পুষ্পমেলায় ফাগুন হাওয়ায় দুলছে ৫০০ প্রজাতির ফুল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
পুষ্পমেলায় ঘুরছেন এক দম্পতি, ছবি: বার্তা২৪.কম

পুষ্পমেলায় ঘুরছেন এক দম্পতি, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রকৃতিতে বইছে ফাগুনের হাওয়া। ঝিরি ঝিরি বাতাসে দুলছে ৫০০ প্রজাতির ফুল। কাঁটায় ভরা ক্যাকটাস থেকে লাল টুকটুকে গোলাপ, সবই মিলছে একই স্থানে। রাজশাহী নগরীর মনিবাজার চত্বরে পাঁচ দিনব্যাপী পুষ্পমেলায় অজস্র ফুলের সমাহার দৃষ্টি কাড়ছে নগরবাসীর।

ফুলপ্রেমীরা মেলায় আসছেন, কিনছেন ফুলসহ পছন্দের গাছটিও। বাড়ির ছাদ বা বেলকনির টবে সযত্নে ঠাঁই পাবে তা। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলছে মেলা। দিনে স্বাভাবিক ভিড় থাকলেও দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলে মেলাপ্রাঙ্গণে বাড়ছে ভিড়। সন্ধ্যার পর হয়ে পড়ছে জনাকীর্ণ। যেন পুষ্পমেলায় উড়ছে ‘মানবভ্রমর’!

স্টল ঘুরে দেখছেন ফুলপ্রেমীরা

পহেলা ফাল্গুনে ঋতুরাজ বসন্তের আগমনের দিনে বসেছে পুষ্পমেলা। রাজশাহীর বৈকালী সংঘ মেলার আয়োজক। পৃষ্ঠপোষকতা করছে ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড। বৈকালী সংঘ প্রতিবছরই এই মেলার আয়োজন করে থাকে। এবারের আয়োজন ১৫তম। তবে পহেলা ফাল্গুন এবং ভালোবাসা দিবসে শুরু হওয়ায় এবারের মেলার আকর্ষণ ভিন্ন। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি মেলা শেষ হবে।

আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এবছর মেলায় অংশ নিয়েছে ২৪টি স্টল। তারা সমাহার ঘটিয়েছে ৫০০ প্রজাতির দেশি-বিদেশি ফুলের। শুধু গোলাপেরই রয়েছে ২৫০টি প্রজাতি। এছাড়া গাঁদা, সূর্যমুখী, ডালিয়া, রজনীগন্ধা, চন্দ্রমল্লিকা, সাদাপাপড়িসহ ডালিয়া, ক্যানচো, ইনসেফিয়া, পেঞ্জি, পানচাটিয়া, পিটুনিয়া, ইফোরভিয়া, স্টোক, ড্যানথাস, ন্যাশটেশিয়াম, ভারবেনা, কসমস, জিপসি, কানেসান, সিনারিয়া, লিলিয়ামের মতো দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির শত শত ফুল এখন মেলা প্রাঙ্গণ দুলছে বসন্ত বাতাসে।

ফাগুন হাওয়ায় দুলছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এবং সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায় উপচেপড়া ভিড়। সোমবার সকালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে মেলায় এসেছিলেন গোলাপপ্রেমী বিপাশা চৌধুরী। নগরীর টিকপাড়া এলাকায় এই গৃহিণীর বাড়ি।

তিনি জানান, আগের দিন রোববারও তিনি মেলায় গিয়েছিলেন। ৮ প্রজাতির ফুলের গাছ কিনে নিয়ে গেছেন। সোমবার সকালে বাচ্চার স্কুল শেষে আবার এসেছে। এবার কিনবেন শুধু গোলাপ ফুলের গাছ।

গৃহিণী বিপাশা বলেন, ‘আমার বাড়ির ছাদে ৩২ প্রজাতির গোলাপ রয়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির গোলাপ ফুলের গাছ লাগিয়ে ছাদবাগান সমৃদ্ধ করা আমার নেশা হয়ে গেছে। প্রতিবছর মেলা থেকেই নতুন প্রজাতির গোলাপ কিনি। এবার নতুন প্রজাতির মধ্যে সবুজ গোলাপ কিনব।’

পুষ্পমেলায় নারী দর্শনার্থী

মেলায় ঘুরছিলেন রাজশাহী বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. মনিরুল হক ও তার স্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা শিরিন সুলতানা। এই দম্পতি জানান, ১৩ বছর ধরে তারা ছাদবাগান করেন। প্রতিবছরই এ মেলায় এসে নতুন নতুন প্রজাতির ফুলগাছ সংগ্রহ করেন। এবারও বেশকিছু ফুলগাছ কিনতে এসেছেন।

অনুভূতির কথা বলতে গিয়ে ডা. মনিরুল হক বলেন, ‘রাজশাহীতে একসঙ্গে এতো ফুলের সমাহার আর কোথাও হয় না। মেলায় আসলেই চোখ জুড়িয়ে যায়। সুবাসে মন বিমোহিত হয়। সত্যি অসাধারণ!’

এদিকে, মেলায় প্রথম দু’দিনে ভালো বিক্রি হলেও তৃতীয় ও চতুর্থ দিনে বেচাকেনা কম বলছেন স্টল মালিকরা। মেলায় স্টল বসিয়েছেন মেসার্স মায়ের দোয়া নার্সারি। তাদের স্টলে প্রায় ৪০০ প্রজাতির ফুলগাছ রয়েছে। এর মধ্যে গোলাপই আছে ১৩৬ প্রজাতির।

মেলায় রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ

নার্সারির বিক্রয়কর্মী রনি আহমেদ বলেন, ‘সকালের দিকে মেলায় বেশি আসছে ছাত্র-ছাত্রীরা। তারা ঘুরছে, দেখছে; কিনছে কম। তবে বিকেলের পর যারা আসছেন, তারা গাছ কিনছেনও।’

‘আহম্মেদ ভিলা নার্সারি’ শুধু গোলাপেরই প্রজাতি এনেছে ২০০টি। এই স্টলের বিক্রয়কর্মী রাজু আহমেদ বলেন, ‘আমাদের গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার টাকার ফুলগাছ বিক্রি করছি।’

আর ফাল্গুনি নার্সারির মালিক আবদুল বারী জানালেন, ‘তার বিক্রি দৈনিক ১০ হাজার টাকা।’

পুষ্পমেলায় সন্তান নিয়ে এক দম্পতি

মেলায় স্টল দিয়েছে ফুলগাছ ছাড়াও গাছের বীজ, সার, কীটনাশক এবং টব বিক্রির দোকানও। সম্রাট নার্সারি অ্যান্ড বীজ ভাণ্ডার এমন স্টলই দিয়েছেন। এর মালিক এমএ সালাম জানান, তার দোকানে রাসায়নিক ও কীটনাশক সার রয়েছে। কেঁচো কম্পোস্ট সারও আছে। আছে ফুল গাছের বীজও। তারও বিক্রি চলছে বেশ ভালো।

আয়োজক বৈকালী সংঘের সভাপতি মনিরুজ্জামান ছানা জানান, নতুন প্রজন্মকে হাজারো প্রজাতির ফুলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এই মেলার আয়োজন। এর সঙ্গে থাকছে শিশুদের আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন, নৃত্য, দেশের গান ও ছড়ার প্রতিযোগিতার আয়োজন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান মঞ্চে চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

   

বৃষ্টি এলো, বহু প্রতীক্ষিত স্বস্তির বৃষ্টি...



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বৃষ্টি

বৃষ্টি

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ (২ মে) বৃষ্টি হবে; আবহাওয়া অফিস বলেছে। সকাল থেকে শুরু সেই প্রতীক্ষার। দাবদাহে গরমে বিপযর্স্ত দিনগুলো ঘণ্টাগুলো যায় আর মনে করিয়ে দেয় ২ মে বৃষ্টি হবে; বহু কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি।

যে বৃষ্টি ধুয়ে মুছে নিবে তাপপ্রবাহের ক্লান্তি, অবসাদ। সূর্যের উন্মাদনা কমিয়ে দিয়ে গ্রীষ্মের প্রকৃতিতে আনবে প্রশান্তির বার্তা। সকালের চট্টগ্রামের মুষলধারে বৃষ্টি সেই প্রতীক্ষাকে আরো তীব্র করে। রাস্তা-ঘাটে, অফিস-আদালতে, নেট দুনিয়ায়; একটা প্রশ্ন- সবখানে বৃষ্টি কখন?

তারপর এলো স্বস্তি খবর; সন্ধ্যায় রাজধানীর কিছু এলাকায় নাকি মিলেছে বৃষ্টি দেখা! এরপর প্রশ্ন বৃষ্টি কোথায়? অবশেষে এলো বৃষ্টি, বহু প্রতীক্ষীত স্বস্তির বৃষ্টি...। এলো বিদ্যুতের ঝলকানি ও বজ্রপাতকে সঙ্গে করে। দমকা হওয়ায় মুষলধারে ঝরিয়ে ভেজালো রাজধানীকে। দমফাটা রোদ ও গরমের মধ্যে বৃষ্টির ফোঁটা জনমনে এসেছে স্বস্তি।

বৃস্পতিবার (০২ মে) রাত পৌনে ১২টায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হয়। তবে তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি, এরপরও নগর জীবন তপ্ত দাবদাহ থেকে কিছুটা হলেও সাময়িক পরিত্রাণ পেয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রথমের দিকে বৃষ্টিপাত তীব্রতা বেশি থাকলেও ধীরে ধীরে তা কমে এসেছে। এখন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। টানা তাপদহের পর প্রশান্তির বৃষ্টি হওয়ায় গরমের নাভিশ্বাস থেকে একটু হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস এসেছে জনজীবনে।

তাপদাহের মধ্যে বৃষ্টির দেখা পেয়ে ভিজতে রাস্তায় নেমে আসেন এই যুবক

বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর পরই অনেকেই স্বস্তির কথা জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বৃষ্টির খবর জানিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করে ফারিয়া নামের এক তরুণী লিখেছেন, আল্লাহ অবশেষে.. বৃষ্টি, আলহামদুলিল্লাহ কী সুন্দর প্রশান্তির বাতাস!

রবিন নামে এক যুবক বলেন, বৃষ্টির জন্য দীর্ঘ যে প্রতীক্ষা, সেটির অবসান হলো। খুব ভালো লাগছে। তবে আর কিছুক্ষণ বৃষ্টি হলে আবহাওয়া ঠান্ডা হয়ে যেত।

খিলক্ষেতের বাসিন্দা আফসানা আজাদ তমা অনেক দিন পর বৃষ্টির দেখা পেয়ে আত্মীয়স্বজন নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন।

এদিকে, সামাজিক মাধ্যমে দেখা গেছে, রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় প্রশান্তির বৃষ্টিতে বল হাতে বেরিয়েই আল্লাহর সিজদায় লুটিয়ে পড়েছে ছোট্ট একটি শিশু!

শুক্রবারও ঢাকা বিভাগের কয়েক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়ার অধিদফতরের আবহাওয়াবিদন মনোয়ার হোসেন। তবে রাজধানীতে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে তিনি জানান।

এর আগে, আবহাওয়া অধিদফতর বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল। সেই পূর্বাভাস অনুযায়ী আজ ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রামসহ দেশের কয়েকটি জায়গায় বৃষ্টিপাত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত এক মাস ধরে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। সূর্যের প্রখরতায় দিনে-রাতে প্রায় একই তাপমাত্রা পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফলে সূর্য অস্ত গেলেও মানুষের ভোগান্তি কমছে না। রাতের বেলায়ও প্রচণ্ড গরমে সবাইকে হাঁসফাঁস করতে দেখা যাচ্ছে।

;

বালিয়াকান্দিতে স্কাউটিংয়ে শিক্ষার্থীদের ভূমিকা



পারমিস সুলতানা
পারমিস সুলতানা

পারমিস সুলতানা

  • Font increase
  • Font Decrease

স্কাউটিং শব্দটির সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। মানবসেবার ব্রত নিয়ে ১৯০৭ সালে ইংল্যান্ডের ব্রাউন সি দ্বীপে রবার্ট স্টিফেনসন স্মিথ লর্ড ব্যাডেন পাওয়েল অব গিলওয়েলের হাত ধরে যাত্রা শুরু স্কাউট। স্কাউটের শুরুর পথচলায় ২০ জন কিশোর সে সময় থাকলেও সময়ের আবর্তনে এখন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সারা বিশ্বে ৪০ মিলিয়নে। যা বিশ্ব স্বীকৃতিতে ১৬৯টি দেশের আনাচে কানাচে নিরলসভাবে আর্তমানবতার সেবায় স্বেচ্ছাসেবকেরা নিজেদেরকে নিয়োজিত রেখেছেন।

স্কাউটিংয়ের এই কার্যক্রমের ধারায় নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বালিয়াকান্দির প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই রয়েছে স্কাউটিং টিম। এ সকল স্কাউটিংয়ের সদস্যরা তারা নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় নিরলসভাবে নিজেদের নিষ্ঠার সাথে নিয়োজিত রেখেছে।

সম্প্রতি প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে সারা দেশে। তাপপ্রবাহের সাথে রয়েছে তীব্র গরম। বালিয়াকান্দিতে বেশ কয়েকদিন ধরে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রবাহিত হয়েছে। অসহ্য গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে কৃষি ও প্রাণিকূলের ওপরও। সবচেয়ে বেশি কষ্ট আছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষগুলো।

কিন্তু জীবনজীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হতে হয় সাধারণ মানুষের। গরমে পথচারী ও শ্রমিকদের একটু স্বস্তির আশায় শতবর্ষী বালিয়াকান্দি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৫ জনের স্কাউটের একটি দল দুপুরের তপ্ত রোদে দাঁড়িয়ে বালিয়াকান্দি চৌরাস্তায় প্রায় সহস্রাধিক পথচারীদেরকে লেবু, বরফ, চিনি ও ট্যাং মিশ্রিত শরবত খাওয়াচ্ছে। যা সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।

এ সকল স্কাউটিংয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা কখনো তাদের নিজেদের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে কখনো প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। ওদের সামাজিক কার্যক্রমে সহযোগিতার জন্য সমাজের বিত্তবান, সমাজসেবী অথবা মানবিক মানুষগুলোর এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে মনে করছি।

ওদের পাশে যদি আমরা দাঁড়াতে পারি তাহলে স্কাউটিং শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে আত্মমানবতার সেবায় নিয়োজিত রেখে তাদের পরিবার, সমাজ, দেশ তথা বিশ্বের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে । স্কাউটিংয়ের শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে আসুন আমরা জাগ্রত করি আমাদের বিবেক, আরেকবার প্রমাণ হোক ‘মানুষ মানুষের জন্য’।

লেখক: পারমিস সুলতানা, পিএইচডি গবেষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, বালিয়াকান্দি, রাজবাড়ী

;

উড়ছে রঙিন ঘুড়ি



ছাইদুর রহমান নাঈম, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চাঁদনী রাতে চারপাশ থেকে ভেসে আসে বাঁশির শব্দ। বৈশাখী রাতের বাতাস আর এ-শব্দ মিলেমিশে মুগ্ধ করে মনকে। সকাল থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যাবেলা। আকাশে দেখা মিলছে ঘুড়ির। বিশেষ করে বিকালের নীল আকাশে যেন ঘুড়ির রাজত্ব। রাতে মনে হয় আকাশে যেন বিমান খেলা করছে। নিভু-নিভু আলো জ্বলে আকাশে। কখনো মনে হবে বড় সাপ, চিল, ঈগল, ঘর উড়ছে ওখানে। কখনো মনে হবে দৈত্য-দানব আকাশে উড়ছে! আসলে এগুলো বিভিন্ন ডিজাইনের ঘুড়ি।

আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের অংশ এই ঘুড়ির দেখা মেলে এখনো কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলায়। প্রতিদিন আকাশে দিনেরাতে দেখা যায় হরেক রকমের ঘুড়ি৷। উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এমনি দৃশ্য দেখা যায়৷

বাংলার সংস্কৃতি থেকে হারিয়ে যেতে চলা ঘুড়ি উৎসবে সববয়সী মানুষ মেতেছেন। বিভিন্ন পাড়া, মহল্লার আকাশে এখন রঙবেরঙের ঘুড়ি। শিশু-তরুণ-যুবক এমনকি মাঝ বয়সীরাও স্বাদ নিচ্ছে ঘুড়ি উড়ানোর। শুধু দিনেই নয়, রাতের আকাশেও দেখা মিলছে ঝলমলে ঘুড়ির।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে উপজেলায় ঘুড়ি বানানোর ধুম পড়েছে। আকাশে চোখ মেললেই ঘুড়ির লড়াইয়ের দৃশ্য, চলছে কাটাকাটির খেলা। ঘুড়ির মধ্যে লাইটিং করা হচ্ছে। রাতের আকাশে অনেক রকমের আলো ঝলমল করছে। কটিয়াদী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দিন-রাত ছোট-বড় নানাবয়সী ঘুড়িপ্রেমী মেতেছেন এই ঘুড়ি উৎসবে। বর্তমানে চাহিদা বাড়ায় প্রকারভেদে দুইশ থেকে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব ঘুড়ি। প্রতিদিন আকাশে দিন-রাত্রি উড়তে দেখা যাচ্ছে- চিল, কয়রা, ঢোল, পতিঙ্গা, পাখি, পরি, বাচ, ফুল, প্রজাপতি, মানুষ ঘুড়ি, সাপাসহ রংবেরঙের ঘুড়ি।

মসুয়া ইউনিয়নের বৈরাগিচর এলাকার ঘুড়িপ্রেমী ইদ্রিস বলেন, গ্রামে ঘুড়ি তৈরিতে যুবকরা ব্যস্ত সময় পার করছে। সাধারণত যেকোনো ডিজাইনের একটি ঘুড়ির দাম একশ থেকে পাঁচশ টাকা পর্যন্ত। বাঁশ, বেত এবং বিভিন্ন রঙের প্লাস্টিক-কাগজের মোড়কে ঘুড়ি বানানো হয়। আবার কেউ ঘুড়িতে বাতি লাগিয়ে নিয়ে রাতের আকাশে উড়াচ্ছেন।

জনশ্রুতি আছে, ব্রিটিশ আমলে অভিজাত লোকদের বিনোদনের জন্য ঘুড়ি উড়ানোর আয়োজন করা হতো। ১৭৪০-এর দশকে নায়েব-এ-নাজিম নওয়াজেশ মোহাম্মদ খানের আমলে ঢাকায় ঘুড়ি উড়ানো উৎসব একটা ঐতিহ্যে পরিণত হয়। তখন থেকেই কিশোরগঞ্জের খোলা আকাশে অনেক ঘুড়ি উড়তে দেখা যায়।

;

মামুনুল হকের মুক্তি আবারও পেছাল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের আজ বৃহস্পতিবার মুক্তির কথা ছিল। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে আজ রাতে হচ্ছে না মামুনুল হকের মুক্তি।

এদিকে, কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মাওলানা মামুনুল হক মুক্তি পাবেন এমন খবরে হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কারা ফটকের সামনে গিয়ে ভিড় জমান।

কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, আজ মামুনুল হককে মুক্তি দেওয়া সম্ভব হবে না। তার জামিনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই চলছে।

এর আগে, গত ১১ মার্চ মামুনুল হকের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠক করেন হেফাজত নেতারা। ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খানসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সংগঠনটির মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান দাবি করেন, মামুনুল হকের মুক্তির বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। খবর পেয়ে হেফাজতের স্থানীয় নেতাকর্মীরা রিসোর্টে গিয়ে ভাঙচুর চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। ঘটনার পর থেকে ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় অবস্থান করেন মামুনুল হক।

১৫ দিন পর ১৮ এপ্রিল ওই মাদরাসা থেকে মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় তার বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের মামলা করেন তার সঙ্গে রিসোর্টে অবরুদ্ধ হওয়া নারী। যদিও ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক। এরপর ওই মাসেই দেশের বিভিন্ন স্থানে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহসহ অর্ধশতাধিক মামলা হয়েছে। পরে সেসব মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতারের পর থেকে এসব মামলায় তিনি কারাগারে আছেন।

;