রাজশাহীতে অনলাইনে জমেছে আমের ব্যবসা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
রাজশাহীতে অনলাইনে জমেছে আমের ব্যবসা

রাজশাহীতে অনলাইনে জমেছে আমের ব্যবসা

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহীতে আত্মীয়-স্বজন থাকলে দেশের অন্য স্থানের স্বজনরা আম পাঠানোর বায়না ধরেন। আবার না চাইলেও বাগান থেকে আম নামানোর পর রাজশাহীর বাসিন্দারা আত্মীয়-স্বজনদের কাছে আম পাঠান। কিন্তু রাজশাহীতে যাঁদের আত্মীয়-স্বজন নেই, তাঁদের জন্য অনলাইনই হয়ে উঠেছে ভরসা। অনলাইনে অর্ডার দিলেই কুরিয়ারের মাধ্যমে পৌঁছে যায় রাজশাহীর আম। কিছু আম যাচ্ছে ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনেও।

কৃষি বিভাগ বলছে, ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার পর থেকেই অনলাইনের মাধ্যমে রাজশাহীর আম বিক্রি শুরু হয়েছে। আমের মৌসুমে গত পাঁচবছর থেকে এটি সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। শিক্ষিত তরুণরাই মাস তিনেকের জন্য এই পেশা বেছে নেন। কেউ কেউ ওয়েবসাইট খুলে আবার কেউ শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার চালিয়েই আমের বাজার তৈরি করেছেন। চলতি মৌসুমে অন্তত ৫০০ জন ব্যক্তি অনলাইনে আমের অর্ডার নিচ্ছেন। সময়মত তাঁরা আমও পাঠাচ্ছেন। আমের মান কিংবা অন্য কোনভাবে ক্রেতারা প্রতারিত হয়েছেন বলে কোন অভিযোগ পায়নি কৃষি বিভাগ।

‘রাজশাহী এক্সপ্রেস’ নামের একটি ওয়েবসাইটে ঢুকলেই আম বিক্রির বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে। গোপালভোগ, হিমসাগর আর লক্ষণভোগ আমে ঠাসা ওয়েবসাইটটি। ফেসবুকেও দেখা যাচ্ছে অসংখ্য আম বিক্রির পেজ।

রাজশাহী মহানগরীর তেরোখাদিয়া এলাকার বাসিন্দা সারোয়ার হোসেনও একটি পেজ পরিচালনা করেন। তিনি জানান, দু’বছর ধরে তিনি আমের মৌসুমে অনলাইনের মাধ্যমে অর্ডার নিয়ে আম পাঠাচ্ছেন। চলতি মৌসুমে অন্তত ৫০ মণ আম পাঠিয়েছেন তিনি। সবচেয়ে বেশি পাঠিয়েছেন গোপালভোগ। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের নানা প্রান্তে গেছে এসব আম।

ব্যস্ত সময় পার করছে অনলাইনের আম ব্যবসায়ীরা

রাজশাহী মহানগরীর তালাইমারী এলাকার বাসিন্দা রাশেদুল ইসলাম (৩০) ‘অনলাইন ম্যাঙ্গো শপ’ নামে ফেসবুকে পেজ খুলেছেন। তাঁর ব্যস্ততা এখন চরমে। প্রতিনিয়ত আমের অর্ডার আসছে। বাগান থেকে আম সংগ্রহ, ক্যারেটে ভরা, কুরিয়ার সার্ভিসে পৌঁছে দেয়াসহ সকল কাজই করছেন নিজে উপস্থিত থেকে। একের পর এক অর্ডার নিতে সব সময় কাছেই থাকছে ল্যাপটপ। বাগান মালিক আম নামান, রাশেদুল বাগানে বসেই ক্রেতাদের আম পাড়ার ছবি দেখান। ল্যাপটপে চোখ রেখে অর্ডার নেন। ২০১২ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করা রাশেদুলের কাছে ক্রেতার সন্তুষ্টির মাধ্যমে নিজের সুনাম অর্জনটাই বড় কথা।

রাশেদুল জানান, এবার জেলা প্রশাসন গোপালভোগ আম নামানোর তারিখ নির্ধারণ করে দেয় ২০ মে। কিন্তু তাঁর পর্যবেক্ষণ- তখনও গোপালভোগ গাছে পরিপক্ক হয়নি। তাই তিনি অর্ডার নিলেও একটি আমও পাঠাননি। যাঁরা আম নেয়ার জন্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠান, সবাইকেই ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের একটি গ্রুপে যুক্ত করেন। গাছের পরিপক্ক আম পেতে অপেক্ষা করতে বলেন। রাশেদুল গত ১ জুন প্রথম ক্রেতাদের কাছে গোপালভোগ আম পাঠান।

রাশেদুল বলেন, ‘যাঁরা নতুন নতুন এ ব্যবসায় আসছেন তাঁরা কোনকিছু না বুঝেই আম পাঠাচ্ছেন। অনেক সময় অপরিপক্ক আম পাঠাচ্ছেন। ক্রেতার কাছে পৌঁছানোর পরই আমে পচন ধরছে। এতে দুর্নাম হচ্ছে। তাই আমি গাছে পাকা আমই পাঠাচ্ছি। এ জন্য অপেক্ষা করেছি। আর ক্রেতারাও বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। তাঁরা ভাল আম পেয়েছেন। তাঁরা আগামী বছরও আমার কাছ থেকে আম নেবেন। এটাই আমার প্রাপ্তি।’

তিনি বলেন, ‘আমি কিছুটা দেরি করেই আম নেব। শুরুতে বাজারে যে দাম থাকবে, তার চেয়ে মণপ্রতি ২০০ টাকা বেশিই দেব। কিন্তু পরিপক্ক আম নামিয়ে পাঠাবো। বাগান মালিকেরাও এতে আপত্তি করেননি। ফলে আমি ভাল আম পাঠাতে পারছি।’

সাংবাদিকতায় পড়াশোনা শেষ করে রাশেদুল গত সাত বছর বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। কিন্তু চাকরির পাশাপাশি প্রতিবছর আমের মৌসুমে অনলাইনে অর্ডার নিয়ে আম পাঠাতেন। গতবছর এক চালানেই তিনি ৩ হাজার ৬০০ কেজি আম পাঠান। কিন্তু শ্রমিকেরা ভুল ভাবে প্যাকেজিং করেছিলেন বলে ১ হাজার ৩৬০ কেজি আম নষ্ট হয়ে যায়। এবার আমের ব্যবসা ভালোভাবে করতে গত এপ্রিলে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। সর্বশেষ তিনি একটি মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন।

রাশেদুল বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি আমাকে বলল যে কোন একদিক করতে হবে। আমি ব্যবসাটাকেই বেছে নিলাম। কারণ, আমি উদ্যোক্তা হতে চাই। খুব ভাল সাড়াও পেয়েছি। আর কয়দিন পর প্রতিদিন আমি অন্তত দুই টন করে আম পাঠাব। এখন সব আম পাঠাচ্ছি ইউএসবি এক্সপ্রেস কুরিয়ার ও পার্সেল সার্ভিসের মাধ্যমে। ইউএসবি কম খরচে একদিনেই ঢাকায় আম পৌঁছে দিচ্ছে।’

এদিকে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বলিহার গ্রামের সৌমেন মণ্ডল অনলাইনে বড় একটি বাজার তৈরি করেছেন টানা ১০ বছরের পরিশ্রমে। অনলাইনে তাঁর ফেসবুক পেজের নাম ‘অনিমা আম বাজার’। সৌমেনের ক্রেতাদের অধিকাংশই বিভিন্ন ব্যাংকে কর্মরত কর্মকর্তা। প্রতিবছরই তাঁর ক্রেতার সংখ্যা বাড়ছে।

সৌমেন জানান, প্রথম কয়েকবছর তিনি গাছে আম আসার পরই ঢাকায় গিয়েছেন। বিভিন্ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়গুলোতে গিয়ে জানিয়ে এসেছেন, অর্ডার দিলেই তিনি নিজের বাগানের আম পাঠাবেন। তখন দিয়ে আসেন তাঁর কার্ড। এরপর থেকে তাঁর আমের অর্ডার আসতে থাকে। একজনের কাছে জেনে এখন আরও অনেকে মানুষ সৌমেনের মোবাইল নম্বর নেন। আমের অর্ডার দেন।

সৌমেন আরও জানান, তাঁদের আট বিঘার আমবাগান আছে। ক্রেতাদের কাছে মোবাইল নম্বর আছে বলে গাছে মুকুল আসার পরই তাঁরা হটসঅ্যাপে ভিডিও কল দেন। গাছে কেমন মুকুল এসেছে তা দেখেন। আমে গুটি ধরা থেকে শুরু করে বড় হওয়া পর্যন্ত মাঝে মাঝেই তাঁরা দেখেন। আমে কোন কীটনাশক স্প্রে করা হচ্ছে কিনা, দিলে সেটা কোন পর্যায়ে সবই তাঁরা খোঁজ নেন। তাঁরা নিশ্চিত হন, এই আম নিরাপদ। তারপর যখন আম নামানোর সময় হয় সৌমেন এসএমএস দিয়ে জানিয়ে দেন। তারপরই অর্ডার আসতে থাকে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে চলে আসে আগাম টাকাও।

তিনি বলেন, অনলাইনে আমের ব্যবসার জন্য প্রয়োজন সততার মাধ্যমে ক্রেতার আস্থা অর্জন। টানা ১০ বছরের পরিশ্রমে তিনি সেটি অর্জন করেছেন। এখন ব্যবসা ভাল চলছে। চলতি মৌসুমে তিনি ১২০ ক্যারেট আম পাঠিয়েছেন। প্রতি ক্যারেটে ছিল ২০ কেজি আম। গোপালভোগ আমের দাম মণপ্রতি ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা। তিনি ইউএসবি এক্সপ্রেস পার্সেল ও কুরিয়ার সার্ভিস এবং জননী কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আম পাঠান। মণপ্রতি আম পাঠানোর খরচ ৪০০ টাকা। এই খরচও ক্রেতাদের। অনলাইনে আম পাঠালে মণপ্রতি তাঁর ২০০ টাকা বেশি লাভ থাকে।

রাজশাহী জেলা কৃষি কর্মকর্তা কে জে এম আবদুল আউয়াল জানান, জেলায় এ বছর ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমিতে আমবাগান আছে। এ বছর হেক্টর প্রতি ১১ দশমিক ৯ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আছে। আমের উৎপাদনও ভাল হয়েছে। এ পর্যন্ত নানা জাতের গুটি ছাড়াও খিরসাপাত বা হিমসাগর, গোপালভোগ ও লক্ষণভোগ বা লখনা আম উঠেছে। আরও কিছু আম উঠতে বাকি।

তিনি বলেন, করোনাকালেও দূর-দূরান্তে আম পাঠানোর জন্য গাড়ি চলছে। কিন্তু খুচরা বাজারে করোনার প্রভাব আছে। অনেকে হাটে-বাজারে এখন যেতে চাচ্ছেন না। সেক্ষেত্রে অনলাইনের মাধ্যমে অর্ডার নিয়ে রাজশাহী থেকে কুরিয়ারের মাধ্যমে আম পাঠানোটা একটা ভালো দিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে আম পাঠানোর সুযোগ হওয়ায় ভাল হয়েছে।

   

২০২৪ সাল

ব্যবসায়িক সাফল্য দিয়ে প্রথম প্রান্তিক শুরু গ্রামীণফোনের



ইশতিয়াক হোসেন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে গ্রামীণফোন (জিপি) লিমিটেড ৩,৯৩২.৯ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫.৩ শতাংশ বেশি।

প্রথম তিন মাসে ১০ লাখ নতুন গ্রাহক নিয়ে প্রথম প্রান্তিকের শেষে গ্রামীণফোনের মোট গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৩০ লাখ। গ্রামীণফোনের মোট গ্রাহকের ৫৫.৮ শতাংশ অথবা ৪ কোটি ৬৩ লাখ গ্রাহক ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করছেন।

গ্রামীণফোনের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) ইয়াসির আজমান বলেন, ‘সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও আমরা আমাদের কর্মকৌশলে অটুট থেকে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছি। এছাড়াও অংশীদারিত্বগুলোকে দৃঢ় করার পাশাপাশি, আমাদের কার্যক্রমকে আরো সুসংহত করেছি। এই সব কিছুই আজকের এই সাফল্যে অবদান রেখেছে। টেলকো থেকে টেলকো-টেক কোম্পানিতে রূপান্তরের লক্ষ্যে ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তোলা উচিত। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা নিরলসভাবে ডিজিটাল সম্পদ তৈরি ও ডিজিটাল প্লেয়ারদের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্বের মাধ্যমে কাজ করছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আমরা সিলেটে আমাদের প্রথম টিয়ার থ্রি স্ট্যান্ডার্ড ডেটা সেন্টার উদ্বোধন করেছি, যা একটি প্রযুক্তিগত বিস্ময় হিসেবে নেটওয়ার্কে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এছাড়াও অনন্য হোম ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে আমরা ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড সলিউশন ‘জিপিফাই’ চালু করেছি, যা নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ এবং ডিজিটাল বিনোদন উপভোগ করতে চান, এমন পরিবারের জন্য একটি সামগ্রিক সল্যুশন।

টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যগুলো অর্জনের বিশ্বাস আমরা শুধু নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখিনি, আমরা কৌশলগতভাবে এমন সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করছি, যারা আমাদের মূল্যবোধ এবং পরিবেশ, সমাজ ও সুশাসন (ইএসজি) উদ্যোগগুলোকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করে।’

গ্রামীণফোনের চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) অটো রিসব্যাক বলেন, ‘২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে আমাদের ক্রমাগত ব্যবসায়িক অগ্রগতিতে আমরা সন্তুষ্ট। প্রথম প্রান্তিকের ফলাফলে আমাদের ইতিবাচক আর্থিক প্রবৃদ্ধির প্রতিফলন হয়েছে। এই নিয়ে টানা ১২ প্রান্তিকে লক্ষ্যণীয় আর্থিক অগ্রগতি এবং ইবিআইটিডিএ-এর ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে গ্রামীণফোন। ভালো কর্মপরিকল্পনা এবং কঠোর আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখায় প্রথম প্রান্তিকে সাবস্ক্রিপশন ও ট্রাফিক রেভিনিউ হার ৫.২ শতাংশ এবং ইবিআইটিডিএ মার্জিন ৬০.৮ শতাংশে পৌঁছেছে।

আমাদের শক্তিশালী ব্যালেন্স শিট ও ক্যাশফ্লো’র কল্যাণে প্রবৃদ্ধি বজায় রাখা এবং উদ্ভাবনে বিনিয়োগ অব্যহত রাখা সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি তৈরি হয়েছে, একটি আকর্ষণীয় লভ্যাংশ ঘোষণার ভিত্তি।’

মূলত ফোরজি নেটওয়ার্ক স্থাপন এবং ফাইবার সংযোগ সম্প্রসারণের পাশাপাশি ২,৬০০ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম প্রসারণে ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে গ্রামীণফোন (লাইসেন্স, ইজারা ও এআরও ব্যতিত) ৭১৭.৩ কোটি টাকার মূলধনী বিনিয়োগ করেছে।

নতুন কভারেজ সাইটসহ গত তিন মাসে ৫০০-এর বেশি নতুন ফোরজি সাইট চালু করেছে গ্রামীণফোন। ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিক শেষে গ্রামীণফোনের মোট ফোরজি সাইটের সংখ্যা ২১,৭০০ এর বেশি, যার মাধ্যমে ৯৭.৯ শতাংশ গ্রাহক ফোরজি সেবার আওতায় এসেছেন।

;

বেসিস নির্বাচন

‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ২০৪১ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতি চাই’



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

টিম সাকসেসের পক্ষে ফ্লোরা টেলিকমের মোস্তাফা রফিকুল ইসলাম ডিউক বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ২০৪১ সাল পর্যন্ত আমরা সরকারের কাছ থেকে এই ট্যাক্স এক্সেমশন আদায় করতে চাই। টিম সাকসেসের দৃঢ় বিশ্বাস, তথ্যপ্রযুক্তির মেধা আর চাহিদা সমন্বয় করতে এই ট্যাক্স এক্সেমশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে থাকবে।

সম্প্রতি কাকরাইলে আইডিইবি মিলনায়তনে নির্বাহী কমিটির ১১ পদে ৩৩ প্রার্থীর পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

দেশের সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা খাতের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) ২০২৪-২৬ মেয়াদের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে তিন প্যানেলে ৩৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

অনুষ্ঠানে টিম সাকসেসের পক্ষে ফ্লোরা টেলিকমের মোস্তাফা রফিকুল ইসলাম ডিউক বলেন, আমাদের একটি বড় লক্ষ্য বেসিসের জন্য স্থায়ী ঠিকানা গড়ে তোলা। এর জন্য প্রয়োজন একটি স্থায়ী জমি, তার উপর নির্মাণ করা হবে বেসিসের নিজস্ব ভবন। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কারার জন্য আমরা ঢাকা সিটি মেয়র এবং রাজউক কর্তৃপক্ষকে সাথে রেখে নিষ্ঠার সাথে এই সাফল্য অর্জন করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, সদস্যদের সবচেয়ে জরুরি দাবি কর অব্যাহতির সময় বাড়াতে কাজ করতে চাই। বর্তমানে ২০২৪ সালের জুন মাসে এই মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।

অনুষ্ঠানে টিম সাকসেসের অন্য প্রার্থীরা তাদের পরিচিতি দিয়ে বক্তব্য রাখেন। এর মধ্যে সাধারণ সদস্য তৌফিকুল করিম, মোহাম্মদ আমিনুল্লাহ, মো. সহিবুর রহমান খান, ফারজানা কবির, মো. শফিউল আলম, ইমরান হোসেন, সৈয়দা নাফিসা রেজা এবং এন এম রাফসান জানি (সহযোগী), আবদুল আজিজ (অ্যাফিলিয়েট) ও আবু মুহাম্মদ রাশেদ মজিদ (আন্তর্জাতিক)।

প্রার্থী পরিচিতি সভা পরিচালনা করেন বেসিসের নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান টি আই এম নুরুল কবির। তার সঙ্গে ছিলেন নির্বাচন বোর্ডের অপর দুই সদস্য সৈয়দ মামনুর কাদের ও নাজিম ফারহান চৌধুরী। নির্বাচনের আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান এ তৌহিদ এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

বেসিসের মোট সদস্যসংখ্যা ২ হাজার ৪০১। তবে এবারের নির্বাচনে ভোটার হয়েছেন ১ হাজার ৪৬৪ জন। তাদের মধ্যে সাধারণ ৯৩২, সহযোগী ৩৮৯, অ্যাফিলিয়েট ১৩৪ ও আন্তর্জাতিক সদস্য শ্রেণিতে ভোটার ৯ জন।

;

এক মাসেও ঠিক হচ্ছে না দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল



ইশতিয়াক হুসাইন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কাটা পড়ায় দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল (সিমিউই-৫) থেকে ব্যান্ডউইথ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এর ফলে দেশে ইন্টারনেট সমস্যার এখনো কোনো সমাধান হয়নি। ইন্টারনেটের ধীরগতির কারণে গ্রাহকেরা এবার দীর্ঘ দুর্ভোগে পড়েছেন।

ক্যাবল মেরামত না হওয়ায় সহসাই এই সমস্যার সমাধান মিলছে না। রাষ্ট্রায়ত্ব বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড সূত্রে জানা গেছে, মূলত গত শুক্রবার দিবাগত রাতে ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্র এলাকায় সিমিউই-৫ ক্যাবলটি কাটা পড়ায় দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল থেকে ব্যান্ডউইথ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

সাবমেরিন ক্যাবলের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ইন্দোনেশিয়ার সাগর অংশে প্রবেশের অনুমতি এখনো পাওয়া যায়নি। অনুমতি পেতে তিন থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। এরপর কাটা ক্যাবল মেরামত করতে আরও ৮ থেকে ১০ দিন সময় লেগে যেতে পারে। সব মিলিয়ে এক মাসেও দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল থেকে ব্যান্ডউইথ পুরোপুরি সরবরাহ করা সম্ভব হবে না।

তবে বিকল্প উপায়ে তারা দেশব্যাপী ইন্টারনেট সেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন। এখন পর্যন্ত তারা যে পরিমাণ ব্যান্ডউইথ সরবরাহের চাহিদা পেয়েছেন প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল থেকে আগামী ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে ৪০ শতাংশ পূরণ করতে পারবেন বলে আশা করছেন।

বর্তমানে সিমিউই-৫ দিয়ে দেশে ১ হাজার ৬০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করা হয়। এই সরবরাহের পুরোটা বন্ধ রয়েছে। সিমিউই-৪ দিয়ে (প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল) বিকল্প উপায়ে ইন্টারনেট সচল এখনো করা যায়নি। এজন্য কাজ করছে সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি। তারা বলছে, ২ থেকে ৩ দিন সময় লাগবে। এই সময়কালে তারা চাহিদার মাত্র ৪০ শতাংশ ইন্টারনেট সচল করতে পারবেন।

বর্তমানে দেশে সাড়ে ৫ হাজার ব্যান্ডউইথের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি আড়াই হাজারের বেশি ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করে। বাকি চাহিদা মিটিয়ে থাকে ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল ক্যাবল (আইটিসি)।

;

ডেটায় সর্বোচ্চ শতাংশ ফোরজি গ্রাহক নিয়ে শীর্ষে রবি



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জ ও তীব্র প্রতিযোগিতা থাকার পরেও ডেটা সেবা থেকে আয়ের উপর নির্ভর করে সামগ্রিক আয়ের প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে রবি। মোট ডেটা গ্রাহকের বিচারে এই খাতে সর্বোচ্চ শতাংশ ফোরজি গ্রাহক নিয়ে রবি ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল অর্থনীতিতে তার অবস্থান সুদৃঢ় করেছে।

নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করতে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে নতুন ৫৭৭টি ফোরজি সাইট যুক্ত করেছে রবি। পরিষেবার মান উন্নত করার জন্য এই ধরনের উদ্যোগের ফলে রবি'র ৮১ শতাংশের বেশি ডেটা গ্রাহক এখন ফোরজি ব্যবহারকারী, যা এই খাতে সর্বোচ্চ। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ, ২০২৪) প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে এমন চিত্রই উঠে এসেছে।

বছরের প্রথম প্রান্তিকে রবির আয় হয়েছে ২ হাজার ৫১৬ দশমিক ২ কোটি টাকা। যা আগের বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ৭ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। একই সময়ের ব্যবধানে ডেটা থেকে আয় বেড়েছে ২৫ দশমিক ৭ শতাংশ।

রবি'র আর্নিংস বিফোর ইন্টারেস্ট, ট্যাক্স, ডেপ্রিসিয়েশন এবং এমোর্টাইজেশন (ইবিআইটিডিএ) গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেড়ে ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ মার্জিনসহ ১ হাজার ২২০ দশমিক ২ কোটি টাকা হয়েছে। ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে কর-পরবর্তী মুনাফা (পিএটি) ছিল ১০৬ দশমিক ৭ কোটি টাকা, আর কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল শূন্য দশমিক ২ টাকা।

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে রবির গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৮১ লাখে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪ কোটি ৩৬ লাখ। ফোরজি ব্যবহারকারী গ্রাহকের সংখ্যা ৩ কোটি ৫৫ লাখ। রবির গ্রাহকদের ৭৫ শতাংশেরও বেশি ডেটা ব্যবহার করেন যা এই খাতে সর্বোচ্চ।

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে এক হাজার ৬০৫ দশমিক ৫ কোটি টাকা, যা ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে রবির অর্জিত আয়ের ৬৩ দশমিক ৮ শতাংশ। এ সময়ে ৩৬৬ দশমিক ২ কোটি টাকা মূলধনী বিনিয়োগ করেছে কোম্পানিটি।

রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও রাজীব শেঠি বলেন, ‍আমরা দেখতে পাচ্ছি সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং মূল্যস্ফীতির প্রভাব আমাদের গ্রাহকদের মোবাইল ব্যবহারের ওপর পড়ছে। একইসাথে লক্ষণীয় যে, স্মার্টফোন ডিভাইসের ব্যবহারের প্রসার অনেকাংশে থমকে গেছে।

উল্লেখ্য, পার্শ্ববর্তী অন্যান্য দেশের তুলনায় ডেটা ব্যবহার বাড়ানোর অনেক সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশের। তবে এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হলে অতি সত্বর স্মার্টফোন ব্যবহারের প্রসার বাড়াতে সরকার থেকে নীতি সহায়তা প্রয়োজন।

গুণগত মান নিশ্চিত করে সেবা দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে রাজীব শেঠি বলেন, গ্রাহকের অভিজ্ঞতা দিয়েই বলা যায়, আমাদের নেওয়া উদ্যোগের মাধ্যমে নেটওয়ার্কে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে, যার জন্য আমি গর্বিত। গত এক বছরে গড় ডেটা স্পিড শতভাগেরও বেশি বেড়েছে। সারাদেশে কভারেজ ও নেটওয়ার্কের সর্বত্র ধারাবাহিক স্পিড নিশ্চিত করার মাধ্যমে এ উন্নতি অর্জন করা হয়েছে। কল ড্রপের হার একইভাবে গত এক বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। আমরা নিশ্চিত যে পরিষেবার গুণমান বৃদ্ধির উপর চলমান উদ্যোগ গ্রাহকের আস্থা অর্জনে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।

;