ছুটিতেই এডিস মশার উৎপত্তি নির্মূলের পরিকল্পনা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমানে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে দেশজুড়ে দীর্ঘমেয়াদী ছুটি চলছে। এতে শহরজুড়ে জনসাধারণ ও যানবাহনের চাপ অনেকটাই কম। ফলে এ সময়কে কাজে লাগিয়ে পুরো ঢাকা শহরকে শতভাগ পরিষ্কার করতে সিটি করপোরেশনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ছুটির মধ্যে এডিস মশার উৎপত্তিস্থল জরুরি ভিত্তিতে পরিচ্ছন্ন করার পরিকল্পনা নিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে মশক নিধন ও ডেঙ্গু প্রতিরোধ সংক্রান্ত এক আন্তঃসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন।

সভা সূত্রে জানা গেছে, সম্ভাব্য ডেঙ্গু মোকাবিলায় সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশনা দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এজন্য এলজিআরডি মন্ত্রীর নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা সংস্থার দায়িত্বশীল প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী জাতীয় বা স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হবে। ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রতিটি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের করণীয় নির্ধারণ করে মন্ত্রীর স্বাক্ষরে একটি আধা সরকারি পত্র পাঠানো হবে। সম্মিলিত উদ্যোগের অংশ হিসাবে দুই সিটি করপোরেশন, ক্যান্টনমেন্ট এলাকা, বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ একযোগে মশক নিধন অভিযান শুরু করবে। স্থানীয় সরকার বিভাগ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সময়সীমা নির্ধারণ করে দিবে।

সভায়  জানানো হয়েছে, ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মশক নিধন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। এ সব প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা যাচাই করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এসময় ঢাকা শহরের খাল-নালাগুলো একযোগে পরিচ্ছন্ন করার স্বার্থে এবং স্থাপনাগুলো পরিচ্ছন্ন করার স্বার্থে সভায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, গণপূর্ত বিভাগ, রাজউক, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দেয়া হয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে মশক নিধন ও ডেঙ্গু প্রতিরোধ সংক্রান্ত আন্তঃসভা অনুষ্ঠিত হয়

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি ভবন, লেক, পার্ক, খাল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, অধিদফতর বা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মশা মারার কাজ করবে সিটি করপোরেশন। দীর্ঘ ছুটির সময় বন্ধ থাকা সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলোতে এডিস মশার উৎপত্তি যেন না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।’

ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ লেকগুলো পরিষ্কার করে দিলে আমরা ওষুধ ছিটাবো, তাহলে মশা মরবে। এটাই সময় একসঙ্গে কাজ করার। আমি ১৫ মে দায়িত্ব পাব, কিন্তু এখন থেকেই কাজ করে যাচ্ছি।’

সভায় কৃষি সচিব জানান, তিনটি প্রতিষ্ঠান কীটনাশক আমদানি করে। তাদের কাছ থেকে যে কেউ কীটনাশক কিনতে পারে। এছাড়া ঢাকার দু’সিটি করপোরেশনকেও সরাসরি কীটনাশক আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

গত ৩০ মার্চ করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে ৬৪টি জেলায় ভিডিও কনফারেন্স করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি করোনা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি মশক নিধন এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য এলজিআরডি মন্ত্রী এবং সিটি করপোরেশনের মেয়রদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ হতে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে এলজিআরডি মন্ত্রী মশক নিধনে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার এলজিআরডি মন্ত্রীর সভাপতিত্বে এ আন্তঃসভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে:

মশার উৎপত্তিস্থল যেমন শহরের সব খাল-নালা, দুটি বাড়ি স্থাপনার মধ্যবর্তীস্থলের অপরিচ্ছন্ন স্থান, কাঁচা বাজার, সরকারি অফিস ও সরকারি আবাসিক স্থাপনা জরুরি ভিত্তিতে পরিচ্ছন্ন করা। এডিস মশার বিস্তার রোধে অফিস ছুটিকালীন সময় সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি দফতরের টয়লেটের কমোড অত্যাবশ্যকীয় বন্ধ রাখতে হবে, নির্মাণাধীন ভবন এবং যেসকল সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা নিজ উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখবে না বা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার অভাবে লার্ভার উপস্থিতি পাওয়া যাবে সে সব ব্যক্তি, স্থাপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে আইন অনুযায়ী জরিমানার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নেতৃত্বে পরিচ্ছন্নতা অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে, প্রয়োজনে প্রতি ওয়ার্ডে ৮টি সাব কমিটি গঠন করে প্রতি কমিটিতে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ২০ (বিশ) জন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি সামাজিক স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করতে হবে। মশক নিধনে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার স্বার্থে মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন ও ঢাকা ওয়াসা সম্মিলিত হয়ে কাজ করবে। দু’সিটি করপোরেশন আগামী সাতদিনের মধ্যে নিজস্ব কর্মপরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে দাখিল করবে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্লান্ট প্রটেকশন ইউনিট কর্তৃক একাধিক উদ্যোক্তা বা আমদানিকারককে আমদানির সুযোগ দেওয়া হলে মশক নিধনে ব্যবহৃত কয়েল, অ্যারোসলের মতো বাজারে তা সহজলভ্য হয়, তাহলে মানুষ স্ব স্ব উদ্যোগে হস্তচালিত মেশিন দিয়ে নিজস্ব আঙ্গিনার মশক নিধন করতে পারবে।

এছাড়া বর্তমানে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে যে দীর্ঘমেয়াদী ছুটি চলমান আছে, এ সময়ের মধ্যে যেহেতু শহরে জনসাধারণ ও যানবাহনের চাপ কম আছে, পুরো ঢাকা শহরকে শতভাগ পরিষ্কার করার সুযোগ সিটি করপোরেশনকে নিতে হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের চলমান পরিচ্ছন্নতা অভিযান সরেজমিন পরিদর্শন করবে। এর বাইরে উভয় সিটি করপোরেশনের ল্যান্ডফিলসহ অন্যান্য স্থাপনা ঢাকা ওয়াসা ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাধীন খাল-নালাগুলো পরিচ্ছন্নতাকরণ কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শন করবে। সংশ্লিষ্ট সব দফতর ও সংস্থা সময় নির্ধারণ করে অবহিত করবে। অতিরিক্ত সচিব (নগর উন্নয়ন) এ কার্যক্রম সমন্বয় করবেন।

   

রাঙামাটিতে অস্ত্রের মুখে জুমচাষীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, রাঙামাটি
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাঙামাটিতে অস্ত্রের মুখে এক জুমচাষীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। বুধবার (১ মে) সন্ধ্যায় জেলার বরকল উপজেলাধীন একনং সুবলং ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ উকছড়ি এলাকায় এই অপহরণের ঘটনা ঘটে। অপহৃত জুমচাষির নাম যতনমনি চাকমা (৪০)।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার রিতেশ চাকমা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, একদল পাহাড়ি সন্ত্রাসী যতনমনিকে তার ঘর থেকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে অজ্ঞাতস্থানের দিকে নিয়ে চলে যায়। এরপর থেকে যতনমনির কোনো খোঁজ পাচ্ছেনা তার পরিবারের সদস্যরা। অপহৃতদের স্বজনদের বরাত দিয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, জেএসএস-এর একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বুধবার সন্ধ্যায় যতনমনি চাকমাকে তুলে নিয়ে যায়।

৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রিতেশ চাকমা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দক্ষিণ উকছড়ির বাসিন্দা জুম চাষি যতনকে কে বা কাহারা তুলে নিয়ে গেছে। এই ঘটনার সাথে কারা জড়িত সেটি তিনি নিশ্চিত নন বলেও জানান।

তিনি আরও জানান, যতনের দুইটি ছেলে সন্তান রয়েছে এবং সে কোনো রাজনৈতিক দল বা আঞ্চলিক সংগঠনের সাথে যুক্ত নয়। এই ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে ভয়ে থানায় কোনো অভিযোগও জানায়নি অপহৃতের পরিবার।

বরকল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিনহাজ মাহমুদ ভূঁইয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, অপহরণের ঘটনা নিয়ে কেউ বা কোনো পক্ষই থানা পুলিশকে অবহিত করেনি।

;

পেকুয়ায় লবণ কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে ২ লবণচাষীর মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কক্সবাজারের পেকুয়ায় লবণ কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে দিদারুল ইসলাম (২৯) ও মোহাম্মদ আরফাত (২২) নামের দুই লবণচাষীর মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) ভোরে উপজেলার কোদাইল্যা দিয়া ও ছরি পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিদারুল ইসলাম কোদাইল্যা দিয়া এলাকার জমির হোসেনের পুত্র ও নিহত মোহাম্মদ আরফাত ছরি পাড়া এলাকার মোহাম্মদ জামালের পুত্র।

নিহত দিদারুল ইসলামের চাচাতো ভাই হাবিব জানান, ভোর রাতে বৃষ্টিপাতের আশংকা দেখা দিলে লবণ মাঠে পলিথিনে থাকা লবণ কুড়াতে যান দিদার, সেখানেই সে বজ্রপাতের শিকার হন। খবর পেয়ে নিহতের স্বজনেরা দ্রুত তাকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন ৷

এদিকে নিহত আরফাতের স্বজনেরা জানান, একইভাবে আজ ভোরে মাঠে লবণ তুলতে গিয়ে বজ্রপাতে আরফাতের মৃত্যু হয়।

বজ্রপাতে নিহতদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম।

মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুস চৌধুরী ও রাজাখালী ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল পৃথক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

থাইল্যান্ড সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন শুরু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

থাইল্যান্ডে ছয় দিনের সরকারি সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে শুরু করেছেন।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।

এর আগে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

ছয়দিনের থাইল্যান্ড সফর শেষে ২৯ এপ্রিল ব্যাংকক থেকে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ২৪ এপ্রিল থাইল্যান্ডে যান প্রধানমন্ত্রী।

বৈঠক শেষে দুই নেতার উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে ভিসা অব্যাহতি, জ্বালানি সহযোগিতা, পর্যটন ও শুল্ক সংক্রান্ত বিষয় এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) আলোচনার বিষয়ে পাঁচটি দ্বিপাক্ষিক নথি সই হয়।

এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী ব্যাংককের জাতিসংঘ সম্মেলন কেন্দ্রে জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে ভাষণ দেন।

 

;

‘এখানে ৩০ টাকায় চুল ছাঁটা হয়’



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চুল মানুষের সৌন্দর্য প্রকাশের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। বাহারি ডিজাইনের চুল কাটতে মানুষ ছুটে যায় সেলুন বা পার্লারে। তবে রাজধানী, শহর, উপশহর ও গ্রামে চুলের কাটিং মূল্যের মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক। স্থান, কাল, ও পাত্র ভেদে নির্ধারিত হয় নাপিতের পারিশ্রমিক। রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরগুলোতর সাধারণ মানের সেলুনে দাঁড়ি-গোফ কাটার মূল্য দিতে হয় শত টাকা, আর চুলের ডিজাইন করতে গুণতে হয় কয়েক’শ টাকা। এ সময়ে এসেও মাত্র ৩০ টাকায় মাথার চুলের নান্দনিক ডিজাইন করে দেন লব শীল।

সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে সামান্য পারিশ্রমিকে খোলা আকাশের নিচে মাটিতে বসে মানুষের মাথার চুল, গোফ, দাঁড়ি সেফ করেন তিনি। তার ভ্রাম্যমাণ সেলুনে চুল কাটার মূল্য ৩০ টাকা, গোফ ও দাঁড়ি সেফ করা হয় মাত্র ২০ টাকায়।

বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) সকালে কলাগাছি গ্রামের রাস্তার ধারে খোলা আকাশের নিচে ভ্রাম্যমাণ সেলুনে কাজ করতে দেখা যায় লব শীলকে।

দাঁড়ি সেফ করতে করতে লব শীল বার্তা২৪.কম’কে বলেন, আমরা পেশায় নাপিত। আমার বাপ দাদারাও এই কাজ করে গেছে, এখন আমিও করছি। আমার দুই ছেলে তারাও এই কাজ বেছে নিয়েছে। বংশ পরস্পরায় আমাদের সবাই এই কাজ বেছে নিয়েছে।

তিনি বলেন, সব পেশাতেই আধুনিকায়নের ছোঁয়া লাগায় এখন আর কেউ খোলা আকাশের নিচে মাটিতে বসে, টুলের উপর বসে দাঁড়ি, গোফ, চুল কাটাতে চায় না। এসবের জন্য গ্রামের মানুষ এখন শহরে ছুটে যান। আগের মতো আমাদের আর কাজ হয় না। দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের পূর্বপুরুষদের এ পেশা। তাই বাপ দাদার আমলের পেশা ধরে রাখতে এখনো কাজ করছি। আধুনিকায়নের যুগে এসে আমাদের পেশা প্রায় বিলুপ্তির পথে।

তিনি বলেন, এখর আর আগের মতো আমাদের আয় রোজগার হয় না। সারাদিনে যা আয় হয় তা দিয়ে পেট চলে না। আমরা খোলা আকাশের নিচে চুল কাটি বলে আমাদের মজুরি মাত্র ৩০ টাকা। গোফ ও দাঁড়ি সেফ করা হয় মাত্র ২০ টাকায়। কিন্তু যখন বাজারে চেয়ারে বসে একই ভাবে চুল কাটে তখন তাদের মজুরি হয় ৭০ টাকা। শুধু পার্থক্য আমরা খোলা আকাশের নিচে আর তারা দোকানের ভেতরে চেয়ারে বসিয়ে চুল কাটে।

তার ছেলেদের এ পেশায় নিয়ে আসছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বার্তা২৪.কম’কে বলেন, আমার ২ ছেলে। আমাদের পূর্বপুরুষদের পেশা ধরে রাখতে আমি তাদেরও এ পেশায় নিয়ে এসেছি। আমার দাদু এ কাজ করেছে, আমার বাবাও করেছে, এখন আমি করছি আর আমার দুই ছেলেও এ পেশায় কাজ করছে। তবে আয় কম হওয়ায় ছেলেরা এভাবে কাজ করতে চায় না বলেও জানান তিনি।

লব শীলের ছেলে গোলক শীলের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ছোট বেলা থেকে দেখছি বাবা সব মানুষের চুল কেটে আসছে। তাই আমরা দুই ভাই ও বাবার পেশা মাথাই তুলে নিয়েছি। আমরা গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে আসেছি, সেখানে দোকান ভাড়া নিয়ে এ পেশা বহাল রাখেছি। আমরা গ্রামে গ্রামে ঘুরি না। গ্রামে কাটলে ভালো মজুরি পাওয়া যায় না কিন্তু শহরে একটা চুল, দাঁড়ি কাটলে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পাওয়া যায়।

;