রংপুরে ২২দিনে ট্রাক্টরে প্রাণ গেল ৬ জনের
রংপুর জেলায় সড়কে মহাসড়কে বেড়ে চলেছে ট্রাক্টরের দৌরাত্ম্য। এতে যেমন ঘটছে দুর্ঘটনা, তেমনি বাড়ছে প্রাণহানির ঘটনাটাও। গেল ২২ দিনে সাতটি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেল ৬ জন। এরমধ্যে এক কলেজ ছাত্র ও প্রাথমিক স্কুল পড়ুয়া শিশু শিক্ষার্থী রয়েছে।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালেও রংপুরের হারাগাছ পৌর এলাকাতে বালুবাহী একটি ট্রাক্টরের চাপায় আরিফুল ইসলাম (১৯) নামে যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
জানা গেছে, ভোর পৌনে ৫টার দিকে আরিফুল একটি ট্রাক থেকে বালু আনলোড করছিলেন। এ সময় পেছন থেকে অপর একটি বালুবাহী ট্রাক্টর তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এদিকে গত ২২ দিনে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর, তারাগঞ্জ, পীরগঞ্জ, বদরগঞ্জসহ বিভিন্নস্থানে একাধিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটলেও শুধু ট্রাক্টর চাপায় মারা গেছে ৬ জন। এরমধ্যে ৪ জনের পরিচয় জানা গেছে।
নিহতরা হলেন, মিঠাপুকুরের শঠিবাড়ী কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র সাব্বির হোসেন (১৭) ও শঠিবাড়ী কবি নজরুল বিদ্যাপীঠের প্রথম শ্রেণির শিশু শিক্ষার্থী আল-ফারাবি (৭)। গত ৪ ডিসেম্বর মোটরসাইকেল করে পরীক্ষা দিতে যাবার পথে শঠিবাড়ী মহিয়ারপুর এলাকায় বালুবাহী একটি ট্রাক্টর মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই এ দুই শিক্ষার্থী মারা যায়। এছাড়া ৭ ডিসেম্বর তারাগঞ্জ উপজেলার ইকচরচালিতে নিয়ন্ত্রণহীন একটি ট্রাক্টরের নিচে প্রাণ হারায় প্রতিবন্ধী কিশোর লিটন মিয়া (১৪)। মায়ের কাফনের কাপড় কিনে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফেরার পথে ট্রাক্টর চাপায় মর্মান্তিক মৃত্যু হয় ভুট্টু মিয়া (২৮) নামে এক যুবকের। গত ১৯ ডিসেম্বর পীরগঞ্জ উপজেলার কিশোরগাড়ি গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এব্যাপারে প্রশাসনের দুর্বলতা ও আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় ট্রাক্টর দুর্ঘটনা বাড়ছে বলে দাবি করেছেন নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের রংপুর জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ মাহমুদ।
তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ট্রাক্টর পণ্য বা মালবাহী কোনো গাড়ি নয়। এটি ব্যবহার হবে কৃষি জমিতে চাষাবাদে। অথচ তা না করে পণ্যবাহী গাড়ি বানিয়ে সড়কে মহাসড়কে ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ যান।
এদিকে ট্রাক্টর দুর্ঘটনা রোধসহ সড়ক-মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন।