রোহিঙ্গা সঙ্কটের দ্রুত সমাধান দেখছে না চীন



সেন্ট্রাল ডেস্ক ২

  • Font increase
  • Font Decrease
রোহিঙ্গা সঙ্কটের দ্রুত সমাধানের কোনো সম্ভাবনা দেখছে না চীন। তবে ইস্যুটিতে তারা মিয়ানমার ও বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে বলে উল্লেখ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত নতুন চীনা রাষ্ট্রদূত ঝাং জুউ। দায়িত্ব গ্রহণের পর গতকাল বুধবার প্রথম সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন সংসদ নির্বাচন ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন জুউ। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের বছরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি গভীর মনোযোগের সঙ্গে লক্ষ্য রাখছে বেইজিং।’ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঝঞ্জাটমুক্ত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। এর আগে চীনা দূতাবাসের উপ-প্রধান চেন ওয়েই তাকে সাংবাদিকদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের নিজস্ব কোনো স্বার্থ নেই। বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে সাহায্য করার চেষ্টা করছি। রোহিঙ্গা সমস্যাটির আশু কোনো সমাধান নেই। কারণ, এটি একটি জটিল বিষয়। এর সঙ্গে ঐতিহাসিক, জাতিগত এবং ধর্মীয় পটভূমি রয়েছে।’ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও মানবিক সহায়তার জন্য বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত মানুষদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া তরান্বিত করতে গঠনমূলক ভূমিকা রাখছে চীন।’ তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সংলাপ ইতিবাচক দিকে অগ্রসর হচ্ছে।’ সমস্যা সমাধানে সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমারকে উৎসাহিত করতে চীন সব ধরনের সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীনের মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্যকে সামনে রেখে সম্প্রতি নেইপিদোতে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ধরনের উদ্যোগ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে ভূমিকা রাখবে বলে চীন বিশ্বাস করে।’ দারিদ্র্যতাকে তিনি এ অঞ্চলের বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর সাধারণ শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেন। বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক নিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘চীন বাংলাদেশের মানুষের পছন্দকে মূল্যায়ন করে এবং উভয় দেশের কৌশলগত সম্পর্ক একটি নতুন উচ্চতায় উঠবে।’ চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্ব অনেক পুরনো উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ২৭টি উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে চীনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এদেশে বিনিয়োগ ও উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে, কর্ণফুলী টানেল উন্নয়ন, পয়ঃনিস্কাশন ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট উন্নয়ন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নসহ একাধিক খাতে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।’ এই সম্পর্ক সামনের দিকে আরো এগিয়ে নিতে চায় তার দেশ। মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে ঢাকার পাশে থাকবে বেইজিং। দুই দেশের মধ্যে ঐক্যমত নিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, চলতি বছরে বাংলাদেশ ও চীন ১২তম কূটনৈতিক পরামর্শ সভা, সামুদ্রিক সহযোগিতার ওপর দ্বিতীয় বাংলাদেশ-চীন সংলাপ, চীন-বাংলাদেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং কনস্যুলার পরামর্শের প্রথম রাউন্ডের যৌথ কর্মী গ্রুপের বৈঠক করবে। এসময় ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড প্রকল্পে বাংলাদেশকে যুক্ত করতে গণমাধ্যমকে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
   

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ



বাসস
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ১৯৮১ সালের ১৭ মে দীর্ঘ নির্বাসন জীবন শেষে তিনি বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন। এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।

১৯৭৫ সালের ১৫আগস্ট কালরাতে বিপদগামী একদল সেনা কর্মকর্তার নির্মম বুলেটের আঘাতে ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। এসময় বিদেশে থাকায় আল্লাহর অশেষ রহমতে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে বাঙালি জাতির অস্তিত্বকে বিপন্ন করতে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করে ঘাতক গোষ্ঠী।

বাঙালি জাতির জীবনে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ঘোর অমানিশার অন্ধকার। ঠিক তেমনি এক ক্রান্তিলগ্নে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। দেশমাতৃকার মুক্তির সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়ার পবিত্র দায়িত্ব অর্পণ করা হয় জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যার হাতে। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বকে ভয় পায় ঘাতক গোষ্ঠী। খুনি সামরিক জান্তা জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করতে না দেওয়ার জন্য সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে প্রিয় স্বদেশ ভূমিতে প্রত্যাবর্তন করেন শেখ হাসিনা। দীর্ঘ ৬ বছর নির্বাসিত জীবন শেষে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে ফিরে আসেন তিনি। সেদিন রাজধানী ঢাকা মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকা শহর মিছিল আর স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আর প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টিও সেদিন লাখ লাখ মানুষের মিছিলকে গতিরোধ করতে পারেনি। কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও শেরেবাংলা নগর পরিণত হয় জনসমুদ্রে।

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে এক নজর দেখতে সেদিন সারা বাংলাদেশের মানুষের গন্তব্য ছিল রাজধানী ঢাকা। স্বাধীনতার অমর স্লোগান, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয় বাংলার আকাশ-বাতাস। জনতার কণ্ঠে বজ্রনিনাদে ঘোষিত হয়েছিল ‘হাসিনা তোমায় কথা দিলাম পিতৃ হত্যার বদলা নেব’; ‘ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে আমরা আছি তোমার সাথে’। ‘শেখ হাসিনার আগমন, শুভেচ্ছায় স্বাগতম’।

দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের দৃঢ় অঙ্গীকার, বঙ্গবন্ধু হত্যা ও জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার, স্বৈরতন্ত্রের চির অবসান ঘটিয়ে জনগণের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সার্বভৌম সংসদীয় পদ্ধতির শাসন ও সরকার প্রতিষ্ঠার শপথ নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা।

সেদিন বিকেল সাড়ে চারটায় আকাশে যখন শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানটি দেখা যায় তখন সকল নিয়ন্ত্রণ আর অনুরোধ আবেদন অগ্রাহ্য করে হাজার হাজার মানুষ বিমান বন্দরের ভেতরে ঢুকে যায়। অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই বিমানটি অবতরণ করে। জনতা একেবারেই বিমানের কাছে চলে যায়। বহু চেষ্টার পর জনতার স্রোতকে কিছুটা সরিয়ে ট্রাকটি ককপিটের দরজার একেবারে সামনে নেওয়া হয়। এই সময়ে শেখ হাসিনা ভেতর থেকে জনতার উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন।

বেলা ৪টা ৩২ মিনিটে শেখ হাসিনা বিমান থেকে সিঁড়ি দিয়ে ট্রাকে নেমে আসেন। কুর্মিটোলা থেকে শেখ হাসিনার শেরেবাংলা নগরে এসে পৌঁছতে সময় লাগে ৩ ঘণ্টা। এই সময় ঝড় বৃষ্টিতে নগর জীবন প্রায় বিপন্ন। রাস্তাঘাট স্বাভাবিক জীবন যখন ব্যাহত তখন সেখানে অপেক্ষা করে কয়েক লাখ মানুষ। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তিনি গণসংবর্ধনা মঞ্চে উপস্থিত হন।

১৯৮১ সালের ১৭ মে ঝড়-বাদল আর জনতার আনন্দাশ্রুতে অবগাহন করে শেরে বাংলা নগরে লাখ লাখ জনতার সংবর্ধনার জবাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তার আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই।’

তিনি আরও বলেছিলেন, আমার আর হারাবার কিছুই নেই। পিতা-মাতা, ভাই রাসেলসহ সকলকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি, আমি আপনাদের মাঝেই তাদেরকে ফিরে পেতে চাই। আপনাদের নিয়েই আমি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তা বাস্তবায়ন করে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই। বাঙালি জাতির আর্থ-সামাজিক তথা সার্বিক মুক্তি ছিনিয়ে আনতে চাই।

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধার এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। ১৯৭৫’র ১৫ আগস্টের পর যখন প্রবঞ্চক বিশ্বাসঘাতক খুনি দেশদ্রোহীরা প্রিয় মাতৃভূমিকে ক্ষত-বিক্ষত করে তুলেছিল আমাদের জাতীয় জীবন যখন জাতিদ্রোহীদের অত্যাচারের প্রচণ্ড দাবদাহে বিপর্যস্ত তখন শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিল শ্রাবণের বারিধারার মতো পাহাড় সমান বাঁধা জয়ের অনন্ত অনুপ্রেরণা। সেদিন বঙ্গবন্ধু কন্যার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে অশ্রু-বারিসিক্ত জন্ম ভূমিতে সঙ্কটজয়ের বীজ রোপিত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বিনির্মাণের দৃঢ় প্রত্যয়ে প্রদীপ্ত অগ্নি শপথের রৌদ্রালোকে উদ্ভাসিত হয়েছিল বাঙালি জাতি।

ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নিরবচ্ছিন্ন দীর্ঘ সংগ্রাম শুরু হয়। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে সামরিক জান্তা ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে চলে তার অকুতোভয় সংগ্রাম। জেল-জুলম, অত্যাচার কোনো কিছুই তাকে তার পথ থেকে টলাতে পারেনি এক বিন্দু। শত প্রতিকূলতাতেও হতোদ্যম হননি কখনো। বাংলার মানুষের হারিয়ে যাওয়া অধিকার পুনরুদ্ধার করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি বার বার স্বৈরাচারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেছেন। আবির্ভূত হয়েছেন গণতন্ত্রের মানসকন্যা রূপে।

আওয়ামী লীগ সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর দীর্ঘ ৪৩ বছরের রাজনৈতিক জীবনে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বৈরশাসনের অবসান, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বাঙালির ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। খাদ্যে স্বয়ংস্পূর্ণতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর খুনি ও একাত্তরের নরঘাতক মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য সম্পন্ন এবং রায় কার্যকর করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব, যোগ্যতা, নিষ্ঠা, মেধা-মনন, দক্ষতা, সৃজনশীলতা, উদার গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে এক সময় দারিদ্র্য-দুর্ভিক্ষে জর্জরিত যে বাংলাদেশ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম করতো সেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বজয়ের নবতর অভিযাত্রায় এগিয়ে চলছে। বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ তালাবিহীন ঝুঁড়ির অপবাদ ঘুচিয়ে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে।

রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, সততা, মেধা, দক্ষতা ও গুণাবলিতে সমসাময়িক বিশ্বের অন্যতম সেরা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। আপন কর্ম মহিমায় হয়ে উঠেছেন-নব পর্যায়ের বাংলাদেশের নতুন ইতিহাসের নির্মাতা; হিমাদ্রী শিখর সফলতার মূর্ত-স্মারক, উন্নয়নের কান্ডারি। উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের রূপকার বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার বিশ্বস্ত ঠিকানা, বাঙালির বিশ্বজয়ের স্বপ্ন-সারথি। বিশ্ব রাজনীতির উজ্জ্বলতম প্রভা-আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পিছিয়ে পড়া দেশ-জাতি জনগোষ্ঠীর মুখপাত্র হিসেবে বিশ্বনন্দিত নেতা। বারবার মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা ‘নীলকণ্ঠ পাখি’ মৃত্যুঞ্জয়ী মুক্তমানবী। তিমির হননের অভিযাত্রী মানবতার মা, আত্মশক্তি-সমৃদ্ধ সত্য-সাধক। প্রগতি-উন্নয়ন শান্তি ও সমৃদ্ধির সুনির্মল-মোহনা। এক কথায় বলতে গেলে সাগর সমান অর্জনে সমৃদ্ধ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কর্মময় জীবন।

শেখ হাসিনার দীর্ঘ ৪৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের এই পথচলা কখনোই কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না, ছিল কণ্ঠকাপূর্ণ ও বিপদসংকুল। গণমানুষের মুক্তির লক্ষে আন্দোলন সংগ্রাম করার অপরাধে তাকে বারবার ঘাতকদের হামলার শিকার ও কারা নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে। কিন্তু তিনি বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে ছিলেন পিতার মতোই অবিচল, দৃঢ় ও সাহসী। জনগণের ভালোবাসায় অভিষিক্ত হয়ে টানা চতুর্থ বারের মতো রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়ে তিনি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সব শ্রেণি ও পেশার মানুষের কল্যাণে যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ন্যায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যখনই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তখন এদেশের মাটি ও মানুষের কল্যাণে বাস্তবায়ন করেছেন বহুমাত্রিক উদ্যোগ। বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের প্রতি অগাধ প্রেম এবং অক্ষয় ভালোবাসাই হলো তার রাজনৈতিক শক্তি।

;

‘শরীফ থেকে শরীফার’ গল্প পাঠ্যবই থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের আলোচিত ‘শরীফ থেকে শরীফা’ হওয়ার গল্প বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি।

চলতি মাসের শুরুতে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আলোচিত ‘শরীফ থেকে শরীফা’ গল্পে ১৯টি শব্দ নিয়ে কমিটির কয়েকজন সদস্য আপত্তির কথা বলেছেন। এসব শব্দগুলো বাদ দিলে ওই গল্পটি আর পরিপূর্ণ থাকছে না। সেজন্য পুরো গল্পটিই বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে বিশেষজ্ঞ কমিটি। তবে হিজড়া জনগোষ্ঠীকে নিয়ে সচেতনতামূলক কোনো গল্প নতুন করে লিখে সেটা বইয়ে যুক্ত করা যায় কিনা, সে বিষয়েও মত দিয়েছেন তারা।

৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা চলছে চলতি বছর থেকে। তবে, বছরের প্রথম থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হয় সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞান বইয়ের শরীফ শরীফার গল্পটি নিয়ে, যার বিচার-বিশ্লেষণের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে এনসিটিবির সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, বিশেষজ্ঞ কমিটি এ সংক্রান্ত একটি বিস্তর প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। তবে মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা পেলে আমরা সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।

বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ নিয়ে ঢাকা আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুর রশীদ বলেন, এ সংক্রান্ত একটা প্রতিবেদন আমরা জমা দিয়েছি। প্রতিবেদনে কী কী সুপারিশ করা হয়েছে তা মন্ত্রণালয় বলতে পারবে।

এদিকে, নতুন শিক্ষাক্রমের চলতি বছরের মাধ্যমিকের চারটি শ্রেণির ৩১টি বইয়ে ১৪৭টি ভুল সংশোধনের সুপারিশ করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) গঠিত উচ্চপর্যায়ের কমিটি।

;

স্ত্রী হত্যার পর ২২ বছর পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত স্বামী গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় স্ত্রীকে হত্যা করে দীর্ঘ ২২ বছর পলাতক থাকার পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি সামছুদ্দিনকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাতে উপজেলার চৌরাস্তা পৌর বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার সামছুদ্দিন সদর উপজেলার মাইজছড়া গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে।

র‍্যাব-১১ সিপিসি-৩ সূত্রে জানা যায়, আসামি সামছুদ্দিনসহ জয়নাল আবেদীন, মনোয়ারা বেগম ও বিলকিস বেগম একে অপরের সহযোগিতায় ভিকটিম আয়েশা খাতুনকে শারীরিক নির্যাতন ও গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে এ ঘটনায় সুধারাম থানার এএসআই মো. মোখলেছুর রহমান নিজে বাদী হয়ে ২০০২ সালের ১৩ জুন সুধারাম থানায় এজাহার দায়ের করেন। উক্ত হত্যা মামলায় বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০০৯ সালের ৩০ জুলাই আসামি সামছুদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন আদালত। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই আসামি গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে ছিল।

র‍্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালী কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী পুলিশ সুপার মো. গোলাম মোর্শেদ বলেন, আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুধারাম মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

;

বিদেশি ঋণ শোধ করার অবস্থায় নেই সরকার: ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর ফেলো, প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশ সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। আমাদের রাজস্ব বাড়েনি, এ মুহূর্তে সরকারের খরচ বাড়ানোর কোন অবস্থা নেই। বিদেশি ঋণ শোধ করার মতো অবস্থাও নেই।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাতে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটকে সামনে রেখে ‘কেমন বাজেট চাই’ নামের এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আমাদের রাজনীতি যদি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি তাহলে শরীরে অন্যান্য জায়গায় সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। গতবার থেকে এবার কী এসেছে। আপনারা যদি দেখেন গত ১০ বছরে আমরা ব্যক্তি পর্যায়ে রাজস্ব সেভাবে বাড়েনি। আজকে যদি করোনার কথা বলেন, তাহলে অর্থনীতির বিবেচনা ঠিক হলো না।

তিনি বলেন, আমাদের কথার সাথে আইএমএফআইয়ের অনেক কথাই মিলবে না, কিন্তু আমাদের দেশের অর্থনীতিবিদের মধ্যে আমরা মোটামুটি একটা ঐক্যমতে এসেছি। সেটা হলো মূল্যস্ফীতি ও সমষ্টিক অর্থনীতির। এটা আমরা যেভাবে বলি না কেন, এটা বিনিময় হার দিয়ে বলি, পণ্য মূল্য দিয়ে বলি অথবা সুদের হার দিয়ে বলি। সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ১ নম্বর বিষয় হিসেবে সবার কাছে প্রতিপালিত হবে। কারণ এটা অনেকটা শরীরে ডায়েবেটিকের মত।

তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরের হিসেব যদি ধরেন, তাহলে এত জটিল ও আর্থিক বাজেট হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। এই জটিল আর্থিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে কারণ হলো আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কারণে। সেটা আপনি পণ্য মূল্যই বলেন আর বাজারে মন্দার কথাই বলেন।

প্রখ্যাত এই অর্থনীতিবিদ বলেন, পৃথিবীতে এখন যে ধরনের রাজনীতি হচ্ছে তার ফলে আমাদের আঞ্চলিক রাজনীতি এবং ভূ-কৌশলগত বিভিন্ন ধরনের পরিস্থিতি আমাদের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে। সেহেতু সাধারণ ভাবেই যদি আপনি বলেন, এই বাজেট অত্যন্ত জটিল পরিস্থিতির ভিতরে আসছে। তাই এই বাজেট অন্য যেকোন বছরের থেকে কঠিন এবং সর্বোপরি বাংলাদেশ এই মুহূর্তে আইএমএফএর সাথে একটি শর্তযুক্ত ঋণের মধ্যে রয়েছে। সমস্ত প্রতিশ্রুতি প্রতিপালন করাটা এখন বাধ্যবাধকতা হয়েছে। তাহলে এই পরিস্থিতিতে আগামী বাজেটে আমরা কী চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।

;