চট্টগ্রামে বাড়ছে মনোরোগ!



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
মনোরোগের মানসিক বিশৃঙ্খলা, ছবি: প্রতীকী

মনোরোগের মানসিক বিশৃঙ্খলা, ছবি: প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা বাড়ানোর দাবি জানানো হচ্ছে অনেক দিন ধরেই। ঢাকার পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী চট্টগ্রামে মনোরোগ বৃদ্ধি ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতা নিয়ে নাগরিকদের অভিযোগেরও অন্ত নেই।

চট্টগ্রামের ৮০ লাখ নাগরিকের মধ্যে প্রায় ২০ লাখ মানুষ মানসিক সমস্যায় ভোগেন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। যার মধ্যে কমপক্ষে ৬ লাখ মানুষ গুরুতর ভাবে সমস্যাগ্রস্ত।

মনোবিশ্লেষক নাট্যবিজ্ঞানী মোস্তফা কামাল যাত্রা চট্টগ্রামের মানসিক সমস্যার বিস্তার নিয়ে বার্তা২৪.কম-কে বলেন, চট্টগ্রামে মনোরোগের প্রকোপ বাড়লেও এখানে যোগ্য চিকিৎসক নেই। পরিবার, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে পড়ানো হয় না। মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কর্নার নেই কোথাও। চট্টগ্রাম মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার নিরিখে বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে রয়েছে।

মোস্তফা কামাল যাত্রা, যিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক এবং সমাজ উন্নয়নমূলক সংস্থা 'উৎস'র নির্বাহী পরিচালক বার্তা২৪.কম-কে বলেন, চট্টগ্রামের বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য ৮/১০ জনের বেশি যোগ্য মনোচিকিৎসক নেই। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগে মাত্র একজন চিকিৎসক রয়েছেন। অথচ সেখানে শত শত মানসিক সমস্যাগ্রস্ত রোগী প্রতিদিন আসেন। তাদের সুষ্ঠু চিকিৎসা প্রদান করাও সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি বলেন, মানসিক রোগ সম্পর্কে সচেতনতা না থাকায় অনেকেই রোগ পুষছেন। সামাজিক ও পারিবারিক বদনামের ভয়ে অনেকে মানসিক সমস্যার উপযুক্ত চিকিৎসা না করে চেপে রাখেন। ফলে ব্যক্তিজীবনে ও সমাজে এর মারাত্মক কুফল দেখা যাচ্ছে।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, শিশু-কিশোর বয়সের মানসিক আঘাত, সুপ্ত মানসিক ব্যাধি, নেতিবাচক অভিজ্ঞতা, যৌন ও মানসিক পীড়নের ঘটনার স্মৃতি বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রবল হয়ে স্থায়ী মনোরোগে পরিণত হয়। যুবক ও মধ্য বয়সীদের মধ্যে এসবের তীব্র প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয়। হতাশা, নেশা, বিষন্নতা, একাকিত্ব, ঘুমহীনতা, অস্থিরতা, স্নায়ুবৈকল্য ইত্যাদি প্রকট আকার ধারণ করে ক্রনিক লেভেলের মানসিক রোগ বৃদ্ধি পায় অনেকের মধ্যেই। আক্রান্তদের মধ্যে আচরণগত ভারসাম্যহীনতা, সামাজিকরণ অক্ষমতা এবং আত্মঘাতী প্রবণতাও বৃদ্ধি পায়।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মানসিক সমস্যার যেমন শারীরিক প্রভাব আছে, তেমনি শারীরিক সমস্যারও মানসিক প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কিন্তু তা নিরসনে পরিবার, সমাজ ও সরকারের নীতি ও কর্মপরিকল্পনায় যথেষ্ট উদাসীনতা রয়েছে। সিলেবাস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানসিক স্বাস্থ্যের পরিচর্যার নানা দিক তুলে ধরা হয় না। ফলে স্বাভাবিক শিক্ষাজীবনের মধ্যেই মানসিক স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উপেক্ষিত থাকে, যা কখনও কখনও ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে বিরাট ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

নেশা, হিংসাত্মক আচরণ, ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম ছাড়াও মানসিক সমস্যাগ্রস্তরা আত্মহত্যার মতো ক্ষতিকর পথ বেছে নেয়। নিজের জীবনের পাশাপাশি পরিবার-পরিজনের জীবন বিষিয়ে তুলে। এসব সমস্যা নিয়ে বহু পারিবারিক অশান্তি ও সামাজিক উত্তেজনার সৃষ্টি হওয়ারও রেকর্ড রয়েছে।

ক্রমবর্ধমান হারে বিভিন্ন বয়সের অসংখ্য মানুষ মানসিক রোগ ও ট্রমায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অন্যতম স্বাস্থ্য চ্যালেজ্ঞ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। চট্টগ্রাম দ্রুত বর্ধনশীল ও বাণিজ্যভাবে অতি সচল জনপদ হওয়ায় এখানে মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা ও সেবার দিকটি অধিক গুরুত্বের দাবি রাখে।

বিশেষত, বিশ্বব্যাপী মানসিক রোগের ক্রমবর্ধমান বিস্তারের খবরও সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, মানসিক রোগের প্রকোপের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল। ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানসিক রোগাক্রান্ত মানুষের দেশ।

আরও পড়ুন: দক্ষিণ এশিয়া: মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক অঞ্চল

এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য আগাম সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বড় বড় শহরগুলোতে বিনোদন কেন্দ্র ও নিরাপত্তা বলয় জোরদার করে নাগরিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষা করা অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিলেবাসের পাঠ্যক্রমে মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা বিধি সংযুক্ত হওয়াও দরকার। দরকার মনোরোগ চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞের সংখ্যা বাড়ানো।

নগর পরিকল্পনায় বর্তমানে অনেক ইস্যু যুক্ত হলেও মানসিক স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি নেই। ঢাকা ও চট্টগ্রামকে পরিবেশ-বান্ধব করার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য-বান্ধব করার বিষয়েও সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগী হওয়ার তাগিদ দিয়েছে নাগরিক সমাজ।

চট্টগ্রামে বিগত কয়েক বছরে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর কিশোর অপরাধের বিশ্লেষণে দেখা যায়, মনস্তাত্ত্বিক বিশৃঙ্খলা থেকে অনেকেই মারাত্মক কাণ্ড ঘটিয়ে বসেছে। ফলে পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংস্থার পক্ষ থেকে বিভিন্ন বয়সী নাগরিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের পরীক্ষা ও চিকিৎসার সেবা বাড়ানোর আশু প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।

মনোবিশারদগণ মনে করেন, উন্নয়ন ও যান্ত্রিকরণের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ফলে দিনে দিনে যেভাবে মনোরোগ ও মানসিক সমস্যা বাড়ছে, তাতে এ বিষয়ে যথাযথ মনোযোগ দেওয়া অপরিহার্য। নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের সময় মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসার বিষয়টিকে জরুরিভাবে গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টি এখন বিদ্যমান বাস্তবতার দাবি।

   

রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ ৪৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি মৌসুমের সব রেকর্ড ছাপিয়ে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) বেলা তিনটায় এ তাপমাত্রা রেকর্ড করে চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৩ শতাংশ। এটিই চলতি মৌসুমে সারাদেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

এর আগে ২০১৪ সালের ২১ মে চুয়াডাঙ্গা জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্থানীয় আবহাওয়া অফিস বলছে, ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।

;

নড়াইলে প্রচণ্ড গরমে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১২ শিক্ষার্থী অসুস্থ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নড়াইল
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রচণ্ড গরমে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১২ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় স্কুল ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার ইতনা মাধ্যমিক বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক ডেকে এনে শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

অসুস্থ শিক্ষার্থীরা হলো- ৭ম শ্রেণির সাহারা, রেজোয়ান, ৮ম শ্রেণির সিহাব, সোহাগ, অনামিকা, বায়োজিদসহ ১২ জন শিক্ষার্থী।

জানা গেছে, প্রচন্ড গরমের কারণে সকাল সাড়ে ১০টা থেকেই ইতনা মাধ্যমিক বিদ্যালয় এন্ড কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ বোধ করছিল। বেলা ১১টা পর্যন্ত ৭ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বিদ্যালয়ে চিকিৎসক এনে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা অশোক ঘোষ জানান, রোজা, ঈদ ও গরমের কারণে দীর্ঘ ছুটির পর রোববার (২৮ এপ্রিল) স্কুল খুলেছে। স্কুল খোলার দ্বিতীয় দিনে অতিরিক্ত গরমে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ছাত্রছাত্রীরা গরমের কারণে লেখাপড়া করতে পারছে না। তিনি স্কুল-কলেজে মর্নিং শিফট চালুর দাবি জানান।

ইতনা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অনিন্দ্য সরকার বলেন, প্রচন্ড গরমে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক এনে তাদের সুস্থ করে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।

নড়াইল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রচন্ড গরমে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়লে স্কুল একদিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

লোহাগড়া উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. জহুরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

যশোরে তাপমাত্রার পারদ উঠল ৪২.৮ ডিগ্রিতে



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, যশোর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

গত কয়েকদিন ধরে চলা তীব্র তাপদাহে যশোরে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। অতিরিক্ত গরমের কারণে মানুষজন একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।

আজ সোমবার (২৯ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে। গতকালও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে জেলায়।

এদিকে প্রচন্ড গরমে নাকাল হয়ে পড়েছে যশোরের সাধারণ মানুষের জনজীবন। প্রচন্ড গরমে গলে গেছে যশোরের বেশ কয়েকটি পিচঢালা সড়ক। সূর্যের তাপ এতই বেশি যে, খোলা আকাশের নিচে হাঁটলেও গরম বাতাস লাগছে চোখে-মুখে।

যশোর শহরের রিকশাচালক রহিম মিয়া বলেন, তীব্র গরমের কারণে রিকশা চালাতে কষ্ট হচ্ছে। সূর্যের প্রখরতা এতো বেশি যে মনে হচ্ছে শরীর পুড়ে যাচ্ছে।কিন্তু ভাড়া না মারলে তো সংসার চলবে না।

রিকশাচালক নূর ইসলাম বলেন, মানুষ বাইরে কম বের হচ্ছে। যারা বাইরে আসছে গরমের সঙ্গে তাদেরও মেজাজ গরম থাকছে। মানুষের সাথে ভালো করে কথা বলা যাচ্ছে না।

শহরের বেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম জানান, প্রায় একমাস ধরে চাপকলে পানি উঠছে না। বাসার ছাদের রিজার্ভ ট্যাংকের পানি অনেক গরম হয়ে যাচ্ছে। দুপুর বারোটা থেকে বিকেল পর্যন্ত পানিতে হাত দেওয়া যাচ্ছে না।

শরবত বিক্রেতা আবুল কালাম জানান, গরম বাড়ায় শরবত বিক্রি বেড়েছে। মানুষ পিপাসা মেটাতে ও একটু স্বস্তি নিতে ঠান্ডা লেবুর শরবত পান করছেন।

এদিকে তীব্র তাপ প্রবাহের মধ্যে পানি সংকটে পড়েছে শহরের বাসিন্দা। তারা বলছেন, যে টিউবওয়েলে সহসা আসতো পানি, সেই টিউবওয়েলে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। শহরের রেলগেট এলাকার বাসিন্দা আল আমিন বলেন, টিউবওয়েলে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। পুকুরে যেতে হচ্ছে।

;

গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আসন্ন বাজেটে বরাদ্দ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠক করেছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আলোচনা সভায় দেশের গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারীদের মৌলিক অধিকার, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা।

শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজমা আক্তার বলেন, আমাদের দেশে সবচেয়ে সস্তায় শ্রম বিক্রি হয়। আর এই শ্রম বিক্রি করে দেশের রেমিট্যান্স ভারি করে যারা সেই গার্মেন্টস শ্রমিকদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ হচ্ছে না। সরকার কমিটমেন্ট দিয়েছিল রেশনিং সিস্টেম চালু হবে কিন্তু এখনো তা হয়নি। গার্মেন্টস মালিকদের প্রণোদনা না দিয়ে শ্রমিকদের জীবন জীবিকার মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকারসহ ট্রেড ইউনিয়ন সকলকে নজর দেওয়া উচিত। শ্রমিকদের জীবন জীবিকার মান উন্নয়ন না হলে গার্মেন্টস শিল্প ভেঙে পড়বে। খাদ্য পুষ্টির জোগান না থাকলে শ্রমিকরা কাজ করতে পারবে না। নারী শ্রমিকদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে নারী শ্রমিক রক্ষা করলে তবেই অগ্রগতি হবে।

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা আবুল হোসাইন। তিনি বলেন, শ্রমিকরা না উৎপাদন করলে দেশের মানুষ খেতে পারবে না। ৪২ ডিগ্রি তাপের মাঝে শ্রমিকরা কাজ করছে। ৪০ বছর ধরে গার্মেন্টস শিল্প যে লাভ করেছে সেই লাভ অনুযায়ী বিনিয়োগ হয়নি। বিনিয়োগ হলে গার্মেন্ট শিল্প আরও উন্নত হতো আরো শ্রমিক কাজ করতে পারত। দেড় বছর আগে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন রেশনিং ব্যবস্থা চালু হবে কিন্তু হয়নি। অনতিবিলম্বে গার্মেন্টস শ্রমিকদের রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবি জানাচ্ছি আমরা।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, উৎপাদন বৃদ্ধির স্বার্থে হলেও শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ভালো রাখা জরুরি। শ্রমিকের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে কর্মক্ষম হবে উৎপাদন বাড়বে। আসন্ন বাজেটে এটার জন্য বরাদ্দ রাখতে হবে। ২৭ লাখ মানুষকে রেশনিং ব্যবস্থার আওতায় আনা সরকারের পক্ষে খুব কঠিন হবে না। শ্রমিক স্বার্থের আলোকেই রেশনিং নিশ্চিত করতে হবে।

ডা. ফৌজিয়া মোসলেম বলেন, শ্রমিকরা দেশের অর্থনৈতিক পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি। মুক্তিযুদ্ধ স্বৈরাচার, যে কোনো আন্দোলনে শ্রমিকদের ভূমিকা, গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। মেয়েরা গার্মেন্টসে যোগ দেওয়ার পরে গার্মেন্টস সেক্টরে এতো উন্নতি। কিন্তু বর্তমানে নানা প্রতিকূলতার কারণে মেয়েদের এই সেক্টরে অংশগ্রহণের হার কমছে। শ্রমিকদের রেশনিং ব্যবস্থা চালু সহ সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা জাতীয় কর্তব্য।

সভাপতি ইদ্রিস আলীর আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ডক্টর বিনায়ক সেন। তিনি বলেন, আয় বৈষম্য বাড়ছে। শহরের নিম্নবিত্ত এলাকায় ও শিল্প ভিত্তিক গার্মেন্টস এলাকাগুলোতে টিসিবির পণ্যগুলো বেশি পৌঁছে দেওয়া উচিত। রেশনিং ব্যবস্থা চালু করলে ৪৮০০- ৫০০০ কোটি টাকা লাগবে। রেশনিং ব্যবস্থা চালু করলে সরকারের জনপ্রিয়তা আরও বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

;