ফেসিয়াল করে এইডসে আক্রান্ত ৩ নারী
যুক্তরাষ্ট্রে স্পাতে গিয়ে ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করে এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হলেন তিন নারী। এ ফেসিয়ালে ইনজেকশনের ব্যবহার রয়েছে।
আমেরিকান সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আমেরিকার কেন্দ্রীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সিডিসি বলছে, নিউ মেক্সিকোর একটি স্পাতে গিয়ে এইডসে আক্রান্ত হন ওই তিন নারী। তারা তিন জনই ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করান।
ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়ালের সময় একজন ব্যক্তির শরীর থেকে রক্ত নেওয়া হয় এবং তারপরে প্লাটিলেট আলাদা করা হয়। পরে মাইক্রোনিডল ব্যবহার করে তা মুখে দেওয়া হয়। যদিও অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতিতে এই ফেসিয়াল করা হলে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, আলবুকার্কের ভিআইপি স্পাতে ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করা এক নারীর এইডসে আক্রান্ত হওয়ার খবর ২০১৮ সালে প্রথমে সামনে আসে। তখনই নড়েচড়ে প্রশাসন। মুখে রক্ত মেখে ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করিয়েছিলেন ওই নারী। পরে তদন্তে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
জানা যায়, যে সরঞ্জাম একবারই ব্যবহার হওয়ার কথা, সেই সরঞ্জাম একাধিকবার ব্যবহার করা হত ওই স্পাতে। বাদ যেত না লেবেলবিহীন রক্তের শিশিও।
ঠিক কীভাবে ওই নারী সংক্রমিত হলেন? তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে তিনি একা নন, ওই স্পাতে ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করানোর পর এইডসে আক্রান্ত হয়েছেন আরও দুজন। আরও যারা গ্রাহক ছিলেন, তাদেরও এইচআইভি পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য় দপ্তরের কর্মকর্তা। তবে এখনও পর্যন্ত নতুন কোনো এইডসে আক্রান্তের সন্ধান মেলেনি।
স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, অভিযুক্ত স্পার মালিক ২০২২ সালে লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এর দায়ে তাকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে চায় চীন: ব্লিঙ্কেন
চলতি বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য মার্কিন নির্বাচনে চীন হস্তক্ষেপ করতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) চীন সফরের শেষ দিন মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ অভিযোগ করেন।
ব্লিঙ্কেন জানান, আসন্ন মার্কিন নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার ও হস্তক্ষেপ করার চীনা প্রচেষ্টার প্রমাণ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। যদিও এর আগে মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
ব্লিঙ্কেন যখন সিএনএনকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন তখনও শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তারা চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংসহ বিভিন্ন চীনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে বৈঠক করছিলেন। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি বিষয় ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি খাত ও মস্কোকে চীনের সমর্থন।
সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘আমরা দেখেছি যে, আমাদের নির্বাচনে প্রভাবিত করার প্রচেষ্টা চলছে; সম্ভবত হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা চলছে। আমরা এ প্রচেষ্টা দ্রুত বন্ধ হওয়া নিশ্চিত করতে চাই। আমরা খুব সাবধানে নির্বাচনে চীনের হস্তক্ষেপ পর্যবেক্ষণ করছি। এটি আমাদের কাছে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক বছরের কম সময়ের মধ্যে এ নিয়ে দুবার চীন সফর করলেন। গত বছরের নভেম্বরে সান ফ্রান্সিসকোতে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও জিনপিং। তখন চীনের প্রেসিডেন্ট প্রতিশ্রুতি দেন, তাঁর দেশ আমেরিকার নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবে না।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বৈঠকে গাজা নিয়ে কথা বলবে আরব-ইইউ
শীর্ষ আরব ও ইইউ কূটনীতিকরা সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে রোববার (২৮ এপ্রিল) দু‘দিনব্যাপী বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন। কূটনৈতিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা র্অথনৈতিক শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি গাজার চলমান যুদ্ধ নিয়ে বৈঠক করবেন।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) অর্থনৈতিক ফোরামের বিশেষ বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে গাজা নিয়ে আলোচনা হবে। এতে যোগ দিচ্ছেন ফিলিস্তিনের নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মোস্তফা, মিসরের প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা মাদবৌলি এবং গাজা উপত্যকার জন্যে জাতিসংঘের ত্রাণ সমন্বয়কারী সিগ্রিড কাগ।
ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে ফরাসী পররাষ্ট্র মন্ত্রী স্টিফেন সেজার্ন গাজা যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার জন্যে রিয়াদ সফরে আসছেন। এছাড়া তার ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন সফরেরও পরিকল্পনা রয়েছে।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) এক কূটনৈতিক সূত্রে বলা হয়েছে, রিয়াদে গাজা ও আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়ে ইউরোপীয়ান, আমেরিকান ও আঞ্চলিক নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এদিকে মুখপাত্র সেবাস্তিয়ান ফেশার বলেছেন, জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রী আনালিনা বায়েরবক সোমবার রিয়াদে এসে পৌঁছাবেন এবং কাগ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানসহ অন্যান্যদের সাথে বৈঠকে যোগ দেবেন।
বার্লিনে ফেশার সাংবাদিকদের বলেছেন, বৈঠকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সংকট, উত্তেজনা হ্রাস ও শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যতের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হবে।
উল্লেখ্য সৌদি আরব কখনই ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি। কিন্তু হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলার আগে মার্কিন প্রশাসনের প্রচেষ্টায় ইসরায়েল ও সৌদি আরর এক ঐতিহাসিক চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল।
ফিলিস্তিনী সংগঠন হামাস গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক বড়ো ধরনের হামলা চালায়। এ সময়ে তারা প্রায় এক হাজার ১৭০ ইসরায়েলিকে হত্যা এবং ২৫০ জিম্মিকে আটক করে। এখনও তাদের কাছে ১৫০ জিম্মি আটক রয়েছেন।
এদিকে ৭ অক্টোবর ইসরায়েল গাজায় প্রতিশোধমূলক পাল্টা হামলা শুরু করে যা এখনও চলছে। গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত এ হামলায় ৩৪ হাজার ৩৫৬ ফিলিস্তিনী নিহত হয়েছেন। এদের অধিকাংশ নারী ও শিশু।
বেইজিংয়ে ঐক্য সংলাপে বসছে ফাতাহ-হামাস
বেইজিংয়ে ঐক্য সংলাপে বসতে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনের দুই প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস ও ফাতাহের প্রতিনিধিরা। শিগগিরই এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে শুক্রবার নিশ্চিত করেছেন হামাস ও ফাতাহর নেতৃবৃন্দ এবং চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঐক্য সংলাপে বসার উদ্দেশে ফিলিস্তিনের দুই প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস ও ফাতাহের প্রতিনিধিরা শুক্রবার বেইজিংয়ের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। সংলাপে ফাতাহের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন গোষ্ঠীটির জ্যেষ্ঠ নেতা আজাম আল আহমেদ, আর হামাসের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকবেন ওই গোষ্ঠীর জ্যেষ্ঠ নেতা মুসা আবু মারজুক।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখাপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনের জাতীয় কর্তৃপক্ষকে শক্তিশালী দেখতে চাই এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী যেসব রাজনৈতিক পক্ষ সংলাপ এবং আলোচনার মাধ্যমে ঐক্য স্থাপন করতে চায়, তাদের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।’
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে কূটনৈতিক কর্মকর্তা ওয়াং কেজিয়ান হামাসের প্রেসিডেন্ট ইসমাঈল হানিয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সে সময় বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে এই শান্তি সংলাপের প্রস্তাব দেন ওয়াং কেজিয়ান এবং হানিয়েও তাতে সম্মতি দেন।
শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে ওয়াং ওয়েনবিন জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনের প্রতিপক্ষ দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঐক্য স্থাপনই সংলাপের মূল উদ্দেশ্য।
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছরে মধ্যপ্রাচ্যে গভীর প্রভাব বিস্তারকারী চীনের এ বিষয়ে অতীত সাফল্যের রেকর্ড রয়েছে। ২০২৩ সালে সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে শান্তি স্থাপনে নেতৃত্ব দিয়েছিল বেইজিং। মধ্যপ্রাচ্যের এ দুই নেতৃস্থানীয় দেশের মধ্যে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে বৈরিতা চলছিল।