‘সবার জন্য নির্বাচনের পথ খোলা ছিল, তারা আসেনি- অগ্নিসন্ত্রাস করছে’



রুহুল আমিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের বাকি আর এক মাস। নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি সহ সমমনা দলগুলো। মহাজোটের সঙ্গে আসন নিয়ে চলছে লুকোচুরি, মান-অভিমানের খেলা। নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য করতে রয়েছে দেশি-বিদেশি চাপ। সেই সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার চোখ রাঙানি।

আর এইসব নিয়ে বার্তা২৪.কম এর সাথে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বার্তা২৪.কম এর স্টাফ করেসপন্ডেন্ট রুহুল আমিন।

বার্তা২৪.কম: ভূ-রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ এখন খুবই সংবেদনশীল অবস্থানে। ইউরোপ, আমেরিকা, রাশিয়া, চীনসহ অনেক দেশের দৃষ্টি এখন বাংলাদেশের রাজনীতি ও নির্বাচনে। তাছাড়াও নির্বাচনের পরে আমেরিকা থেকে নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে এমন গুঞ্জন রয়েছে। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ কি ভাবছে?

বাহাউদ্দীন নাছিম: এখন কেউ ইচ্ছে করলেই আমাদেরকে বঙ্গোপসাগরে ছুঁড়ে ফেলতে পারবে না। ওই জায়গায় নেই। কারণ এটা শুধু আমাদের একার ইচ্ছের ওপর নয় তাদেরও ব্যাপার আছে, তাদেরও প্রয়োজন আছে। তাদের প্রয়োজন, আমাদের প্রয়োজন সব মিলিয়েই তো বিশ্ব। তবে হ্যাঁ, কেউ একটু বেশি শক্তিশালী, কেউ একটু কম শক্তিশালী। কিন্তু তারপরও সম্পর্কটা পারস্পরিক ও বহুপাক্ষিক। আমাদের অর্থনীতি যে জায়গায় দাঁড়িয়েছে কেউ চাইলেই ছুঁড়ে ফেলে দিতে পারবে না। তাহলে তো স্যাংশন দিয়ে তারা আগেই আমাদেরকে শেষ করে দিত।

নেগেটিভ চিন্তায় সমৃদ্ধ একটি অংশ সব সময় খারাপ কিছুই দেখে। ভালো কিছুর স্বপ্ন যারা দেখতে পারে না তারা এ ধরনের কথা বলে ও ছড়িয়ে বেড়ায়। এটাও কিন্তু এক ধরনের তথ্য সন্ত্রাস। এরা ভালো করেই জানে বাংলাদেশের অর্থনীতি কোন পর্যায়ে আছে; আমরা একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছি। আমরা কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এরকম অপপ্রচারও হয়েছিলো, বাংলাদেশের শান্তিরক্ষা বাহিনীকে আর নেয়া হবে না। চাইলেই কি সম্ভব? আমাদের সৈনিকরা পেশাগত দক্ষতা ও সাহসিকতা দিয়ে এক নম্বরে পৌঁছেছে।

বার্তা২৪.কম: সম্প্রতি উগান্ডা ও জিম্বাবুয়ের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে স্যাংশান ও ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বাংলাদেশেও কি এরকম কিছু হবার সম্ভাবনা আছে?

বাহাউদ্দীন নাছিম: সেখানে কোন দিয়েছে, কি কারণে দিয়েছে? সেটার ব্যাখ্যা কিন্তু দিতে হবে। সেখানে তারা বিজয়ী হতে পারে বা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সরকার গঠন করতে পারে- এমন দলগুলোকে নির্বাচন করতে না দিতে আইন করেছে। তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশে তো এটা করা হয়নি। বাংলাদেশে তাদের নির্বাচন করার সমস্ত ধরনের সুযোগ দেওয়া আছে। এই অধিকার তাদের দেওয়া হয়েছে। তারা আসে নাই। উল্টো হামলা ও অগ্নিসন্ত্রাস করছে। তাহলে বাংলাদেশ আর কম্বোডিয়ার ঘটনা কি এক ঘটনা? এই সত্য জিনিসটা বাংলাদেশের মানুষদের সামনে তুলে ধরতে হবে।

বার্তা২৪.কম: বিএনপিসহ অন্যান্য দলগুলোকে নির্বাচনে নিয়ে আসার জন্য আওয়ামী লীগের কি কোন উদ্যোগ ছিলো?

বাহাউদ্দীন নাছিম: আমরা নির্বাচনে যাব, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব, জনগণের কাছে এই ঘোষণা দিয়েই তো সবাইকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়েছি। বাংলাদেশে যে সমস্ত নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল আছে তাদের সবার সপ্রণোদিত হয়েই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে, জনগণের ম্যান্ডেড পাওয়ার জন্য। তারা জনগণের ম্যান্ডেড পাওয়ার চেষ্টা না করে সরকারকে উৎখাত করে নির্বাচনে আসতে চায়। এটা কি সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত? সাংবিধানিক নিয়মের বাইরে যা ইচ্ছা তাই বললে সেটা কেন দেশের মানুষ মেনে নেবে?

তারা নির্বাচনে আসবে বলে না গো ধরেছে। এখন তাদের তো হাতে পায়ে ধরে নির্বাচনে আনা যাবে না। অথবা লাঠিপেটা করে, পুলিশ পাঠিয়ে ধরে এনে জোর করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানো যাবে না। এটা তার গণতান্ত্রিক অধিকার। এখানে কি বলা হয়েছে নির্বাচনী দাঁড়ালে তাদের মনোনয়ন বাতিল করে দেওয়া হবে? অথবা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে গেলে তাদেরকে গ্রেফতার করে বন্দিশালয় পাঠানো হবে? এ ধরনের কোনো কর্ম হয়েছে?

বার্তা২৪.কম: এখনো কি বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ আছে?

বাহাউদ্দীন নাছিম: কিভাবে? ট্রেন তো এখন কক্সবাজারের আধুনিক স্টেশনে পৌঁছে যাবার পথে।

বার্তা২৪.কম: প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র বা ডামি প্রার্থী দাঁড় করিয়ে তৃণমূলে বিভক্তি সৃষ্টি করছে বলে বলছেন কেউ কেউ। এ নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হচ্ছে, মারামারিও হচ্ছে কোথাও কোথাও। দীর্ঘ বিভক্তি যেন সৃষ্টি না হয় এ নিয়ে আওয়ামী লীগ কি পদক্ষেপ নেবে?

বাহাউদ্দীন নাছিম: আমরা উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন করতে চাই। আমরা নির্বাচনে উৎসবের আমেজ তৈরি হোক- এটা চাই। ইতিমধ্যেই কিন্তু নির্বাচনের উৎসবমুখর আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। এটাই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দাঁড়াবার সুযোগ সাংবিধানিক ভাবেই আছে। কোন জায়গায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাও স্বতন্ত্র দাঁড়িয়েছে। এমন অতীতেও দাঁড়িয়েছে। আমরা চাই জনগণের ভোটে, জনপ্রিয় প্রার্থী নির্বাচিত হউক। তাতে করে গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে। এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। কাউকে মনোনয়ন থেকে বা নির্বাচন থেকে জোর করে সরিয়ে দেওয়া কোন উদ্যোগ আমরা নিচ্ছি না। জনপ্রিয়তা যাদের বেশি তারা নির্বাচিত হবে, এখানে দোষের কিছু নেই।

বার্তা২৪.কম: নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় নৌকা ও স্বতন্ত্রের পক্ষে ভাগ হয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের কর্মীরা। সে ক্ষেত্রে কর্মীরা কার সাথে থাকবে? নৌকা নাকি স্বতন্ত্রের পক্ষে?

বাহাউদ্দীন নাছিম: তারা তাদের পছন্দের দিকে মুভ করবে। এটা নিয়ে যেহেতু দলের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোন সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়নি এটার মানে কি? তার অর্থটা কি? এটা কিন্তু আমাদের নেতা কর্মীরা বুঝবে, বুঝে গিয়েছে। আপনাদেরকেও কিন্তু বুঝতে হবে।

বার্তা২৪.কম: সিনিয়র নেতাদের অনেকেই বলছেন, নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হবে যারা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু আপনি বলছেন আমরা কোন ব্যবস্থা নেব না এই যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে, এ নিয়ে কি বলবেন?

বাহাউদ্দীন নাছিম: আমাদের মাঝে কোন বিভ্রান্তি নেই। কেউ যদি বলে থাকেন তাহলে- এটা তাকেই জিজ্ঞেস করবেন। আমাদের মূল স্পিরিট হলো নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হোক। নির্বাচনের প্রায় তিন হাজারের মতো প্রার্থী প্রতিযোগিতায় আছে, তারা যদি নির্বাচন অংশগ্রহণ করে এটা ভালো না খারাপ? বেশি প্রার্থী যদি নির্বাচন অংশগ্রহণ করে যারা জনপ্রিয় তারা বিজয়ী হবে। অনেকে বেশি ভোট পাবে, অনেক কম পাবে এটাই তো স্বাভাবিক। আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক কিন্তু দলের স্পিরিট সম্পের্কে লেছেন। সেটা পরিষ্কার। তা হলো ১৪ দলের যারা দাঁড়িয়েছে তাদেরকেও কিন্তু এই বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। তারা যেন কেউ উইথড্র না করে।

বার্তা২৪.কম: ১৪ দলের শরিকদের আসন বণ্টনের দায়িত্ব আপনাদের দেয়া হয়েছে, বিষয়টা নিয়ে কতটুকু অগ্রসর হলেন?

বাহাউদ্দীন নাছিম: আমাদের আলোচনা চলছে। তাড়াতাড়ি শেষ হবে। আগে বলেছিলাম ১৬-১৭ তারিখের মধ্যে শেষ হবে। আমার মনে হয় তার আগেই শেষ হবে।

বার্তা২৪.কম:  শরিক দলগুলো আরও বেশি আসন চায়, সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ কি শরিকদের প্রত্যাশা অনুযায়ী আসন বণ্টন করবে?

বাহাউদ্দীন নাছিম: ব্যাপারটা এভাবে বলা ঠিক হবে না। এটা শুধুমাত্র প্রাপ্তি ও চাওয়া-পাওয়ার বিষয়। নির্বাচনে উইনেবল প্রার্থীকে গুরুত্ব দেয়া হয়। আমরা ১৪ দলকে বলেছি, উইনেবল প্রার্থীকে অবশ্যই গুরুত্ব দেয়া হবে।

বার্তা২৪.কম: গত তিন নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন আপনাদের শরিক দল ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। এবার আপনাকে আসনটি থেকে প্রথমবারের মত নৌকা দেয়া হয়েছে। শরিকরা কতটুকু সহযোগিতা করছে নির্বাচনী মাঠে?

বাহাউদ্দীন নাছিম: এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বর্ষীয়ান নেতা মেনন (ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন) ভাইয়ের সাথে আমার আজকেও আলাপ হয়েছে। আমাদের সাথে শরিকদের ব্যক্তিগতভাবে ও দলগতভাবেও ভালো সম্পর্ক আছে। সবকিছুই সুন্দরভাবে সমাপ্ত হবে। এটা নিয়ে নতুন কোন ভাবনা, আশঙ্কা নাই।

বার্তা২৪.কম: ঢাকা-৮ আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। জয়ী হলে এলাকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কি পদক্ষেপ নেবেন?

বাহাউদ্দীন নাছিম: আমি দলীয় কাজ করার পাশাপাশি নেতাকর্মীদের সাথেও বসতেছি। তাতে আমার কাছে মনে হয়েছে, মানুষের মাঝে উচ্ছ্বাস আছে। আওয়ামী লীগের যারা মাঠের কর্মী, তৃণমূলের কর্মী তারা খুবই আনন্দিত ও খুশি। আমি নিজেকে যোগ্য লোক আমি মনে করি না। তবে বুঝতে পারছি এখানে বিজয়ী হতে খুব বেশি কষ্ট করতে হবে না। আরও একটা বিষয় আমার মনে হচ্ছে, ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে আসবে। দল মত নির্বিশেষে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আমাকে ভোট দেবে।

বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডবে অনেক নিরীহ মানুষ মারা গেছে: কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডবে অনেক নিরীহ মানুষ মারা গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা জানতে চেয়ে প্রশ্ন করলে কাদের বলেন, ‘আমরা মৃত্যুর তালিকা..পত্র-পত্রিকায় দু’শোর মতো বা দু’শো চেয়ে একটু বেশি। আমরা এটার খোঁজ খবর নিচ্ছি। অনেক জায়গায়.. জাহাঙ্গীরের (গাজীপুরের সাবেক মেয়র) সঙ্গে জুয়েল নামে একটি ছেলে সবসময় থাকত, তাকে উত্তরায় মেরে লাশ লটকিয়ে রাখা হয়েছে। কি বর্বর, নৃশংসতা। পুলিশকে মেরে ঝুঁলিয়ে রাখা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘অনেক নিরহ মানুষ মারা গেছে। জানালায় দিয়ে বাইরের দৃশ্যপট দেখতেছিল..বাচ্চা যখন তাকালো, সেই বাচ্চা গুলি খেয়ে মারা গেল। তারপরে এ ধরণের ঘটনা আরও অনেক ঘটেছে। রাস্তায় বেরিয়েছে, নিষ্পাপ, নির্বোধ শিশু, কিছুক্ষণ পর দেখা গেল সেও লাশ হয়ে পড়েছিল। এরকম ঘটনা অনেক আছে। এগুলো জামায়াত-শিবিরের তান্ডব। আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি। সময়মতো সাংবাদিকেরাও নিচ্ছেন। সব সত্য বেরিয়ে আসবে।’

আপনি বলেছেন অনেকেই রাস্তায় বের হয়ে, জানালা দিয়ে দেখার সময় গুলি খেয়ে মারা গেছে। মৃতদের বেশিরভাগই গানশর্টে মারা গেছে। তাহলে আপনি কি বলেছেন জামায়াত-শিবিরের হাতে অস্ত্র ছিল। থাকলে সেই অস্ত্র কি উদ্ধার করা হয়েছে?  সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘জামায়াত-শিবিরের হাতে অস্ত্র ছিল। কিছু অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এখনো চলছে (উদ্ধার অভিযান)। উদ্ধার হবেই। এদের নির্দেশ দাতা ও হোতারা কিন্তু গ্রেপ্তার হয়েছে। রিমান্ডে আছে। অনেক সত্য বেরিয়ে আসবে।’  

এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘আমরাতো রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করছি। প্রশাসনিকভাবে মোকাবিলা করছি। আপনাদেরও আমরা সহযোগিতা চায়। এ অপশক্তি সকলেরই শত্রু। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলব।’

কাদের বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে যখন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রে নৈরাজ্য-নাশকতার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। নির্দেশদাতা ও অর্থদাতাদের পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে। মির্জা ফখরুল..থলের বিড়াল বের হতে শুরু করছে। তখন তিনি আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করছেন। তারা সবসময় জনগণের আস্থা না রেখে বিদেশী প্রভুদের উপর ভর করে রাজনীতি করে। এক্ষেত্রেও তাদের সন্ত্রাসী চরিত্র উম্মোচিত হওয়া থেকে দায়মুক্তির জন্য বিদেশী হস্তক্ষেপের দাবি করছে।’

বিএনপি-জামায়াত-উগ্রবামপন্থী-জঙ্গিগোষ্ঠি কুচক্রি মহল এখনো সক্রিয় আছে বলে দাবি করে কাদের বলেন, ‘তাদের প্রশিক্ষিত ক্যাডাররা চোরাগোপ্তা হামলা চালাতে প্রস্তুত হচ্ছে বলে আমাদের কাছে খবর আছে। তারা আবারও বিভিন্নভাবে হামলা চালাতে পারে। দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান যেখানে অস্ত্রধারী ক্যাডারদের খোঁজ পাবেন, তাদের তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে সহযোগিতা করবেন ।’

নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রদল-শিবির, জঙ্গিগোষ্ঠির সন্ত্রাসীরা আর যাতে সহিংসতা ছড়াতে না পারে সে জন্য সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।’ এছাড়া নেতাকর্মীদের কারফিউ মেনে চলার অনুরোধ করেন কাদের।

;

অরাজকতা রুখতে মাঠে ছিলাম-আছি-থাকবো: লিটন



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন

  • Font increase
  • Font Decrease

জনগণের জানমাল রক্ষার্থে ও যে কোনো অরাজকতা রুখতে আমরা মাঠে ছিলাম, এখনো আছি ও ভবিষ্যতেও থাকবো বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) বাদ জুম্মা রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার বড় মসজিদে আয়োজিত দোয়া ও মোনাজাতে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহী মহানগরীরের সকল মসজিদে এই দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

সম্প্রতি সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতায় নিহত শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ যারা প্রাণ হারিয়েছে তাদের আত্মার মাগফেরাত এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়।

এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আমরা শুরু থেকে লক্ষ্য রাখছিলাম। আমাদের কাছে মনেই হচ্ছিলো, এটা হয়তো ভিন্নখাতে প্রবাহিত হবে এবং কয়েকদিন যেতে না যেতেই সেটা প্রমাণিত হতে শুরু করলো। তখন থেকে আমরা সতর্ক হয়ে যাই এবং রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরে নেতাকর্মীদের নিয়ে আমরা রাজপথে থাকি। জনগণের জানমাল রক্ষার্থে ও যাতে কেউ অরাজকতা করতে না পারে সেজন্য আমরা মাঠে ছিলাম। আমরা এতে সফল হয়েছি। রাজশাহীর শান্তিপ্রিয় মানুষ আমাদের সমর্থন দিয়েছেন, সাধুবাদ জানিয়েছেন।

মেয়র লিটন বলেন, বিছিন্নভাবে আমাদের ওপর হামলা করার চেষ্টা করা হয়নি; তা নয়, বিভিন্ন অলি-গলি থেকে হামলার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু জনগণকে সাথে নিয়ে আমাদের সম্মিলিত প্রতিরোধের মুখে তারা সরে যেতে বাধ্য হয়েছে। আমাদের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে ছিলেন। আমরা মাঠে আছি, সেভাবে আমরা এ পর্যন্ত রাজশাহীকে নিরাপদ রেখেছি। জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। কারফিউ উঠে হলে আরো স্বাভাবিক হবে।

এরআগে সাহেববাজার বড় মসজিদে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে পবিত্র জুম্মার নামাজ আদায় করেন রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। জুম্মার নামাজ শেষে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন তিনি। এরপর দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে কুমারপাড়াস্থ মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে যান এবং সেখানে অবস্থান নেন।

কর্মসূচিতে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, ডা. তবিবুর রহমান শেখ, নাইমুল হুদা রানা, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, সাংগঠনিক এ্যাড. আসলাম সরকারসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

;

‘শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা সকল স্বৈরাচারের নির্মম নিষ্ঠুরতাকেও হার মানিয়েছে’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর সরকারদলীয় সন্ত্রাসী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে হামলা চালিয়ে ইতিহাসে হতাহতের যে বর্বরোচিত নজীর স্থাপন করেছে তা দেশ-বিদেশের সকল স্বৈরাচারের নির্মম নিষ্ঠুরতাকেও হার মানিয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।

সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার, কারান্তরীণ ও জুলুম-নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অবৈধ সরকার নিজেদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ব্যর্থতা আড়াল করতে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে গ্রেফতার করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বরিশাল মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট জিয়াউদ্দিন সিকদার, নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজকে গ্রেফতার এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র গ্রেফতারকৃত সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব মোশাররফ হোসেন খোকনকে ৩ দিন পর আদালতে তোলা হয়েছে। অব্যাহত গতিতে দেশব্যাপী বিরোধী দলের নেতাকর্মী বাড়ি বাড়ি তল্লাশি হচ্ছে, বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর বাসাসহ অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দের বাসায় তল্লাশি চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দকে গুম করে রেখে নির্যাতন চালিয়ে তিন/চার কিংবা পাঁচ দিন পর আদালতে হাজির করা হচ্ছে যা আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। দেশের নাগরিকদেরকে গুম করে রাখার ভয়াবহ সংস্কৃতি চালু রেখে মানুষের মনে ভীতি সঞ্চার করা হচ্ছে। সরকারকে এ ধরণের লোমহর্ষক কর্মকাণ্ড পরিহারের আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, একটি স্বাধীন দেশে সরকারের দায়িত্ব হলো-রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া, গত কিছুদিন যাবত কোটা সংস্কার আন্দোলনে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা যখন যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলনরত তখন সেই মুহূর্তে সরকার প্রধানসহ সরকারি দলের নেতা-মন্ত্রীরা তাদেরকে তাচ্ছিল্য করে আওয়ামী সন্ত্রাসীদেরকে নির্দেশ দেয় তাদেরকে নির্মূল করার। সরকারি দলের সন্ত্রাসী এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যৌথভাবে জনগণের টাকার কেনা গুলি, টিয়ারসেল, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদেরকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপের মাধ্যমে শত শত নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীকে গণহারে হত্যা এবং হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে আহত করেছে যা দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী অবলক্ষণ করেছে।

নির্মম অত্যাচারে দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ হতবাক ও ক্ষুদ্ধ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলও একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে নৈতিক সমর্থন দিয়েছে এবং সারা দেশে কর্মসূচীও পালন করেছে। কিন্তু অবৈধ সরকার মরিয়া হয়ে রাষ্ট্রের সকল বাহিনীসহ দলীয় সন্ত্রাসীদেরকে সাধারণ মানুষ, বিএনপি নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে ব্লক রেড দিয়ে গ্রেফতার করছে। এখন পর্যন্ত তাদের হিসাবে প্রায় ৩ হাজার গ্রেফতার করছে। যা জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জার।

তিনি বলেন, ছাত্র জনতার ন্যায় সংগত আন্দোলনকে দমন করার জন্য সেনা বাহিনীকে ব্যবহার কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে সান্ধ্য আইন প্রত্যাহার এবং সেনা বাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। বরাবরই আওয়ামী লীগ লাশের উপর দিয়ে ক্ষমতায় গিয়েছে এবং ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য গত কয়ক দিন যে পরিমাণ নিরীহ ছাত্র-মানুষকে গুলি চালিয়ে পাখির মতো হত্যা করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে তা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কথাই মনে করিয়ে দেয়।

গত কয়েকদিনে কতজন নিরীহ মানুষকে হত্যা ও পঙ্গু করা হয়েছে জনগণ তার সঠিক পরিসংখ্যান জানতে চায়। এছাড়া জনগণের টাকায় কেনা কি পরিমান গোলাবারুদ, টিয়ার সেল, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যবহার করা হয়েছে তার হিসাবও জনগণ জানতে চায়। রাষ্ট্রের টাকায় কেনা হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব জনগণ একদিন কড়ায়-গন্ডায় আদায় করে নিবে।

সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ কারার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যে সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য নির্মমভাবে নিরীহ মানুষকে হত্যা করতে পারে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও স্থাপনার নিরাপত্তা দিতে পারে না সেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোন নৈতিক অধিকার নেই। তাই এই অবৈধ সরকারকে বলবো-অবিলম্বে পদত্যাগ করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করার লক্ষ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা নিন।”

;

বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, বরগুনা
খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ

খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে অসহায় কর্মজীবী মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে বরগুনা জেলা পরিষদ ডাক বাংলো হলরুমে অসহায় কর্মজীবী মানুষের মাঝে এ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি প্রত্যয় দেব প্রান্ত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাদুমনি, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য সাইফুল ইসলাম সাগর। ১ নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন রায়, মো. শাহরিয়ার শুভসহ জেলা ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

খাদ্য সামগ্রী পেয়ে ফরহাদ জানান, দেশের বর্তমান অবস্থা তাতে রিকশা গাড়ি নিয়ে বের হতে পারি না। পরিবার নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ছাত্রলীগ আমাকে সরকারের তরফ থেকে যতটুকু দিয়েছে আমি অনেক খুশি, কয়েকদিন পরিবার নিয়ে ভালো চলবে।

হলিমা খাতুন বলেন, আমার ম্বামী অনেক আগেই মারা গেছে। দুই সন্তান, আমি ডেইলি মানুষে বাসায় কাজ করে সংসার চলাই। কয়েক দিন ধরে কাজে যেতে পারছি না। প্রধানমন্ত্রীর উপহারে কিছুদিন চলবে, দেশের পরিস্থিতি ভালো হলে আবার কাজে ফিরবো।

;