গৃহপরিচারিকাকে নিতে এসে অপহরণ, গ্রেফতার ৩



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরে গৃহপরিচারিকাকে নিতে ঢাকা থেকে এসে এক পুলিশ কনস্টেবলের পাতানো ফাঁদে অপহরণের শিকার হয়েছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। এ ঘটনায় অপহরণ মামলায় রবিউল ইসলাম নামে পুলিশের ওই কনস্টেবলসহ ৩ জনকে গ্রেফতার হয়েছে। রবিউল রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে বার্তা২৪.কম-কে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ। তবে এখনো অপহৃত তোশারেফ হোসেন পপিকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

এ ঘটনায় অপহৃতের বোন সাজিয়া আফরিন ডলি বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রংপুর মেট্রো কোতয়ালী থানায় ছয় জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আট থেকে নয় জনকে আসামি করে একটি অপহরণ মামলা করেন। পরদিন শুক্রবার রাতে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে কনস্টেবল রবিউল ইসলামসহ তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এদিকে, মামলার বিবরণে জানা যায়, আরবান হেলথ কেয়ারের কর্মকর্তা তোশারেফ হোসেন পপি পুলিশ কনস্টেবল রবিউলের কথা মতো গৃহপরিচারিকা ঠিক করতে গত ১০ জানুয়ারি ঢাকা থেকে রংপুরে আসেন। পরদিন কামারপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে পপিকে রিসিভ করার পরই রবিউল তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ করেন এবং বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে নির্যাতন চালান। যা পপি বিভিন্ন সময় ফোনে তার বোনকে জানান।

পপির স্বজনরা রংপুরে এসে পুলিশ কনস্টেবল রবিউলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদেরকেও হত্যার হুমকি দেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করলে পুলিশ শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে কনস্টেবল রবিউল, বিপুল ও সাইফুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এ ব্যাপারে কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশীদ জানান, অপহৃত তোশারেফ হোসেন পপিকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

   

টাঙ্গাইলে কাভার্ডভ্যান-ট্রা‌কের মু‌খোমু‌খি সংঘ‌র্ষে নিহত ১



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, টাঙ্গাইল
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

টাঙ্গাইলের কা‌লিহাতীতে কাভার্ডভ্যান ও ট্রা‌কের মু‌খোমু‌খি সংঘ‌র্ষে একজন নিহত হ‌য়ে‌ছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হ‌য়ে‌ছেন আরও দুইজন।আহত‌দের উদ্ধার ক‌রে টাঙ্গাইল জেনা‌রেল হাসপাতা‌লে পা‌ঠি‌য়ে‌ছে পু‌লিশ। 

মঙ্গলবার (৭ মে) ভোর ৫ টার দি‌কে ঢাকা-টাঙ্গাইল- বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়‌কের উপ‌জেলার সরা‌তৈল টাওয়ার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘ‌টে। তাৎক্ষনিক হতাহ‌ত‌দের প‌রিচয় পাওয়া যায়‌নি। 

এদি‌কে দুর্ঘটনার কার‌ণে মহাসড়‌কে প‌রিবহন চলাচল বন্ধ হ‌য়ে‌ যায়। এতে মহাসড়‌কের চার কি‌লো‌মিটার এলাকায় যানজ‌টের সৃ‌ষ্টি হয়। ফ‌লে প‌রিবহনগু‌লো উত্তরবঙ্গ থেকে ছে‌ড়ে আসা প‌রিবহন ও ঢাকা থেকে ছে‌ড়ে আসা পরিবহনগু‌লো এলেঙ্গা-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক ব‌্যবহার না ক‌রে এলেঙ্গা-ভুঞাপুর-বঙ্গবন্ধু সেতু আঞ্চ‌লিক সড়ক ব‌্যবহার ক‌রে। 

এছাড়া দুর্ঘটনার পরই ক্ষ‌তিগ্রস্ত দুইটি যানবাহন উদ্ধার কার্যক্রম শুরু ক‌রে পু‌লিশ। গা‌ড়ি দুইটি সড়ক থেকে সরা‌নোর পর মহাসড়‌কে প‌রিবহন চলাচল শুরু হয়। 

বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব থানার উপ‌-প‌রিদর্শক (এসআই) লিটন মিয়া জানান, ঢাকাগামী ট্রা‌কের সা‌থে উত্তরবঙ্গগামী কাভার্ডভ‌্যা‌নের সা‌থে মু‌খোমু‌খি সংঘর্ষ বাঁধে। এতে ঘটনাস্থলেই ট্রা‌ক চালক মারা যান। এছাড়া কাভার্ডভ‌্যা‌নের চালকসহ আরও দুইজন গুরুত্বর আহত হন। আহত‌দের দ্রুত উদ্ধার ক‌রে টাঙ্গাইল জেনা‌রেল হাসপাতা‌লে পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে। নিহত ট্রাক চাল‌কের প‌রিচয় পাওয়া যায়‌নি। আইনি প্রক্রিয়া শে‌ষে মর‌দেহ নিহতের স্বজন‌দের কা‌ছে হস্তান্তর করা হ‌বে।

;

১৪০ উপজেলায় ভোট আগামীকাল, কেন্দ্রে যাচ্ছে সরঞ্জাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৪০ উপজেলায় ভোটগ্রহণের নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো হচ্ছে মঙ্গলবার। বুধবার (৮ মে) উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ভোট সামনে রেখে সোমবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে নির্বাচনী প্রচার।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ব্যবস্থা। দুর্গম উপজেলার কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো হচ্ছে। রাঙামাটির জুরাছড়ি ও বরকলের দুর্গম ভোট কেন্দ্রগুলোতে এরই মধ্যে হেলিকপ্টারে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে সরঞ্জাম। নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে কমিশন।

সোমবার (৬ মে) সকালে জুরাছড়ি যক্ষ্মা বাজার আর্মি ক্যাম্প থেকে হেলিকপ্টারে রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলার সাতটি ও বরকলের দুটি দুর্গম কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো হয়।

এদিকে সোমবার ঝিনাইদহ-১ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। সোমবার এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি জাকির হোসেনের একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আগামী ৫ জুন এই আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। আদেশে ওই আসনে আগামী ২১ দিনের জন্য নির্বাচন স্থগিত রাখতে বলেছেন হাইকোর্ট।

গতকাল প্রথম ধাপের নির্বাচন উপলক্ষে ১৪০ উপজেলায় বুধবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে নির্বাচনের আগে ও পরে ১৪ দিন নির্বাচনী এলাকায় বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন নিষিদ্ধ বলে নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. কামরুজ্জামানের সই করা প্রজ্ঞাপনে ছুটির তথ্য জানানো হয়। ৮ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত চার ধাপে দেশের সব উপজেলায় নির্বাচন আয়োজন করেছে নির্বাচন কমিশন। পরবর্তী ধাপগুলোর ভোটগ্রহণের দিনও সাধারণ ছুটি থাকবে।

অন্যদিকে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ১৪ দিনের জন্য বৈধ অস্ত্র প্রদর্শনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

;

উপজেলা নির্বাচনে ৪১৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রথম ধাপে ৪১৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

আগামী ০৮ মে ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার নিমিত্তে ‘ইন এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার’ এর আওতায় ৬ মে থেকে ১০ মে ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিজিবি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে।

;

দেশে বিদেশি ‘পতাকা উত্তোলনে’ যে সমস্যা



কবির য়াহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে ও ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে ঢাকায় কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। 

সোমবার (৬ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যের সামনে কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি। কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবি ও ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শিত হয়। সংগঠনটির একই কর্মসূচি ছিল দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। সেটাও পালিত হয়েছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে।

কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে অল্প সময়ের মধ্যে হলেও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়। সরকার-দল আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনটি কর্মসূচির প্রচারণায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ফটোকার্ড শেয়ার করে তাতে পিলে চমকে যাওয়ার মতো তথ্য; যেখানে লেখা ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন, পদযাত্রা ও সংহতি সমাবেশ।

ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে সমাবেশ নিয়ে আপত্তি থাকার কথা না কারো, কিন্তু প্রশ্ন জেগেছে স্বাধীন দেশে অন্য দেশের ‘পতাকা উত্তোলন’ নিয়ে। এখানে উচিত-অনুচিতের দ্বন্দ্ব আছে, আছে আইনি বিধিনিষেধ; এবং এ-ব্যাপারে কি আদৌ সচেতন ছিল সংগঠনটি?

প্রশ্ন তুলেছিলাম এ-নিয়ে ফেসবুকে। বলেছিলাম, ‘এটা অতি-আবেগী, হাস্যকর ও অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত। ফিলিস্তিনের প্রতি আমাদের সহানুভূতি আছে, আমরা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিচ্ছি; কিন্তু দেশটির পতাকা উড়ানোর মতো কর্মসূচি পতাকার আবেদন অনুধাবন করতে না পারার মতো ছেলেমানুষি ও হঠকারী কর্মসূচি। এটা ব্যক্তি-ব্যক্তিতে অনানুষ্ঠানিকভাবে করা যায়, কিন্তু দেশব্যাপী কর্মসূচি দিয়ে করার মতো আনুষ্ঠানিক করা যায় না। কর্মসূচি দিয়ে পতাকা উড়ানো মানে দেশ ও পতাকার প্রতি নিবেদন, আনুগত্য প্রদর্শন। এটা কেবল নিজ দেশের প্রতিই করা যায়। অন্য দেশের প্রতি করা যায় না। একদিনের জন্যে হোক, এক ঘণ্টা কিংবা এক মিনিটের জন্যে হলেও এই আনুগত্য প্রকাশ অপ্রত্যাশিত। এটা নিজ দেশের লাল-সবুজের পতাকার প্রতি আনুগত্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’

ফেসবুকে লেখার পর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, এটা সংহতি সমাবেশ মূলত। পতাকা উত্তোলনের বিষয়টি এখানে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়ে গেছে কেবল। তারা সচেতন থাকবেন এ-বিষয়ে, যাতে বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকার সঙ্গে আনুগত্য ও নিবেদনের প্রশ্নে সাংঘর্ষিক না হয়।

ছাত্রলীগের এই কর্মসূচির প্রতি চোখ রেখেছিলাম। ভিনদেশি পতাকা উত্তোলন বিষয়টির চাইতে সংহতির বিষয়টি তখন চোখে পড়েছে। আগ্রাসনের প্রতিবাদে তারা বক্তব্য রেখেছেন, নিরীহ ফিলিস্তিনিদের প্রতি মানবিক আবেদনে জোর দিয়েছেন। দেশে-দেশের ছাত্র আন্দোলনের যে তরঙ্গ তাতে সামিল হওয়ার চেষ্টা করেছেন তারা। এখানে মানবিক দিক যেমন আছে, তেমনি আছে ছাত্র-আন্দোলনের গভীরতা।

তারপরেও প্রশ্ন থাকে। কারণ ওই ‘পতাকা উত্তোলন’ প্রসঙ্গ! পতাকার আবেদন, নিবেদন এবং আনুগত্য। কারা, কোথায়, কী প্রক্রিয়ায় পতাকা উত্তোলন করতে পারে-এ সম্পর্কে কি সচেতনতা আছে সকল মহলে? সত্যি বলতে কী, এখানে আমাদের জানা-বুঝার সীমাবদ্ধতা রয়েছে অনেক।

‘জাতীয় পতাকা বিধিমালা’ রয়েছে আমাদের। এই পতাকা বিধিমালা মেনে চলা প্রতিটি নাগরিকের অবশ্য কর্তব্য। এটা কেবল কর্তব্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, অমান্য করলে আছে পড়তে হয় শাস্তির মুখে। ২০১০ সালে প্রণীত সংশোধিত পতাকাবিধি অনুযায়ী জাতীয় পতাকার ব্যবহার বিধি ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। বিষয়টি কম-আলোচিত হলেও যে স্পর্শকাতর, তা এ-থেকেই অনুমেয়।

আমাদের দেশের পতাকা, কিন্তু নির্দিষ্ট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান ছাড়া চাইলেই কি আমরা ব্যক্তি-পর্যায়ে যেকোনো সময় আনুষ্ঠানিকভাবে ‘পতাকা উত্তোলন’ করতে পারি? মর্যাদার প্রশ্ন, তাই এখানেও আছে নিয়ম। ২০২৩ সালের সংশোধিত পতাকাবিধি অনুযায়ী ঈদে মিলাদুননবি, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, জাতির পিতার জন্মদিন জাতীয় শিশু দিবস, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস, এবং সরকার কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত যেকোনো দিবসে কেবল বাংলাদেশের সর্বত্র পতাকা উত্তোলন করার নিয়ম। এরবাইরে আছে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বিধিবদ্ধ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান। বিদেশি পতাকা উত্তোলনের বিষয়েও উল্লেখ আছে জাতীয় পতাকা বিধিমালায়। এর ৯ ধারায় স্পষ্ট, বাংলাদেশে কারা এবং কী প্রক্রিয়ায় বিদেশি পতাকার ব্যবহার করতে পারবে।

প্রসঙ্গের অবতারণা মূলত ছাত্রলীগের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে। ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু খানিক অমনোযোগিতা হয়েছে মূলত পতাকা উত্তোলন বিষয়ে চলে যাওয়ায়। জাতীয় পতাকা বিধিমালা অনুযায়ী বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এখানে বিদেশি পতাকা উত্তোলনের কোন কর্তৃপক্ষ নয়। এখানে কর্মসূচি ঘোষণা করে পরক্ষণে কেন্দ্রে হয়ত সচেতনতার খানিক প্রচেষ্টা ছিল, কিন্তু দেশব্যাপী এটা সম্ভব হয়নি। আমাদের ধারণা জাতীয় পতাকা বিধিমালা সম্পর্কে এখনো সচেতনতার অভাব রয়েছে। ফলে সবখানে যে নিয়ন্ত্রণ-নিয়মরক্ষা, সেটা হয়নি।

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি আমাদের পুরনো দাবি। এই দাবি থেকে আমাদের সরে আসার সম্ভাবনা নাই। তবে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের প্রতি আবেগ প্রকাশ করতে গিয়ে আমরা যেন সংযত থাকি, অন্তত আনুগত্য ও নিবেদনের প্রশ্ন যখন সামনে চলে আসে। দেশের সর্ববৃহৎ ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের অগণন নেতাকর্মী। এই বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের সামনে কোন কর্মসূচি দেওয়ার সময়ে খেয়াল রাখা উচিত দেশ-বিদেশ প্রশ্নে যেন কোন সাংঘর্ষিক কিছু না ঘটে। পতাকা নিয়ে যখন কর্মসূচি আসবে তখন যেন এমন কোন কিছু না ঘটে যাতে নিজ দেশের পতাকার মর্যাদাহানি ও পতাকাবিধির ব্যত্যয় না হয়।

কেবল ধারণা থেকে নয়, অভিজ্ঞতা থেকেই বলি, বিপুল লোকের অংশগ্রহণে কোন কর্মসূচিতে নিয়ন্ত্রণ সচরাচর থাকে না। পতাকা নিয়ে আগেও কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, মর্যাদাহানি হয়েছে। ওসব জায়গা থেকে আমাদের শেখার ছিল। আমরা হয়ত পুরোপুরি শিখিনি। তবু আশাবাদী হতে চাইছি। ভুল থেকে শিক্ষাগ্রহণের যে শিক্ষা সেটাকে গ্রহণ করতে চাই। ছাত্রলীগের এই কর্মসূচি থেকেও তাই একই প্রত্যাশা।  

আমাদের পঠন-পাঠনে বিস্তর সীমাবদ্ধতা। এটা স্বীকার করে এখান থেকে প্রাপ্তির সুযোগ খোঁজা যেতে পারে। দেশের অভ্যন্তরে বিদেশি পতাকা উত্তোলন নিয়ে খুব ক্ষীণ স্বরে হলেও যে প্রশ্ন, সেটাকে আমলে নেওয়া যেতে পারে এক্ষেত্রে। এবং এখান থেকে পঠনে আগ্রহ বাড়াতে হবে শিক্ষার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের। জাতীয় পতাকাবিধি নিয়ে পাঠ ও আলোচনার সুযোগকে গ্রহণ করতে হবে। কে জানে একটা ভুল হয়ত দেখাতে পারে সম্ভাবনার দুয়ার!

;