পাটকল শ্রমিকের জানাজা সম্পন্ন, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা
পাটকল শ্রমিক আব্দুস সাত্তারের জানাজা সম্পন্ন, ছবি: বার্তা২৪.কম

পাটকল শ্রমিক আব্দুস সাত্তারের জানাজা সম্পন্ন, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

১১ দফা দাবি আদায়ে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে মৃত্যুবরণকারী প্লাটিনাম জুট মিল শ্রমিক আব্দুস সাত্তারের (৫৮) জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় প্লাটিনাম জুট মিল গেটে বিআইডিসি সড়কে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। স্বজন ও সহকর্মীরা সাত্তারের মরদেহ পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ায় নিয়ে যান।

জানাজায় খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক তারিকুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের নগর সেক্র‌েটারী মাওলানা নাসির উদ্দিন, রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মুরাদ হোসেন, শ্রমিক নেতা সোহরাব হোসেন, কাওসার আলী মৃধা, খলিলুর রহমান, সেলিম আকন, সেলিম শিকদার, মনিরুল ইসলাম শিকদার, আবু হানিফ, শাহাজান সিরাজ, তরিকুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, মিন্টু মিয়া, স্টার জুট মিলের আবু হানিফ, তবিবর রহমান, আলমগীর হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, লিয়াকত হোসেন, আব্দুল হামিদ, হারুন অর রশিদসহ পাটকলের শ্রমিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

এছাড়া বাদ জুম্মা রাষ্ট্রয়ত্ত পাটকলের বিভিন্ন স্থানে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এদিকে, জানাজায় অংশ নেওয়া শ্রমিকরা ঘোষণা দেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

এরআগে, বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় অনশন কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে শ্রমিক আব্দুস সাত্তার অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রথম‌ে তাকে খালিশপুর ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে খুমেক (খুলনা মেডিকেল কলেজ) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে শারীরিক অসুস্থতার কারণে শ্রমিক আব্দুস সাত্তারের মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে তার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।

তিনি বলেন, মৃত শ্রমিকের পরিবারকে সব ধরনের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এছাড়া খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও খুলনা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনশনরত শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য মেডিকেল টিম গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

এসময় তিনি খুলনার বিভাগীয় শ্রম অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় পাটকল শ্রমিকদের অনশন প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে খুলনার বিভাগীয় শ্রম অধিদফতরের সম্মেলনকক্ষে খুলনায় পাটকল শ্রমিকদের অনশন প্রত্যাহারের বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

অনশন ও ধর্মঘটে থাকা শ্রমিকদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কাজে ফেরার আহ্বান জানালেও শুক্রবারও চতুর্থ দিনের মতো আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিকরা।

শ্রমিক নেতারা জানান, আমরণ অনশনে অংশ নিয়ে ইতোমধ্য‌ে খুলনার বিভিন্ন পাটকলের অন্তত দুই শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এদের মধ্যে ৫০ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক খলিলুর রহমান বলেন, প্রতিদিনই শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। তবে যতই কষ্ট হোক, ১১ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন কর্মসূচি চলবে।

ক্রিসেন্ট জুট মিলের সিবিএ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা সোহরাব হোসেন বলেন, অনশন কর্মসূচিতে দুই শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছে। অনেককে খুমেকে পাঠানো হয়েছে। স্যালাইন দিয়েও অনেকে অনশনে আছেন।

উল্লেখ্য, মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে গত ১৭ নভেম্বর ৬ দিনের কর্মসূচির ডাক দেয় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদ। গত ২৫ নভেম্বর থেকে কর্মসূচি শুরু হয়। সবশেষ ১০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় আমরণ অনশন।

   

গাজীপুরে দুই ট্রেনের সংঘর্ষ, তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা-জয়দেবপুর রেল সড়কের গাজীপুরের ছোট দেওড়া কাজীবাড়ি এলাকায় তেলবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতেহ মো. সফিকুল ইসলাম এ তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

শুক্রবার (৩ মে) দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান গাজীপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল ফাতেহ মো. সফিকুল ইসলাম। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

জেলা প্রশাসক জানান, দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর রহমানের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ্ আল আরেফিন জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে গাজীপুরে তেলবাহী ও যাত্রী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। আহতদের উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

;

হবিগঞ্জে এক পরিবারের ৪ সদস্যের দাফন সম্পন্ন



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, হবিগঞ্জ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হবিগঞ্জের মাধবপুরে ট্রাক ও প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের ৪ জন নিহত হয়েছিল। শুক্রবার (৩ মে) নিহতদের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

শুক্রবার সকাল সোয়া ১০ টায় ১ম নামাজে জানাযায় পুলিশ তিনজন। পরে সাড়ে ১০ টায় কামরুন নাহারের নামাজের জানাযা তাদের নিজ বাড়ির উঠানে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজা পরিচালনা করেন বাড়ির মসজিদের ইমাম, হাফেজ মো. রবিউল হুসাইন, নামাজে পরিবার পরিজনসহ প্রায় ২ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান অংশগ্রহণ করেন। জানাযা শেষে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে পাশাপাশি কবরে দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে সকাল ৬ টা নাগাদ নিহতদের মরদেহ পটুয়াখালীর গলাচিপার সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামে তাদের নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছায়।  

নিহতরা হলেন, মৌজালী মৃধার মেঝো ছেলে মোঃ জামাল হোসাইন (৪২), ছোট ছেলে এনামুল হক খোকন (৩৫), নিহত জামাল মৃধার স্ত্রী কামরুন নাহার (৩০) ও ছেলে কাওসার হোসাইন অনন্ত (১২)। এছাড়াও তাদের সাথে ড্রাইভারও মারা গেছেন।

মো. জামাল হোসাইন (৪২) ঢাকার সাভারে অবস্থিত পাইয়োনিয়ার গ্রুপের (pioneer group) মেক্স কম ইন্টারন্যাশনাল বিডি লিমিটেড এর ইলেকট্রিশান ইনচার্জ পদে কর্মরত ছিলেন। ছোট ভাই এনামুল হক খোকন (৩৫) একই এলাকার বেবিলন গ্রুপের অবনী ফ্যাশনের সিনিয়র সুইং অপারেটর পদে কর্মরত ছিলেন।  

নিহত জামালের খালাতো ভাই মো. ফেরদৌস বলেন, ‘জামাল ভাই তার ছেলে কাওসারের মানত পালনে ৩০ এপ্রিল রাতে হজরত শাহজালাল (রাঃ) মাজার জিয়ারতের উদ্দেশ্যে সিলেটে জান। সাথে ভাবি ও খোকন ভাইও ছিল। ১লা মে তারিখ সারাদিন সিলেট থাকেন এবং রাতে সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। তাদের সাথে ১০ টার পরে সর্বশেষ কথা হয়। আমরা রাত দুইটার দিকে দুর্ঘটনার খবর পাই।’  

নিহত জামাল ও খোকনের মামা মো. সোনা মিয়া বলেন, আমার ভাগিনা জামাল ও খোকন ঢাকার সাভারে চাকরি করতো। তারা খুবই ভদ্র ও শান্ত সভাবের ছিলো। ওদের মৃত্যু আমার বোন স্বাভাবিক ভাবে মানতে পারে নাই। এই পরিবারে বর্তমানে তেমন কোনো উপার্জনক্ষম কোনো বেক্তি না থাকায় অসহায় হয়ে পরেছেন। তাই আমরা সরকারের সর্বোচ্চ সহযোগিতা কামনা করছি৷ 

গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল জানান, নিহতদের মরদেহ আজ সকালে গলাচিপা উপজেলায় এসে পৌঁছেছে  ইতিমধ্যে জানাযা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহতের পরিবারের সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসন কাজ করছে।

;

সিলেটে কমছে নদ-নদীর পানি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম সিলেট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সারাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে টানা কয়েকদিন সিলেট অঞ্চলে হয়েছে বৃষ্টিপাত। এরমধ্যে দেখা দিয়েছে বন্যার আশঙ্কা। টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

তবে, একদিনের ব্যবধানে সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারা ও সারিসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) রাত ৯টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও শুক্রবার(৩ মে) সকাল ৯টা পর্যন্ত তা কমেছে । একইভাবে পানি কমেছে কুশিয়ারার আমলশীদ পয়েন্টে ও সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৃষ্টিপাত হলে নদ-নদীর পানি একটু বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে তার স্থায়ীত্ব বেশিক্ষণ হবে না।

এদিকে, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে সিলেটের কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এরমধ্যে কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, জকিগঞ্জের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের তথ্যমতে, শুক্রবার সকাল ৬টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে ১১ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার, দুপুর ১২টায় ১০ দশমিক ৯০সেন্টিমিটার, সিলেটে সকাল ৬টায় ৮দশমিক ২৫সেন্টিমিটার, দুপুরে ৮দশমিক ১২সেন্টিমিটার, সুনামগঞ্জে সকাল ৬টায় ৪ দশমিক ৬৯ সেন্টিমিটার, দুপুরে ৪ দশমিক ৬৪ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশীদ পয়েন্টে সকাল নয়টায় ১২দশমিক ৫২ সেন্টিমিটার, সারি নদীর পান সারিঘাট পয়েন্টে সকাল ৬টায় ৯ দশমিক ৪৩ সেন্টিমিটার ও দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছিলো ৯ দশমিক ১২ সেন্টিমিটার। প্রতিটি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে সুনামগঞ্জের দিকে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এ ব্যাপারে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাইড্রোলজি বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সত্যেন্দ্র বৈদ্য জানান, গতকাল সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছিল। রাত থেকে দুপুর অবধি বৃষ্টিপাত না হওয়ায় নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তাছাড়া নিম্নাঞ্চলগুলোতে খুব বেশি পানির চাপ না থাকায় দ্রুত সরে যাচ্ছে।

;

৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়নসহ সাত দফা দাবি সরকারি কর্মচারিদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়নসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারি দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ।

শুক্রবার (৩ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি উপস্থাপন করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মুখ্য সমন্বয়ক ওয়ারেছ আলী তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সময়ের সাথে সংগতি রেখে বাড়ি ভাড়া, রেশনিং পদ্ধতি চালু, চিকিৎসা ভাতা, শিক্ষা সহায়ক ভাতা, যাতায়াত ভাতা ও টিফিন ভাতাদি প্রদানের দাবিতে আজকের এই সংবাদ সম্মেলন ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারি দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের ৭ দফা দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করে আমাদের সংগঠনের ব্যানারে ২০১৯ সাল থেকে সংবাদ সম্মেলন, স্মারকলিপি প্রদান, মানববন্ধন, বিভাগীয় সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছি। সর্বশেষ গত বছরের ২৬ মে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সে সময়ে বেতন বৃদ্ধি ও ভাতাদির অসংগতি দূর করার আশ্বাসমূলক আলোচনা হয়। সে আশ্বাসের প্রেক্ষিতে মহাসমাবেশে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। কিন্তু আমাদের বেতন-ভাতাদি বৃদ্ধির সকল আশাকে নিরাশায় পরিণত করে সরকার মাত্র ৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা প্রদান করে। সরকারের এ ঘোষণায় প্রজাতন্ত্রের ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারিরা চরমভাবে হতাশ ও ক্ষুদ্ধ হয়। সরকার কর্তৃক এ ৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা বর্তমান বাজার ব্যবস্থার সাথে সামাঞ্জস্যপূর্ণ নয় ।

তিনি আরও বলেন, তাছাড়াও আমাদের সংগঠনের দাবি ছিল কর্মচারি অঙ্গণে বৈষম্য দূর করা। কিন্তু তা না হয়ে ৫ ভাগ বিশেষ সুবিধায় ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারিদের বৈষম্য আরও বৃদ্ধি হয়েছে। ১১-২০ গ্রেডের অধিকাংশ কর্মচারিদের মূল বেতন ২০ টাকার নিচে, তাদের আগামী ৪/৫ বছরেও বিশেষ সুবিধা সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে উঠবে না। অথচ ১-৯ গ্রেডের কর্মচারিদের এ সুবিধা চক্রবৃদ্ধি হারে বৃদ্ধি পেতে থাকবে। আমরা এ ধরণের বিশেষ সুবিধা চাইনি। আমরা চেয়েছি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারিদের মূল বেতন বৃদ্ধি করা। যাতে কর্মচারিরা পরবর্তীতে এর সুবিধা পেতে পারে ।

তিনি লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, ৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা পুনঃবিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী বর্তমান সময়ের মুদ্রাস্ফীতির সাথে সংগতি রেখে তা মূল বেতনের সাথে সংযোজন ও সকল ভাতাদি যুগোপযোগী করার জন্য সবিনয়ে অনুরোধ জানাচ্ছি। একইসাথে যথাশীঘ্র বৈষম্যমুক্ত ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়নেরও দাবি জানাচ্ছি । কেননা দ্রব্য-মূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে পরিবারের ভরণ-পোষণের ব্যয়ভার প্রাপ্ত বেতনের অর্থ দিয়ে মাসের ১৫ দিনও চলা সম্ভব হয় না।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে সাত দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হল:-

১। পে-কমিশন গঠন পূর্বক ৯ম পে স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। পে-স্কেল বাস্তবায়নের পূর্বে অন্তবর্তীকালীন কর্মচারীদের জন্য ৫০% মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করতে হবে।

২। রেশনিং পদ্ধতি চালুসহ ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা অনুযায়ী ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে।

৩। সচিবালয়ের ন্যায় সকল দপ্তর, অধিদপ্তরের পদনাম পরিবর্তনসহ ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ এবং এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রনয়ণ করতে হবে।

৪। টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড পূর্ণবহালসহ বেতন জ্যেষ্ঠতা পূনঃবহল, বিদ্যমান গ্রাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০% এর স্থলে ১০০% নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।

৫। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের আপীল বিভাগের রায় বাস্তবায়নসহ সহকারী শিক্ষকদের বেতন নিয়োগ বিধি-২০১৯ এর ভিত্তিতে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ ও অধঃস্তন আদালতের কর্মচারিদের বিচার বিভাগীয় সহায়ক কর্মচারি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।

৬। প্রাথমিক শিক্ষার দপ্তরী কাম প্রহরীসহ আউট সোর্সিং পদ্ধতি বাতিল পূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্বখাতে স্থানান্তর করতে হবে। ব্লক পোষ্টে কর্মরত কর্মচারীসহ সকল পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর বেতন ফেলের উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে।

৭। বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় পূর্বক সকল ভাতাদি পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়স সীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনটির সভাপতি মো.আনোয়ারুল ইসলাম তোতা বলেন, আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি যাতে করে আমাদের দাবিগুলা যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়। আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে আমরা সামনের দিনগুলোতে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবো।

;