বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির লক্ষ্যে ছাত্রলীগের কর্মসূচি



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উপযোগী আধুনিক, স্মার্ট ও পলিসি নির্ভর নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সংগঠনটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ সময় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানসহ উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মহানগরী ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

কর্মসূচিগুলো হলো-

>> ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বীর আবাসিক হল ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বুয়েট শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি।

>> আধুনিক, স্মার্ট, পলিসি নির্ভর নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি প্রতিষ্ঠার কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণে বুয়েট শিক্ষার্থীদের সাথে মতামত আহ্বান ও আলোচনা।

>> সাম্প্রদায়িক-মৌলবাদী-জঙ্গি কালোছায়া থেকে বুয়েটকে মুক্ত করতে সেমিনার ও সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজন।

>> বুয়েটে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে প্রশাসনের সাথে আলোচনা।

সংবাদ সম্মেলনে সাদ্দাম হোসেন বলেন, তুচ্ছ কারণে গত ২৯ মার্চ ছাত্র রাজনীতি বন্ধের নামে স্বৈরাচারী কায়দায় বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বীর আবাসিক হলের সিট বাতিল করা হয় এবং তাকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি উত্থাপন করা হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের আড়ালে পরিচয় গোপন করে রাখা নিষিদ্ধ ও আন্ডারগ্রাউন্ড সংগঠনের কর্মীদের এই অহেতুক দাবি বুয়েট প্রশাসন অবিবেচকের মতো মেনে নিলে প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে দেশের ছাত্রসমাজ ও রাজনীতি সচেতন গণতন্ত্রকামী মানুষ। এমন পরিস্থিতে ছাত্রলীগ বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের অবৈধ আদেশ হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করলে আদালত তা বাতিল করে দেয়। ফলে বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি পরিচালনা করতে আর কোনো বাধা নেই।

তিনি বলেন, ছাত্রলীগ বুয়েটের শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানাচ্ছে। বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসে আজকের দিনটি একটি ঐতিহাসিক দিন। বর্তমানে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি পুনরায় শুরু হবে। কিন্তু সেটি কোনো ছাত্র রাজনীতি তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। এই রাজনীতি অবশ্যই ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ, সেশনজট, র‍্যাগিং-বুলিং, দখল-বাণিজ্য, হত্যা-সন্ত্রাসের ছাত্র রাজনীতি নয়। এই ছাত্র রাজনীতি হবে আধুনিক, যুগোপযোগী, বৈচিত্র্যময়-সৃষ্টিশীল, জ্ঞান-যুক্তি-তথ্য-তত্ত্বনির্ভর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের রেখে যাওয়া যে বাংলাদেশকে সবাইকে মিলে পিছিয়ে দিয়েছিল,দারিদ্র্যের অন্ধকারে গত ১৫ বছরে তা আবার আলোর পথে, উন্নয়ন-অগ্রগতির পথে ফিরিয়ে এনেছেন দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। শেখ হাসিনার পরিকল্পিত উন্নত-আধুনিক বাংলাদেশে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সর্বোপরি আমাদের সামগ্রিক ছাত্র রাজনীতি কোনোভাবেই পশ্চাৎপদ ধারায় পরিচালিত হতে পারে না এবং আধুনিক নিয়মতান্ত্রিক ধারার ছাত্র রাজনীতির সূচনা যে দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বুয়েট থেকেই শুরু হতে যাচ্ছে, বুয়েটের শিক্ষার্থীরাই যে সমগ্র ছাত্র রাজনীতিকে বদলে যাবার পথ দেখাতে যাচ্ছে, আজ সেই শুভ উপলক্ষ্যের উদ্বোধন।

তিনি আরও বলেন, উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে এবং বিশ্বের সর্বোচ্চ র‍্যাংকিংধারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র রাজনীতি কীভাবে পরিচালনা হয়, তা থেকে জ্ঞান নিয়ে, নিজেদের চর্চায় সেটি নিয়ে বুয়েট আমাদের ছাত্র রাজনীতিকে পথ নির্দেশ করবে। মহাকাশে কীভাবে অভিযান পরিচালনা করা যায়, রোবোটিকসের মাধ্যমে কীভাবে শিল্পবিপ্লব জয় করা যায়, নিজ দেশের উচ্চ প্রশিক্ষিত ইঞ্জিনিয়ারদের মাধ্যমে কীভাবে পদ্মাসেতুর মতো বড় বড় সেতু নির্মাণ করা যায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা করা যায়, আধুনিক যন্ত্রপাতি উদ্ভাবনের মাধ্যমে কীভাবে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়, দেশের জ্বালানি নিরাপত্তায় ভূভাগ ও সমুদ্রে কীভাবে অনুসন্ধান করা যায়, দেশের আমদানি কমিয়ে কীভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি করা যায়, কোন পদ্ধতিতে দেশের উৎপাদন বৃদ্ধি করে বেকারত্বকে চিরতরে ঘুচিয়ে দেওয়া যায়, এসব বিষয় নিয়ে কাজ করবেন আগামী দিনের বুয়েটে ছাত্র রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থীরা।

বুয়েটের শিক্ষার্থীরাই তাদের নেতৃত্ব নির্বাচন করবে জানিয়ে সাদ্দাম বলেন, প্রথাগত ছাত্র রাজনীতিতে কেন্দ্র থেকে চাপিয়ে দেওয়া নেতৃত্বের মাধ্যমে বুয়েট শিক্ষার্থীরা পরিচালিত হবে না। বুয়েটের শিক্ষার্থীরা নিজেরাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। যে নেতৃত্ব হবে আদর্শিক, দেশাত্মবোধসম্পন্ন এবং যে নেতৃত্ব বুয়েটের শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকেই তৈরি করবে বিশ্বসেরা উদ্ভাবক, উদ্যোক্তা।

ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের যে সিদ্ধান্ত অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে গ্রহণ করা হয়েছিল, বাংলার ছাত্র সমাজের পক্ষে ছাত্রলীগ আইনগত ও নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তা আবার ফিরিয়ে এনেছে। বুয়েট শিক্ষার্থীদের লুণ্ঠিত হওয়া মৌলিক অধিকার ছাত্রলীগ আবার সসম্মানে ফিরিয়ে দিয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে, বুয়েটকে আধুনিক, যুগোপযোগী, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার উপযোগী ছাত্র রাজনীতি উপহার দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ছাত্রলীগের আজকের এই সম্মেলন।

বুয়েটের প্রতি সম্মান জানিয়ে সাদ্দাম বলেন, শিক্ষক, প্রকৌশলী, ছাত্র আন্দোলনের কর্মী, বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা নির্মাণে অবদান রাখা শিক্ষার্থী, বুয়েট খেলার মাঠে অস্ত্রহাতে গেরিলা প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া নারী মুক্তিযোদ্ধা, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বাঙালির মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মত্যাগ ও অংশগ্রহণকারী বুয়েট পরিবারের সকল অগ্রজের গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতির প্রতি বাংলার ছাত্রসমাজের পক্ষে যুগে-যুগে অতুলনীয়-অদ্বিতীয় ভূমিকা পালন করা সংগঠন ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে জানাই গভীর শ্রদ্ধা। একইসাথে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে গত ৫৩ বছরে জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তি চর্চা ও প্রসার, অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন, স্বনির্ভর, মর্যাদাশীল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বুয়েটের যে অনন্য অবদান, তার প্রতিও সম্মান প্রদর্শন করছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

১৯৪৭ থেকে শুরু করে ১৯৭১ এ বাঙালির হাজার বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা ও বিজয় অর্জনের ক্ষেত্রে এদেশের ছাত্রসমাজ কেবল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাই পালন করেনি, অকাতরে নিজের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ সে সময় দেশের ছাত্রসমাজ ও তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্বদান করেছে। পুরো এই কালপর্বে ছাত্রসমাজের মাথার মুকুট হয়ে থেকেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের কারণে বাংলাদেশের ইতিহাস ও ছাত্রলীগের ইতিহাস একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে, একটিকে ছাড়া অপরটি অসম্পূর্ণ। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশেও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো ও রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-শিক্ষা ব্যবস্থাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে ছাত্রসমাজের নির্ভরতার প্রিয় ঠিকানা হিসেবে ভূমিকা রেখে চলেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

তিনি জানান, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদা সর্বদা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সর্বাগ্রে স্থান দিয়েছেন। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদ, অরাজকতা, সন্ত্রাস, হত্যা ইত্যাদিকে গুরুত্ব না দিয়ে পায়ে হেঁটে, সাইকেল চালিয়ে ৫৬ হাজার বর্গমাইল ঘুরে বঙ্গবন্ধু মানুষকে সজাগ করেছেন। স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছেন। সংগঠন গড়ে তুলেছেন। নিয়মতান্ত্রিক গণতন্ত্রের প্রতি বঙ্গবন্ধুর এই সংকল্প এতোটাই মজবুত ছিল যে, কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠ, ফাঁসির দড়ি, খনন করে রাখা কবর, নানাবিধ প্রলোভন কোনোকিছুই তাঁকে সামান্য পরিমাণে বিচ্যুত করতে পারেনি। স্বাধীনতা উত্তর রাষ্ট্র গড়ার ক্ষেত্রেও তাঁর এই চেতনা অপরিবর্তনীয় ছিল। সমকালীন প্রেক্ষাপটে একটি আধুনিক সংবিধান প্রণয়ন এবং সে আলোকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মাত্র আড়াই বছর রাষ্ট্র পরিচালনার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক দিক থেকে যে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, তা নবগঠিত একটি রাষ্ট্রের জন্য পৃথিবীব্যাপী বিরল।

ছাত্র রাজনীতির ব্যাপারে তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির জিঘাংসায় পরিণত হয়ে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণের পর থেকে এদেশ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিপরীতে পরিচালিত হতে থাকে। নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে অস্ত্রের জোরে সামরিক বাহিনী রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। সেনাবাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রের সবকটি পদ দখলে চলে যায় অনির্বাচিত একক ব্যক্তির হাতে।

সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান ও হুসাইন মহম্মদ এরশাদ দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর এই অসাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্র পরিচালনার কারণে একে একে এই রাষ্ট্রের সব কয়টি প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক-সামাজিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যায়। এই কালো ছায়া থেকে মুক্তি পায়নি এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ছাত্র ও তরুণ সমাজ। নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির বদলে বিরাজনীতিকীকরণ, সামরিকতন্ত্র, হত্যা-সন্ত্রাস, অস্ত্র ও অর্থের দাপটে খেয় হারিয়ে ফেলে এদেশের ছাত্র রাজনীতিও। মেধাভিত্তিক আদর্শিক ছাত্র রাজনীতির কর্মী তৈরির ধারাবাহিক প্রক্রিয়াকে পাশ কাটিয়ে সেনা ছাউনি থেকে জারি হওয়া প্রেসকিপশন অনুয়ায়ী শুরু হয় ক্যাডার তৈরির প্রক্রিয়া।

সংস্কৃতিনির্ভর, জ্ঞানভিত্তিক, বিজ্ঞানসম্মত, তত্ত্বনির্ভর আধুনিক ছাত্র রাজনীতি সেসময়ই প্রতিস্থাপিত হয় নৌবিহার, টেন্ডারবাজি, ছাত্র সন্ত্রাস, অস্ত্র ও গুলির ঝনঝনানি, কমিশন বাণিজ্য, মাদকনির্ভর, ধর্মভিত্তিক, লেজুড়ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে। স্বাধীনতা উত্তর একটি দেশের তরুণ প্রজন্ম, ছাত্র ও যুবসমাজের যখন দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার কথা, সেসময় তাদের পরিচালিত করা হয়, দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে। সেনা-সামরিক-স্বৈরশাসক জিয়া-এরশাদের ধারাবাহিকতায় খালেদা-নিজামী গং এদেশের ছাত্র রাজনীতি ও সমাজ কাঠামোকে ধ্বংসের নতুনতর উচ্চতায় উত্তীর্ণ করে। রগকাটা, বোমাবাজি, নকল, প্রশ্নফাঁস, সেশনজট, অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, মেধার বিপরীতে দলীয় বিবেচনায় চাকরি, শোডাউন, পেশিশক্তি, দখল বাণিজ্য ইত্যাদি ছাত্রসমাজকে চূড়ান্তভাবে বিচ্যুত করে।

ছাত্র রাজনীতি পুনঃরুদ্ধারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান উল্লেখ করে সাদ্দাম হোসেন বলেন, রক্ত ও নীতি-বিশ্বাস-কর্মের উত্তরসূরী, বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার অবিকল্প সারথী, বাংলার মানুষের-ছাত্রসমাজের নির্ভরতার একমাত্র ঠিকানা দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে জিয়া-এরশাদ-খালেদা-নিজামীর দ্বারা ক্ষতবিক্ষত দেশকে সংস্কার ও পুনঃরুদ্ধারের কাজ শুরু করেন। সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার রন্ধ্রে রন্ধ্রে গেঁথে যাওয়া অপসংস্কৃতি, অপরাজনীতির কবলে দিশেহারা ছাত্রসমাজকে অস্ত্র ফেলে ক্লাসরুমে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান, হাতে খাতা-কলম তুলে দেন।

সন্ত্রাস, কুশিক্ষা, কুসংস্কার, ধর্মান্ধতায় আবদ্ধ ছাত্রসমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে শিক্ষা কমিশন গঠন করেন। নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা চালু, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার প্রসার, বহুমাত্রিক ও বিষয়ভিত্তিক শিক্ষার প্রচলন, উপবৃত্তি-শিক্ষাবৃত্তি, আবাসন সঙ্কট হ্রাস করা, সেশনজট-নকল মুক্ত করা, গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি, মেধাভিত্তিক কর্মসংস্থান ইত্যাদি পদক্ষেপের মাধ্যমে নিরক্ষরতা দূরীভূত হয়েছে, শিক্ষার হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, কোয়ালিটি ও যুগোপযোগী শিক্ষা নিশ্চিত হয়েছে।

মাঝপথে ২০০১-০৮ পর্যন্ত আবারও হোঁচট খেলেও ২০০৯ থেকে অদ্যবধি শিক্ষা ও ছাত্রবান্ধব নেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাজীবন শেষ করে মেধার ভিত্তিতে কর্মজীবনে প্রবেশ করে শেখ হাসিনার নির্ধারিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছেন বলেই দেশ আজ অনুন্নত থেকে উন্নয়শীল হয়েছে। উন্নত বাংলাদেশের হাতছানি দেখছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা আজ দেশের গণ্ডি অতিক্রম করে বহির্বিশ্বে নিজের মেধার পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে আসীন করছে।

দেশরত্ন শেখ হাসিনার অভিভাবকত্বে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এদেশের ছাত্রসমাজের যাবতীয় ইতিবাচকতার পক্ষে নিরলস ভূমিকা পালন করে চলেছে। সবকিছুর পরেও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ত্রুটি স্বীকার করতে কুণ্ঠাবোধ করে না যে, জিয়া-এরশাদ-খালেদা-নিজামীর দীর্ঘকালের ধ্বংসাত্মক অপরাজনীতির আগুনের আঁচ ছাত্রলীগের শরীরেও অনুভূত হয়েছে, ছাত্রলীগকেও দগ্ধ করেছে। এই অপরাজনীতির আগুনকে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতির মাধ্যমে চিরস্থায়ীভাবে প্রতিস্থাপন করতে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যেন তার অভ্যন্তরীণ পরিকাঠামো থেকে সব ধরনের ভুল-ভ্রান্তি-বিচ্যুতি ধুয়ে মুছে-সাফ করে ফেলতে পারে, সে লক্ষ্যে প্রতিটি নেতা-কর্মীকে প্রস্তুত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব, সাংগঠনিক মূলমন্ত্র।

বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডবে অনেক নিরীহ মানুষ মারা গেছে: কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডবে অনেক নিরীহ মানুষ মারা গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা জানতে চেয়ে প্রশ্ন করলে কাদের বলেন, ‘আমরা মৃত্যুর তালিকা..পত্র-পত্রিকায় দু’শোর মতো বা দু’শো চেয়ে একটু বেশি। আমরা এটার খোঁজ খবর নিচ্ছি। অনেক জায়গায়.. জাহাঙ্গীরের (গাজীপুরের সাবেক মেয়র) সঙ্গে জুয়েল নামে একটি ছেলে সবসময় থাকত, তাকে উত্তরায় মেরে লাশ লটকিয়ে রাখা হয়েছে। কি বর্বর, নৃশংসতা। পুলিশকে মেরে ঝুঁলিয়ে রাখা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘অনেক নিরহ মানুষ মারা গেছে। জানালায় দিয়ে বাইরের দৃশ্যপট দেখতেছিল..বাচ্চা যখন তাকালো, সেই বাচ্চা গুলি খেয়ে মারা গেল। তারপরে এ ধরণের ঘটনা আরও অনেক ঘটেছে। রাস্তায় বেরিয়েছে, নিষ্পাপ, নির্বোধ শিশু, কিছুক্ষণ পর দেখা গেল সেও লাশ হয়ে পড়েছিল। এরকম ঘটনা অনেক আছে। এগুলো জামায়াত-শিবিরের তান্ডব। আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি। সময়মতো সাংবাদিকেরাও নিচ্ছেন। সব সত্য বেরিয়ে আসবে।’

আপনি বলেছেন অনেকেই রাস্তায় বের হয়ে, জানালা দিয়ে দেখার সময় গুলি খেয়ে মারা গেছে। মৃতদের বেশিরভাগই গানশর্টে মারা গেছে। তাহলে আপনি কি বলেছেন জামায়াত-শিবিরের হাতে অস্ত্র ছিল। থাকলে সেই অস্ত্র কি উদ্ধার করা হয়েছে?  সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘জামায়াত-শিবিরের হাতে অস্ত্র ছিল। কিছু অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এখনো চলছে (উদ্ধার অভিযান)। উদ্ধার হবেই। এদের নির্দেশ দাতা ও হোতারা কিন্তু গ্রেপ্তার হয়েছে। রিমান্ডে আছে। অনেক সত্য বেরিয়ে আসবে।’  

এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘আমরাতো রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করছি। প্রশাসনিকভাবে মোকাবিলা করছি। আপনাদেরও আমরা সহযোগিতা চায়। এ অপশক্তি সকলেরই শত্রু। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলব।’

কাদের বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে যখন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রে নৈরাজ্য-নাশকতার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। নির্দেশদাতা ও অর্থদাতাদের পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে। মির্জা ফখরুল..থলের বিড়াল বের হতে শুরু করছে। তখন তিনি আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করছেন। তারা সবসময় জনগণের আস্থা না রেখে বিদেশী প্রভুদের উপর ভর করে রাজনীতি করে। এক্ষেত্রেও তাদের সন্ত্রাসী চরিত্র উম্মোচিত হওয়া থেকে দায়মুক্তির জন্য বিদেশী হস্তক্ষেপের দাবি করছে।’

বিএনপি-জামায়াত-উগ্রবামপন্থী-জঙ্গিগোষ্ঠি কুচক্রি মহল এখনো সক্রিয় আছে বলে দাবি করে কাদের বলেন, ‘তাদের প্রশিক্ষিত ক্যাডাররা চোরাগোপ্তা হামলা চালাতে প্রস্তুত হচ্ছে বলে আমাদের কাছে খবর আছে। তারা আবারও বিভিন্নভাবে হামলা চালাতে পারে। দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান যেখানে অস্ত্রধারী ক্যাডারদের খোঁজ পাবেন, তাদের তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে সহযোগিতা করবেন ।’

নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রদল-শিবির, জঙ্গিগোষ্ঠির সন্ত্রাসীরা আর যাতে সহিংসতা ছড়াতে না পারে সে জন্য সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।’ এছাড়া নেতাকর্মীদের কারফিউ মেনে চলার অনুরোধ করেন কাদের।

;

অরাজকতা রুখতে মাঠে ছিলাম-আছি-থাকবো: লিটন



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন

  • Font increase
  • Font Decrease

জনগণের জানমাল রক্ষার্থে ও যে কোনো অরাজকতা রুখতে আমরা মাঠে ছিলাম, এখনো আছি ও ভবিষ্যতেও থাকবো বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) বাদ জুম্মা রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার বড় মসজিদে আয়োজিত দোয়া ও মোনাজাতে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহী মহানগরীরের সকল মসজিদে এই দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

সম্প্রতি সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতায় নিহত শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ যারা প্রাণ হারিয়েছে তাদের আত্মার মাগফেরাত এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়।

এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আমরা শুরু থেকে লক্ষ্য রাখছিলাম। আমাদের কাছে মনেই হচ্ছিলো, এটা হয়তো ভিন্নখাতে প্রবাহিত হবে এবং কয়েকদিন যেতে না যেতেই সেটা প্রমাণিত হতে শুরু করলো। তখন থেকে আমরা সতর্ক হয়ে যাই এবং রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরে নেতাকর্মীদের নিয়ে আমরা রাজপথে থাকি। জনগণের জানমাল রক্ষার্থে ও যাতে কেউ অরাজকতা করতে না পারে সেজন্য আমরা মাঠে ছিলাম। আমরা এতে সফল হয়েছি। রাজশাহীর শান্তিপ্রিয় মানুষ আমাদের সমর্থন দিয়েছেন, সাধুবাদ জানিয়েছেন।

মেয়র লিটন বলেন, বিছিন্নভাবে আমাদের ওপর হামলা করার চেষ্টা করা হয়নি; তা নয়, বিভিন্ন অলি-গলি থেকে হামলার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু জনগণকে সাথে নিয়ে আমাদের সম্মিলিত প্রতিরোধের মুখে তারা সরে যেতে বাধ্য হয়েছে। আমাদের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে ছিলেন। আমরা মাঠে আছি, সেভাবে আমরা এ পর্যন্ত রাজশাহীকে নিরাপদ রেখেছি। জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। কারফিউ উঠে হলে আরো স্বাভাবিক হবে।

এরআগে সাহেববাজার বড় মসজিদে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে পবিত্র জুম্মার নামাজ আদায় করেন রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। জুম্মার নামাজ শেষে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন তিনি। এরপর দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে কুমারপাড়াস্থ মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে যান এবং সেখানে অবস্থান নেন।

কর্মসূচিতে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, ডা. তবিবুর রহমান শেখ, নাইমুল হুদা রানা, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, সাংগঠনিক এ্যাড. আসলাম সরকারসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

;

‘শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা সকল স্বৈরাচারের নির্মম নিষ্ঠুরতাকেও হার মানিয়েছে’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর সরকারদলীয় সন্ত্রাসী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে হামলা চালিয়ে ইতিহাসে হতাহতের যে বর্বরোচিত নজীর স্থাপন করেছে তা দেশ-বিদেশের সকল স্বৈরাচারের নির্মম নিষ্ঠুরতাকেও হার মানিয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।

সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার, কারান্তরীণ ও জুলুম-নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অবৈধ সরকার নিজেদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ব্যর্থতা আড়াল করতে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে গ্রেফতার করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বরিশাল মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট জিয়াউদ্দিন সিকদার, নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজকে গ্রেফতার এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র গ্রেফতারকৃত সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব মোশাররফ হোসেন খোকনকে ৩ দিন পর আদালতে তোলা হয়েছে। অব্যাহত গতিতে দেশব্যাপী বিরোধী দলের নেতাকর্মী বাড়ি বাড়ি তল্লাশি হচ্ছে, বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর বাসাসহ অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দের বাসায় তল্লাশি চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দকে গুম করে রেখে নির্যাতন চালিয়ে তিন/চার কিংবা পাঁচ দিন পর আদালতে হাজির করা হচ্ছে যা আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। দেশের নাগরিকদেরকে গুম করে রাখার ভয়াবহ সংস্কৃতি চালু রেখে মানুষের মনে ভীতি সঞ্চার করা হচ্ছে। সরকারকে এ ধরণের লোমহর্ষক কর্মকাণ্ড পরিহারের আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, একটি স্বাধীন দেশে সরকারের দায়িত্ব হলো-রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া, গত কিছুদিন যাবত কোটা সংস্কার আন্দোলনে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা যখন যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলনরত তখন সেই মুহূর্তে সরকার প্রধানসহ সরকারি দলের নেতা-মন্ত্রীরা তাদেরকে তাচ্ছিল্য করে আওয়ামী সন্ত্রাসীদেরকে নির্দেশ দেয় তাদেরকে নির্মূল করার। সরকারি দলের সন্ত্রাসী এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যৌথভাবে জনগণের টাকার কেনা গুলি, টিয়ারসেল, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদেরকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপের মাধ্যমে শত শত নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীকে গণহারে হত্যা এবং হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে আহত করেছে যা দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী অবলক্ষণ করেছে।

নির্মম অত্যাচারে দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ হতবাক ও ক্ষুদ্ধ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলও একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে নৈতিক সমর্থন দিয়েছে এবং সারা দেশে কর্মসূচীও পালন করেছে। কিন্তু অবৈধ সরকার মরিয়া হয়ে রাষ্ট্রের সকল বাহিনীসহ দলীয় সন্ত্রাসীদেরকে সাধারণ মানুষ, বিএনপি নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে ব্লক রেড দিয়ে গ্রেফতার করছে। এখন পর্যন্ত তাদের হিসাবে প্রায় ৩ হাজার গ্রেফতার করছে। যা জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জার।

তিনি বলেন, ছাত্র জনতার ন্যায় সংগত আন্দোলনকে দমন করার জন্য সেনা বাহিনীকে ব্যবহার কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে সান্ধ্য আইন প্রত্যাহার এবং সেনা বাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। বরাবরই আওয়ামী লীগ লাশের উপর দিয়ে ক্ষমতায় গিয়েছে এবং ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য গত কয়ক দিন যে পরিমাণ নিরীহ ছাত্র-মানুষকে গুলি চালিয়ে পাখির মতো হত্যা করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে তা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কথাই মনে করিয়ে দেয়।

গত কয়েকদিনে কতজন নিরীহ মানুষকে হত্যা ও পঙ্গু করা হয়েছে জনগণ তার সঠিক পরিসংখ্যান জানতে চায়। এছাড়া জনগণের টাকায় কেনা কি পরিমান গোলাবারুদ, টিয়ার সেল, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যবহার করা হয়েছে তার হিসাবও জনগণ জানতে চায়। রাষ্ট্রের টাকায় কেনা হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব জনগণ একদিন কড়ায়-গন্ডায় আদায় করে নিবে।

সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ কারার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যে সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য নির্মমভাবে নিরীহ মানুষকে হত্যা করতে পারে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও স্থাপনার নিরাপত্তা দিতে পারে না সেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোন নৈতিক অধিকার নেই। তাই এই অবৈধ সরকারকে বলবো-অবিলম্বে পদত্যাগ করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করার লক্ষ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা নিন।”

;

বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, বরগুনা
খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ

খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে অসহায় কর্মজীবী মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে বরগুনা জেলা পরিষদ ডাক বাংলো হলরুমে অসহায় কর্মজীবী মানুষের মাঝে এ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি প্রত্যয় দেব প্রান্ত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাদুমনি, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য সাইফুল ইসলাম সাগর। ১ নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন রায়, মো. শাহরিয়ার শুভসহ জেলা ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

খাদ্য সামগ্রী পেয়ে ফরহাদ জানান, দেশের বর্তমান অবস্থা তাতে রিকশা গাড়ি নিয়ে বের হতে পারি না। পরিবার নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ছাত্রলীগ আমাকে সরকারের তরফ থেকে যতটুকু দিয়েছে আমি অনেক খুশি, কয়েকদিন পরিবার নিয়ে ভালো চলবে।

হলিমা খাতুন বলেন, আমার ম্বামী অনেক আগেই মারা গেছে। দুই সন্তান, আমি ডেইলি মানুষে বাসায় কাজ করে সংসার চলাই। কয়েক দিন ধরে কাজে যেতে পারছি না। প্রধানমন্ত্রীর উপহারে কিছুদিন চলবে, দেশের পরিস্থিতি ভালো হলে আবার কাজে ফিরবো।

;