বিএনপি-জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকদের তালিকা করছে পুলিশ!



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বিএনপি-জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকদের তালিকা করছে পুলিশ!

বিএনপি-জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকদের তালিকা করছে পুলিশ!

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি-জামায়াতের মদদদাতাদের তালিকা প্রস্তুত করছে পুলিশ। বিএনপি, জামায়াত-ই-ইসলামী এবং অন্যান্য বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি সফল করতে অর্থদাতা, জনবল সংগঠক ও সহযোগীসহ যারা আড়ালে থেকে যারা কাজ করছেন তারাও পুলিশের এই তালিকায় রয়েছে।

গত ২২ সেপ্টেম্বর, বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) রাজনৈতিক শাখা থেকে ৬৪ জেলার পুলিশ সুপার ও মহানগরের পুলিশ কমিশনারের কাছে বিএনপিসহ অনান্য বিরোধীদলের কর্মসূচি সফল করতে যারা কাজ করছে তাদের নাম-ঠিকানা, ভোটার আইডি কার্ড এবং মোবাইল নম্বর সংগ্রহের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নির্দেশনার আলোকে, এসপি এবং কমিশনাররা সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি এবং বেতার বার্তা পাঠিয়েছেন। সেখানে বিরোধী দলগুলির কর্মসূচিতে পৃষ্ঠপোষকতাকারী ব্যক্তিদের তালিকা চাওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের সব জেলার থানাগুলোকে বিএনপি-জামায়াত এবং সরকার বিরোধী পৃষ্টপোষকদের নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর এবং এনআইডি কার্ড নম্বর সংগ্রহ করতে হবে।

বরিশাল রেঞ্জের একজন জেলা এসপি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চিঠি পেয়েছি এবং আমরা যারা দলীয় কর্মসূচিতে পৃষ্ঠপোষকতা করছে তাদের খতিয়ে দেখছি। সম্পর্কে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করার পরে একটি প্রতিবেদন জমা দেব তবে এটি একটি নিয়মিত তদন্ত। এই বিষয়ে ব্যক্তিদের হয়রানি, জিজ্ঞাসাবাদ বা গ্রেফতার করা হবে না।

এ প্রসঙ্গে স্পেশাল ব্রাঞ্চের উপ-মহাপরিদর্শক (রাজনৈতিক) এজেডএম নাফিউল ইসলাম বলেন, কোন নেতা-কর্মী মারা গেছে বা তাদের অবস্থান ছেড়েছে কিনা তা জানার জন্য প্রতি দুই-তিন মাসে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থা আপডেট করি। এছাড়া দলগুলোর সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের তথ্যও আমাদের হালনাগাদ করতে হবে। এটা রুটিন ওয়ার্ক। আমরা এটা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত বা অন্য দলের জন্য করে থাকি।

এসবির একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, জাতীয় নির্বাচন এগিয়ে আসার সাথে সাথে প্রতিবারই এই তালিকা করা হয়। নির্বাচনের আগে এসব লোক যাতে সহিংসতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আগাম নজরদারিতে রাখা হয়। তাদের মধ্যে আর্থিক লেনদেনও নজরদারিতে রাখা হয়। সর্বোপরি আইন রক্ষায় তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগের একজন জেলার এসপিও বিষয়টি নিশ্চিত করলেও বিএনপি-জামায়াত দাতাদের তালিকা তৈরির বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এরই মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের বর্তমান নেতাদের আলাদা তালিকা তৈরি করছে পুলিশ। সিএমপি সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অধীনে ১৬টি থানায় তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। বিএনপি নেতাদের নাম-ঠিকানার পাশাপাশি এনআইডি কার্ড নম্বরও সংগ্রহ করা হচ্ছে।

জুলাই মাসে একটি অপরাধ পর্যালোচনা সভায়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামও ডিএমপির আওতাধীন ৫০টি থানাকে বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের তালিকা হালনাগাদ করার নির্দেশ দেন।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা এখন আমাদের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করতে একটি তালিকা তৈরি করছে।

   

বাংলাদেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে অথচ বিরোধী দল দেখে না: কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে পাকিস্তান প্রশংসা করে অথচ বিরোধী দল উন্নয়ন দেখতে পায় না। তারা দিনের আলোতে রাতের অন্ধকার দেখে। দেশের উন্নয়ন নিয়ে এত হীন মনোবৃত্তির পরিচয় তারা দিচ্ছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে তাদের বাস্তবতা বুঝা উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। 

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি একথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের যে উন্নতি, উচ্চতা এটা দেখে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ লজ্জিত হন। তখন পূর্ব পাকিস্তান কে তাদের কাছে মনে হতো বোঝা। এখন সে বোঝা অনেক উন্নয়নে এগিয়ে গেছে। সে উন্নয়ন দেখে তিনি লজ্জিত হন। বিএনপি যতটা অপপ্রচার করে তাদের শাহবাজ শরিফের বক্তব্য থেকে প্রকৃত সত্য শিক্ষা নেয়ার অনেক কিছু আছে। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, সারা বিশ্ব যুদ্ধ সংঘাতে ভয়ংকর পরিস্থিতিতে দাড়িয়েছে। আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি রাশিয়া-ইউক্রেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন-হামাস পৃথিবীকে উত্তপ্ত করে রেখেছে। বিশ্ব জনমতকে উপেক্ষা করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু রাফায় আগ্রাসী অভিযান শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের নেত্রী যুদ্ধের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে চলছেন। সকল প্রকার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ও যুদ্ধকে না বলার জন্য বিশ্বের সকল নেতাদের আহ্বান  জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।

;

‘স্বজন’ সংজ্ঞায় ধোঁয়াশা আওয়ামী লীগের



রুহুল আমিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দেয়নি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। উপরন্তু বর্তমান মন্ত্রী-এমপিদের সন্তান ও স্বজনদের নির্বাচনে অংশ নিতে দিয়েছে নিষেধাজ্ঞা। তবে ‘স্বজন’ বলতে কাদের বুঝানো হয়েছে সে বিষয়ে ধোঁয়াশা রেখে দিয়েছে দলটি।

এবার চার ধাপে দেশের মোট ৪৮১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন। সে লক্ষ্য ইতোমধ্যে প্রতিটি ধাপের নির্বাচনের জন্য পৃথক তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী ৮ মে অনুষ্ঠিত হবে প্রথম ধাপের নির্বাচন। যা শেষ হবে ৫ জুন চতুর্থ ধাপের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। তবে এরইমধ্যে প্রথম দফা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হলেও স্বজনদের অনেকেই মানেননি দলীয় নির্দেশনা।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী যে সব উপজেলায় মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তাদের তালিকা ইতোমধ্যে দপ্তরে পাঠিয়েছেন দায়িত্বশীল নেতারা । যেখানে ৫০ জনেরও অধিক স্বজনের নাম পেয়েছে কেন্দ্র। তবে নিষেধাজ্ঞা না মানা স্বজনদের নিয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সে বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি দলটি।

সূত্রটি জানায়, একটি প্রতিযোগিতামূলক, অংশগ্রহণমূলক ও প্রভাবমুক্ত একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষেই মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ফলে স্বজন সংজ্ঞায় যাই থাকুক, বর্তমান চেয়ারম্যান যারা পুনরায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাহিরে থাকছেন। এছাড়াও যারা সরাসরি রাজনীতির সাথে জড়িত ও রাজনৈতিক কারণেই নির্বাচনে লড়ছেন তাদের বিরুদ্ধেও নেওয়া হবে না কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা।

গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে স্বজনদের কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা হবে, এ-প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, সেটা আমাদের উপর ছেড়ে দিন। আপনারা (সাংবাদিকরা) সব কিছু নির্ধারণ করলে আমরা পার্টি করতেছি কেন? এরপর আবারও অন্য আরেক সাংবাদিক একই প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আপনারা একটা সংজ্ঞা তো লিখে ফেলেছেন। না, আমি আর বলব না। আমাদেরটা আমাদের কাছে থাক; আমাদেরটা আমাদের কাছে আছে।

জানা যায়, প্রথম দফার ১৫২ উপজেলার নির্বাচনে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নির্দেশনা মেনে নিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন মাত্র ৩ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে আছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবিব, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগারের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে সহিদুল ইসলাম ও নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আয়েশা ফেরদৌস।

আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর কঠোর বার্তাকে উপেক্ষা করে এখনো যারা মাঠে আছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছে আওয়ামী লীগের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র। সূত্রটি জানায়, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে আগামী ৩০ এপ্রিলের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা থেকে। দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার শোকজ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-এমপিদের দেওয়া হতে পারে চিঠি। প্রথম দফায় যারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন খোঁজ-খবর নেওয়া হবে তাদের বিষয়েও।

দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে এখনো মাঠে আছেন কয়েক ডজন প্রার্থী। চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বাচনি কার্যক্রম। তাদের মধ্যে আছেন নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার প্রার্থী আতাহার ইশরাক সাবাব চৌধুরী। তার বাবা স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী। তার মা কামরুন নাহার শিউলী কবিরহাট উপজেলার টানা তিনবারের চেয়ারম্যান। তিনি প্রার্থী হয়েছেন এবারও।

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস ও ছেলে আশিক আলী। বর্তমান চেয়ারম্যান এমপির ছোট ভাই মাহবুব মোর্শেদ লিটন। লিটন এবার ভাতিজাকে সমর্থন দিয়ে দাখিল করেননি মনোনয়ন।

মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদে প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের বড় ছেলে আসিবুর রহমান খান। এছাড়াও প্রার্থী হয়েছেন তার ছোট ভাই অ্যাডভোকেট ওবাইদুর রহমান খান ও চাচাতো ভাই পাভেলুর রহমান শফিক খান।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের এমপি মাহবুব-উল আলম হানিফের চাচাতো ভাই ও বর্তমান চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা। কুমিল্লার বরুয়ায় প্রার্থী হয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর শ্যালক মো. হামিদ লতিফ ভূঁইয়া কামাল। তবে তার কোন দলীয় পদ-পদবি নেই। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরীর ছোট ভাই বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের ফুফাতো ভাই সাইদুর রহমান স্বপন, বরিশালের আগৈলঝাড়ায় এমপি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে আশিক আবদুল্লাহ, পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় এমপি মো. মকবুল হোসেনের ছেলে গোলাম হাসনায়েন রাসেল, পাবনার বেড়া উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন পাবনা-১ আসনের এমপি ও ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর ছোট ভাই আব্দুল বাতেন ও ভাতিজা আব্দুল কাদের সবুজ।

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়নের ভগ্নীপতি বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ, তার মামা হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু এমপির ফুফাতো শ্যালক। তিনি আবারও প্রার্থী হয়েছেন। নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন নড়াইল-১ আসনের এমপি কবিরুল হক মুক্তির ভাগ্নি সোহেলী পারভিন নিরী। তিনি উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এমপি আলী আজগার টগরের আপন ভাই বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আলী মুনছুর বাবু, চাচা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সহিদুল ইসলাম ও মো. আবু তালেবও জমা দিয়েছেন মনোনয়নপত্র। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচন করছেন বর্তমান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইসরাফিল হোসেন। তিনি মানিকগঞ্জ-৩ আসনের এমপি ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ফুফাতো ভাই। কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. মহব্বত আলী পুনরায় এ পদে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের শ্যালক।

পিরোজপুরের নাজিরপুরে উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন এস এম নূরে আলম সিদ্দিকী। তিনি পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য শ ম রেজাউল করিম এর ভাই। শরীয়তপুর সদর উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন শরীয়তপুর-১ আসনে এমপি ইকবাল হোসেন অপুর চাচাতো ভাই বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া। বোরহানউদ্দিন উপজেলার প্রার্থী আবুল কালাম সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদের ভগ্নীপতি। ভোলার লালমোহনে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হোসেন রিমন ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের ফুফাতো ভাই। আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী নজরুল ইসলাম লাবু এমপির চাচাতো ভাই।

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন চাঁদপুর-২ আসনের এমপি মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ভাতিজার স্ত্রী লাভলী চৌধুরী। তিনি ছাড়া আর কেউ এই পদে মনোনয়নপত্র জমা দেননি।

কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, দলের সর্বোচ্চ জায়গা থেকে নির্দেশনা দেয়ার পরও প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করা ভাবনার উদ্রেক করে। আমরা চাই, যে সব নেতাদের ত্যাগ, তিতিক্ষার বিনিময়ে আওয়ামী লীগ তার জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পেরেছে দলের সে সব ত্যাগী নেতাকর্মীরাই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আসুক। তবে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের অফিসিয়াল সময় শেষ হলেও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সুযোগ এখনো আছে। এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের উচিত নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো।

স্বজন বলতে কাদের বুঝানো হবে সে বিষয়ে কোন সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়নি জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, উপজেলা নির্বাচনে স্বজন বলতে কাদের বুঝানো হবে সে বিষয়ে আমাদের কোন সংজ্ঞা নির্ধারণ হয়নি। এই বিষয়ে আমরা এখনো কোন ব্যাখ্যা দিইনি।

আগামী ৩০ এপ্রিল ডাকা কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে স্বজনদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত আসতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এ সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, আমাদের বৈঠকের এজেন্ডায় এ বিষয়টি দেওয়া নেই, তবে কেউ যদি বিষয়টি নেত্রীর (আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা) সামনে তুলে ধরেন তাহলে আলোচনা হতে পারে, অথবা নেত্রীও কথা বলতে পারেন।

;

উপজেলা নির্বাচন

বরিশালে নতুন তিন প্রার্থী নিয়ে দুই উপজেলায় তোলপাড়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আগামী ২১ মে দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে নতুন দুইজন চেয়ারম্যান ও একজন নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীকে নিয়ে বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলাবাসীর মধ্যে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।

নতুন প্রার্থীদের জয়জয়কারে চরম বেকায়দায় পড়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা হেভিওয়েটের প্রার্থীরা।

নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, পরিবর্তনের পক্ষে সাধারণ সমর্থকরা ওই তিন প্রার্থীর পক্ষে কোমর বেঁধে মাঠে নামতে শুরু করেছেন। প্রার্থীরাও অনেকদিন ধরে নির্বাচনি মাঠও চষে বেড়াচ্ছেন।

গণসংযোগে নেমে তারা উন্নয়নবঞ্চিত উপজেলাবাসীর তীব্র ক্ষোভের কথা শুনলেও ভোটারদের কোনো ধরনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন না। তিন প্রার্থীই প্রায় একই সুরে কথা বলছেন, অতীতের জনপ্রতিনিধিদের মতো মুখে কথার ফুলঝুড়ি ছড়াতে চাই না! তারা শুধু এটুকুই বলছেন, নির্বাচিত হতে পারলে ভাগ্যবঞ্চিতদের ভাগ্য উন্নয়নে সবকিছু কাজে প্রমাণ করে দেবো। আর দুই বছরের মধ্যে ভাগ্য উন্নয়নে ব্যর্থ হলে পদত্যাগ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবো।

আলোচিত ওই তিন প্রার্থী হলেন- মুলাদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জহির উদ্দীন খসরু। ক্লিন ইমেজের প্রার্থী হিসেবে উপজেলা জুড়ে ব্যাপক পরিচিত জহির উদ্দীন খসরুর পক্ষে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি এবার প্রকাশ্যে গণসংযোগে মাঠে নেমেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতাকর্মীরা।

অপর দুই প্রার্থী হলেন- বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদে জনতার চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনি মাঠে আলোড়ন সৃষ্টি করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক মেধাবী ছাত্র মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মো. আদনান আলম খান বাবু এবং বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ও আলোচিত নারীনেত্রী মৌরিন আক্তার আশা।

জানা গেছে, বরিশাল-৩ (মুলাদী ও বাবুগঞ্জ) সংসদীয় আসনটি অনেকদিন থেকেই জাতীয় পার্টির দখলে। স্থানীয় নির্বাচনে জাপা এককভাবে প্রার্থী ঘোষণা না করলেও প্রার্থীদের বিজয়ী হতে জাপার সমর্থন মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে।

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এ দুই উপজেলায় জাতীয় পার্টির বৃহৎ অংশের কর্মী-সমর্থকরা ইতোমধ্যে প্রকাশ্যে উল্লিখিত আলোচিত তিন প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে মাঠে নেমেছেন।

চেয়ারম্যান প্রার্থী দুই ভাই
দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে জেলার হিজলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন আপন দুই ভাই। এনিয়ে পুরো উপজেলা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আগামী ২১ মে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে হিজলা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার।

গত ২৩ এপ্রিল দুপুরে যাচাই-বাছাইতে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রাথমিকভাবে বৈধ ঘোষণা করা পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে দুইজনই হলেন আপন দুইভাই। তারা হচ্ছেন- সাবেক চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ টিপু সিকদার ও তার ছোটভাই আলতাফ মাহমুদ দিপু সিকদার।

অপর তিন প্রার্থী হলেন- নজরুল ইসলাম রাজু ঢালী, দেলোয়ার হোসেন ও হাফিজুর রহমান। জেলার আরো একটি উপজেলায় আপন দুইভাই প্রার্থী হচ্ছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।

 

;

বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় যেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে: কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়েছেন। তাদের বোধগম্য হয় না যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের কাতারে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করে; জনকল্যাণে পরিকল্পনা গ্রহণ ও কর্মসূচি নির্ধারণ করে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) আওয়ামী লীগ উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানে এক বিবৃতিতে তিনি একথা বলেন। এতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা সর্বদা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। অন্যদিকে বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।

বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে সরকারবিরোধী তথাকথিত আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস-সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ও তার দোসরদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনী সরকারের সুসমূণ পথচলা এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। তাদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু দেশের জনগণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ। আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, পূর্বের ধারাবাহিকতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের নামেও তারা অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ও আদালত জনগণের নিরাপত্তা ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বিএনপি নেতৃবৃন্দ সেটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালায়। বিএনপি প্রকৃতপক্ষে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া তাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত। বিএনপি ক্ষমতায় থেকে নিজেদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনীর পাশাপাশি বাংলা ভাইয়ের মতো দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীর সৃষ্টি করেছিল এবং তাকে রক্ষা করার জন্য 'বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি' বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর।

সন্ত্রাসী বা অপরাধী যে-ই হোক তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে উল্লেখ করে বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা জগদ্দল পাথরের মতো জেঁকে বসা বিচারহীনতার সংস্কৃতির অর্গল ভেঙে বিচারের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। সন্ত্রাসী বা অপরাধী যে-ই হোক তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্যের আড়ালে সন্ত্রাসীদের রক্ষার অপকৌশল সফল হবে না।

;