সুফি মিজান এমনই!



রফিকুল বাহার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে একুশে পদক নিচ্ছেন সুফি মিজান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে একুশে পদক নিচ্ছেন সুফি মিজান

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ৪৯ বছর হলো। ১৯৭৬ সাল থেকে একুশে পদক চালু করা হয়। এ পর্যন্ত ৫০১ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সরকার প্রধান বিশেষ এ রাষ্ট্রীয় পদক তুলে দেন।

উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, প্রত্যেকটি একুশে পদক ১৮ ক্যারটের ৩৫ গ্রাম ওজনের সোনার তৈরি। সার্টিফিকেটের সঙ্গে থাকে নগদ দুই লাখ টাকার চেকও।

সঙ্গীত, নৃত্য, অভিনয়, চারুকলা, মরণোত্তর, গবেষণা, অর্থনীতি, সমাজসেবা, চিকিৎসা, ভাষা ও সাহিত্যের জন্য এসব পুরস্কার মনোনীত করা হয় বিভিন্ন ধাপে। যাঁর জন্য একুশের পদকের প্রস্তাব করা হবে তাঁর বিষয়ে ৩৫০ শব্দের একটি যৌক্তিক ব্যাখ্যা তুলে ধরেন প্রস্তাবক। তারপর জেলা প্রশাসন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্তরের ব্যাপক খোঁজখবর যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয়।

একুশে পদক প্রাপ্তদের সঙ্গে সুফি মিজান

স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে এ পর্যন্ত মাত্র দুইজন শিল্প উদ্যোক্তাকে একুশে পদক দেয়া হয়। প্রথম ব্যবসায়ী শিল্প উদ্যোক্তা হিসেবে মরণোত্তর পুরস্কার পেয়েছিলেন দেশের অন্যতম শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা স্যামসন এইচ চৌধুরী। ২০২০ সালে দ্বিতীয় পুরস্কারটি পেলেন জীবদ্দশায় দেশের আরেক সফল শিল্পপ্রতিষ্ঠান পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। পিএইচপির বাংলা অর্থ হল, ‘সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধির ছায়া।’

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে সুফি মিজানুর রহমান ব্যবসা শুরু করেন ব্যাংক কর্মকর্তার সামান্য চাকরি ছেড়ে। এ পাঁচ দশকেই তিনি গড়েছেন ৩৩টি প্রতিষ্ঠান। যাতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে প্রায় ১০ হাজার কর্মজীবী। তাঁর গড়া প্রতিষ্ঠানগুলো বছরে লেনদেন করে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। সরকারকে ভ্যাট, শুল্ক ও আয়কর বাবদ প্রতিবছর পরিশোধ করে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা।

পরিবারের সঙ্গে সুফি মিজান

সুফি মিজানের জন্ম নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জে। কিন্তু তিনি স্থায়ী নিবাস গড়েছেন বন্দরনগরী চট্টগ্রামের নাসিরাবাদে। তাঁর অধিকাংশ শিল্পপ্রতিষ্ঠানও চট্টগ্রামে। বয়স ৭৬ বছর। উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। সাদা-শুভ্র শ্রুশ্মু। পরনে থাকে সূতির সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি-টুপি। খুব সাধারণ বেশভূষা। রোজা রাখেন বছরের প্রায় অধিকাংশ দিন। করলা ভাজি, ডিম ভাজি, ডাল, কৈ মাছ, ইলিশ মাছ তাঁর প্রিয় খাবার। সদা হাস্যোজ্জ্বল বিনয়ী। পরিচিত কেউ বলতে পারবেন না যে, সুফি মিজানের আগে কখনো তাকে সালাম দিতে পেরেছেন।

সহধর্মিনী তাহমিনা রহমান ছায়ার মতোই আছেন সুফি মিজানের সাথে। বিভিন্ন বক্তব্যে তাহমিনাকে ‘মহিয়সী নারী’ বলে তুলে ধরেন তিনি। সাত ছেলে, এক মেয়ে। ছেলেদের ৪ জন অস্ট্রেলিয়া এবং বাকি ৩ জন আমেরিকা থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু তাদের মধ্যে কেউই বিদেশে স্থায়ী নিবাস গড়েননি। দেশে এসে বাবার গড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর হাল ধরেছেন। ছেলেরাও নতুন নতুন শিল্প গড়ছেন। সুফি মিজান এখনো নিয়মিত প্রতিদিন অফিস করেন। অফিসে ঢুকেই প্রতি ছেলের রুমেই গিয়ে খোঁজখবর নেন, তিনি ছেলেদের ‘আব্বু’ বলেই সম্বোধন করেন সবসময়। বাসায় ফিরে ছেলের বউদের খোঁজখবর যেমনি রাখেন, তেমনি নাতি-নাতনিদের সাথে সময় কাটান। কখনো কখনো স্কুলপড়–য়া নাতি-নাতনিদের শিক্ষকও বনে যান তিনি।

সুফি মিজান

এ বছর মোট ২০ জন্য ব্যক্তি ও দুটি প্রতিষ্ঠানকে একজন একুশে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে ৫ জন মরণোত্তর একুশে পদক পেলেন।

সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে এতো কথা তুলে ধরার একটি কারণ নিশ্চয় আছে। সেটি হলো- ৭৬ বছর বয়সেই একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে বাংলাদশের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পুরস্কার নিতে পেরে তিনি নিজেকে খুবই ধন্য মানছেন। পুরস্কার সুফি মিজানের মতো আরও অনেকেই পেয়েছেন। কিন্তু সফল ব্যবসায়ী হিসেবে জীবদ্দশায় পুরস্কার পাওয়ার ঘটনাটি তাঁর মনোজগতে এক অন্যরকম আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। রাষ্ট্রীয় সম্মান পাওয়ায় জীবনে আরো অনেকদিন বেঁচে থাকার স্পৃহা নতুন শিল্পগড়ার প্রেরণা পাচ্ছেন বলে জানান তিনি। তাঁর পুরস্কার গ্রহণের সময় সঙ্গে ছিলেন সাত ছেলে, একমাত্র মেয়ে এবং তাঁর সহধর্মিনী। ব্যবসায় সাফল্য পাওয়ার সাথে পারিবারিক ঐক্য ও বন্ধন অটুট রাখার এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত সুফি মিজান। তিনি সবসময় আমাদের জন্য অনুকরণীয়-অনুসরণীয়। অতি সাধারণ জীবনযাপন করেও আকাশছোঁয়ার মতো সফলতা অর্জন করেছেন কঠোর পরিমশ্রম, সততা, মেধা ও আন্তরিকতার মাধ্যমে। তাঁর ছেলেরা সবাই একবাক্যে বলেন, ‘আব্বুর মতো পরিশ্রমী কাউকে আমরা দেখিনি জীবনে। এ বয়সেও তাঁর পরিশ্রমের কাছে আমরা সবাই হার মানি।’

 

সবশেষে আমার ছোট্ট একটি অভিজ্ঞতা দিয়ে শেষ করতে চাই। ধান চাষ করেছেন গ্রামের বাড়ি রূপগঞ্জে। ফলন ভালো হয়েছে। সেটি দেখার জন্য আমাকে সঙ্গে নিয়েই চট্টগ্রাম থেকে রওনা হন ফজরের নামাজ পড়ে। রূপগঞ্জে গিয়েই সোনালী ধানের ফলন দেখে আমি মুগ্ধ। তিনি বলেন, ‘শিল্পপতিরা যদি চাষবাদে এগিয়ে আসেন তাহলে বাংলাদেশের খাদ্য ও পুষ্টি সংকটসহ অনেক কিছুরই সমাধান হয়ে যাবে।’ ১৩ বছর আগের ঘটনা এটি। বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

সুফি মিজানের যে অফুরন্ত দম তিনি যে অসম্ভব পরিশ্রমী সেটি বুঝতে পেরেছি সেদিন। ধান ক্ষেত দেখে আমি ফিরি চট্টগ্রামে। তিনি চলে যান ঢাকায়। আমি ফিরে ক্লান্তশ্রান্ত হয়ে রাতে আর প্রতিবেদন তৈরি করতে পারিনি, করেছি পরেরদিন। আসার আগে আমাকে মায়া করে নিজ হাতে খাইয়ে দিয়েছেন। তাকে খেতে বললে তিনি বলেন ‘আমি রোজা রেখেছি’। পরে জানতে পারলাম তিনি ঢাকায় গিয়ে অফিস করেছেন। বিদেশ থেকে আসা অতিথিদের সঙ্গে মাহফিল করেছেন। ১৩ বছর আগে তখন সুফি মিজানের বয়স ছিল ৬৩ বছর। আর তখন আমার বয়স ছিল ৩৮ বছর। সুফি মিজান এমনই, একজন যুবকও যার সঙ্গে দৌড়ে পেরে উঠেন না !

রফিকুল বাহার, আবাসিক সম্পাদক, চট্টগ্রাম, একুশে টেলিভিশন লিমিটেড।

আরও পড়ুন: পিএইচপি পরিবারে কিছুক্ষণ

সুফি মিজানের কণ্ঠে মাইজভান্ডরী গান: ‘মন অহংকারে দিন…..’  

একশো টাকা থেকে বিলিয়নিয়ার, রহস্য কী? (১ম পর্ব)

সাফল্যের মূলে বাবার অনুপ্রেরণা ও স্ত্রীর ভালোবাসা (২য় পর্ব)

একুশে পদক পেলেন সুফি মিজান

   

পাটপণ্যে অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক তুলে নিতে ভারতের প্রতি অনুরোধ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক পাটপণ্যে অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক তুলে নিতে ভারতের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৪ মে) সচিবালয়ে নিজ দফতরে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ অনুরোধ জানান।

এ সময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, বস্ত্র অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. নুরুজ্জামান, জেডিপিসি-র নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাসের রাজনৈতিক কাউন্সিলর পবন বাধে, প্রথম সচিব প্রতিক নেগি উপস্থিত ছিলেন।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী রেশম শিল্পে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের সেন্ট্রাল সিল্ক বোর্ড রেশম পণ্যের সামগ্রিক উন্নয়নে যৌথভাবে কাজ করতে পারে।

সাক্ষাৎ শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী নানক বলেন, বিএনপির ভারতের পণ্য বর্জন ইস্যু নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। তাদের সঙ্গে আমাদের ব্যাবসায়িক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমাদের কাছে তাদের অগ্রাধিকার সবসময়ই থাকবে। ভারতে যদি কোনো পণ্যের দাম কম হয়, মানুষ সেটা কিনবেই, এটা স্বাভাবিক। ভারত থেকে আনার পর যদি আমাদের দেশে সবজির দাম কম হয়, মানুষতো সেটাই কিনবে। ব্যবসায়িক সম্পর্কের সঙ্গে রাজনীতি চলে না। এ ধরনের প্রচারণায় বিএনপি সফল হবে না।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী বলেন, সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ করার জন্যই যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ঢাকা সফরে এসেছেন। তিনি বলেন, ডোনাল্ড লু এসেছেন ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশের অবস্থান বিবেচনায় সরকারের সাথে সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ করতে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সরকারের সম্পর্ক বরাবরই ভালো বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য।

ভারতীয় হাইকমিশনারের সাথে বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান জাহাঙ্গীর কবির নানক।

তিনি বলেন, ভারতের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করতে হাইকমিশনারের সাথে আলোচনা হয়েছে। দ্রুততম সময়ে যাতে বাংলাদেশিরা ভিসা পান, আলোচনা হয়েছে তা নিয়েও।

অন অ্যারাইভাল ভিসার ব্যাপারে আলোচনা হওয়ার কথা উল্লেখ করে নানক বলেন, সৌদি আরব ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করে ফেলেছে। সেক্ষেত্রে ভিসার মেয়াদ দীর্ঘ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ভারতের নির্বাচনের পর এ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।

তিনটি পাটকলে বিনিয়োগ করতে ইতোমধ্যেই ভারত আগ্রহী বলে জানান বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী।

;

রংপুরে গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
রংপুরে গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেফতার

রংপুরে গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেফতার

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুর নগরীতে ১২০ কেজি গাঁজাসহ আব্দুল হামিদ (৪০) নামে এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে মেট্রোপলিটন তাজহাট থানার পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৪ মে) সকাল ১১টার দিকে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে অভিযান চালিয়ে এসব গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার আব্দুল হামিদ কুড়িগ্রমের নাগেশ্বরী উপজেলার ধনিগাগলা এলাকার আজগর আলীর ছেলে।

তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম জানান, একটি কাভার্ডভ্যানে করে গাঁজা পাচার করা হচ্ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এসব গাঁজা উদ্ধার করে। এ বিষয়ে মাদক আইনে মামলা করা হয়েছে।

;

ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান

ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহীতে ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে ১ হাজার ৫৬৩ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ মে) দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের হলরুমে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।

ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক বলেন, গুজবে কান দিবেন না। অতিউৎসাহী হয়ে আইন-শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করা যাবে না। এর আগে গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদের ভোটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভোট প্রদানের পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছিল।

এক্ষেত্রে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। যেন এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়। আমরা আইনের ঊর্ধ্বে নয়, সবাইকে এই বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। তাই আইনের লঙ্ঘন ও ভোটের পরিবেশ নষ্ট করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শামীম আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে কাজ করছে। প্রতিটি প্রার্থী আমাদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। কেউ নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করলে, আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রার্থীদের জন্য যেমন আইন রয়েছে, তেমনি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের জন্যও আইন রয়েছে। সেই আইন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের যথাযথভাবে প্রয়োগ করা আহ্বান জানান তিনি।

কর্মশালায় বলা হয়, ভোটকেন্দ্র নিরাপত্তার চাদরে বেষ্টিত থাকবে। প্রিসাইডিং অফিসারদের নির্ভয়ে অর্পিত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ও স্বচ্ছন্দে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারেন, সেজন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে দূর্গাপুর উপজেলায় ১৪ ও ১৫ মে দুই দিনব্যাপী ৭৫ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৪৯৬ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং ৯৯২ জন পোলিং অফিসারকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।

এছাড়াও ৬৭ টি ভোটকেন্দ্র হিসেবে ধরে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এতে ভোট কক্ষ ধরা হয়েছে ৪৭২ টি। দূর্গাপুর উপজেলায় হালনাগাদ সহ এবারে মোট ভোটার ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৩৩জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮০ হাজার ৫১ জন, নারী ভোটার ৭৯ হাজার ৮৮১ জন এবং হিজড়া ভোটার এক জন।

নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ও দূর্গাপুর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত কর্মশালায় দূর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্বীকৃতি প্রামাণিকের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কল্যাণ চৌধুরী, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শাহিনুর ইসলাম প্রামানিক, পুঠিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজিবুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাচন অফিসার দূর্গাপুর মো. জয়নুল আবেদীন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমন চৌধুরীসহ প্রিসাইডিং অফিসার, দূর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ খায়রুল ইসলাম সহকারীসহ প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারবৃন্দ।

;

খুলনায় ভাইয়ের হাতে ভাই খুন, আহত ৯



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা
খুলনায় ভাইয়ের হাতে ভাই খুন, আহত ৯

খুলনায় ভাইয়ের হাতে ভাই খুন, আহত ৯

  • Font increase
  • Font Decrease

খুলনার রূপসা উপজেলায় এক ভাইয়ের হাতুড়ির আঘাতে আরেক ভাই নিহতের ঘটনা ঘটেছে।

সোমবার (১৩ মে) রাতে উপজেলার ঘাটভোগ ইউনিয়নের বামডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আসন্ন বামনডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রসুল মিনা এবং তার চাচাতো ভাইদের সাথে কথা কাটাকাটি। পরে বাঁশের লাঠি, হাতুড়ি এবং লোহার রড নিয়ে একে অপরের উপর হামলা করে। হামলায় ইকতিয়ার মিনার ছেলে রসুল মিনা (৪২) কে প্রতিপক্ষরা হাতুড়ি দিয়ে মাথায় সজোরে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। পরবর্তীতে আহত অবস্থায় রসুল মিনাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

অপরদিকে ঐ সংঘর্ষে রসুল মিনার ভাই আতাহার মিনা (২৮), ফারুক মিনা (৩২), পান্না মিনা (৩০) জখম হন। অপর পক্ষের আজাদ মিনার পুত্র ইলিয়াস মিনা (৬৫), টুকু মিনার পুত্র মোস্তাক মিনা (৪৫), আমজাদ মিনার পুত্র টুকু মিনা (৭০), ইলিয়াস মিনার পুত্র শাকিল মিনা (২৫), হাবিব মিনা (২৮) এবং আলামিন মিনা (৩৮) জখম হয়।

আহতদেরকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে রূপসা থানা অফিসার ইনচার্জ এনামুল হক বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের এবং বামনডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষে রসুল মিনা নিহত হয়েছে। দুপক্ষ একে অপরের আপন চাচাতো ভাই। মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি। ঘটনার পর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নিহতের দুই মেয়ে এবং এক ছেলে সন্তান রয়েছে।

;