ঘরে খাবার নেই, বাড়ি ভাড়ার বাড়তি চাপে ভাড়াটিয়া



মাহিদুল মাহিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
বাড়ি ভাড়ার বাড়তি চাপে ভাড়াটিয়া

বাড়ি ভাড়ার বাড়তি চাপে ভাড়াটিয়া

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ভয়ংকর থাবায় গোটা পৃথিবীর মতো দেশও যখন থমকে গেছে, তখন বাড়ি ভাড়ার চাপে দিশেহারা সাভারের দিনমজুরসহ লাখো ভাড়াটিয়া। দৃষ্টিগোচরে আসতে সাভারে দুই একজন ভাড়া মওকুফ করে দিলেও ঋণ করে বাড়ি করার দোহাই দিয়ে ভাড়ার টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন বাড়িওয়ালারা। এই এলাকা শিল্পাঞ্চল হওয়ায় এখানে ভাড়া থেকে কাজ করে লাখ লাখ শ্রমিক। কেউ করে বিভিন্ন ব্যবসা। অঘোষিত লকডাউনের প্রভাবে যখন দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট তখন ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা দোকান ও বাসা ভাড়ার চাপে ভুলে গেছেন প্রাণঘাতী করোনার কথা। বাধ্য হয়ে অনেকেই রাস্তায় নেমেছেন রিকশা নিয়ে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে দেশ ও জনগণকে বাঁচাতে অনেক আগেই সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিল্পকারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন না সচেতন ব্যক্তিরা। কর্মহীন হয়ে পড়েছে দিন ভিত্তিক চুক্তিতে কাজ করা শ্রমিকসহ পরিবহন, হোটেল-রেঁস্তোরা, ফুটপাত দোকানিসহ ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা। তারা ঠিকঠাক যোগাতে পারছেন না দুই বেলা দু মুঠো খাবার। তাদের কর্ম না থাকায় বন্ধ হয়েছে আয়ের পথ। আর এমন সময় বাড়ি ভাড়ার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছেন বাড়িওয়ালারা।

মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন ভাড়াটিয়া শ্রমজীবী মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা মানসিকভাবে অনেক চাপে রয়েছেন। করোনাভাইরাসের কারণে দেশব্যাপী চলছে অঘোষিত লকডাউন। ফলে দিনমজুরদের ঘরের খাদ্য ফুরিয়ে গেছে। এতেই তারা আছেন চরম বিপদে। এমনিতেই তারা দরজার দিকে তাকিয়ে আছেন ত্রাণের জন্য। এর মাঝে বাড়ি ভাড়া যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা।

গেটের সামনে কোন একজনের পথ চেয়ে বসে আছে রিজু নামের এক ব্যক্তি। তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমি বাড়ির গেটের সামনে বসে আছি খাবারের আশায়। বাসায় খাবার নেই। ছোট ছোট দুইটি সন্তান আছে। তাদের কিছু কিনে দিতেও পারছি না। আমি হোটেলে খাদ্য সরবরাহের কাজ করতাম। কিন্তু হোটেল বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় ১ মাস হলো। কোন ইনকাম নাই, এমনি ঘরে খাবার নেই তার মধ্যে বাড়ি ভাড়া চাইতে এসেছিলো বাড়িওয়ালা। কিন্তু আমার এমন অবস্থা দেখে বাড়ির মালিক ফিরে গেলেন, আর বললেন টাকা সংগ্রহ করে যেন তাকে নিজে গিয়ে দিয়ে আসি। তিনি আর টাকা চাইতে আসতে পারবেন না।

তাজরীন ফ্যাশন দুর্ঘটনায় আহত পারভিন বলেন, আমরা এখন কেউ কোনো জায়গায় কাজ করতে পারি না। কাজ চাইতে গেলে তাজরীনের শ্রমিক বলে কেউ কাজে নেয় না। তারা বলে আমরা নাকি কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি। কোনো মতে খেয়ে না খেয়ে তিন সন্তান নিয়ে চলছি। প্রতি মাসেই বাসা বাড়া দিতে ঝামেলা হয়। সময় মতো দিতে পারি না। এবার তো দিতেই পারবো না। বাড়িওয়ালা বাসা ছেড়ে দিতে বলেছে। আর যদি এই বাসায় থাকি তাহলে প্রতি মাসের ৮ তারিখের মধ্যে ভাড়া দিতে হবে। সব মিলে মানসিক চাপের মহাসাগরে আছি, একবার মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে গেছি। করোনায় নয় মনে হয় মানসিক চাপেই মরে যাবো এবার।

সাভারের হোটেল ব্যবসায়ী মিস্টার বলেন, হোটেলের ভাড়া প্রতিমাসে ৩০ হাজার টাকা। মার্চ মাসে সমস্যা থাকার কারণে হোটেল ভাড়া দেইনি। এখন দুই মাসে ৬০ হাজার টাকা হয়ে গেলে, আর হোটেল বন্ধ আছে প্রায় ১ মাস ধরে। মনে হয় আমি আর ব্যবসা করতে পারবো না। কারণ ভাড়া দিতেই আমার সব মুলধন চলে যাবে। আমি যে এখন কি করবো কার কাছে যাবো কিছুই বুঝতে পারছি না। যদি এর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হয় তাহলে গলায় রশি দিয়ে মরা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাড়িওয়ালা বলেন, আমরা ঋণ করে বাড়ি করেছি। আজ পর্যন্ত সব টাকা কিস্তি দিতেই যাচ্ছে। একটি টাকা দিয়েও বাজার করে খেতে পারি নাই। আর ব্যাংক তো আমাদের ছাড় দেবে না, এ টাকা তারা নেবেই। সুতরাং বাড়ি ভাড়া ছাড় দেওয়া সম্ভব নয়। ব্যাংক যদি কিস্তি মওকুফ করে দিতো আমরাও বাড়ি ভাড়া মওকুফ করতাম। আর শ্রমিকরা কোথায় টাকা পাবে এটা চিন্তা করে লাভ নেই। তারা এতদিন চাকরি করে কি করেছে, কোনো টাকা জমায়নি কেন। বিপদের জন্য মানুষ ঠিকই টাকা জমায়। এখন সবার বিপদের সময় টাকা তো দিতেই হবে তাই না।

এ ব্যাপারে আশুলিয়া ভাড়াটিয়া পরিষদের সভাপতি সারোয়ার হোসেন বলেন, প্রথমেই সাভার ও আশুলিয়ার সেই বাড়িওয়ালাদের কৃতজ্ঞতা জানাই যারা নিজ উদ্যোগে ভাড়া মওকুফ করে দিয়েছেন। আর যারা বাড়ি ভাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন আমি তাদের উদ্দেশ্য বলবো, 'আপনারা মানবিক হোন' এই দুর্যোগে আপনারাও যোদ্ধা হিসেবে যোগদান করেন। সব কিছু সরকারের আশায় থাকলে হবে না। নিজেদেরও এগিয়ে আসতে হবে। আপনাদের ব্যাংক ঋণ নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত পরিশোধ করতে হবে। বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল কোনো বিল আপনাদের দিতে হবে না এ মাসে। সরকার এতো ছাড় দিচ্ছে আপনারা ১ মাসের বাড়ি ভাড়া ছেড়ে দিতে পারেন না। তাই আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ শ্রমিকদের প্রতি একটু মানবিক হোন। তাদের পাশে দাঁড়ান। আপনারাও করোনা যুদ্ধে যার যার অবস্থান থেকে যোগ দেন। তাহলেই হয়তো আমরা এবারের মত জয়ী হতে পারবো।

   

গফরগাঁওয়ে শিয়ালের কামড়ে আহত ৪



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে শিয়ালের কামড়ে ৪ জন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন বনগ্রামের পারুল (৪৫), মোজাম্মেল (৫০) ও সরইকান্দা গ্রামের রিয়েল (৩২), মিজান (১৮)।

রোববার (২৮ এপ্রিল) রাতে উপজেলার গফরগাঁও ইউনিয়নের বনগ্রাম গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, রোববার রাতে গৃহবধূ পারুল বাড়িতে ধানের কাজ করছিলেন। হঠাৎ শিয়াল এসে হাতে কামড় দেয়। আত্মরক্ষায় তখনই পারুল পুকুরে ঝাঁপ দেয়। এরপর মোজাম্মেল তার বাড়িতে শিয়ালের আক্রমণে শিকার হন।

বনগ্রাম বাজার থেকে বাড়িতে ফেরার পথে রিয়েল ও মিজান শিয়ালের কামড়ে আহত হয়। গুরুতর আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

বনগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি মো. আলামিন বলেন, শিয়ালের কামড়ে আহত হয়েছে চারজন তবে শিয়ালটিকে এখনো মারা যায়নি। এ নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকার মধ্যে।

গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কর্মকর্তা দেবাশীষ রাজবংশী বলেন, শিয়ালের কামড়ে আহতরা রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার পরে আমাদের কাছে ভ্যাকসিন না থাকায় ময়মনসিংহ হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে আগামীতে আমাদের হাসপাতালে ভেকসিনের ব্যবস্থা করা হবে।

;

ঝালকাঠির সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন

লাইসেন্সবিহীন চালক, ওভারলোডিং, অবকাঠামোর ত্রুটিই দায়ী



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঝালকাঠি
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝালকাঠির গাবখান টোলপ্লাজায় ট্রাকচাপায় ১৪ জন নিহতের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি জেলা প্রশাসনের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে চালকদের লাইসেন্স ও ট্রাকের ফিটনেস না থাকা, ওভারটেকিং করা, সড়কে অবৈধ যান, সড়কের অবকাঠামোয় ত্রুটি, ট্রাকে ওভারলোড, অতিরিক্ত গতি এবং গতিরোধের জন্য নির্দেশনা না-থাকা দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

১৭ এপ্রিল ঝালকাঠির গাবখান সেতু টোলপ্লাজায় সিমেন্ট বোঝাই একটিড ট্রাক সামনে থাকা একটি মিনি ট্রাক, একটি প্রাইভেটকার এবং ৩টি ইজিবাইককে চাপা দেওয়ায় ১৪ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ১৭ জন। এ দুর্ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়। ঈদযাত্রার আলোচিত এ দুর্ঘটনার কারণ জানাতে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এতে জেলা প্রশাসন এবং সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দুটি আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

গাবখান সেতুসংলগ্ন দুর্ঘটনার জন্য ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরোজকে প্রধান করে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিতুল ইসলাম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ঝালকাঠি জোনের সহকারী পরিচালক (প্রকৌশল) মো. মাহবুবুর রহমান ও বুয়েটের এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) সহকারী অধ্যাপক ড. আরমানা সাবিহা হককে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

এ বিষয়ে কথা হলে তদন্ত কমিটির সদস্য বুয়েটের এআরআই’র সহকারী অধ্যাপক ড. আরমানা সাবিহা হক বলেন, অনেক সড়ক দুর্ঘটনার তদন্ত করেছি। কিছু বিষয় ছাড়া সড়কের অবকাঠামো ত্রুটি চিহ্নিত করা হয় না। এ ছাড়া দুর্ঘটনা ঘটলে প্রথমেই চালককে দোষারোপ করি। কিন্তু সড়কের অবকাঠামো ত্রুটির বিষয়টি সামনে আনেন না কেউ।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনা কমাতে হলে শুধু সড়কের উন্নয়ন করলেই হবে না; অবকাঠামোগত ত্রুটিও দূর করতে হবে। তদন্ত প্রতিবেদনে প্রধান কারণ হিসেবে সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকের ওভারলোড এবং অতিরিক্ত গতি দায়ী করা হয়েছে। ট্রাকটির ধারণ ক্ষমতা ১৫ টন হলেও সিমেন্টের পরিমাণ ছিল ২০ টন।

সড়কটিতে সর্বোচ্চ গতিসীমা ৫০ কিলোমিটার হলেও ট্রাকটি ৬৫ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চলছিল। এ ছাড়া ট্রাকচালকের ভারী যান চালানোর লাইসেন্স ছিল না। তিনি ছিলেন বদলি ড্রাইভার। মূল চালক ঈদের ছুটিতে ছিলেন।

সাধারণত বদলি চালকদের দ্রুততম সময়ে ট্রিপ শেষ করার তাগিদ থাকে। সে কারণে এ দুর্ঘটনায় চালকের গাফিলতিও রয়েছে। অন্যদিকে, যেকোনো টোলপ্লাজা ও সড়ক জংশনের ৫শ মিটার আগেই গতি কমানোর নির্দেশনা থাকে। ‘সামনে টোলপ্লাজা, গতি কমান’ এ ধরনের সাইনবোর্ড থাকে।

কিন্তু গাবখান সেতুর ১শ ৩০ ফুট আগে সেই নির্দেশনা ছিল। সে নির্দেশিকাও (সাইনবোর্ড) চোখে পড়ার মতো নয়। টোলপ্লাজায় গতি নিয়ন্ত্রণে ‘রাম্বল স্ট্রিপস’ থাকার কথা থাকলেও সেখানে তা ছিল না। কাজেই এত অল্প দূরত্বের সাইনবোর্ড দেখে চালক গতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি আর সেতু থেকে নামার পর স্বভাবতই গাড়ির গতি বেশি থাকে, যার ফলেই ঘটে এ দুর্ঘটনা।

ড. আরমানা আরো বলেন, ঝালকাঠি ও পিরোজপুরের সড়কে কিছুটা দূরত্ব পরপর ভয়াবহ বাঁক রয়েছে। গাবখান ব্রিজটিও স্পাইরাল কার্ভের মতো। সেতু থেকে নামার পরে সড়কের দুই পাশে ১২ ফুট করে গভীর খাদ রয়েছে। নিয়মানুযায়ী সেখানে প্রতিবন্ধক থাকার কথা থাকলেও এর দেখা মেলেনি।

সড়কের দুই পাশে ১০ মিটার ট্রাভার্সাল ক্লিয়ারিং জোন থাকার কথা। কোনো গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে তা সড়কের পাশে থেকে সেই ক্লিয়ারিং জোনে চলে যাবে। সেখান থেকে গাড়ি নিয়ন্ত্রণে এলে আবার মূল সড়কে এসে চলবে। ঝালকাঠির ওই সড়কের পাশে ক্লিয়ারিং জোন দূরে থাক, সেখানে গড়ে উঠেছে নানা অবকাঠামো।

গাবখানে যে অংশে দুর্ঘটনা ঘটেছিল, তার খুব কাছে ছিল চায়ের দোকান। ট্রাক আরেকটু এগিয়ে গেলে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারতো। এ ছাড়া নিয়মানুযায়ী, সড়কের প্রশস্ত অংশে টোলপ্লাজা হওয়ার কথা। কিন্তু সড়কের সরু অংশে টোলপ্লাজা করা হয়েছে। এটিও ঝুঁকিপূর্ণ। পাশাপাশি সেতু এলাকায় মূল সড়কের পাশে বেশ কয়েকটি সংযোগ সড়ক ছিল।

এ ছাড়া ঝালকাঠির সড়কে থ্রি-হুইলার, নছিমন-করিমন, অটোরিকশাসহ নানা অবৈধ যানবাহন চলাচল করে। এসব যানবাহনের কোনো রেজিস্ট্রেশন নেই। এসব বাহনের চালকেরা হুট করেই আঞ্চলিক মহাসড়কে চলে আসেন। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। এসব যানবাহনে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হয়। ফলে দুর্ঘটনা ঘটলে বেশি প্রাণহানি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।

ঝালকাঠির দুর্ঘটনার পরে তদন্ত কমিটি বেশ কয়েকটি সুপারিশ প্রস্তাব করেছে।

এতে সড়কের যেসব অংশে দুইপাশে গভীর খাদ রয়েছে, সেখানে ভরাট করা; আঞ্চলিক সড়কগুলোর দুইপাশে ট্রাভার্সাল ক্লিয়ারিং জোন তৈরি করা করা; পাশাপাশি যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহনে গতি নিয়ন্ত্রক যন্ত্রাংশ (স্পিড ওয়ার্নিং ডিভাইস) বসাতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

এ ছাড়া সিমেন্টবোঝাই ট্রাকে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত সিমেন্ট পরিবহনের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার কথা বলা হয়েছে। ওই সুপারিশমালায় সড়কে থ্রি-হুইলার বা অনিবন্ধিত যানবাহন চলাচলকে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে এগুলো চলাচল বন্ধের জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ড. আরমানা সাবিহা হক বলেন, গাবখান সেতু এলাকায় মাল্টি ডিসিপ্লিনারি প্রবলেম ছিল। এখানে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের পাশাপাশি বিআরটিএ, হাইওয়ে পুলিশের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। তাদের জনবল সংকট রয়েছে, কিন্তু যে জনবল রয়েছে, তাদের দক্ষতাও কম। সড়ক আইন কার্যকরের বিষয়টি পুলিশের ওপরও বর্তায়। গাবখানে হাইওয়ে পুলিশের কাছে স্পিড রাডার গান ছিল না।

জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম জানান, দুঘটনা রোধে তদন্ত কমিটির সুপারিশগুলো সংশ্লষ্ট দপ্তরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠানো হচ্ছে।

 

;

চলমান তাপদাহ নিয়ে রাজনীতি না করার আহ্বান



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

তাপদাহ নিয়ে রাজনীতি না করার আহ্বান জানিয়েছেন রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদ।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) রাজশাহীর লক্ষ্মীপুরে বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ছাত্রলীগের এই কর্মসূচি দেশজুড়ে হচ্ছে। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি প্রধানমন্ত্রীর একটি নির্দেশনা। সেই নির্দেশনা মেনেই আমরা কাজ করছি। তবে এই যে তাপদাহ এটি নিয়ে যাতে কেউ রাজনীতি না করে। এখানে আমরা সবাই সামাজিকভাবে কাজ করি। এই অনুরোধটি আজকের এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি থেকে সমস্ত রাজনৈতিক বন্ধুদের কাছে রাখলাম।

আসাদ বলেন, ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগের জীবনী শক্তি। শুধু তাপদাহের কারণে বৃক্ষরোপণ করছে তা নয়। এটি ছাত্রলীগের প্রতিবছরের কর্মসূচির অংশ। এই তাপদাহ আমাদের জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। গোটা পৃথিবীর পরিবেশ বিপর্যয়ের ফল আমরা দেখতে পাচ্ছি। একদিকে আমাদের যেমন সামাজিক ভাবে সচেতন হতে হবে, রাজনৈতিক ভাবে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি পরম করুণাময়ের কাছেও প্রার্থনা করতে হবে যেন তিনি আমাদের এই তাপদাহ থেকে রক্ষা করেন।

এদিন রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগ সাবেক সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান সাগরের আয়োজনে ৫ হাজার বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান কামরু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস.এম তৌহিল আল তুহিন, রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান বাবু, সহ-সভাপতি শাহরিয়ার শিমুল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেরাজুল ইসলাম মেরাজ প্রমুখ।

;

ঝিনাইদহ উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন হিরো আলম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সংসদ সদস্য আব্দুল হাইয়ের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ঝিনাইদহ-১ আসনের উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) গণমাধ্যমকে এতথ্য তিনি নিজেই নিশ্চিত করেছেন।

উপ-নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে হিরো আলম বলেন, আমি সৎ ও সাহসী মানুষ। সবাই চায় আমি যেন সংসদ সদস্য হয়ে সবার কথা বলি। সবার পাশে থাকি। তাই ঝিনাইদহ-১ আসনের উপ-নির্বাচনে স্থানীয়রা আমাকে চাচ্ছে। তারা বলেছে, দু-একদিনের মধ্যেই মনোনয়নপত্র তুলবেন। আমি আমার প্রতি তাদের ভালোবাসা দেখে সেখানে উপ-নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি হয়েছি। সেইভাবে প্রস্তুতি চলছে।

তবে শেষপর্যন্ত মাঠে থাকতে পারবেন কিনা তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন আলোচিত এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর।

ঝিনাইদহ-১ আসনের ভোট হবে আগামী ৫ জুন। এ উপ-নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ ৭ মে, মনোনয়নপত্র বাছাই ৯ মে ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৬ মে। প্রতীক বরাদ্দ ১৭ মে ও ভোট হবে ৫ জুন।

এর আগে, জাতীয় নির্বাচনে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে আলোচনায় আসেন হিরো আলম। চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) মারা যাওয়ার পর শূন্য হওয়া ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনেও অংশ নেন তিনি। এই আসনটি রাজধানীর গুলশান, বনানী, ভাষানটেক থানা ও সেনানিবাস এলাকা নিয়ে গঠিত। তবে কোনো নির্বাচনেই তিনি জিততে পারেননি।

;