‘টেলিকম খাতের কর ব্যবস্থা ও ইকোসিস্টেম ব্যবসাবান্ধব করুন’



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

টেলিকম খাতের কর ব্যবস্থা ও ইকোসিস্টেম ব্যবসা-বান্ধব করার আহ্বান জানিয়েছে এই খাতের নীতি-নির্ধারক ও প্রতিনিধিরা। সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এ খাত সংশ্লিষ্ট সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী কাজ করার পরামর্শ দেন তারা।

বুধবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে এমটব (অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের) ও বিআইজিএফ (বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভরনেন্স ফোরাম) আয়োজিত টেলিকম ট্যাক্স পলিসি ও ইকোসিস্টেম নিয়ে এক পলিসি ডায়লগে বক্তারা এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন বিআইজিএফের চেয়ারপারসন ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান হাসানুল হক ইনু, এমপি।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমাদের তরুণরা এখন ইন্টারনেট ভিত্তিক ব্যবসা করছে। ডিজিটাল কানেক্টিভিটির অনেক সুবিধা রয়েছে। এ বিষয়ে আমি একমত যে উচ্চ কর দীর্ঘদিন ধরে একটি সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি মনে করি, আমরা এনবিআরের কাছে টেলিযোগাযোগ খাতে উচ্চ করের প্রভাবের বিষয়টি সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারিনি। আমাদের ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে চিন্তা করতে হবে, যেখানে যৌক্তিক হারে কর নির্ধারণের দিকে নজর দেওয়া দরকার।

হাসানুল হক ইনু বলেন, বাংলাদেশে টেলিকম খাতে কর খুব বেশি। এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের কোষাগারে অনেক অর্থ দিচ্ছে, তাহলে তাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে কেন? ট্যাক্স কমানো হলে সরকারের কোন ক্ষতি নেই, কারণ এতে পরোক্ষভাবে সরকারের আয় বাড়ে। মোবাইল খাতে করপোরেট ও ন্যূনতম টার্নওভার কর কমিয়ে অন্যান্য শিল্প খাতের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করা উচিত।

হাসানুল হক ইনু আরও বলেন, তামাক খাতের মতো ক্ষতিকর খাতে টার্নওভার ট্যাক্স যেখানে ১% সেখানে মোবাইল শিল্পে এই ট্যাক্স ২%, যা অবিবেচনাপ্রসূত। এটা ১% এর নিচে নামিয়ে আনা দরকার।

তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ওপর যে ভ্যাট রয়েছে তা তুলে দেওয়া দরকার। সরকার এ থেকে কতই বা আয় করে? আধুনিক জীবনে তথ্য সবেচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি এবং মোবাইল খাত হলো এই তথ্য আদান প্রদানসহ সকল ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রধানতম বাহন। গ্রাহকদের সেবা প্রদানের কথা বিবেচনায় রেখে এই খাতকে আরও কীভাবে জনবান্ধব করা যায় তা নিশ্চিত করারও আহ্বান জানান তিনি।

পলিসি ডায়ালগে টেলিকম করনীতি ও টেলিকম ইকোসিস্টেম নিয়ে দুইটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে রবি আজিয়াটার চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার শাহেদ আলম এবং এরিকসনের মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ, শ্রীলংকার হেড অব নেটওয়ার্ক সল্যুশন এবং এরিকসন বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার আবদুস সালাম।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. খলিলুর রহমান বলেন, টেলিকম খাতকে সামনে এগিয়ে নিতে আমাদের বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। আমি মনে করি, কিছু কর যৌক্তিক করা দরকার। ট্যাক্স সংক্রান্ত সমস্যাগুলো সমাধানের মাধ্যমে প্রান্তিক গ্রাহকদের সুবিধা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমি এনবিআরের সাথে আলোচনা করব।

বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, দেশ বিদেশের সকল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান যেন সঠিকভাবে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা অনুসরণ করেই তাদের ব্যবসা করার সুযোগ করে দেওয়া হয়। টেলিকম খাত শুধু সেবা প্রদানই নয়, দেশের প্রবৃদ্ধিতেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। তাই তাদের প্রতি আমাদের ইতিবাচক মনোভাব সবসময়ই বজায় থাকবে। তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই আমরা বিভিন্ন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি।

রবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সিএফও এম. রিয়াজ রাশিদ বলেন, মার্কেটে যত বেশি প্লেয়ার থাকবে অপারেটরদের কাজের দক্ষতা তত বেশি কমবে। আর শেষ পর্যন্ত এর প্রভাব গিয়ে পড়বে গ্রাহকদের উপর, কারণ এতে সেবা প্রদানের ব্যয় বেড়ে যায়। তিনি বিষয়টির উপর নজর দেওয়ার জন্য নীতি নির্ধারকদের মনোযোগ দেওয়ার অনুরোধ করেন।

মূল প্রবন্ধে শাহেদ আলম বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশের সাথে তুলনা করলে দেখা যায় যে, বাংলাদেশের মোবাইল খাতের কর তুলনামূলকভাবে বেশি।তিনি আরও বলেন, অপারেটরদের বিনিয়োগের বিপরীতে রিটার্ন সন্তোষজনক নয়। একদিকে অপারেটরদের গ্রাহকপ্রতি গড় আয় কম অন্যদিকে মোবাইল ভয়েস ও মোবাইল ইন্টারনেটের মূল্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে কম। আমরা আরও নতুন ধরনের সাশ্রয়ী সেবা প্রদান করতে চাই। কিন্তু সেবাদাতাদের যদি করের ভারে জর্জরিত করা হয় তাহলে তাদের টিকে থাকাই কঠিন হয়ে যায়। আমরা এই খাতে যৌক্তিক হারে করারোপের দাবি জানাই। আমাদের মনে রাখা দরকার যে দেশের ৪৫ শতাংশ লোক নেটওয়ার্ক থাকা সত্ত্বেও এখনও মোবাইল ব্যবহার করতে পারে না।

প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় আবদুস সালাম বলেন, দেশের নেটওয়ার্ক ক্রমশই বিকশিত হচ্ছে, পাশাপাশি নানা রকম সেবাও আমাদের দৈনন্দিন জীবন ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। অটোমেশন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা মেশিন লার্নিং ইত্যাদি আমাদের এন্ড-টু-এন্ড সেবা প্রদানকে সহজ করে তুলছে। বাংলাদেশের টেলিকম ইকোসিস্টেমে অনেক বেশি সংখ্যক প্লেয়ার বা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেমন নিয়ন্ত্রক, এমএনও, এনটিটিএন, টাওয়ারকো, গেটওয়ে প্রদানকারী, অ্যাকাডেমিয়া, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট কমিউনিটি ও আরও অনেকে। এদের যে কোন একটিকেও বাদ দিলে এই খাতের বিকাশ সম্ভব হবে না। ভবিষ্যৎ নেটওয়ার্ক ও সেবার জন্য সরকার এই শিল্পের সবার সঙ্গে বিশদভাবে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, যা বাংলাদেশে এই ইকোসিস্টেমের বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান, সরকারের 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' রূপকল্প বাস্তবায়নে টেলিকম অপারেটররা প্রধানতম সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। করের ভার এবং অন্যান্য অনেক চ্যালেঞ্জে থাকা সত্ত্বেও আমরা কোটি কোটি গ্রাহকদের সেবা দিয়ে আসছি। আমরা সরকারের ভ্যাকসিন এবং বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার অংশীদার হতে পেরে গর্বিত। এখনও অনেক পথ যেতে হবে, কিন্তু আমরা জেনে খুশি যে সরকার লং ডিসট্যান্স টেলিকম নীতি নিয়ে কাজ করছে। আমাদের ডিজিটাল ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি এটি আমাদের আরও উৎকৃষ্ট সেবা দিতে সাহায্য করবে।

এ নিয়ে গ্রামীণফোনের অ্যাক্টিং সিসিএও হোসেন সাদাত বলেন, আমরা উচ্চ কর সমস্যা সমাধানের জন্য নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছি। আমাদের প্রতি বছর বিপুল বিনিয়োগ করতে হয়। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনের জন্য, আমাদের খুব শিগগিরই টেলিকম খাতের ট্যাক্স ব্যবস্থার বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের অযৌক্তিক করের বৈষম্য দূর করতে হবে। ভালো ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে করের পরিমাণ কম হওয়া উচিৎ।তৃণমূল স্তরে ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির জন্য, আমাদের কর যৌক্তিকীকরণ করতে হবে।

আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন বিটিআরসি’র স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েল, রবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সিএফও এম. রিয়াজ রাশিদ, ফাইবার এট হোমের চিফ টেকনোলজি অফিসার সুমন আহমেদ সাবির প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সফলভাবে শেষ করার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এমটব মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফরহাদ (অব.)।

ইন্টারনেটবিহীন ৭ দিনে বরিশালে ১ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশাল নগরীর কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা তরিকুল ইসলামের সংসার চলে ফ্রিল‌্যান্সিং করে। ১৮ জুলাই দুপুরে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ২৮৭ ডলার ব‌্যয় করে একটি ক‌্যাম্পেইন চালু করেছিলেন। সন্ধ‌্যায় ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনলাইন দুনিয়া থেকে তিনি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।

তরিকুল ইসলাম বলেন, ক‌্যাম্পেইনের অর্ডারটি (ফরমায়েশ) বিদেশী ক্লায়েন্টের ছিল। আমার ডলার কেটে নিয়ে গেলেও কাম্পেইন সম্পন্ন হয়নি। আরও কয়েকটি অর্ডার হারিয়েছি। ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যে ক্ষতি হয়েছে তা চাইলেও আগামী চার বছরেও পূরণ করতে পারবো না। শুধু তরিকুল ইসলামই নয়, বর্তমানে তার মতো প্রায় ১০ হাজার ফ্রিল্যান্সার অনলাইনে খুঁজে নিয়েছেন কর্মসংস্থান। এরা সকলেই ক্ষতির মুখে হারিয়েছেন পুঁজি।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকালে ইন্টারনেট সংশ্লিষ্ট কর্মজীবীদের সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করে জানা গেছে, গত সাতদিনে বরিশাল বিভাগে ন্যূনতম এক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে-ইন্টারনেট নির্ভর ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, ফ্রিল‌্যান্সার, ক্যাবল অপারেটর ও পরিবহন কাউন্টার। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইন্টারনেট সরবারহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।

বরিশাল ফ্রিল‌্যান্সার ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক জিহাদ রানা বলেন, আমার সংগঠনের অন্তর্ভূক্ত দুই হাজার সদস্য রয়েছেন। সরকার অনুমোদিত আরেকটি সংগঠন বাংলাদেশ ফ্রিল‌্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটিতে ৫০ জন আছেন। সংগঠনের বাইরে ফ্রিল‌্যান্সার রয়েছে আরও প্রায় সাত হাজার। তারা সকলেই ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তিনি আরও বলেন, আমার প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্ক ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন ছয়দিনে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকার নিট মুনাফা হারিয়েছে।

এরমধ্যে দেখা গেছে, অনেক অর্ডার সময় মতো ডেলিভারি দিতে ও অর্ডার নিতে পারিনি। সবচেয়ে বড় ক্ষতি হচ্ছে বহির্বিশ্বে আমাদের নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে। কারণ টানা ছয়দিন কোনো ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ হয়নি। তারা আমাদেরকে প্রতারক ভাবলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। সুতরাং নেতিবাচক মনোভাব তৈরির ক্ষতি আর কখনো পুষিয়ে উঠতে পারবো বলে মনে হয় না।

জিহাদ রানা বলেন, ইন্টারনেট সংশ্লিষ্ট সবগুলো খাত অপূরণীয় ক্ষতির মুখে পরেছে। অর্থের হিসেবে বিভাগে আনুমানিক এক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু মার্কেটিং পলিসিতে খ‌্যাতির যে ক্ষতি হয়েছে তা টাকায় পরিমাণযোগ‌্য নয়।

দক্ষিণাঞ্চলে ইন্টারনেট সরবারহকারী সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান ইউরোটেল বিডি অনলাইন লিমিডেটের ব‌্যবস্থাপনা পরিচালক ও বরিশাল চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক এসএম জাকির হোসেন বলেন, হঠাৎ করে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় ইন্টারনেট সংশ্লিষ্ট কর্মজীবীদের পাশাপাশি ইন্টারনেট সরবারহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পরেছে। কারণ ব‌্যান্ডউইথ কিনে ব‌্যবহারকারী পর্যায়ে দিতে না পারায় আমরা নিট মুনাফা হারিয়েছি।

উল্লেখ‌্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে একটি গোষ্ঠি দেশে নাশকতার সৃষ্টি করার জন্য ইন্টারনেট সংযোগের লাইন বিচ্ছিন্ন করায় গত ১৮ জুলাই রাতে হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট পরিষেবা। এরপর ২৪ জুলাই মাঝরাতে বরিশাল বিভাগের জেলা শহরগুলোতে ব্রডব‌্যান্ড সার্ভিস পাওয়া শুরু হলেও ২৬ জুলাই দুপুর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ গতি পাচ্ছেনা ইন্টারনেট ব‌্যবহারকারীরা।

;

ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে নির্দেশনা, বন্ধ ফেসবুকের ক্যাশ সার্ভার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশজুড়ে ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে গুগলের ক্যাশ সার্ভার চালুর জন্য আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) অপারেটরদের নির্দেশ দিয়েছে বিটিআরসি। তবে, বন্ধ থাকবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও টিকটকের ক্যাশ সার্ভার।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দেওয়া নির্দেশনায় এসব তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বলা হয়েছে, ফেসবুক ও টিকটকের ক্যাশ সার্ভার বন্ধ থাকলেও ইউটিউব চলবে।

বিটিআরসির নির্দেশনার পরই ক্যাশ সার্ভার থেকে লোকাল ব্যান্ডউইথের জোগান বাড়ানো হয়। ফলে এখন থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে ইউটিউব ব্যবহার করা যাবে।

জানা গেছে, দেশের আইন ও সরকারের নির্দেশনা না মানায় বন্ধ থাকবে মেটার সামাজিক সাইট ফেসবুক। তবে যদি ফেসবুক সরকারের নির্দেশনা মানার নিশ্চয়তা দেয়, তখনই এটি চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ডেটা সেন্টারে আগুন লাগায় গত বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) রাতে ইন্টারনেটশূন্য হয়ে যায় পুরো দেশ।

;

৫ দিন পর দেশে চালু হলো ইন্টারনেট



ডেস্ক ,বার্তা২৪
৫ দিন পর দেশে ব্রড ব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা আবার চালু হয়েছে।

৫ দিন পর দেশে ব্রড ব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা আবার চালু হয়েছে।

  • Font increase
  • Font Decrease

৫ দিন পর দেশে ব্রড ব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা আবার চালু হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে চলমান পরিস্থিতির মধ্যে সারা দেশের ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ ছিল। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধের কারণ হিসেবে ডেটা সেন্টার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা বলেছে সরকার।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার পর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু করে দেয় সরকার। টানা ৫ দিন ইন্টারনেটের বাইরে ছিল দেশ। তবে ইন্টারনেট চালু হলেও স্লো কাজ করছে।

এর আগে সকালে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ব্যাংক খাত, বাণিজ্যিক এলাকা, মিডিয়া ও বন্দর এলাকায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ইন্টারনেট সেবা চালু করা হবে। সামাজিক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হতে কিছু সময় লাগবে।

সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) রাত ৯টা থেকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ হিসেবে তখন চলমান পরিস্থিতির কথা বলেছেন। শুক্রবার (১৯ জুলাই) তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, দুর্বৃত্তদের আগুনে মহাখালীতে অবস্থিত ডেটা সেন্টার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রয়েছে।

শনিবার (২০ জুলাই) বিকেলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান জানান, রাজধানীর মহাখালীতে দুস্কৃতকারীদের অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত ডেটা সেন্টার ও সঞ্চালন লাইন পুনঃসংযোগের কাজ চলছে; যা মেরামত করতে আরও সময় লাগবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) মহাখালীতে দুর্যোগ ভবনে আগুন দেওয়া হয়। এ ভবনের পাশেই থাকা তিনটি ভবনে আইআইজি প্রতিষ্ঠানগুলোর ডেটা সেন্টারসহ ইন্টারনেট সরবরাহকারী কিছু প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়। আগুনে এসব ভবনের বাহিরে থাকা কিছু কেবল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া আগুন যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, তাই ডেটা সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত কেবল কেটে ফেলা হয়।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, এ জায়গা থেকে সারা দেশের প্রায় ৩০ শতাংশ ইন্টারনেট সরবরাহ করা হয়। ফলে এখানে ডেটা সেন্টার বন্ধ থাকলে সারা দেশের ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকবে না।

এদিকে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি ইমদাদুল হক শনিবার (২০ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, মহাখালীতে ডেটা সেন্টারে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে কেবল ও বিভিন্ন সঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারা সেবাগুলো আবার চালু করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশ  অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি রাসেল টি আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় প্রতিদিন আইসিটি সেবা খাতে ক্ষতির পরিমাণ ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা। বিদেশ থেকে যেসব ফরমাশ আসে, সেখানে যোগাযোগে সমস্যা হচ্ছে। গ্রাহকেরা আস্থা হারাচ্ছেন। বাংলাদেশের বাজারের প্রতিও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এত দীর্ঘ সময় ইন্টারনেট সেবা না পাওয়ায় আইসিটি খাতে সুদূরপ্রসারী ধাক্কা আসবে।

;

স্মার্ট নাগরিক গড়তে দক্ষতা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই: তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক

ছবি: সংগৃহীত, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক

  • Font increase
  • Font Decrease

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, একটাই লক্ষ্য, হতে হবে দক্ষ। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হলেও প্রযুক্তির নিত্য নতুন উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির প্রয়োগ সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন করতে না পারলে ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের ইন্টেলিজেন্স যুগে হয়ত প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাজারে অপ্রয়োজনীয় হয়ে যেতে পারি।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) ঢাকায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের 'দীক্ষা-দক্ষতা উন্নয়নে শিক্ষা অনলাইনে' প্রকল্পের আওতায় নির্মিত কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের এই ইন্টেলিজেন্স যুগে প্রতিযোগিতার বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্বের আসনে আসীন করতে হলে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়ন করতে স্মার্ট নাগরিক গড়ে তুলতে আমাদের দক্ষতা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। স্মার্ট নাগরিক ও স্মার্ট সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে শুধুমাত্র শিক্ষাব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত হলেই হবে না; শিক্ষাব্যবস্থার বাইরে একটা নলেজ ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে হবে এবং আমাদের মনস্তাত্ত্বিক একটা পরিবর্তন আনতে হবে।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র সনদমুখী বা উচ্চশিক্ষামুখী না হয়ে এবং ঢাকা কিংবা বিদেশমুখী না হয়ে দক্ষতানির্ভর ও কর্মমুখী মানবসম্পদ হিসেবে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে তৈরি করতে হবে

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোনো বিলাসী পণ্য নয় উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী পলক বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা রোবটিকস এখন আর কোনো বিলাসী পণ্য নয়। রোবট এখন আমাদের নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় পণ্যে পরিণত হয়েছে। উন্নত বিশ্বে উৎপাদনমুখী কারখানায় শ্রমিকের পরিবর্তে রোবট ব্যবহৃত হচ্ছে। এমনকী তৈরি পোশাকখাতেও অনেক কাজে রোবট ব্যবহার করা হচ্ছে।

বাস্তবতা এটা দাঁড়িয়েছে যে, আমাদের গার্মেন্টস শ্রমিকদের যদি আমরা ‘আপস্কিলিং’ বা ‘রিস্কিলিং’ করে দক্ষতার উন্নয়ন করতে না পারি, তাহলে হয়ত কিছুদিন পর আমরা দেখবো রোবট এই শ্রমিক ভাইবোনদের যায়গা দখল করে নিয়েছে।

আমাদের মেন্টরিংয়ের ভূমিকা নিতে হবে উল্লেখ করে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্পের সফল বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সেজন্য আমাদের প্রথাগত শিক্ষাপদ্ধতির পরিবর্তনের পাশাপাশি আমাদের শিক্ষকদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

আমাদের শিক্ষকদের রোলটা শুধু শিক্ষকতা না হয়ে মেন্টরিংয়ের হতে হবে। কোনো শিক্ষার্থী কারিকুলামের বাইরে কিছু শিখতে চাইলে তাকে সঠিক প্ল্যাটফর্ম দেখিয়ে দিতে হবে। দীক্ষা ও মুক্তপাঠের মতো এমন অনেক প্ল্যাটফর্ম আছে, আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে যুক্ত করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের একটাই লক্ষ্য, হতে হবে দক্ষ। আগামীর ইন্টেলিজেন্স যুগে আমাদের সফল হতে হলে দক্ষতা উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। সেজন্য আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার বাইরে একটা ব্লেন্ডেড নলেজ ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে হবে।

;