ময়মনসিংহে জেএসসিতে পাসের হার ৮৭.২১ শতাংশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে প্রথমবারের মত জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত ফলাফলে পাসের হার ৮৭.২১ শতাংশ। আর বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ৯০৩ জন শিক্ষার্থী।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে আনুষ্ঠানিকভাবে জেএসসি পরীক্ষার এ ফলাফল প্রকাশ করেন শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. সামছুল ইসলাম।

তিনি জানান, এ বছর ময়মনসিংহ শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ১ হাজার ৪৮৪ টি বিদ্যালয়ের ১ লাখ ৬১ হাজার ৩৫৯ জন পরীক্ষার্থী জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে পাস করেছে ১ লাখ ৪০ হাজার ৭১৭ জন পরীক্ষার্থী।

এসময় বোর্ডের সচিব প্রফেসর কিরীট কুমার দত্ত, কলেজ পরিদর্শক হাবিবুর রহমান, উপ-সচিব মশিউল আলম, মো. মনিরুজ্জামান ও সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহসিনা বেগম উপস্থিত ছিলেন।

ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে মেয়েরা:

বোর্ডে প্রথমবারের এ ফলাফলে পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুই বিভাগেই ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ৮০ হাজার ১০ জন ছাত্রের মধ্যে পাস করেছে ৬৯ হাজার ১৯৬ জন, পাসের হার ৮৬.৪৮। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৬০৪ জন। অপরদিকে ৮১ হাজার ৩৪৯ জন ছাত্রীর মধ্যে পাস করেছে ৭১ হাজার ৫২১ জন, পাসের হার ৮৭.৯২ শতাংশ। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ২৯৯ জন।

পাসের হারে এগিয়ে শেরপুর:

ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চার জেলার মধ্যে পাসের হারে এগিয়ে রয়েছে শেরপুর জেলা। এ জেলা থেকে ১৯ হাজার ৯৫৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ১৭ হাজার ৯৭০ জন। পাসের হার ৯০.০৫ শতাংশ। এছাড়াও জামালপুর জেলা থেকে ৩৮ হাজার ২০৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৩৪ হাজার ২০১ জন, পাসের হার ৮৯.৫২ শতাংশ। ময়মনসিংহ জেলা থেকে ৭২ হাজার ১৩০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৬১ হাজার ৯৯১ জন, পাসের হার ৮৫.৮৪ শতাংশ। নেত্রকোনা জেলা থেকে অংশ নেয়া ৩১ হাজার ৬৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ২৬ হাজার ৬২৭ জন, পাসের হার ৮৫.৭১ শতাংশ। এদিকে একটি স্কুল থেকে ৩ জন পরীক্ষার্থী ছিল, তাদের কেউ পাস করেনি।

   

পরিবহনে চাঁদাবাজি ও ছিনতাই, আটক ১১



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
পরিবহনে চাঁদাবাজি ও ছিনতাই, আটক ১১

পরিবহনে চাঁদাবাজি ও ছিনতাই, আটক ১১

  • Font increase
  • Font Decrease

আন্তঃজেলা ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লরী ও সিএনজিসহ বিভিন্ন পরিবহন হতে অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলনকালে ৭ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১০)। একই সঙ্গে ছিনতাইকারী চক্রের ৪ জন সদস্যকে আটক করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার (১৬মে) র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১০ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার এম. জে. সোহেল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আটককৃতরা হলো, মো. রাহাদ (২১), মো. রাজু (৩০), মো. পারভেজ হোসেন (২৪), মো. জাকির হোসেন (২৪), কামাল ভান্ডারী (৪২), মো. সোহান মুন্সি (২৭) ও রায়হান খান (২৪)।

এছাড়াও ছিনতাইকারীরা হলো, মো. মনির হোসেন (৩০), মো. মিরাজ (২৫), সজিব (২২), মো. শরিফ (২৫)। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

এম. জে. সোহেল বলেন, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে ৭ জন পরিবহন চাঁদাবাজ ও ৪ জন ছিনতাইকারী আটক করতে সক্ষম হয়েছি।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সকালে র‌্যাব-১০ এর একটি অভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে আন্তঃজেলা ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লরী ও সিএনজিসহ বিভিন্ন পরিবহন হতে অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলনকালে ৫ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছে থেকে আদায়কৃত চাঁদা নগদ-৩ হাজার ৫৬০ টাকা ও ১টি কাঠের লাঠি উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, গতকাল (১৫ মে) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলনকালে ২ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে আদায়কৃত চাঁদা নগদ ৪ হাজার টাকা ও ১টি কাঠের লাঠি উদ্ধার করা হয়।

এছাড়া গতকাল যাত্রাবাড়ী মোড় এলাকায় র‌্যাব-১০ আরেকটি অভিযানিক দল অপর একটি অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ৪ জন ছিনতাইকারীকে আটক করা হয়। এসময় তাদের নিকট থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত ২টি চাকু উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, জানা যায় যে, আটককৃত ব্যক্তিরা বেশ কিছুদিন যাবৎ যাত্রাবাড়ীসহ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আন্তঃজেলা ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লরী ও সিএনজিসহ বিভিন্ন পরিবহনের ড্রাইভার ও হেল্পারদের সাথে অশোভন আচরণের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অবৈধভাবে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় এবং পথচারীদের ধারালো চাকুর ভয় দেখিয়ে টাকা-পয়সা ও মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন মূল্যবান সম্পদ ছিনতাই করে আসছিল।

আটককৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রুজু কতে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

;

চুয়াডাঙ্গা আম সংগ্রহ শুরু, আজ থেকেই বাজারজাত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চুয়াডাঙ্গায় আনুষ্ঠানিকভাবে চলতি মৌসুমের আম সংগ্রহ শুরু হয়েছে। আঁটি, গুটি ও বোম্বাই আম সংগ্রহের মধ্যদিয়ে শুরু হলো আম বাজারজাতকরণ।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মহিলা কলেজ পাড়ায় মহলদার আম্রকাননে আম পেড়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা।

এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, দেশের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা একটি আম সমৃদ্ধ জেলা। এ জেলার উৎপাদিত আমের স্বাদ ও সুখ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে। আমের সেই খ্যাতি ধরে রাখতে ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার প্রস্তুত করা হয়েছে। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী জাতভেদে আম সংগ্রহ শুরু হলো। এছাড়া আমে যাতে কেউ কোনো ধরনের ক্ষতিকর দ্রব্য কিংবা ফরমালিন মেশাতে না পারে, সে ব্যাপারে সজাগ রয়েছে প্রশাসন। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে নিরাপদ আম ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছে দিতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, আজ ১৬ মে আঁটি গুটি ও বোম্বাই আম পাড়া শুরু হয়েছে। এরপর আগামী ২৪ মে থেকে হিমসাগর, ৩০ মে ল্যাংড়া, ৭ জুন আম্রপালি (বারি আম-৩), ১৫ জুন থেকে ফজলি ও ১লা জুলাই থেকে আশ্বিনা বারি-৪ জাতের আম সংগ্রহ শুরু হবে।

এসময় উপস্থিত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর চুয়াডাঙ্গার উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা জানান, চুয়াডাঙ্গার চারটি উপজেলা চুয়াডাঙ্গা সদর, আলমডাঙ্গা, এ মৌসুমে দামুড়হুদা ও জীবননগর মিলিয়ে ৩০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বছর জেলায় ২ হাজার ৩০৪ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এ বছর দেড়শ কোটি টাকার আম কেনা-বেচা হবে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি অফিসার আফরিন বিনতে আজিজ, দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার শারমিন আক্তারসহ এলাকার আমচাষীরা।

;

রংপুরে চাঁদাবাজ চক্রের ৭ সদস্য আটক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
রংপুরে চাঁদাবাজ চক্রের ৭ সদস্য আটক

রংপুরে চাঁদাবাজ চক্রের ৭ সদস্য আটক

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরের গঙ্গাচড়া থানাধীন রংপুর-নীলফামারী মহাসড়কের খলেয়া এলাকা থেকে চাঁদাবাজ চক্রের নেতা মো. চাঁন মিয়াসহ ৭ চাঁদাবাজকে আটক করেছে র‌্যাব-১৩। এ সময় একটি ট্রাকও জব্দ করা হয়েছে।

বুধবার (১৫ মে) রাতে তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

র‌্যাব-১৩ এর উপ-পরিচালক (মিডিয়া) মাহমুদ বশির আহমেদ জানান, রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া থানা এলাকায় রংপুর-নীলফামারী মহাসড়কের দক্ষিণ খলেয়া এলাকায় মো. চাঁন মিয়ার (৫৬) নেতৃত্বে তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন পণ্যবাহী ট্রাক, মিনিট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, বাস, মিনিবাস, মাইক্রো, অটো, সিএনজি থেকে চাঁদা আদায় করে আসছে।

বুধবার রাতে রংপুরগামী একটি পণ্যবাহী ট্রাক থামিয়ে এ চক্রের সদস্যরা চাঁদা আদায় করছিল। এ সময় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন- দক্ষিণ খলেয়া বাজার এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে চাঁদাবাজ চক্রের মূল হোতা মো. চাঁন মিয়া (৫৬), রংপুর সদর থানার লালচাঁদপুর হিন্দু পাড়ার অনিল চন্দ্রের ছেলে অমল চন্দ্র রায় (৪০), গঙ্গাসাগর থানার ওসি পাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. আলাউদ্দিন (১৮), একই থানা নয়াটারি এলাকার আমিনুর রহমানের ছেলে মো. ফারুখ মিয়া (১৯), রংপুর সদর থানার গোকুল নাওয়াপাড়া তশির উদ্দিনের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম (৫৬) ও একই থানার গোকুল কাজিপাড়া সুলতান আলীর ছেলে মো. মহসিন আলী (৪০) এবং উত্তরখলে গংগাছড়া থানার মমতাজ আলীর ছেলে মো. মজিদুল ইসলাম (৪২)।

এই ঘটনায় র‌্যাব বাদী হয়ে রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া থানায় পেনাল কোড ১৮৬০ এর ৩৮৫/৩৮৬/১১৪/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আসামিদের রংপুরের গঙ্গাচড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান র‌্যাব-১৩ এর উপ-পরিচালক (মিডিয়া) মাহমুদ বশির আহমেদ।

;

বছর না পেরুতেই ফেনী হাসপাতালে বন্ধের পথে 'বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা'



মোস্তাফিজ মুরাদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে সরকারের উদ্যোগে দেশব্যাপী সরকারি হাসপাতালগুলোতে চালু করা হয়েছিল ‘‘বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা’’। তারই অংশ হিসেবে গেল বছরে এপ্রিলে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চালু হয় ‘বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা’ কার্যক্রম। তবে যথাযথ প্রচার-প্রচারণার অভাবে শুরু থেকেই আলোর মুখ দেখেনি ফেনী জেনারেল হাসপাতালের এ সেবা কার্যক্রমটি।

তবে এবার চিকিৎসকদের পরামর্শ ফি নিয়ে কর্তৃপক্ষের গড়িমসি, চিকিৎসক সংকট ও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে ‘বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা’। গত ৫ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে সেবা কার্যক্রম। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবা নিতে আসা রোগীরা। গেল বছরের এপ্রিল মাসে চালু হওয়া এ সেবা কার্যক্রমটি এক বছর না পেরুতেই বন্ধের পথে রয়েছে।

নিয়মানুযায়ী সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ‘বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা’ কেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়ার কথা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের। এতে একজন সিনিয়র কনসালটেন্টের পরামর্শ ফি ৪০০ টাকা, জুনিয়র কনসালটেন্টের ৩০০ টাকা, এমবিবিএস-বিডিএসের ফি ২০০ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। এ সেবা কার্যক্রমে সরকার নির্ধারিত পরামর্শ ফি থেকে একটি অংশ সম্মানী হিসেবে চিকিৎসকরা পাওয়ার কথা থাকলেও গত ৬ মাস ধরে চিকিৎসকরা ওই টাকা পাচ্ছেন না। এতে ‘বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা’ নিয়ে চিকিৎসকদের মাঝে দেখা দিয়েছে অনীহা। গত পাঁচদিন ধরে বন্ধ রয়েছে হাসপাতালের ‘বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা’।


হাসপাতালে ভর্তি রোগীর পাশাপাশি বৈকালিক সেবায় উপকৃত হতো সাধারণ মানুষ। স্বল্প টাকায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। তবে এ কার্যক্রম বন্ধ থাকাতে ভোগান্তিতে সেবা নিতে আসা রোগীরা।

মকবুল আহমেদ নামে এক রোগীর স্বজন বলেন, আমাদের মতো নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষজন এতো টাকা খরচ করে বাইরের প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা নিতে পারি না। জেলার একমাত্র সরকারি হাসপাতাল হওয়ায় সকালে অনেক রোগীর চাপ থাকে। সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় অনেক রোগীকে ডাক্তার দেখতে পারেন না। ‘বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা’ চালু থাকাকালীন এসব রোগীরা সেখানে চিকিৎসা নিতে পারতো। এমন কার্যক্রম বন্ধ হওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়।

মঞ্জুরুল ইসলাম নামে আরেকজন বলেন, কর্তৃপক্ষের গুরুত্ব থাকলে এ সেবা কার্যক্রম বন্ধ হয় না। ‘বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা’ চালু হওয়ার পর বাইরের ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিকগুলোর আয় কমে গেছে। গরিবরা উপকার পেলেও সমাজের কিছু সুবিধাভোগী তাদের স্বার্থ হাসিল করতে পারছিল না। এটি বন্ধের পেছনে ভিন্ন কারণও থাকতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের শিশু বিভাগের এক চিকিৎসক বলেন, সকাল থেকে হাসপাতালের বহির্বিভাগে ও ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী দেখতে হয়। সরকারি হাসপাতাল হওয়ায় বহির্বিভাগে সবসময় রোগীর অনেক চাপ থাকে। বিকেলে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে রোগী দেখলে যে টাকা পাওয়া যায় তার অনেক কম টাকা পাওয়া যায় ‘বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা’য়। কিন্তু ছয়মাস ধরে সেই টাকাও পাচ্ছি না। এটি যেহেতু চাকরির অংশ নয়, টাকা না পেলে কেন আমরা বাড়তি কাজ করব।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থো.সার্জারি) জামাল উদ্দিন বলেন, প্রথম কয়েকমাস পরামর্শ ফি থেকে টাকা পেলেও বেশ কয়েক মাস টাকা দেওয়া হচ্ছে না। টাকা না পাওয়ায় চিকিৎসকরাও মনের বিরুদ্ধে চেম্বার করেন। পারিশ্রমিক ছাড়া কেউই পরিশ্রম করতে চাইবে না।

হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. ব্রজ গোপাল পাল বলেন, ‘বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা’য় আমাকে মাসে একদিন চেম্বার করতে হয়। সরকার নির্ধারিত ফি থেকে একটি অংশ সম্মানী হিসেবে চিকিৎসকরা পেয়ে থাকেন। গত ৩-৪ মাস ওই টাকা পাইনি। টাকা কেন দেওয়া হচ্ছে না সেটিও আমাদের অজানা। এ বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক বা আরএমও ভালো বলতে পারবেন।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মো. আসিফ ইকবাল বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। এরমধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে ৬-৭ জন চিকিৎসক বদলি হয়েছে। যার কারণে ‘বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা’ বন্ধ রাখা হয়েছে। নতুন করে চিকিৎসক পদায়ন না হলে ‘বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা’ বন্ধ থাকবে।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল খায়ের মিয়াজি বলেন, ‘বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা’ বন্ধ কথাটি পুরোপুরি ঠিক নয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের কারণে এটি আপাতত বন্ধ বা ধীরগতিতে চলছে। যে নির্দেশনার ভিত্তিতে এতদিন সেবা কার্যক্রম চলেছে সেটি পরিবর্তনের প্রস্তাব রয়েছে। এইজন্য সেবা কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।

চিকিৎসকদের পরামর্শ ফি’র ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথমে যে প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল আমরা সেই অনুযায়ী চিকিৎসকদের টাকা দিয়েছি। ওই আদেশের বিরুদ্ধে এখন আবার আমাদের নিষেধ করা হয়েছে। তাই বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া কে কত টাকা পাবে সেটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্রের মাধ্যমে নতুন আরেকটি প্রজ্ঞাপন হবে। সে অনুযায়ী টাকা দেওয়া হবে। এখন সব টাকাই সংরক্ষিত আছে। আদেশ পেলে সবাইকে টাকা দেওয়া হবে।

;