মার্করাম নৈপুণ্যের পর প্রোটিয়াদের নাটকীয় জয়
প্রোটিয়াদের জয়রথ চলছেই। আসরের নিজেদের চার ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে বিশাল লক্ষ্য দাঁড় করিয়ে সহজ জয় তুলে নেয় তারা। ব্যতিক্রম ঘটেছিল এক ম্যাচেই যেখানে তারা করেছে পরে ব্যাটিং এবং তাতেই ঘটে অঘটন। ডাচদের বিপক্ষে সেই ম্যাচে হেরেছিল টেম্বা বাভুমার দল। তবে এবার সেই জুজু কাঁটাল দক্ষিণ আফ্রিকা। এইডেন মার্করামের দুর্দান্ত ৯১ রানের ইনিংসের পর টেল-এন্ডারদের বুদ্ধিদিপ্ত ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১ উইকেটের জয় পেল তারা।
এর আগে চেন্নাইয়ে টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। ম্যাচে একাধিকবার চাপে পড়েও অধিনায়ক বাবর আজম ও সৌদ শাকিল ফিফটিতে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ২৭০ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় পাকিস্তান।
সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকেন দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও টেম্বা বাভুমা। দ্বিতীয় ওভারে শাহিন শাহ আফ্রিদিকে পরপর চার বলে চারটি চার মারেন ডি কক। যদিও আফ্রিদির পরেই ওভারেই ফেরেন এই ওপেনার (২৪)।
রাসসি ফন ডার ডুসেনকে নিয়ে শুরুর সেই ধাক্কা সামলে এগোতে থাকেন অসুস্থতা কাটিয়ে একাদশে ফেরা প্রোটিয়াদের নিয়মিত অধিনায়ক বাভুমা। দলীয় ৬৭ রানের মাথায় তাকে ফেরান পেসার মোহাম্মদ ওয়াসিম। এরপর ডুসেনকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন ওয়ানডে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় দ্রুততম শতকের মালিক এইডেন মার্করাম। তবে থিতু হতে পারেননি ডুসেন। উসামা মিরের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন ফেরেন টপ-অর্ডারের এই ব্যাটার।
এদিন জ্বলে উঠেননি টুর্নামেন্টে দারুণ ছন্দে থাকা হেনরিখ ক্লাসেন। দলীয় ১৩৬ রানের মাথায় ফেরেন ওয়াসিমের দ্বিতীয় শিকার হয়ে। তবে অপর প্রান্তে থাকা মার্করাম এগোতে থাকেন দারুণ নৈপুণ্যের সঙ্গে। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে থাকেন বাঁহাতি ব্যাটার ডেভিড মিলার। ব্যক্তিগত ২৯ রানে ফিরলে ভাঙে তাদের ৭০ রানের জুটি।
বাকি পথ অনেকটা একাই লড়েছেন মার্করাম। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত না থাকলেও তার ৯৩ বলে ৯১ রানের দুর্দান্ত ইনিংসটিই গড়ে দেয় জয়ের ভিত। পরে টেল এন্ডারদের বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিংয়ে ১৬ বল হাতে রেখে ১ উইকেটের নাটকীয় জয় পায় আফ্রিকান দলটি। আফ্রিদি নেন তিন উইকেট। হারিস রউফ, ওয়াসিম ও উসামা নেন দুটি করে উইকেট।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা যথার্থ হয়নি পাকিস্তানের। দ্রুতই দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দলটি। দলীয় ২০ রানের মাথায় মার্কো ইয়ানসেনের বলে বড় শট খেলতে গিয়ে লুঙ্গি এঙ্গিদির হাতে ধরা পড়েন আবদুল্লাহ শফিক। নিজের পরের ওভারেই আরেক ওপেনার ইমাম-উল-হককেও ফেরান ইয়ানসেন।
দলীয় ৩৮ রানের ২ উইকেট হারানোর পর উইকেটরক্ষক ব্যাটার রিজওয়ান আহমেদ নিয়ে দেখেশুনে খেলতে থাকেন অধিনায়ক বাবর। রানও আসছিল দ্রুত। তবে এবার সেখানে বাধা দেন জেরাল্ড কুটসিয়া। দলীয় ৮৬ রানের মাথায় ফেরান উইকেটরক্ষক ব্যাটার রিজওয়ানকে।
তবে উইকেট বাঁচিয়ে এগোতে থাকেন বাবর। তবে তাকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি ইফতিখার (২১)। দলীয় ১২৯ রানের মাথায় ফেরেন তাবব্রিজ শামসির বলে। ফিফটি তুলে নিয়ে শামসির পরের ওভারে ফেরেন বাবরও। স্কোরবোর্ডে তখন ৫ উইকেটে ১৪১ রান। শঙ্কা জাগে অল্পেই গুটিয়ে যাবে দল। তবে সৌদ শাকিলকে নিয়ে সেবারের চাপ সামাল দেন শাদাব। গড়েন ৮৪ রানের সময় উপযোগী এক জুটি।
দলীয় ২২৫ রানের মাথায় কুটসিয়ার দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন শাদাব। ৩৬ বলে ৪৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ এক ইনিংস খেলেন এই অলরাউন্ডার। ফিফটি তুলে নিয়ে ব্যক্তিগত ৫২ রানে ফেরেন শাকিলও। বাকি ব্যাটাররা ছিলেন যাওয়া-আসার মধ্যেই। শেষ পর্যন্ত ৪৬ ওভার ৪ বলে ২৭০ রানে থামে পাকিস্তান।
শামসি নেন চারটি উইকেট। ইয়ানসেন নেন তিন উইকেট ও কুটসিয়া নেন দুটি।