১৪ মে) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহা. আবু তাহেরের সই করা একটি চিঠিতে এ শোকজ করা হয়। আগামীকাল বুধবার (১৫ মে) যথাযথ কারণ ব্যাখ্যা করে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

শোকজ পাওয়া এজেন্সিগুলো হলো- ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০, ভিসা করা হয়েছে মাত্র ৫ জনের), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০)। এসব এজেন্সির মাধ্যমে মোট ১৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত আনসারি ওভারসিস মাত্র ৫ জনের ভিসা সম্পূর্ণ করেছে। বাকি পাঁচটি এজেন্সি একজন যাত্রীরও ভিসা আবেদন করতে পারেনি।

শোকজের চিঠিতে বলা হয়, গত ৯ মে থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমন শুরু হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ১৭ হাজার ১৪১ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। ২৫৯টি এজেন্সি/লিড এজেন্সির অধিকাংশই হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন করলেও একাধিকবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও ৬টি এজেন্সি এখন পর্যন্ত হজযাত্রীদের ভিসা করেনি। ভিসা সম্পন্ন না করায় হজযাত্রীদের হজে গমনে অনিশ্চয়তার আশঙ্কা রয়েছে। এজেন্সির এমন কর্মকাণ্ড সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার অন্তরায়। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন না করার বিষয়ে ১৫ মের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে।

একইসঙ্গে সব হজযাত্রীর ভিসা দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনা হজ করতে যাবেন ৪ হাজার ৫৬২ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৮০ হাজার ৬৯৫ জন।

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি। হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে ৯ মে। শেষ হজ ফ্লাইট ১০ জুন। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ২০ জুন আর শেষ ফিরতি ফ্লাইট ২২ জুলাই।

;

হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দা পাঠানোয় এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ারি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দা পাঠানোয় এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ারি, ছবি: সংগৃহীত

হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দা পাঠানোয় এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ারি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দার কার্টুন না পাঠানোসহ বেশি কিছু অনিয়মের জন্য বেসরাকরি হজ এজেন্সিগুলোকে হুঁশিয়ার করার পাশাপাশি হজ ফ্লাইট ডাটা যথাসময়ে এন্ট্রি করার জন্য এজেন্সিগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে হজযাত্রীদের নিকট থেকে কোরবানির অর্থ না নেওয়ার জন্য তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে।

রোববার (১২ মে) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জুম প্লাটফর্মে সৌদি হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের জেদ্দা এয়ারপোর্ট সার্ভিসের মহাপরিচালক আবদুর রহমান ঘ্যানামের সঙ্গে সভা শেষে এসব নির্দেশনা জারি করে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

ওই সভায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ছাড়াও বাংলাদেশ হজ অফিস, মক্কা ও জেদ্দার কর্মকর্তা এবং হজ এজেন্সির মালিকেরা অংশগ্রহণ করেন।

সভায় সৌদি আরবের পক্ষ থেকে হজ এজেন্সি কর্তৃক ফ্লাইট ডাটা সঠিকভাবে ও নিয়মিত সৌদি ই-হজ সিস্টেমে এন্ট্রি না দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। সভায় বলা হয়, হজ ফ্লাইট ডাটা এন্ট্রি না দেওয়ার কারণে মদিনা ও জেদ্দা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ হজযাত্রীদের প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারছে না সৌদি কর্তৃপক্ষ। ফলে কোন ফ্লাইটে কতজন হজযাত্রী আসছে, তারা কোন মোয়াল্লেমের হজযাত্রী এবং কোন হোটেল বা বাড়িতে তাদের আবাসন ইত্যাদি বিষয়ে সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া হজযাত্রী ও তাদের লাগেজ পরিবহনের ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে। মোয়াল্লেমের প্রতিনিধিও হোটেল বা বাড়িতে সার্ভিস দেওয়ার জন্য উপস্থিত থাকছে না। এ কারণে হজযাত্রীদের কাঙ্খিত সেবা দেওয়া যাচ্ছে না এবং রুট-টু-মক্কার সুবিধা থেকে হজযাত্রীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

সভায় হজ ফ্লাইট যাত্রা শুরুর পূর্বেই সঠিকভাবে ফ্লাইট ডাটা সৌদি ই-হজ সিস্টেমে এন্ট্রি করার অনুরোধ করা হয়। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

সভায় আরও বলা হয়, হজ প্যাকেজে উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও অনেক এজেন্সি হজযাত্রীদের নিকট থেকে হজে গমণের পূর্বে কোরবানি বাবদ অর্থ নিচ্ছেন। হজযাত্রী তার ইচ্ছা মাফিক সৌদি সরকারের ব্যাংকের কূপন ক্রয় করে বা তার নিজের ব্যবস্থাপনায় কোরবানি সম্পন্ন করবেন। এজেন্সি কোনোভাবেই কোরবানির টাকা নিতে পারবে না। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট এজেন্সির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে জানিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি পত্র জারি করেছে। পত্রে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় হজ এজেন্সিগুলোকে আরও কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি সম্পর্কে সতর্ক করেছে। বলা হয়েছে, অনেক এজেন্সি হজযাত্রীদের সঙ্গে হজগাইড বা প্রতিনিধি না পাঠানোর কারণে হজযাত্রীরা বিড়ম্বনায় পড়ছেন। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

একই চিঠিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, কিছু হজ এজেন্সি তাদের হজযাত্রীদের মাধ্যমে জর্দার কার্টুন পাঠিয়েছে, যা জেদ্দা বিমানবন্দরে আটক হয়েছে। এতে দেশের সম্মান নষ্ট হচ্ছে।

এর আগে জেদ্দার সহকারী মৌসূমি হজ অফিসার এবং হজ কাউন্সেলর চিঠির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে জানান, গত ১১ মে ঢাকা থেকে সাউদিয়া এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটযোগে হজপালনের জন্য সৌদি গমনকারী দুই নারী হজযাত্রীর ৪টি সুটকেস ভর্তি পর্যাপ্ত পরিমাণ জর্দাসহ নানাপ্রকার তামাকপাতা থাকায় স্থানীয় কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সেগুলো জব্দ করেন।

পরবর্তীতে কাষ্টমস্ কর্তৃপক্ষ সুটকেসে থাকা মালামাল জব্দ করে খালি সুটকেসগুলো হজ টার্মিনালে অবস্থিত বাংলাদেশ হজ অফিসে হস্তান্তর করে। ওই দুই হজযাত্রী উল্লাস ট্যুরস্ এন্ড ট্রাভেলস্ (লাইসেন্স নম্বর: ১২৭৭)-এর মাধ্যমে হজপালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব গমন করেছেন। সৌদি কর্তৃপক্ষ হজযাত্রীদের লাগেজ পরিবহনে কাষ্টমস্ রুলস্ অনুসরণের পাশাপাশি বর্ণিত কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য মৌখিকভাবে অনুরোধ করেছেন। সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা এবং দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে বিষয়টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

;

৯৪ দিনে হাফেজ হলো ৯ বছরের কিশোর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হাফেজ নুসাইব কুদরতি, ছবি: সংগৃহীত

হাফেজ নুসাইব কুদরতি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত বছরের অক্টোবরে সাড়ে ৫ মাসে ৮ বছর বয়সী কিশোর সাফায়াত মুকতাদির প্রান্ত কোরআন মুখস্থ করে হাফেজ হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করে। সেই সাফল্যের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার মাত্র ৯৪ দিনে কোরআন মাজিদের হাফেজ হলো ৯ বছরের কিশোর নুসাইব কুদরতি। এই দুই মেধাবী শিক্ষার্থী মিরপুরের (রূপনগর) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র।

নুসাইব কুদরতী খুলনা জেলার সোনাডাঙ্গা উপজেলার বাসিন্দা নিয়ামত আলী কুদরতীর ছেলে। ছেলের এমন সাফল্যে খুশি বাবা নিয়ামত আলী। তার আশা, নুসাইব একসময় বড় আলেম হবে এবং ইসলামের খেদমত করবে।

নুসাইব কুদরতীর শিক্ষক হাফেজ কারি ফরহাদ বিন নাসেরী বলেন, ‘মহাগ্রন্থ কোরআন মাজিদের অলৌকিক মুজিজায় এমন ঘটনা বিশ্বে প্রায় ঘটছে- আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের ছাত্র নুসাইব কুদরতী মাত্র ৯৪ দিনে পবিত্র কোরআন মুখস্থ করেছে। কোরআন মুখস্থ করার বিষয়টি মোটেও সহজ নয়। এর পেছনে শিক্ষক থেকে শুরু করে বাবা-মায়ের অনেক চেষ্টা শ্রম ও আত্মত্যাগ প্রয়োজন। একজন কোরআনে হাফেজ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়। আল্লাহতায়ালা এ শিশুকে দীনের জন্য কবুল করুন।’

তিনি আরও জানান, নুসাইব শুরুতে দুই পৃষ্ঠা করে সবক দিলেও শেষের দিকে দিনে ১০ পৃষ্ঠা করে সবক দিয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের ভাইস প্রিন্সিপাল মাহমুদ হাসান বলেন, আমরা প্রত্যেকটি বাচ্চাকে টার্গেট ফিক্সড করে পড়াশোনা করাই। সেই টার্গেট অনুযায়ী নুসাইব আন্তরিকতার সঙ্গে মেহনত করেছে এবং শিক্ষক তার পেছনে সর্বস্ব ব্যায় করে তাকে যোগ্য করে গড়ে তুলেছে। আমাদের প্রতিটি ছাত্রকে এভাবে আন্তরিকতার সঙ্গে পাঠদান দিয়ে থাকি।

ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মামুনুর রশীদ বলেন, এ ছেলেটি পাঁচ বছর বয়স থেকে আমাদের এখানে পড়াশোনা করছে। তার বাবা একজন চাকুরীজীবী। এমন অনেক বাচ্চা আমাদের এখানে আছে। দীন ও ইসলাম শিক্ষা অর্জন করছে। কোরআনে হাফেজ হচ্ছে, পাশাপাশি স্কুলের পড়াও চালিয়ে যাচ্ছে।

;