চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানার আলকরণ এলাকায় দুই কিশোর গ্যাং দলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলরের সহকারী। ভাঙচুর করা হয়েছে একাধিক দোকানপাট।
বৃহস্পতিবার (২ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে আলকরণ দুই নম্বর গলিতে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই কোতোয়ালী ও সদরঘাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা গেছে, আহত ওই ব্যক্তির নাম মো. সালাউদ্দিন। তিনি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লবের সহকারী হিসেবে কাজ করেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ২৮ নম্বর নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন।
সূত্র বলছে, মূলত জাহাজের স্ক্র্যাপ বিক্রি নিয়ে আলকরণ ওয়ার্ডের ৩ নম্বর গলির অভির সাথে ২ নম্বর গলির আকাশের দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছিলো দ্বন্দ্ব। সবশেষ, বুধবার (১ মে) বিকেলে অভির সাথে আকাশের কথা-কাটাকাটি হয়৷ অভির বন্ধু ফিরিঙ্গিবাজারের চেয়ারম্যান ঘাট এলাকার কিশোর গ্যাং নেতা আসিফ। অভির পক্ষ হয়েই একইদিন আসিফ তার গ্যাং সদস্যদের নিয়ে তাণ্ডব চালিয়েছেন আলকরণে।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার (২ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে আবারও আসিফ গ্যাং আলকরণ এলাকায় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাণ্ডব চালায়। তারা আনসার গলির সামনের কয়েকটি দোকানেও ভাঙচুর চালায়৷ খবর পেয়ে ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম উপস্থিত হন ঘটনাস্থলে। তাদেরকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা চালালে গ্যাং সদস্যরা হামলা চালায় কাউন্সিলর হাসান মুরাদের সহকারী সালাউদ্দিনের ওপর। এতে তিনি মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন।
চসিকের ৩১ নম্বর আলকরণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম বলেন, ‘আজ দুই-তিন ধরে এই ঘটনা নিয়ে আমরা খুব বিরক্ত। যতটুকু জেনেছি, আলকরণ ৩ নম্বর গলির একটি ছেলের সাথে ২ নম্বর গলির একটি ছেলের অনেকদিন ধরে রেশারেশি হচ্ছে। ঘটনার সূত্রপাত অভয়মিত্র ঘাট এবং চেয়ারম্যান ঘাটে জাহাজের মালামাল চুরি বা বেচাবিক্রি সংক্রান্ত ঘটনা। এগুলো নিয়ে আসিফ নামে একটা ছেলে তার গ্যাং নিয়ে ফিরিঙ্গিবাজার এলাকা থেকে আমার এলাকায় (আলকরণ) চলে আসছে। এই ঘটনার সাথে আমার এলাকারও আকাশ নামে একটি ছেলে জড়িত আছে।’
জানতে চাইলে ৩৩ নং ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব বলেন, ‘গত পরশু থেকে ঘটনার সূত্রপাত ব্রিজঘাট এলাকায়। বুধবার (১ মে) বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এসে কিরিচসহ ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দৌঁড়ঝাপ করছে। আজকেও একই ঘটনা। ঘটনা শুনে আমরা ছুটে আসছি আলকরণে। আমার সাথে সবসময় সালাউদ্দিন নামে একজন থাকে। তাকে মারধর করে গুরুতর আহত করেছে। মাথায় আঘাত পেয়ে সে এখন চমেক হাসপাতালে ভর্তি আছে।’
সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফেরদৌস জাহান বলেন, ‘ঘটনাটি মূলত কোতোয়ালী থানার অংশে ঘটেছে। যেহেতু রাস্তার একপাশ যেহেতু সদরঘাট থানার অধীনে তাই সেখানে ফোর্স পাঠানো হয়েছে। যাতে ওই ঘটনার কোনো প্রভাব আমার থানা এলাকায় না পড়ে।’
জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস.এম. ওবায়েদুল হক বলেন, ‘ওখানে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। আমরা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও নিয়েছি সেখানে। আমরা কঠিন অ্যাকশনে যাচ্ছি।’