মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: ভারতের জয়, চীনের পরাজয়



রেজা-উদ্-দৌলাহ প্রধান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারত-চীন কৌশলগত দ্বন্দ্ব বেশ পুরনো। কৌশলগত ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে এই অঞ্চলের দেশগুলোতে নিজেদের মিত্রদের ক্ষমতায় দেখতে চায় এশিয়ার দুই সুপার পাওয়ার ভারত ও চীন। সে ধারাবাহিকতায় মালদ্বীপ নিয়েও ভারত ও চীনের মধ্যে ছায়াযুদ্ধ ছিল। যাতে শেষ পর্যন্ত ভারতের জয় হয়েছে।

সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চীনপন্থী আব্দুল্লাহ ইয়ামিনকে হারিয়ে দিয়েছেন ভারতপন্থী বিরোধী দলীয় নেতা ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ। নির্বাচনে ৫৮.৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন ইব্রাহিম সলিহ। নির্বাচনে নিজেদের মিত্র জয়ী হওয়ায় ভারতও দারুণ খুশি।

নির্বাচনের প্রাথমিক ফল ঘোষণার পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেন, ‘দেশটির তৃতীয় প্রেসিডেন্টশিয়াল ইলেকশনের সফলতাকে আমরা স্বাগত জানাই।’

‘নির্বাচনে বিজয় লাভ করায় ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহকে উষ্ণ অভিনন্দন জানাই।’

এদিকে নির্বাচনের প্রাথমিক ফল প্রকাশের পর চীন এখনো কোন প্রতিক্রিয়া দেয় নি। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপ নিয়ে গঠিত মালদ্বীপ নির্বাচনের পর কোনদিকে যায় সেটি দেখতে চায় বেইজিং।

২০১৩ সালে ইয়ামিন যখন ক্ষমতায় আসে তখন থেকেই চীন ও মালদ্বীপের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নতুন গতি লাভ করে। কিন্তু তার প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় ভারতের সঙ্গে মালদ্বীপের যে ঐতিহ্যগত জোট রয়েছে-সেটিও আরো উন্নত হয়।

২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং মালদ্বীপ সফর করেন। মালদ্বীপের রাজধানী মালের পার্শ্ববর্তী হুলহুয়েতে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণে চীনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দেশটির চুক্তি হয়।

একই সঙ্গে চীন সেখানে ১.৪ কি.মি দীর্ঘ সংযোগ সেতু নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করে, যেটি চলতি বছরের ৩০ আগস্ট শেষ হয়। সেতুটি হুলহুলে ও মালেকে সংযুক্ত করেছে।

শি জিংপিংয়ের সফরের দুইমাস পর ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে মালদ্বীপ চীনা প্রেসিডেন্ট শি’র স্বপ্নের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে।

বিআরআই প্রকল্পের অংশ হিসেবে বিমানবন্দর, সংযোগসেতুর মত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা শুরু হয়েছিল।

২০১৭ সালে প্রায় ৩ লাখ চীনা পর্যটক মালদ্বীপ ঘুরে গেছেন। যেটা বিশ্বের আর যেকোনো দেশের পর্যটকের চেয়ে বেশি। মোট কথা সবদিক দিয়েই চীন-মালদ্বীপ অর্থনৈতিক সম্পর্ক ইয়ামিনের শাসনামলে দারুণ উন্নতি হয়।

শুধু  তাই নয় কৌশলগত দিক দিয়েও সম্পর্ক বৃদ্ধিতে দুই দেশ এগিয়ে এসেছিল। চলতি বছরের শুরুর দিকে দুই দেশ যৌথভাবে ভারত মহাসাগরের মাকুনুদোহতে ‘জয়েন্ট ওশেন অবজারভেশন স্টেশন’ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিল।

তখন টাইমস অব ইন্ডিয়াতে একজন বিশ্লেষক লেখেন, ‘প্রস্তাবিত প্রকল্পের মধ্যদিয়ে চীন ভারত মহাসাগরে শিপিং রুট হিসেবে ব্যবহারের উপযুক্ত জায়গা পাবে। সেই সঙ্গে ভারতের বিরুদ্ধে চীনা নৌবাহিনীর সম্মুখ অবস্থান আরো কার্যকর  করবে।’

এখন আদৌ বিষয়টা সেটা কি না-অথবা গুরুত্বপূর্ণ শিপিং লাইনে সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য চীনাদের সরল চিন্তাভাবনা কি না-সেটিও দারুণ কৌতুহলের জন্ম দেয়।

কিন্তু মালদ্বীপের বিরোধীদলীয় ডেমোক্রেটিক পার্টি (এমডিপি), যারা সাম্প্রতিক নির্বাচনে সলিহ’র জোটের অন্তর্ভুক্ত, তারা তখন বলেছিল, এ প্রকল্প সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে। এই প্রকল্প দিয়ে ভারত-চীন সম্পর্কের কৌশলগত রেড লাইন সেদিন চীন অতিক্রম করেছিল যেটি ভারতের প্রত্যাশিত নয়। কিন্তু  এর  পাল্টা জবাব হিসেবে ভারত কি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে তখন দেশটির নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকরা পরিষ্কার করে কিছু বলেন নি।

আয়তন ও জনসংখ্যা বিবেচনায় মালদ্বীপ ক্ষুদ্র রাষ্ট্র। মাত্র ৪ লাখ ১৭ হাজার মানুষের বসবাস।তবে মাত্র ২৯৮ একর ভূমি থাকলেও হাজারেরও অধিক প্রবাল দ্বীপের দেশটিকে বিশাল সমুদ্র সীমার মালিক করে দিয়েছে।

ভারতের সঙ্গে ভৌগলিক নৈকট্যের কারণে নয়াদিল্লী সবসময় দেশটিতে প্রভাব বজায় রাখার চেষ্টা করে আসছে। যা দ্বীপ দেশটির অস্থিরতা দূর করতে অতীতের ভারতীয় হস্তক্ষেপগুলো দেখলে বোঝা যায়।

১৯৯৮ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে ভারতের ১৬০০ সৈন্য মালদ্বীপে প্রেরণ করেছিল। শ্রীলঙ্কা থেকে আগত তামিল বিদ্রোহীরা তখন দেশটির সরকার উৎখাত করে বিদ্রোহীদের আস্তানা গড়ে তুলতে চেয়েছিল বিধায় মালদ্বীপ সরকারের সহায়তায় ঐ সৈন্য প্রেরণ করা হয়।

তিন দশকের অধিক সময় ধরে- ১৯৭৮ থেকে ২০০৮- মালদ্বীপ মামুন আব্দুল গাইয়ুমের স্বৈরশাসনে ছিল। মামুন ছিল ইয়ামিনের সৎভাই। গাইয়ুমের শাসনামলে দেশটি তাদের পর্যটন খাতের ব্যাপক উন্নয়ন করে। জীবনমানের উন্নয়ন ঘটানো হয়।

কিন্তু সে সময়টা দুর্নীতির জন্যও বিখ্যাত। ২০০৮ সালে দেশটির প্রথম সত্যিকারের গণতান্ত্রিক নির্বাচনে গাইয়ুম হেরে যায়, যা ছিল অনেকের কাছে আশ্চর্যজনক। নির্বাচনে রাজনৈতিক বন্দী, বিরোধী দলীয় তরুণ রাজনীতিবিদ মোহামেদ নাশিদ ক্ষমতায় আসেন।

ক্ষমতায় আসার পর তিনি দেশটির রাজনৈতিক ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ধরে রাখেন কিন্তু সেই সঙ্গে আরও দেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে মন দেন। কিন্তু ২০১২ সালে বিতর্কিত পরিস্থিতিতে নাশিদকে বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করে ২০১৫ সালে জেলে যেতে হয়। তখন ইয়ামিন ক্ষমতায় ছিলেন।

নাশিদের গ্রেফতার নিয়ে তখন যে পরিস্থিতি ছিল সেটাকে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ‘রাজনৈতিক প্রভাবিত’ এবং এ জন্য তারা ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিন্দা করেন।

২০১৬ সালে নাশিদকে দেশত্যাগ করে ব্রিটেনে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়, যেখানে তাকে রাজনৈতিক আশ্রয়ের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছিল। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে, মালদ্বীপে ‘রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি’ দেওয়ার প্রস্তাব প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন ফিরিয়ে দেয়ার পর যখন দেশে রাজনৈতিক সংকট চলছিল তখন নাশিদ ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রকে সেখানে সামরিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানায়।

ভারতকে ‘সামরিক বাহিনীর সমর্থনে’ সেখানে যাওয়ার জন্য ‘যথেষ্ট দাঙ্গাপুলিশ বেষ্টিত’ একজন কর্মকর্তা পাঠানোর আহ্বান জানান তিনি।

নাশিদ সম্ভবত ভারত ও পশ্চিমা বিশ্বের সহমর্মিতা পাওয়ার চেষ্টায় তখন সংকটের জন্য চীনের দিকে আঙ্গুল তোলেন। সামরিক প্রয়োজনে চীনের বিরুদ্ধে দ্বীপ দেশটির ভূমি দখলের অভিযোগ তোলেন তিনি। তার বক্তব্য সংকটকে আরো ঘনীভূত করে।

মালেতে থাকা চীনা দূতাবাস অভিযোগ অস্বীকার করে বিবৃতিতে বলেন, ‘এধরনের বক্তব্য এ অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরু ‘। ‘চীনা জনগণের আবেগকে আহত করেছে এ ধরনের বক্তব্য’।

১৩ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্র পরিচালিত চীনা ট্যাবলয়েড পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস খবরের শিরোনাম করে, ‘মালদ্বীপে ভারতীয় সামরিক আগ্রাসন রুখে দেবে চীন’- কিন্তু কিভাবে সেটা করা হবে খবরে বলাও হয় নি- জাতিসংঘের সমর্থন ছাড়া ‘উপযুক্ত কারণ’ ব্যতীত সামরিক হস্তক্ষেপের কোন পরিস্থিতিও সে সময় সেখানে ছিল না।

তাই ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে যখন সংকট ছিল তখন ভারত সামরিক হস্তক্ষেপের চাইতে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করাকেই শ্রেয় মনে করে।

যখন নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়, তখন শ্রীলঙ্কায় নির্বাসনে থাকা নাশিদ সেখানকার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের হাতে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন।

নাশিদ এখনো এমডিপি চেয়ারম্যান। এমডিপিসহ আরো তিনটি রাজনৈতিক দল ইয়ামিনের বিপক্ষে নির্বাচনে লড়ার জন্য সলিহকে সমর্থন দিয়েছিল। এদিকে আগামী নভেম্বরের আগে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হস্তান্তর হচ্ছে না। ক্ষমতা হস্তান্তরের এ বিলম্বের জন্য শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে।

ইয়ামিনের শাসনামলে যে ভারতের প্রভাব দেশটিতে কমতে শুরু করেছিল তারা অবশ্যই চাইবে যেন সলিহ শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল পরিবেশের মধ্যদিয়ে নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা গ্রহণ করতে পারে।

ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক স্বার্থে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠা দ্বীপ দেশটির নির্বাচনে সলিহর বিজয়ের পর, চীনের ক্ষতির মাত্রা বুঝতে হলে বেইজিংয়ের প্রতিক্রিয়া দেখা ছাড়া ভিন্ন উপায় নেই।

   

ব্রাজিলে গেস্টহাউসে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ১০



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দক্ষিণ ব্রাজিলের পোর্তো অ্যালেগ্রে শহরে গৃহহীনদের অস্থায়ী আশ্রয় হিসাবে ব্যবহৃত একটি গেস্টহাউসে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) আগুন লেগে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছে।

অগ্নিকাণ্ড এবং হতাহতের খবর রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন দেশটির কর্মকর্তারা।

রিও গ্র্যান্ডে ডো সুল রাজ্যের ফায়ার বিভাগ বলেছে, উদ্ধারকর্মীরা সেখান থেকে ১০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে।

রিও গ্র্যান্ডে ডো সুল রাজ্যের ফায়ার বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ক্ষতিগ্রস্তদের সনাক্ত করতে এবং আগুনের কারণ অনুসন্ধান করতে ঘটনাস্থলে রয়েছেন।

রাজ্যের গভর্নর এডুয়ার্ডো লেইট বলেছেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর তাকে গভীরভাবে বিচলিত করেছে।

তিনি এক্স-এ লিখেছেন, ‘ফায়ার ডিপার্টমেন্ট আগুন নেভাতে পাঁচটি ট্রাক এবং কয়েক ডজন অগ্নিনির্বাপক কর্মী প্রেরণ করেছে।’

তিনি আর লিখেছেন, ‘আমরা এই ট্র্যাজেডির কারণ অনুসন্ধানে কাজ চালিয়ে যাব। নিহতদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা।’

ব্রাজিলের মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, তিন তলা ভবনটি আগুনে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে এবং য়ায়ার সার্ভিসকর্মীরা আগুন নেভানোর জন্য লড়াই করছে।

মেয়র সেবাস্তিয়াও মেলো এক্স-এ লিখেছেন, একাধিক আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আহতদের সংখ্যা ১১ জন বলে জানানো হয়েছে।

;

ছয় বছরে বিজেপির গুগলে বিজ্ঞাপন খরচ ১০০ কোটি রুপি



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গুগল এবং ইউটিউবে ১০০ কোটি রুপির বেশি বিজ্ঞাপন দিয়েছে বিজেপি। এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারতে এই প্রথম কোনও রাজনৈতিক দল এত টাকার রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন দিল।

২০১৮ সালের মে মাস থেকে বিজ্ঞাপনের ‘ট্রান্সপারেন্সি রিপোর্ট’ প্রকাশ করেছে গুগল। তাতে দেখা গেছে, কংগ্রেস, ডিএমকে, রাজনৈতিক উপদেষ্টা সংস্থা ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি (আই-প্যাক) মোট যত টাকার বিজ্ঞাপন দিয়েছে, তারচেয়ে বেশি টাকার বিজ্ঞাপন একাই দিয়েছে বিজেপি। সেটি ১০১ কোটি রুপিও বেশি।

ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, ২০১৮ সালের ৩১ মে থেকে ২০২৪ সালের ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত গুগলে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনে যত খরচ করা হয়েছে, তার ২৬ শতাংশই করেছে বিজেপি। ছয় বছরে মোট ৩৯০ কোটি রুপি খরচ করা হয়েছে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনে।

গুগলের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন বলতে শুধু রাজনৈতিক দলের বিজ্ঞাপনকেই বোঝায় না। এই তালিকায় রয়েছে সংবাদ মাধ্যম, সরকারের প্রচার বিভাগ, এমনকি রাজনীতিক, অভিনেতাদের দেওয়া বিজ্ঞাপনও।

গুগলের পরিসংখ্যান বলছে, ছয় বছরে দুই লাখ ১৭ হাজার ৯৯২টি রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে এক লাখ ৬১ হাজারটি বিজেপির।

এর মধ্যে আবার দলের সব থেকে বেশি বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে কর্নাটকের বাসিন্দাদের উদ্দেশ্য করে। কর্নাটকের বাসিন্দাদের উদ্দেশে গুগলে প্রকাশ করা হয় ১০ কোটি ৮০ লাখ রুপির বিজ্ঞাপন। তার পরেই রয়েছে উত্তরপ্রদেশ।

সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য ১০ কোটি ৩০ লাখ টাকার বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে। তারপরের স্থানে রয়েছে রাজস্থান ও দিল্লি। এমনিতে গুগলে সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে তামিলনাড়ুর উদ্দেশে। তারপরে রয়েছে তেলঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ।

গুগলে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্রে বিজেপির পর রয়েছে কংগ্রেস। ছয় বছরে ৪৫ কোটি রুপির বিজ্ঞাপন দিয়েছে তারা। এই সময়ে মোট ৫,৯৯২টি বিজ্ঞাপন দিয়েছে তারা। তাদের লক্ষ্য ছিল মূলত কর্নাটক এবং তেলঙ্গানা। দুই রাজ্যের বাসিন্দাদের জন্যই ৯.৬ কোটি রুপি করে খরচ করেছে কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশের জন্য ৬.৩ কোটি রুপি খরচ করেছে।

কংগ্রেসের পর রয়েছে ডিএমকে। গুগলে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন দেওয়ার নিরিখে তারা তৃতীয় স্থানে। ২০১৮ সালের মে মাস থেকে গুগলে বিজ্ঞাপন দিয়ে ৪২ লাখ রুপি খরচ করেছে তারা। তার মধ্যে ১৬.৬ কোটি রুপির বিজ্ঞাপন দিয়েছে তাদের রাজনৈতিক উপদেষ্টা সংস্থা।

তামিলনাড়ুর বাইরে কর্নটকে ১৪ কোটি রুপি এবং কেরলে ১৩ কোটি রুপির বিজ্ঞাপন দিয়েছে এমকে স্ট্যালিনের দল। ভারত রাষ্ট্রসমিতি (বিআরএস) ২০১৩ সালের নভেম্বরে তেলঙ্গানার বিধানসভা নির্বাচনের সময় ১২ কোটি রুপি খরচ করেছে। আইপ্যাক তৃণমূলের জন্য পশ্চিমবঙ্গের উদ্দেশে গুগলে ৪.৮ কোটি রুপির বিজ্ঞাপন দিয়েছে।

লোকসভার দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের আগে গুগলে বিজ্ঞাপন দিতে রাজনৈতিক দলগুলো যে পরিমাণ টাকা খরচ করেছে, তা জানলে বিস্মিত হতে হয়।

এ ক্ষেত্রে বিজেপিকে পিছনে ফেলেছে কংগ্রেস। ১৮ থেকে ২৪ এপ্রিল কংগ্রেস গুগলে ৫.৭ কোটি রুপির বিজ্ঞাপন দিয়েছে। আর বিজেপি দিয়েছে ৫.৩ কোটি রুপির।

;

ক্যাম্পাসের বিক্ষোভ আমাদের গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য: অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্পাসগুলোতে ছড়িয়ে পড়া ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ আমাদের গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য।’

তবে, তিনি ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে দেশটির শিক্ষার্থীদের নীরবতার সমালোচনা করেছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

এদিকে, হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধের প্রতিবাদকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কখনও কখনও রাসায়নিক টেজার ব্যবহার করছে। ফলে, বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে।

বিক্ষোভকে স্তব্ধ করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বড় আকারের গ্রেফতার অভিযান চালিয়েছে দেশটির পুলিশ।

চীনের উচ্চ-পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে একদিনের বৈঠকের পর বেইজিংয়ে বক্তৃতাকালে ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘এই ধরনের বিক্ষোভ আমাদের গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নাগরিকরা যেকোনো সময় তাদের মতামত, উদ্বেগ এবং ক্রোধ প্রকাশ করতে পারে, যা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে চীন।’

ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘আমি মনে করি, এই ধরনের বিক্ষোভ একটি দেশের শক্তিকে প্রতিফলিত করে।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিবাদকারীরা হামাসের নিন্দা করেনি, যারা গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অভূতপূর্ব হামলা চালিয়েছিল।’

গাজা যুদ্ধ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, যুদ্ধ গতকাল শেষ হতে পারতো, এটি আগামীকালও শেষ হতে পারে। যদি হামাস তার অস্ত্র নামিয়ে বেসামরিকদের পেছনে লুকিয়ে থাকা বন্ধ করে জিম্মিদের মুক্তি দেয়। তবেই শান্তি ফিরবে।’

তিনি বলেন, ‘তবে হামাস সেটি না করে যুদ্ধের পথ বেছে নিয়েছে।’

;

মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধের প্রস্তাবে রাশিয়ার ভেটো 



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধের একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে রাশিয়া। ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের ১৩টি দেশই ওই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। একমাত্র দেশ হিসেবে ভেটো দেয় রাশিয়া। অপর দেশ চীন ভোটাভুটিতে অংশগ্রহণ করেনি। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার (২৪ এপ্রিল) ১৯৬৭ সালের মহাকাশ চুক্তির ওপর ভিত্তি করে নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান একটি খসড়া প্রস্তাবটি উত্থাপন করে। খসড়াটিতে বলা হয়, ‘ক্ষমতাধর দেশের পাশাপাশি সব রাষ্ট্রকে মহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহার এবং এতে অস্ত্র প্রতিযোগিতা প্রতিরোধের লক্ষ্যে সক্রিয়ভাবে অবদান রাখার আহ্বান জানানো হচ্ছে।’

খসড়ায় ১৯৬৭ সালের মহাকাশ চুক্তি সমর্থনের জন্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়। মহাকাশে কোনো ধরনের গণবিধ্বংসী অস্ত্র বহনকারী কোনো বস্তুকে পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপন না করতে সম্মত হয়েছিল এতে স্বাক্ষরকারী সব দেশ।

বুধবার নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত প্রস্তাবটিতে একমাত্র দেশ হিসেবে রাশিয়ার ভেটো দেওয়ার সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির এমন পদক্ষেপকে ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে অভিহিত করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড। তিনি বলেন, সহজবোধ্য প্রস্তাবটি এ ধরনের প্রতিযোগিতা বন্ধে আইনগত বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করত। তবুও এতে ভেটো দিয়েছে রাশিয়া। অথচ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রকাশ্যে বলেছিলেন, মহাকাশে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের কোনো ইচ্ছা নেই মস্কোর।

লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, ‘আজকের ভেটো প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। যদি আপনি নিয়ম মেনে চলেন, তাহলে আপনি কি এমন একটি প্রস্তাবকে সমর্থন করবেন না, যা সে নিয়মগুলো মেনে চলাকেই নিশ্চিত করে? আপনি কী লুকাতে চান?’ অন্যদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার দূত ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, প্রস্তাবটির পেছনে ‘গোপন ও নিষ্ঠুর’ উদ্দেশ্য রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের।

এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি দাবি করেন, মহাকাশভিত্তিক একটি অ্যান্টি-স্যাটেলাইট পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে রাশিয়া। পরে ওই অভিযোগ অস্বীকার করে মস্কো দাবি করে, ১৯৬৭ সালের মহাকাশ চুক্তির প্রতি তারা দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও বিষয়টি নিয়ে নিজ দেশের অবস্থান স্পষ্ট করেন। তিনি বলেন, মহাকাশে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে মস্কোর অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট।

বিবিসির খবরে বলা হয়, বৈশ্বিক নজরদারি, মার্কিন সামরিক অভিযান থেকে শুরু করে জিপিএস সিস্টেম, আর্থিক লেনদেনের মতো বেসামরিক কাজে ব্যবহারের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই স্যাটেলাইট যোগাযোগের ওপর নির্ভর করে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে তাদের স্যাটেলাইটগুলোকে টার্গেট করা হলে রীতিমতো অচল হয়ে পড়বে দেশটি।

;