বেশ কিছুদিন ধরেই শরীরটা ভালো যাচ্ছিল না তার। নিজ বাড়িতেই কাটছিল পুরোটা সময়। করোনা সংক্রমণ কমলে বাইরের দুনিয়াটা ফের দেখার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু সেই দিন আর আসল না। চলে গেলেন এক সময়ের তারকা বাঁহাতি স্পিনার রামচাঁদ গোয়ালা।
১৯ জুন, শুক্রবার ভোরে ময়মনসিংহের ব্রাহ্মপল্লির নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি। ৭৯ বছর বয়সে শেষ হলো তার জীবনের অধ্যায়।
ঢাকার ঘরোয়া ক্রিকেটে দীর্ঘদিন দাপটে খেলা এই ক্রিকেটারের মৃত্যুতে শোকাহত ক্রীড়াঙ্গন। এরইমধ্যে শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এক শোক বার্তায় তারা লিখেছে, ‘রামচাঁদ গোয়ালা যখন প্রথম বাংলাদেশ জাতীয় দলে ডাক পান, তখন তার বয়স ৪০ বছর পেরিয়ে গিয়েছিল। তিনি ৫৩ বছর বয়সেও ক্লাবের হয়ে খেলছিলেন। তিনি ফিটনেস এবং ক্রিকেটের প্রতি আবেগের একটি উদাহরণ ছিলেন। সেই সঙ্গে ছিলেন কর্তব্যপরায়ণ। এখনকার ক্রিকেটারদের উচিত তার পদাঙ্ক অনুসরণ করা’।
গোয়ালার ক্যারিয়ারের উজ্জ্বল দিক উল্লেখ করে বিসিবি আরও জানায়, ‘১৯৬০ সালের দিকে ঢাকা লিগে অভিষেক গোয়ালার। এরপর ৫৩ বছর বয়স পর্যন্ত খেলে যান এই ক্রিকেটার। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৫ বছর আবাহনীর হয়ে খেলেছেন তিনি। এছাড়াও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবসহ অন্যান্য ক্লাবের হয়েও খেলেন গোয়ালা। ১৯৮৩-৮৪ সালের দিকে তিনি ওয়েস্ট বেঙ্গলের বিপক্ষে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৯৮৫ সালে জাতীয় দলের সঙ্গে শ্রীলঙ্কা সফরেও গিয়েছিলেন গোয়ালা’।
একইসঙ্গে শোকাহত অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। যিনি নিজে এক সময় ছিলেন বিসিবি'র প্রধান। রামচাঁদ গোয়ালার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন তিনি। অর্থমন্ত্রী এক শোক বার্তায় বলেন, 'দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে রামচাঁদ গোয়ালার নাম স্মরণীয় বরণীয় হয়ে থাকবে।
অর্থমন্ত্রী, রামচাঁদ গোয়ালার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন।
গোয়ালা ১৯৪০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। ময়মনসিংহের পন্ডিতপাড়া ক্লাবের হয়ে শুরু হয় তার পেশাদার ক্যারিয়ার। এরপর একটানা খেলে গেছেন ঢাকার ক্রিকেটে। যদিও বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেটের স্বীকৃতি পাওয়ার আগেই তার বয়স পেরিয়ে যায় ৪৫। লাল-সবুজের জার্সিতে অবশ্য আন্তর্জাতিক ম্যাচে মাঠে নামা হয়নি তার।