হাইব্রিড ধানের দাপটে বিলুপ্তির পথে বরিশালের বালাম চাল



জহির রায়হান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
বালাম ধান, ছবি: বার্তা২৪.কম

বালাম ধান, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

এক সময়ে ঐতিহ্যবাহী চিকন বালাম চালে বিখ্যাত ছিল বৃহত্তর বরিশাল। প্রাচীনকাল থেকেই দক্ষিণাঞ্চলে নদীবিধৌত পলিসমৃদ্ধ জমিতে রোপা আমন মৌসুমে বালাম ধানের চাষ হতো। সুস্বাদু এই বালাম চালের ভাত খেয়ে তৃপ্ত হতেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ।

কথিত আছে, বালাম চাল দেখে অবাক হয়েছিলেন চীনের পর্যটক হিউয়েন সাং। এছাড়াও বাংলার চালের ভূয়সী প্রশংসা করেন মরক্কোর পর্যটক ইবনে বতুতা। সে সময়ে এলাকার কৃষকদের বালামি উপাধি দিয়েছিলেন খাদ্য রসিকরা। কিন্তু ২০/২৫ বছর আগেও বালাম ধান-চালের অস্তিত্ব মিললেও তা এখন বিলুপ্ত।

কম ফলন আর অধিক সময়ে উৎপাদিত বালাম ধানের জায়গায় দখল করে নিয়েছে কম সময়ে অধিকতর ফলনশীল উফশী ও হাইব্রিড জাতের ধান। বছরের তিন মৌসুমে হাইব্রিড জাতের ধানের অধিক ফলনে খুশি আর লাভবান হওয়ায় বালাম ধান আবাদে আগ্রহ নেই কৃষকদের। ফলে বরিশাল থেকে হারিয়ে গেছে বালাম ধানের অস্তিত্ব।

এছাড়াও এখন আর শোনা যায় না 'বাংলাদেশের অভাব কী ভাই বাংলাদেশের অভাব কী/বরিশালের বালাম চাল আর ঢাকার আছে গাওয়া ঘি।' বরিশালের ধান নিয়ে রচিত এই গানটি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বরিশাল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতার পর থেকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির অনুপাতে খাদ্যের জোগান দিতে বাড়তি চালের উৎপাদন অনিবার্য হয়ে পড়ে। এ কারণে আস্তে আস্তে কমতে থাকে বরিশালের স্থানীয় বালাম ধান। বাড়তে থাকে উচ্চ ফলনশীল উফশী ও হাইব্রিড ধানের চাষ। এ কারণে এ অঞ্চলের মাঝারি উঁচু জমিতে আমন মৌসুমে চাষ উপযোগী বালাম ধানের জায়গা দখল করে নেয় এসব উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাতের ধান।

আরো জানা গেছে, বাংলাদেশ ধান গবেষণা অনুযায়ী ধান উৎপাদনে বছরের তিন মৌসুমে ( রবি, খরিপ-১ ও খরিপ-২ ) শতাধিক উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষ করা হচ্ছে।

প্রতি বছরের ১৬ অক্টোবর থেকে ১৫ মার্চ মাস পর্যন্ত রবি মৌসুম বোরো ধান, ১৬ মার্চ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত আউশ ধান এবং ১ জুলাই থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত আমন ধানসহ বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করছেন কৃষকরা।

বালাম ধানের ক্ষেত

জেলায় বর্তমানে বালাম ধানের পরিবর্ততে অল্প জমিতে বিআর-১৬ জাতের শাহী বালাম নামে আরেক ধানের চাষ করছে কৃষকরা। যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ধান মৌসুমে শুধু উজিরপুরে ২০ হেক্টর ও গৌরনদী উপজেলায় ৫৫ হেক্টর জমিতে এ শাহী বালাম ধানের চাষ করেছে কৃষকরা।

এর আগে একটা সময় বানারীপাড়া উপজেলার নলেশ্রী, দিদিহার, দাণ্ডয়াট, বাইশারী, মসজিদ বাড়ী, আউয়ার কালি বাজার, খোদাবকশ, চাখার, বাকপুর, ঝিরাকাঠি, চালতাবাড়ী, চাউলাকাঠি, কাজলাহার, ব্রাহ্মণকাঠি, জম্বু দ্বীপসহ জেলার বিভিন্ন গ্রামের ৯৫ ভাগ কৃষক ঐতিহ্যবাহী সেই চিকন বালাম ধান-চালের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন।

বানারীপাড়ার আলী আজগর নামে ষাটোর্ধ বয়সী এক কৃষক বার্তা২৪.কমকে জানান, 'প্রায় ২০/২২ বছর আগে এক বিঘা জমির উপরে চিকন বালাম ধান চাষ করতাম। দিনে দিনে বালাম চাষ করে লোকসান আর কম ফলন হওয়ায় বালাম ধান চাষ করা বাদ দিয়ে দেই। এরপর সন্তানরা হাইব্রিড ধান চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ে। হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করে কোনো রকম খরচ পুষিয়ে মোটামুটি ভালোই লাভ হচ্ছে।'

নগরীর ফরিয়াপট্টির মা বাণিজ্য ভাণ্ডারের আড়ৎদার লিটন সরকার বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'বরিশালের সেই আসল বালাম চাল এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে সেই ঐতিহ্যবাহী বালাম চালের বদলে এখন আমন বালাম বিক্রি হচ্ছে দোকানগুলোতে।'

বরিশালের সাংবাদিক ও বিশ্লেষক সুশান্ত ঘোষ বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্থানীয় মলঙ্গা বালাম চালে বিখ্যাত ছিল বরিশাল। কিন্তু দিনে দিনে কৃষকদের বালাম ধান চাষে আগ্রহ কমে যাওয়ায় এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী এই বালাম ধান এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বরিশালের ইতিহাস-ঐতিহ্য রক্ষায় বালাম ধানের অস্তিত্ব পুনরায় ফিরে পেতে কৃষকের পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসা উচিত বলেও মনে করছেন তিনি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বরিশালের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, এক সময়ের স্থানীয় বালাম জাতের ধান চাষ হতো বরিশালে। কিন্তু বালাম ধান কম ফলনশীল আর অধিক সময় ধরে উৎপাদন হওয়ায় কৃষকের মাঝে অনাগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।

অন্যদিকে বছরের তিন ধান মৌসুমে কম সময়ে উচ্চ ফলনশীল উফশী ও হাইব্রিড জাতের ধান উৎপাদন বাড়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। ফলে কৃষকরা বাধ্য হয়েই পুরানো ঐতিহ্য ভুলে নিজেদের অল্প জমিতে অধিক ফসল পেতে উফশী ও হাইব্রিড জাতের ধান চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েন। এসব কারণে বরিশাল থেকে বালাম ধান-চাল হারিয়ে গেছে।

তিনি আরো বলেন, দেশের খাদ্য ঘাটতি কমাতে অল্প সময়ে উচ্চ ফলনশীল ধান উৎপাদন করার জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা৷

   

ফের রণক্ষেত্র বরিশালের নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দ্বিতীয় দফায় ভাঙচুর ও মারামারিতে ফের রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে বরিশালের নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকা। এ সময় টার্মিনাল এলাকায় থাকা প্রায় অর্ধশতাধিক মহেন্দ্র ও সিএনজি, অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়েছে এবং শ্রমিকদের পিটিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষ।

শনিবার (৪ মে) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় সংঘটিত দ্বিতীয় দফা এই হামলা ভাঙচুর ঘটনা ঘটে। এতে ১৫-২০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লার সব বাস চলাচল। মহাসড়ক অবরোধ করে রাখায় অন্যান্য যানবাহন চলাচলও বন্ধ। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন অভ্যন্তরীণ ছয় জেলার ১৩টি রুটের যাত্রীরা।

বরিশা‌লের কেন্দ্রীয় বাস টা‌র্মিনাল নথুল্লাবা‌দে শ্রমিক ইউনিয়নের দু'পক্ষের সংঘর্ষে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। সাবেক ও বর্তমান মেয়র অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ দু-চারদিন পরপরই অচল করে দেয় এই টার্মিনাল এলাকা। এতে ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ যাত্রীদের। তাই বেশিরভাগ যাত্রীদের দাবি বাস টার্মিনাল এলাকা রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ মুক্ত রাখা হোক এবং বাস শ্রমিক বা মালিক নয় এমন নেতাদের বাস টার্মিনাল থেকে দূরে রাখার দাবি করেন তারা।

শনিবার বেলা ১২টার পর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানান যাত্রী, শ্রমিক ও পুলিশ প্রশাসন।

এ সময় প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুপুর ১২টার দিকে মাদারীপুরগামী একটি বাস যাত্রী নিয়ে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল। ওই সময় একটি মোটরসাইকেল বাসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকলে সাইড নেওয়ার জন্য বাসের চালক হর্ণ বাজায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মোটরসাইকেল আরোহী নুরুল ইসলাম বাবাই নামের এক নেতা ও তার সহকারী বাসের চালককে মারধর করে। আর তাকে বাঁচাতে আরেকজন বাস শ্রমিক এগিয়ে গেলে তাকেও মারধর করা হয়।

এ সময় শ্রমিকদের একজন জানান, বাসচালক শাকিল ও সৌরভকে মারধর করা হয়েছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এ সময় তারা বিক্ষোভ করে এবং হামলাকারীদের আটক করে মারধরের চেষ্টাও করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী একজন যাত্রী জানান, শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে একপর্যায়ে টার্মিনালের সামনের বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন। পাশাপাশি টার্মিনাল এলাকায় থাকা বেশকিছু ব্যানার পোস্টার ভাঙচুর করে। পরবর্তীতে দীর্ঘ আলোচনা শেষে সমঝোতার আশ্বাসে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিত স্বাভাবিক হলেও সন্ধ্যার পর তা পুনরায় অশান্ত ও রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

এ বিষয়ে বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী কবির সাংবাদিকদের বলেন, সন্ধ্যার দিকে ঘটনা সমাধান করে বাস চলাচলের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ সময় আবার বাস ও থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে ঝামেলা হয়। এ কারণে সন্ধ্যা সোয়া ৭টা পর্যন্ত বাস চলাচল শুরু হয়নি বলে জানান তিনি।

এর আগে দুপুরের ঘটনায় আহতরা জানান, যে বহিরাগতরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন, তারা বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নব নির্বাচিত সভাপতি কাজী কবিরের ঘনিষ্টজন। কবিরের লোকজন কিছুদিন ধরেই নথুল্লাবাদ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

এ বিষয়ে বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম ফকির সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সময় তিনিসহ নেতাকর্মীরা টার্মিনালের ভেতরে অফিস কক্ষে ছিলেন। চালকের ওপর হামলার খবর শুনে তাৎক্ষণিক তিনি ঘটনাস্থলে আসেন। পরে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠান।

তিনি বলেন, কি ঘটনায় হামলা তা আমি জানি না, তবে বহিরাগতরা এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। ভবিষ্যতে কেউ টার্মিনালের ভেতরে বহিরাগতদের নিয়ে আসতে পারবে না এবং কোনো প্রশ্রয়ও দিতে পারবেন না। আর এর ব্যত্য়য় ঘটলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আর শ্রমিকের গায়ে কেউ হাত দিতে পারবেন না, দোষ করলে আমাদের বলবেন আমরা ব্যবস্থা নেবো।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার ফারুক হোসেন সাংবাদিকদের জানান, নথুল্লাবাদে শ্রমিক ইউনিয়নের দুই পক্ষের মধ্যে অনেকদিন ধরে সমস্যা আছে। পাল্টাপাল্টি কমিটি থাকলেও উভয় কমিটিরই টার্মিনাল এলাকায় বর্তমানে সেবামূলক কোনো কার্যক্রম নেই। এখানে শ্রমিক ইউনিয়নের যে অফিস ছিল সেটি মে দিবস উপলক্ষে একপক্ষ খুলে দেয়। এতে অন্য পক্ষের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে এর আগেও দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় টার্মিনালের ভেতরে দুই পক্ষের মারামারি হয়। একপর্যায়ে তারা সড়কে এসে অবরোধ করে।

তিনি আরো বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দুইপক্ষের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়, যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।

;

জামালপুরে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, জামালপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় বজ্রপাতে আব্দুল মজিদ (৫৫) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৪ মে) রাত ৮ টার দিকে উপজেলার সাপধরী ইউনিয়নের কটাপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মজিদ ওই এলাকার বাসিন্দা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাপধরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলম মন্ডল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যার দিকে মাঠের কাজ করে বাড়িতে ফিরছিলেন আব্দুল মজিদ। একপর্যায়ে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। ওইসময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। তার মৃত্যুতে পরিবারের শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

;

পানিতে ডুবে নিহত ভাতিজিকে দেখতে গিয়ে ফুফুর মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, সিলেট
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পানিতে ডুবে নিহত ভাতিজিকে দেখতে যাওয়ার পথে ব্যাটারিচালিত (টমটম) উল্টে মারা গেলেন ফুফু। এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে সিলেটের কানাইঘাটে।

শনিবার (৪ এপ্রিল) কানাইঘাটের দিঘীরপার পূর্ব ইউনিয়নের মাঝর গ্রামের হাফিজ আব্দুল আহাদের ৩ বছর বয়সী মেয়ে পানিতে ডুবে মারা যায়। ভাতিজির মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে মেয়েটির ফুফু একই ইউনিয়নের দর্পনগর পশ্চিম (নয়াগ্রাম) আব্দুস শহীদের স্ত্রী রুকিয়া বেগম (৩০) বাবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

পথিমধ্যে সড়কের বাজার এলাকায় ব্যাটারিচালিত (টমটম) উল্টে রুকিয়া বেগমসহ তিনজন আহত হন। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সিলেটে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে গেলে রুকিয়া বেগম সেখানে মারা যান।

ফুফু ও ভাতিজির মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরী।

এ ব্যাপারে কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, ‘বাবার বাড়িতে যাওয়ার পথে রুকিয়া বেগম টমটম উল্টে আহত হন।পরবর্তীতে সিলেটে একটি প্রাইভেট হাসপতালে নিয়ে গেলে সেখানে তিনি মারা যান।’

তিনি বলেন, ‘শুনেছি পানিতে পড়ে তার ভাতিজি মারা গিয়েছে। তাকে দেখতে যাওয়ার পথে এই ঘটনা ঘটেছে।

;

নোয়াখালীতে ভুল চিকিৎসায় মা ও নবজাতকের মৃত্যু, হাসপাতাল ভাংচুর



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর মাইজদীতে সিজার অপারেশনের সময় ভুল চিকিৎসায় মা ও নবজাতক সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। নিহত সীমা আক্তার (২১) বেগমগঞ্জের কাদিরপুর ইউনিয়নের লন্ডন মার্কেট এলাকার জহির উদ্দিনের স্ত্রী ও নোয়াখালী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউসুফ সওদাগর বাড়ির মো.হারুনের মেয়ে।

শনিবার (৪ মে) বিকেলের দিকে মা ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এর আগে, শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে জেলা শহর মাইজদীর হাউজিং রোডের মাইজদী আধুনিক হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার এ অভিযোগ উঠে। পরে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনায় হাসপাতালে ভাংচুর চালান নিহতের স্বজনেরা।

নিহতের চাচাতো ভাই মো.নাঈমুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে সীমার স্বজনরা তাকে মাইজদী আধুনিক হসপিটালে নিয়ে যান। এ সময় দুপুর ২টার দিকে চিকিৎসক আশিকা কবির তাকে সিজার করেন। সিজার করার সময় তার ভুল অপারেশনে জরায়ুর রক্তনালী কেটে যায়। এতে তার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়। কিন্ত ডাক্তার তাৎক্ষণিক বিষয়টি গোপন রাখে। পরে একই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে রোগীর অবস্থা বেগতিক দেখে রোগীকে ঢাকায় রেফার্ড করেন। ঢাকা মেডিকেলে পৌঁছলে বিকেল পৌনে ৬টায় মা ও বিকেল ৪টা ১০ মিনিটের দিকে চট্রগ্রামের একটি হাসপাতালে নবজাতককে মৃত বলে ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী মাইজদী আধুনিক হাসপাতালে ভাঙচুর চালায়।

মাইজদী আধুনিক হাসপাতালে চেয়ারম্যান রফিকুল বারী আলমগীর অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, এটা নিয়ে আমরা রোগীর স্বজনদের সাথে বসেছি। কোনো ডাক্তারই ইচ্ছাকৃত ভাবে কাউকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়না।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নোয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা.মাসুম ইফতেখার বলেন, অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: নুসরাত নাঈম জাবিনকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে

;