সিংড়ায় ত্রাণের চাল লুটছে নেতা-ডিলার, ভুগছে গরিব



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নাটোর
ত্রাণের চাল লুটছে নেতা-ডিলার, ছবি: বার্তা২৪.কম

ত্রাণের চাল লুটছে নেতা-ডিলার, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নিম্ন আয়ের মানুষদের খাদ্য সহায়তায় সারা দেশের ন্যায় নাটোরের সিংড়াতেও ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি শুরু হয়েছিল। শুরুর দুদিনের মাথায় চাল বিক্রিতে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে। পরপর দুই দিন সুকাশ ইউনিয়ন থেকে ৬১ বস্তা চাল উদ্ধার করেছে প্রশাসন। ন্যায্যমূল্যের এসব চাল ডিলারদের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি ও ক্ষমতাসীন দলের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদের মধ্যস্থতায় বিক্রির জন্য যাচ্ছিলো পার্শ্ববর্তী জেলায়। এসব ঘটনায় জড়িত থাকায় দুই দিনে স্থানীয় ইউপি সদস্য, আওয়ামী লীগ নেতা, চাল ডিলার, ক্রেতাসহ ৫ জনকে গ্রেফতার, কারাদণ্ড ও লাইসেন্স বাতিলসহ খাদ্য সহায়তার সকল কর্মসুচি বাতিল করা হয়েছে।

জানা যায়, গত ৭ এপ্রিল স্থানীয় ক্লাবে ১৩ বস্তা চাল মজুদ ও বগুড়ায় বিক্রির সময় সুকাশ ইউনিয়নের বোয়ালিয়া বাজার থেকে ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহীন শাহ, চাল ডিলার লুৎফর রহমান ও বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার কৈডালা বাজারের ব্যবসায়ী গোলাম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন একই ইউনিয়নের শারুপাড়া গ্রাম থেকে আরও ৪৮ বস্তা চালসহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও ডিলার আওয়াল হোসেন স্বপন এবং চাল ক্রেতা রহমত আলীকে আটক করে এক মাসের দণ্ডাদেশ দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া তার ডিলারশিপ বাতিল করা হয়েছে।

যারা এখনও সরকারি খাদ্য সহায়তা পাননি তারা ১০ টাকা কেজির চাল বিক্রি শুরু হওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে ছিলেন । আজ থেকে চাল বিক্রি বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। সপ্তাহে রোববার, মঙ্গলবার ও বৃহষ্পতিবার চাল বিক্রির দিন নির্ধারিত হলেও আজ অনেকেই চাল নিতে এসে ফিরে গেছেন। এছাড়া সিংড়ার বেশ কিছু প্রত্যন্ত এলাকায় এখনও পৌঁছেনি খাদ্য সহায়তা।

ইতালি ইউনিয়নের তাজপুর গ্রামের জেহের আলী ও ছাতারদিঘী ইউনিয়নের সর্য্য বেওয়া জানান, নিজেদের যা আছে, তাই একটু একটু করে খেয়ে দিনযাপন করছেন। এখন পর্যন্ত কোনো খাদ্য সহায়তা পাননি।

রিকশা চালক বছের আলী বলেন, মানুষ কম, ভাড়া নাই। চাল বিক্রিও বন্ধ। নেতারা নিজেরাই চাল লুট করে। নেতাদের বাদ রেখে চাল দিলেই গরিবরা চাল পাবে।

 ত্রাণের চাল লুটছে নেতা-ডিলার
ত্রাণের চাল পাচ্ছেন না গরিবরা

হাতিয়ান্দহ ইউনিয়নের আঁচলকোট গ্রামের আনেছা বেগম বলেন, যারা খাবার দেন তারা পাড়ার উপর এসেই দিয়ে চলে যান। গ্রামের ভেতর আসেন না। তাদেরও পাই না, খাবারও পাই না।

খাদ্য সুবিধাভোগী বাছাইয়ে ওয়ার্ড পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বাদ দিয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। এতে নির্দিষ্ট এলাকার মানুষকে বঞ্চিত করে চাল আত্মসাৎ প্রবণতা কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চামারী ইউপি চেয়ারম্যান রশিদুল ইসলাম মৃধা ও সুকাশ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ জানান, খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি বাতিল হওয়ার পর নতুন করে দুই ইউনিয়নে সাড়ে তিন হাজার মানুষের তালিকা করার কাজ শুরু হবে।

সিংড়া পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, পৌর এলাকায় শতভাগ স্বচ্ছতার সাথে চাল বিক্রি ও সহায়তা কর্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিলো। এখনো কোনো পরিবারের প্রয়োজন হলে আমি নিজে খাবার পৌঁছে দিচ্ছি এবং দেবো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু বলেন, ডিলাররা যাতে কোনো রকমের কারসাজি করতে না পারে এবং প্রকৃত গরিবরা যেনো এবার সহায়তা পায় সেদিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাই নতুন তালিকা প্রস্তত করতে কিছুটা সময় লাগছে।

   

সিলেটে টানা ২ঘণ্টা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম,সিলেট
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সিলেটে ব্যাপক বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হয়েছে। শনিবার (৪মে) রাত ১০টা থেকে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হলেও সাড়ে ১০টা থেকে বজ্রপাত শুরু হয়। এ সময় টানা ২ঘণ্টা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হয়।

সরেজমিনে সিলেট নগরীর বন্দরবাজার ও দক্ষিণ সুরমার পুলের মুখ এলাকায় দেখা যায়, হালকা বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর থেকে লোকজন এদিক-সেদিক ছুটাছুটি করছেন ও আকাশে বিদ্যুৎ চমকানো দেখে অনেকেই নিরাপদ আশ্রয় স্থল খোঁজ নিচ্ছেন। কেউ কেউ দোকানপাটের সামনেও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

এছাড়াও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দক্ষিণ সুরমার লালাবাজার, সাতমাইল এলাকায় ঝড়ের কারণে শতাধিক যানবাহন সড়কের পাশে আটকে যেতে দেখা যায়।

এ ব্যাপারে সিলেট আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মাহমুদুল হাসান সোহেল বলেন, সিলেটে ২ ঘণ্টায় ৩৪ মিলিমিটার বজ্রসহ বৃষ্টি হয়েছে।

এরআগে শনিবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম/উত্তরপশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে দুই নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

;

উপজেলা নির্বাচনে বিনা ভোটে জয়ের হিড়িক



জাহিদ রাকিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪ ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের ৩০৮টি উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৭ জন প্রার্থী বিনাভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তারমধ্য একাধিক উপজেলায় কোনো ভোটই হবে না বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে। তারমধ্যে কুমিল্লা আদর্শ সদর ও চট্টগ্রাম রাউজান উপজেলায় সব পদে একজন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। ফলে এই দুই উপজেলায় ভোটের প্রয়োজন পড়বে না।

দেশের ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে ৪৭৬টি উপজেলায় চার ধাপে ভোটগ্রহণ করছে নির্বাচন কমিশন। ১৯টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচনের সময় হয়নি, পরবর্তীতে সে সব পরিষদে ভোট নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ইসি।

এবারের নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে কোনো রাজনৈতিক দল নিজেদের প্রতীকে নির্বাচন করছে না। ক্ষমতাসীন দলের তৃণমূলের নেতারা স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে মাঠের বিরোধীদল বিএনপি আগেই জানিয়েছে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। ফলে যেসব উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে সেখানে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা পরস্পর পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন। তবে কিছু উপজেলায় দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিএনপির তৃণমূলের নেতারা প্রার্থী হচ্ছেন।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মতে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আশা করা হলেও সব জায়গায় মূলত আওয়ামী লীগের বিপক্ষে প্রার্থী হচ্ছেন আওয়ামী লীগ পদধারী নেতারা। এরমধ্যও আবার অনেক উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন। তাদের মতে, স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের চাপে পড়ে বা নিজেদের মধ্য সমঝোতা করে অনেক উপজেলায় প্রার্থী হচ্ছে না।

নির্বাচনর কমিশনের তফসিল অনুযায়ী, এবারের উপজেলা নির্বাচন চার ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। তারমধ্য প্রথম ধাপের ১৪৮টি উপজেলায় ভোট হবে আগামী ৮ মে বুধবার। আর দ্বিতীয় ধাপের ১৬০টি উপজেলায় ভোট হবে ২১ মে মঙ্গলবার।

ইসি সূত্রে জানা যায়, প্রথমধাপে নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৭৩০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭৬৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৬২ জন প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্য ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। চেয়ারম্যান পদে সাত জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নয় জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন।

দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৬০৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬৯৪ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫২৯ জন প্রার্থী রয়েছেন। তারমধ্য ২১ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এখানে, চেয়ারম্যান পদে সাত জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাতজন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাত জন নির্বাচিত হয়েছেন।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, তৃতীয় ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৫৭০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬১৮ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪০০ জন; মোট ১৫৮৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তৃতীয় ধাপের বাছাই, প্রত্যাহার, প্রতীক বরাদ্দের প্রক্রিয়া ও চতুর্থ ধাপের মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় এখনো শেষ হয়নি।

তিনি আরও বলেন, তৃতীয় ধাপে মনোনয়নপত্র দাখিলকারীদের মধ্যে পাঁচজন রয়েছেন একক প্রার্থী। চট্টগ্রামের চান্দনাইশে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, যশোরের অভয়নগরে ভাইস চেয়ারম্যান ও সুনামগঞ্জের ছাতক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী রয়েছে। এসব প্রার্থী বাছাইয়ে টিকলে ও প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে পারেন।

তফসিল অনুযায়ী, তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৬ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১ ও চতুর্থ ধাপে দু’টি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে।

নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বার্তা২৪.কমকে বলেন, সাধারণ দলমত নির্বিশেষে জনপ্রিয় কেউ প্রার্থী হলে কেউ প্রার্থী হতে চায়না। তবে সাধারণ এই ধরনের ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া যায়না। বাস্তবে যেটা সেটা হচ্ছে অন্যরা প্রার্থী হতে ভয় পায়, আবার নির্বাচন প্রার্থী হতে যে মোটা অংকের টাকা প্রয়োজন সেটা না থাকার কারণে কেউ প্রার্থী হতে চায়না।

তিনি আরও বলেন, জোর যার মল্লুক তার, ফলে অনেক ক্ষেত্রে ক্ষমতাশীন দলের চাপে পড়ে অনেক জায়গায় কেউ প্রার্থী হচ্ছেনা। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের জয়ের সংখ্যা যত বাড়বে তাতে করে গণপ্রতিনিধিত্ব হ্রাস পায়। ফলে জনগণের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হচ্ছেনা।

;

ফের রণক্ষেত্র বরিশালের নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দ্বিতীয় দফায় ভাঙচুর ও মারামারিতে ফের রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে বরিশালের নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকা। এ সময় টার্মিনাল এলাকায় থাকা প্রায় অর্ধশতাধিক মহেন্দ্র ও সিএনজি, অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়েছে এবং শ্রমিকদের পিটিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষ।

শনিবার (৪ মে) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় সংঘটিত দ্বিতীয় দফা এই হামলা ভাঙচুর ঘটনা ঘটে। এতে ১৫-২০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লার সব বাস চলাচল। মহাসড়ক অবরোধ করে রাখায় অন্যান্য যানবাহন চলাচলও বন্ধ। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন অভ্যন্তরীণ ছয় জেলার ১৩টি রুটের যাত্রীরা।

বরিশা‌লের কেন্দ্রীয় বাস টা‌র্মিনাল নথুল্লাবা‌দে শ্রমিক ইউনিয়নের দু'পক্ষের সংঘর্ষে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। সাবেক ও বর্তমান মেয়র অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ দু-চারদিন পরপরই অচল করে দেয় এই টার্মিনাল এলাকা। এতে ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ যাত্রীদের। তাই বেশিরভাগ যাত্রীদের দাবি বাস টার্মিনাল এলাকা রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ মুক্ত রাখা হোক এবং বাস শ্রমিক বা মালিক নয় এমন নেতাদের বাস টার্মিনাল থেকে দূরে রাখার দাবি করেন তারা।

শনিবার বেলা ১২টার পর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানান যাত্রী, শ্রমিক ও পুলিশ প্রশাসন।

এ সময় প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুপুর ১২টার দিকে মাদারীপুরগামী একটি বাস যাত্রী নিয়ে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল। ওই সময় একটি মোটরসাইকেল বাসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকলে সাইড নেওয়ার জন্য বাসের চালক হর্ণ বাজায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মোটরসাইকেল আরোহী নুরুল ইসলাম বাবাই নামের এক নেতা ও তার সহকারী বাসের চালককে মারধর করে। আর তাকে বাঁচাতে আরেকজন বাস শ্রমিক এগিয়ে গেলে তাকেও মারধর করা হয়।

এ সময় শ্রমিকদের একজন জানান, বাসচালক শাকিল ও সৌরভকে মারধর করা হয়েছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এ সময় তারা বিক্ষোভ করে এবং হামলাকারীদের আটক করে মারধরের চেষ্টাও করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী একজন যাত্রী জানান, শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে একপর্যায়ে টার্মিনালের সামনের বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন। পাশাপাশি টার্মিনাল এলাকায় থাকা বেশকিছু ব্যানার পোস্টার ভাঙচুর করে। পরবর্তীতে দীর্ঘ আলোচনা শেষে সমঝোতার আশ্বাসে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিত স্বাভাবিক হলেও সন্ধ্যার পর তা পুনরায় অশান্ত ও রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

এ বিষয়ে বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী কবির সাংবাদিকদের বলেন, সন্ধ্যার দিকে ঘটনা সমাধান করে বাস চলাচলের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ সময় আবার বাস ও থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে ঝামেলা হয়। এ কারণে সন্ধ্যা সোয়া ৭টা পর্যন্ত বাস চলাচল শুরু হয়নি বলে জানান তিনি।

এর আগে দুপুরের ঘটনায় আহতরা জানান, যে বহিরাগতরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন, তারা বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নব নির্বাচিত সভাপতি কাজী কবিরের ঘনিষ্টজন। কবিরের লোকজন কিছুদিন ধরেই নথুল্লাবাদ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

এ বিষয়ে বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম ফকির সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সময় তিনিসহ নেতাকর্মীরা টার্মিনালের ভেতরে অফিস কক্ষে ছিলেন। চালকের ওপর হামলার খবর শুনে তাৎক্ষণিক তিনি ঘটনাস্থলে আসেন। পরে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠান।

তিনি বলেন, কি ঘটনায় হামলা তা আমি জানি না, তবে বহিরাগতরা এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। ভবিষ্যতে কেউ টার্মিনালের ভেতরে বহিরাগতদের নিয়ে আসতে পারবে না এবং কোনো প্রশ্রয়ও দিতে পারবেন না। আর এর ব্যত্য়য় ঘটলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আর শ্রমিকের গায়ে কেউ হাত দিতে পারবেন না, দোষ করলে আমাদের বলবেন আমরা ব্যবস্থা নেবো।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার ফারুক হোসেন সাংবাদিকদের জানান, নথুল্লাবাদে শ্রমিক ইউনিয়নের দুই পক্ষের মধ্যে অনেকদিন ধরে সমস্যা আছে। পাল্টাপাল্টি কমিটি থাকলেও উভয় কমিটিরই টার্মিনাল এলাকায় বর্তমানে সেবামূলক কোনো কার্যক্রম নেই। এখানে শ্রমিক ইউনিয়নের যে অফিস ছিল সেটি মে দিবস উপলক্ষে একপক্ষ খুলে দেয়। এতে অন্য পক্ষের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে এর আগেও দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় টার্মিনালের ভেতরে দুই পক্ষের মারামারি হয়। একপর্যায়ে তারা সড়কে এসে অবরোধ করে।

তিনি আরো বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দুইপক্ষের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়, যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।

;

জামালপুরে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, জামালপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় বজ্রপাতে আব্দুল মজিদ (৫৫) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৪ মে) রাত ৮ টার দিকে উপজেলার সাপধরী ইউনিয়নের কটাপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মজিদ ওই এলাকার বাসিন্দা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাপধরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলম মন্ডল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যার দিকে মাঠের কাজ করে বাড়িতে ফিরছিলেন আব্দুল মজিদ। একপর্যায়ে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। ওইসময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। তার মৃত্যুতে পরিবারের শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

;