প্রতারণা অভিযোগ শ্যামলী এসপি বাসের বিরুদ্ধে, থানায় যাত্রী



সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা: কলকাতা নিয়ে যাওয়ার নামে যাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে শ্যামলী (এসপি) পরিবহনের বিরুদ্ধে। ঢাকা থেকে যাওয়া যাত্রীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে এই প্রতারণা করে আসছে ‘শ্যামলী এসপি’ পরিবহন নামে বাস সংস্থা’। তবে এই পরিবহন মালিক বলেন, তার মতো একই কাজ করছে, সোহাগ, গ্রীনলাইন, হানিফ সহ ১১ জন পরিবহন মালিক। সরাসরি কলকাতা পৌঁছে দেবে এমন প্রতিশ্রুতিতে যাত্রীদের বাসে তুলে তারা। পরে বেনাপোল নামিয়ে দিয়ে ভারতের আরেকটি লোকাল বাসে তুলে দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী একজন যাত্রী অবশেষে বিষয়টি নিয়ে থানা পর্যন্ত গেছেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ওই পরিবহনের কাউন্টার থেকে দুজনকে আটক করে নেয়। সাময়িক বন্ধ করে দেয় শ্যামলী এসপি –এর নটরডেম কলেজের বিপরীত পাশের কাউন্টার। 

শুধু কলকাতা নামে প্রতারণাই নয়; অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে শ্যামলী এসপি বাসের বিরুদ্ধে।

সোমবার (৯ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে মতিঝিল থানায় ভুক্তভোগী যাত্রী এ মামলা করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা থেকে একমাত্র ‘শ্যামলী এন আর ট্রাভেলস’নামে বিআরটিসির ব্যানারে হুন্দাই বাস সরাসরি কলকাতা যায়। এছাড়া অন্য কোন বাস কলকাতা যায় না।

সরাসরি কলকাতাগামী ‘শ্যামলী এন আর ট্রাভেলস’ -রাকেশ ঘোষের মালিকানাধীন। আর প্রতারণায় অভিযুক্ত বাস সংস্থা ‘শ্যামলী এসপি’ রমেশ ঘোষের মালিকানাধীন। তারা দু’জন সম্পকে চাচা-ভাতিজা হলেও পরিবহন ব্যবসা আলাদা।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মতিঝিল থানায় অভিযোগকারী নারী যাত্রী বলেন, গত ৩০ জুন তিনি ঢাকা থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে শ্যামলী এসপি (কোচ নং ৫০১৫) বাসে রওয়ানা দেন। টিকিট কেনার সময় তিনি বার বার জানতে চান- বাসটি কি সরাসরি কলকাতা যাবে। তখন কাউন্টার থেকে তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলা হয় বাসটি সরাসরি কলকাতা নিয়ে যাবে। এজন্য তিনি ১৭০০ টাকা দিয়ে টিকিট কেনেন। কিন্তু টিকিটের আসল দাম ১৫০০ টাকা।

পরে বাসটি বেনাপোল নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়। কাস্টমস-ইমিগ্রেশন শেষ করে ভারত অংশে গিয়ে আর এই বাসটি তিনি খুঁজে পাননি। ভারত অংশে শ্যামলী এসপি বাসের যে কাউন্টার সেখানে যাওয়ার পর তাকে ভারতীয় লোকাল বাসে বাসে তাকে তুলে দেওয়া হয়। অন্য যাত্রীদের বেলায়ও তাই ঘটে বলে জানান অভিযোগকারী বাসযাত্রী।

তিনি আরও বলেন, ‘শ্যামলী ভারতীয় অংশের বাসটি ঢাকার ৬ নম্বর বাসের মতো। সিটে ঠিকমতো বসা যায় না এবং ভাঙ্গাচোরা অবস্থায় চলছে।’

এরপর গত ৮ জুলাই রাতে তিনি কলকাতা থেকে ঢাকা ফেরেন। ৯ জূলাই সন্ধ্যায় তিনি আরামবাগ কাউন্টারে অভিযোগ করতে যান। এসময় টিকিট দেখিয়ে অভিযোগ করলে উল্টো যাত্রীর দিকে টিকিট ছুড়ে মেরে বলা হয়- ভাড়া এটাই। কাটা বাসে টিকিট কেটেছেন, কাটা বাসেই যাবেন। যান যান এখান বেরিয়ে যান। 

এসময় কাউন্টার ম্যানেজার ওই নারী যাত্রীর সঙ্গে অশোভন আচারণ করতে থাকেন। কি করবেন করেন- যান ভাগেন, বের হোন বের হোন –এসব। এক পর্যায়ে তিনি পুলিশকে ডাকতে বাধ্য হন।

মতিঝিল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে প্রাথমিক তথ্য প্রমাণ পেয়ে কাউন্টার ম্যানেজার দু’জনকে আটক করে নিয়ে যায়। যাত্রী থানায় গিয়ে এজাহার (মামলা-১৫) দাখিল করেন।

মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক যাত্রীর অভিযোগ ও এজাহার দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ পরবর্তী ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওসি।

ভুক্তভোগী যাত্রী জানান, শ্যামলী এসপি প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রীর সঙ্গে একই রকম প্রতারণা করছে বলেই তিনি থানা পযন্ত অভিযোগ দিলেন।

শ্যামলী এসপি পরিবহনের মালিক রমেশ ঘোষের কাছে রাতে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি পাল্টা বলেন ‘প্রতারণা হবে কেন, একটা যাত্রী বেনাপোলে যাবে। এটাকে ট্রানজিট বলে। বর্ডারে সিল মেরে ওপারে গিয়ে কানেক্টিং গাড়িতে উঠে আগের সিটেই যাত্রী কলকাতা যেতে পারবে।

আর সরাসরি কলকাতা বলে কোন যাত্রীদের কাছে টিকিট বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করেন রমেশ ঘোষ।

`দিনে ঢাকা থেকে এরকম ৩৫ টি গাড়ি যায়। তার নিজের ২ টি গাড়িসহ ১১ জন মালিকের  ৩৫টি বাস বেনাপোল পর্যন্ত কাটা সার্ভিসের ব্যবসা করছে বলে জানান রমেশ ঘোষ।

অন্য বাসকোম্পানির নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন ‘একই রকম চলছে সোহাগ, গ্রীনলাইন, এসআলম, সৌদিয়া, হানিফ, দেশ ট্রাভেলস, ঈগল, রয়েল, ন্যাশনাল ও শ্যামলী।’

তিনি স্বীকার করে জানান, কলকাতায় এখন তার কোন বাস যায় না। অতীতে ১৭ বছর চলছিলো। এখন শ্যামলী এন আর ট্রাভেলস-এর বাস যায়। এটা তার মালিকানাধীন নয়।

অভিযোগকারী যাত্রীর বিষয়ে তিনি বলেন, যাত্রীর অভিযোগ থানা দিয়েছেন থানা ব্যবস্থা নেবে। এখন যাত্রী যদি ক্ষমা না করেন তাহলে শাস্তি পেতে হবে তার কাউন্টার কর্মকর্তাদের।

এছাড়া তার মালিকানাধীন বাসে একাধিক সময়ে মাদক পরিবহন সহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, মাদক আসতেই পারে। এজন্য কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। শ্রমিক ছাঁটাই করছি। র‌্যাব-পুলিশকে বলেছি।’ 

বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক রুটে গাড়ি চালানো হয় বিআরটিসি’র অধীনে। বিআরটিসি জানায়, বাংলাদেশ থেকে একমাত্র সরাসরি শ্যামলী এন আর ট্রাভেলস-এর বাস কলকাতা যাতায়াত করে। এছাড়া আর কোন পরিবহনের বাস কলকাতা যায় না। সোহাগ পরিবহন, দেশ ট্রাভেলস সহ অনেক পরিবহন সংস্থা প্রতারণার মাধ্যমে যাত্রীদের কাছ থেকে সরাসরি কলকাতা নিয়ে যাবে বলে বাসে উঠাও। এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভারত ও বাংলাদেশের স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ে আলাদা লিখিত অভিযোগ দুই দেশের সরকারি বাস সংস্থা দিয়ে রেখেছে।

   

শিশু জায়েদকে দত্তক পেতে ১০ আবেদন, দুটি বিবেচনায়



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সড়ক দুর্ঘটায় মা জায়েদা খাতুনের মৃত্যুর পর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা দেড় বছরের শিশু জায়েদ হাসানকে দত্তক দেওয়ার বিষয়ে সভা করেছে শিশু কল্যান বোর্ড। সভায় দাখিল হওয়া ১০টি আবেদনের মধ্যে ২টি আবেদনকে বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

শিশুটিকে দত্তক দেয়ার বিষয়টি উচ্চ-আদালতকে জানানো হয়েছে। আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিশুটির বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

রবিবার (১৯ মে) দুপুরে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই সভা করেন জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের শিশুকল্যাণ বোর্ড।

জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সদস্য সচিব ও জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক আ. কাইয়ুম বলেন, সভায় শিশু জায়েদকে দত্তক দেওয়ার বিষয়ে আবেদনকারীর অর্থনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদা দিক গুরুত্ব দিয়ে দুইটি আবেদন বিবেচনায় রাখা হয়েছে। শিশু জাহিদের বিষয়ে হাইকোর্টের একটি নির্দেশনা রয়েছে। আজকের সভার বিষয়ে উচ্চ-আদালতকে জানানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশনার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, তার মামা রবিন মিয়ার আর্থিক সঙ্কট রয়েছে। তিনি একজন ভ্যান চালক। তার আরও তিনটি সন্তান রয়েছে। এ কারণে তিনি সুন্দর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জাহিদকে নিজের কাছে রাখতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

সেই মর্মে ইতোমধ্যে তিনি লিখিত একটি অনাপত্তিপত্র দিয়েছেন। এরপর শিশু কল্যান বোর্ডের আহবানে দশটি পরিবার জায়েদকে দত্তক নিতে আবেদন করেছিল। এর মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদা দিক গুরুত্ব দিয়ে দুইটি আবেদন বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

সভায় ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীসহ অন্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

দত্তক দেয়ার বিষয়ে শিশুটির মামা রবিন মিয়া বলেন, জায়েদের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি চাই আল্লাহ তাকে ভালো রাখুন।

সূত্রমতে, গত ৯ মে রাতে ময়মনসিংহের ভালুকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন জায়েদা খাতুন (৩০) ও তার দেড় বছর বয়সী শিশুপুত্র জায়েদ হাসান। সেখানে গত ১০ মে রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জায়েদা। তবে তখনও জায়েদার পরিচয় পাওয়া যায়নি।

জায়েদার মৃত্যুর পর হাসপাতালের বিছানায় দেড় বছরের স্বজনহীন অজ্ঞাত শিশুর কান্নাকাটি ও চিৎকারের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এমন খবর জানতে পেরে গত ১১মে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান নিহত জায়েদার ভাই রবিন মিয়া।

পরে রবিন মিয়া ওইদিন বোনের মরদেহ বুঝে পেলেও শিশুটি সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। কিন্তু হাসপাতালে এসে রবিন মিয়া শিশুটিকে লালন পালন করতে প্রথমে সম্মতি জানালেও পরে তিনি অসম্মতি জানান। এরপর জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ড শিশুটিকে দত্তক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ জানান, সড়কে নিহত জায়েদা খাতুনের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার দোররাবাজার উপজেলায়। তিনি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার মাস্টারবাড়ি এলাকায় বসবাস করতেন। গত ৯ মে দিবাগত রাত তিনটার দিকে মাস্টাবাড়ি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় তারা আহত হলে পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয়ে তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

;

আয় কমলেও ৫ বছরে লিপটনের সম্পদ বেড়েছে দ্বিগুণ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন। ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রথমবার সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। পরপর দুই নির্বাচনী হলফনামা থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত ৫ বছরে তার আয় আগের তুলনায় প্রায় ৪ গুণ কমলেও সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি।

হলফনামায় উল্লেখিত তথ্যে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে তার মোট সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছিল ৪ কোটি ৭৩ লাখ ৫৩ হাজার ৮৮৬ টাকা। ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৩৯ লাখ ২৪ হাজার ৬৯২ টাকায়। সে হিসেবে ৫ বছরের ব্যবধানে জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটনের মোট সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ২ দশমিক ১৯ গুণ।

২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় তার বার্ষিক আয় ১ কোটি ৬৪ লাখ ৩৬ হাজার ১২১ টাকা উল্লেখ করেছিলেন। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হলফনামায় বার্ষিক আয় ৪১ লাখ ৬৭ হাজার ৯৭৩ টাকা দেখানো হয়েছে। যা আগের আয়ের ৪ ভাগের ১ ভাগ প্রায়।

২০১৯ সালের হলফনামায় শেয়ার-সঞ্চয়পত্র থেকে কোনো আয় ছিল না লিপটনের। নিজের একমাত্র আয়ের উৎস হিসেবে ব্যবসা থেকে ওই টাকা বার্ষিক আয় হিসেবে দেখিয়েছিলেন তিনি।

এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দাখিলকৃত হলফনামায় তার বার্ষিক আয় ৪১ লাখ ৬৭ হাজার ৯৭৩ টাকা দেখানো হয়েছে। আয়ের খাত হিসেবে কৃষি খাতে বার্ষিক আয় ৩ লাখ টাকা, ব্যবসা থেকে ৩৩ লাখ ৮৭ হাজার ৯৭৩ টাকা ও অন্যান্য খাত থেকে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা আয় দেখানো হয়েছে। একই হলফনামায় প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের আয় হিসেবে শেয়ার ও সঞ্চয়পত্র থেকে ১৫ লাখ ৮৭ হাজার ৯৭০ টাকা ও চাকরি থেকে ১২ লাখ ২০ হাজার ৫৭২ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।

২০১৯ সালের হলফনামায় লিপটন দেখিয়েছিলেন স্থাবর সম্পদের মধ্যে কৃষি জমির (অর্জনকালীন মূল্য) মূল্য ১ কোটি ৮২ লাখ ৮ হাজার ৪০০ টাকা, অকৃষি জমি ৮ লাখ ২৪৯ টাকা ও যৌথ মালিকানাধীন ১ কোটি ৫০ টাকার দালান।

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী, স্থাবর সম্পদের মধ্যে জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটনের (অর্জনকালীন সময়ের আর্থিক মূল্য) কৃষিজমির মূল্য ২ কোটি ৮৮ লাখ ৮৮ হাজার ৯০০ টাকা, অকৃষি জমির মূল্য ১ কোটি ৬৯ লাখ ৭ হাজার ৫৪৯ টাকা, পৈত্রিক সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ৪৩ শতকের দালান ও দৃষ্টি পুল অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেডের ফ্যাক্টরির ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৮ হাজার ৩৯৪ টাকা।

এবারের হলফনামা অনুযায়ী, লিপটনের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ রয়েছে ৩ লাখ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৪৩ লাখ ৩৪ হাজার ৮৪৯ টাকা, শেয়ার, বন্ড ও ঋণপত্রে ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান ধাতু ২১ লাখ টাকা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও আসবাবপত্র ৮৫ হাজার টাকার দেখানো হয়েছে। একই হলফনামায় তার স্ত্রীর নামে নগদ, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, স্বর্ণালংকার, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র বাবদ ২৭ লাখ ৫৯ হাজার ৩১৫ টাকার অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয়েছে।

২০১৯ সালে দাখিলকৃত হলফনামায় দেখা গেছে, লিপটন অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ ২ লাখ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৩৫ হাজার ২৩৭ টাকা, বন্ড, শেয়ার ও ঋণপত্র ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৮৫ হাজার টাকা, একটি করে পাজেরো ও কার ৪০ লাখ টাকা, আসবাবপত্র ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দেখানো হয়েছিল। এছাড়া ২১ লাখ টাকার ৪৬ ভরি স্বর্ণালংকার ও স্ত্রীর নামে ৩ লাখ টাকার সাড়ে ৬ ভরি স্বর্ণালংকার দেখানো হয়েছিল। একই হলফনামায় স্ত্রীর নামে কোনো স্থাবর সম্পদ না থাকলেও ২৭ লাখ ৫৯ হাজার ৩১৫ টাকার অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয়েছিল।

মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে আওয়ামী রাজনীতিতে যুক্ত হন। পরবর্তীতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় পরিষদের সহ-সভাপতি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।

লিপটন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন। মনোনয়ন বোর্ডেও পছন্দের প্রার্থী ছিলেন তিনি। কিন্তু মহাজোটকে আসনটি ছেড়ে দেওয়ায় মনোনয়ন বঞ্চিত হন তিনি।

পরে ২০১৯ সালে সোনাগাজী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান হন লিপটন। বর্তমানে তিনি ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

;

কুমিল্লায় সাদেক হত্যা মামলায় সাত জনের মৃত্যুদণ্ড



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার হোমনায় ব্যবসায়ী সাদেক মিয়া হত্যা মামলায় ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে কুমিল্লার আদালত। এছাড়া দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানারও আদেশ দেয়া হয়েছে।

রবিবার (১৯ মে) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন এই রায় দেন।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী কামরুজ্জামান বাবুল জানান, টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে ২০১৫ সালের ২৮ জুলাই খুন হয় হোমনা উপজেলার ছোট গানিয়ারচর এলাকার ব্যবসায়ী মোঃ সাদেক মিয়া। ওই দিন দুপুরে বাড়ি থেকে ফোনে ডেকে নিয়ে সাদেক মিয়ার হাত পা কেটে ফেলে রাখা হয় ধনিয়া ক্ষেতে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন সকাল আটটায় মৃত্যুবরণ করে সাদেক মিয়া।

এই ঘটনায় সাদেক মিয়ার স্ত্রী রেখা আক্তার ১৮ জনের বিরুদ্ধে হোমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। বিশ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দীর্ঘ শুনানির পর আদালত সাদেক মিয়া হত্যা মামলায় সাতজনের মৃত্যুদণ্ড ও সাতজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ ও একজনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।

আইনজীবী কামরুজ্জামান আরো জানান, নিহত সাদেক মিয়া মৃত্যুর আগে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনায় জড়িতদের নাম উল্লেখ করে জবানবন্দি প্রদান করেছেন। বিজ্ঞ বিচারক রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত ৩ আসামী ও খালাস প্রাপ্ত একজন উপস্থিত ছিলেন।

মামলার বাদী রেখা আক্তার জানান, আসামিরা সবাই সাদেক মিয়ার পূর্ব পরিচিত। তাদের কাছে সাদেক মিয়া যেসব টাকা পায় সেগুলো যেন না দিতে হয় সেজন্য পরিকল্পনা করে তাকে হত্যা করা হয়। তিনি পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও আইনের আওতায় এনে আদালতের রায় কার্য করার দাবি জানান।

;

প্রবাসীর ১৬ ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে নেওয়ার সময় এসআই আটক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর টাইগারপাস এলাকায় এক প্রবাসীর ১৬ ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের উপ-পরিদর্শককে (এসআই) আটক করা হয়েছে। এসময় ওই এসআইয়ের এক সোর্সকেও পুলিশ আটক করে।

রোববার (১৯ মে) দুপুর সোয়া ২টার দিকে নগরীর আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের দুই নম্বর গেট অংশ থেকে দুজনকে আটক করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ।

আটক উপপরিদর্শক আমিনুল ইসলাম খুলশী থানায় কর্মরত আছেন। আর মো. জাহেদ পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নগরীর টাইগারপাস এলাকায় এক ব্যক্তির কাছ থেকে স্বর্ণ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে ধাওয়া দেন। ধাওয়া খেয়ে তারা আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের ওপরে উঠে যান। পরে খবর পেয়ে ফ্লাইওভারের ওপরে দুই নম্বর গেট অংশ থেকে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ দুজনকে স্বর্ণসহ আটক করে। এরপর তাদের খুলশী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমান চাকমা। তিনি বলেন, আমরা ওই এসআইকে তার এক সোর্সসহ আখতারুজ্জামান ফাইওভারের ওপর দুই নম্বর গেট অংশ থেকে আটক করেছি। ঘটনাস্থল যেহেতু খুলশী থানা এলাকায়, তাই দুজনকে খুলশী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মো. মোখলেসুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, পুলিশের এক এসআইসহ দুইজন খুলশী থানায় আটক রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহর মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

;